ব্যবসায় অর্থায়ন বলতে ব্যবসা করার জন্য যে তহবিলের প্রয়োজন হয় তা সরবরাহ করাকে বুঝায়। জনাব রহমান একটি দর্জি দোকানের মালিক। ব্যবসার শুরুতেই তিনি কিছু মেশিন ক্রয় করেন। ব্যবসায়ী সাধারণত তার নিজস্ব সঞ্চয় হতে মেশিন ক্রয়সংক্রান্ত স্থায়ী বিনিয়োগের জন্য অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করে। কেননা এই অর্থ তিনি যেকোনো মেয়াদে ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু তিনি যদি হিসাব করে দেখেন নিজস্ব সঞ্চয় মেশিন ক্রয়ের জন্য যথেষ্ট নয়, তবে তিনি বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক যেমন: জনতা, রূপালী অথবা অন্যান্য ঋণ প্রদানকারী আর্থিক সংস্থা থেকে নির্দিষ্ট সুদের হারে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন। এ ধরনের ঋণ তিনি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য গ্রহণ করে থাকেন। ব্যবসায়ীর স্থাবর সম্পত্তি যেমন: বিল্ডিং ফ্যাক্টরি, অস্থাবর সম্পত্তি যেমন: কাঁচামাল, বিক্রয়যোগ্য মালামাল, ইত্যাদির বিপরীতে ব্যাংক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস থেকে বন্ধকী ঋণ গ্রহণ করেও তহবিল সরবরাহ করা যায়। এছাড়া রহমান সাহেব ব্যবসায় যে মুনাফা অর্জন করেন, তা কারবার থেকে উত্তোলন না করে কারবারে বিনিয়োগ করেও অর্থায়নের প্রয়োজন মেটাতে পারেন। ব্যবসা চলাকালীন অবস্থাতেই যদি রহমান সাহেব দৈনন্দিন খরচ যেমন: মেশিন মেরামত, বাড়ি ভাড়া প্রদান, কর্মচারীদের বেতন প্রদান, বিদ্যুৎ বিল প্রদান ইত্যাদি নির্বাহের জন্য অর্থ-ঘাটতির মুখোমুখি হন, তবে তা সংস্থানের জন্য তিনি ভবিষ্যৎ বিক্রয়ের বিপরীতে অগ্রিম গ্রহণ করতে পারেন। আবার বাকিতে মালামাল ক্রয় করেও অর্থায়ন করা সম্ভব। অনেক সময় মূল্যবান মেশিনারিজ, বড় ধরনের যন্ত্রপাতি, বিল্ডিং অথবা জমি ইত্যাদি ক্রয় না করে বরং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাড়াও নেয়া যায়, এতে ব্যবসায়ী এক সাথে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগের ঝুঁকি হতেও রক্ষা পায় বড় কারবারি প্রতিষ্ঠান, যেমন: কোহিনূর কেমিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার টেক্সটাইলস, সিঙ্গার বাংলাদেশ- এ ধরনের বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ সংস্থান করে। এই ধরনের উৎস হতে সংগৃহীত অর্থ দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারযোগ্য।
এভাবে ব্যবসার গঠন, প্রকৃতি ও উদ্দেশ্যের ভিন্নতার কারণে নানারকম উৎস হতে প্রতিষ্ঠান তহবিল সংগ্রহ করে থাকে। যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তহবিলের দুটি ভিন্ন উৎস থাকে। একটি মালিকপক্ষ অন্যটি ঋণদাতা। মালিকপক্ষের প্রদত্ত তহবিলকে অভ্যন্তরীণ এবং ঋণদাতা প্রদত্ত তহবিলকে বহিস্থ তহবিল উৎস বলা হয়। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই সাধারণত দুটো উৎসই ব্যবহার করে থাকে। অপর পৃষ্ঠায় ২.১ নং ছকে এ দুটি তহবিল উৎসের শ্রেণিবিভাগ দেখানো হলো ।
Picture
আরও দেখুন...