ঈশ্বর নিজেই ভালোবাসা। তিনি ভালোবেসে তাঁর একমাত্র পুত্র প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে এই জগতে প্রেরণ করেছেন। যেন পুত্রের মধ্য দিয়ে মানুষ মুক্তি (পরিত্রাণ) পায়। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজেকে রিক্ত করলেন। দাসের স্বরূপ গ্রহণ করলেন। আকারে প্রকারে মানুষ হয়ে পবিত্র আত্মার প্রভাবে কুমারী মারীয়ার গর্ভে জন্মগ্রহণ করলেন। তিনি মানুষকে মুক্তির বাণী দিলেন। নিজে নিষ্পাপ হয়েও মানুষের পাপের জন্য ক্রুশে প্রাণ উৎসর্গ করলেন। পুনরুত্থান করে আমাদেরকেও তাঁর পুনরুত্থানের সহভাগী করলেন ও নতুন জীবন দান করলেন। তাঁর সম্পূর্ণ জীবনটাই ছিল একটি নিগূঢ় রহস্য। আমরা এই অধ্যায়ে তাঁর জীবনের রহস্যের বিভিন্ন দিকগুলো আলোচনা করব। এছাড়া তাঁর প্রকাশ্য জীবনের আরম্ভ থেকে যেব্রুসালেমে প্রবেশের বিভিন্ন দিকগুলো জানব।
এ অধ্যায় শেষে আমরা-
রহস্য বলতে আমরা সাধারণত বুঝি যা সাধারণ জ্ঞান-বুদ্ধি দিয়ে উদঘাটন করা যায় না। আমাদের সাধারণ বুদ্ধির অতীত বলে রহস্য বোঝার জন্য গভীর বিশ্বাসের প্রয়োজন হয়। আমাদের মুক্তিদাতা প্রভু যীশুর জীবন, কাজ, বাণী প্রচার, মৃত্যু ও পুনরুত্থান সবকিছুর মধ্যেই গভীর রহস্য নিহিত রয়েছে। তাঁর মধ্য দিয়ে পিতা ঈশ্বর নিজেকে প্রকাশ করেছেন। তাই যীশু বলেন, যে আমাকে দেখেছে সে পিতাকেও দেখেছে। পিতার ইচ্ছা পূর্ণ করতেই আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট মানুষ হয়ে জন্ম নিয়েছেন। তাই তাঁর রহস্যের ক্ষুদ্রতম বিষয়টিও আমাদের মাঝে ঈশ্বরের ভালোবাসা প্রকাশ করে।
যীশুর দেহধারণ রহস্য: প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তাঁর পিতার সাথে গভীর ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ। কিন্তু সময়ের পূর্ণতায় পিতা ঈশ্বর তাঁর একমাত্র পুত্রকে দান করলেন মানুষের মুক্তির জন্য। তিনি ঈশ্বর হয়েও ঈশ্বরের সমতুল্যতাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চাননি। তিনি নিজেকে একেবারে রিক্ত করেছেন। স্বর্গধাম থেকে তিনি মাটির ধরায় নেমে এসেছেন। মারীয়ার মতো একজন সাধারণ কুমারী কন্যাকে ঈশ্বর বেছে নিয়েছেন মুক্তিদাতার মা হবার জন্য। তিনি মারীয়াকে সেভাবেই প্রস্তুত করেছেন। পাপশূন্য করেই তাঁকে সৃষ্টি করেছেন যেন আমাদের ত্রাণকর্তা একটি নিষ্কলঙ্ক গর্ভে জন্ম নিতে পারেন। কুমারী মারীয়া প্রথমে একটু বিব্রত হলেও নিজেকে 'প্রভুর দাসী' বলে ঈশ্বরের ইচ্ছা মেনে নিয়েছেন। মারীয়ার এই 'হ্যাঁ' বলার মধ্য দিয়েই মহান ঈশ্বর পুত্রের রূপ ধরে এই পৃথিবীতে এসেছেন। আকারে-প্রকারে মানুষ হয়ে নিজেকে একেবারে নমিত করেছেন। তাঁর এই দেহধারণের মধ্য দিয়ে তিনি দরিদ্র হয়েছেন, তাঁর দরিদ্রতায় তিনি আমাদেরকে ধনশালী করে তুলেছেন। তিনি দেহধারণ করে মানুষ হয়ে মানুষের সবকিছু নিজের মধ্যে গ্রহণ করে নিলেন। মানুষের জন্য মুক্তির এক সহজ-সরল পথ খুলে দিলেন। আমাদের আদি পিতামাতার পাপের ফলে যে স্বর্গসুখ আমরা হারিয়েছি, পুত্রের দেহ ধারণের মধ্য দিয়ে আমরা তা আবার ফিরে পেয়েছি। তিনি দরিদ্র বেশে এক গোশালায় জন্ম নিয়েছেন। দরিদ্র রাখালেরা ছিলেন তাঁর প্রথম সাক্ষী। তাঁরাই তাঁর জয়গানে মুখর হয়েছিলেন।
যীশুর নিস্তার রহস্য: যীশুর সম্পূর্ণ জীবনটাই পরিত্রাণের রহস্য। তিনি তাঁর প্রচারজীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন একেবারে দীন-দরিদ্র, অভাবী, দুঃখী, নিপীড়িত ও বঞ্চিতদের মাঝে। এর কারণ হলো মানুষ যেন মুক্তির স্বাদ পেতে পারে; দুঃখ, শোক, ব্যথাবেদনা ও পাপের বন্ধন থেকে যেন তারা মুক্তি পেতে পারে। তবে আমাদের কাছে তাঁর পরিপূর্ণ মুক্তি আসে কালভেরি পর্বতে ক্রুশের উপর রক্তপাতের মধ্য দিয়ে। তিনি নির্দোষ ও নিষ্পাপ হয়েও নিজের কাঁধে আমাদের পাপ বহন করেছেন। ক্রুশীয় ঘৃণ্য মৃত্যু মেনে নিয়েছেন। তিনি সমস্ত কিছু সহ্য করেছেন। পিতার একান্ত বাধ্য হয়ে সবকিছু মাথা পেতে নিয়েছেন। তাঁর রক্তমূল্যের বিনিময়ে আমরা মুক্তি লাভ করেছি। আমরা হয়ে উঠেছি স্বাধীন মানুষ।
যীশুর অপ্রকাশ্য জীবনের রহস্য: প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দৈনন্দিন জীবন ছিল নিতান্ত সহজ-সরল। ধর্মীয় নিয়ম- নীতির প্রতি ছিল তাঁর গভীর আস্থা। তিনি পিতামাতার খুবই বাধ্য ছিলেন। তাঁর এই বাধ্যতা পিতা ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। তাঁর মধ্যে যে ঐশ পিতার উপস্থিতি ছিল তা তিনি তাঁর পিতামাতাকে এই কথা বলে জানান, "তোমরা কি জানতে না যে, আমার পিতার গৃহেই আমাকে থাকতে হবে?" তিনি যে পিতার বিশেষ প্রেরণকাজে নিবেদিত তা তিনি স্পষ্টভাবেই প্রকাশ করেছেন।
যীশুর মহিমা লাভের রহস্য: প্রভু যীশুর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। তিনি সমাহিত হয়েছেন এবং তিনদিন পর পুনরুত্থান করেছেন। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজে পুনরুত্থান করে আমাদেরকেও তাঁর পুনরুত্থানের সহভাগী করেছেন। আমাদের মধ্যেও একটা প্রত্যাশার জন্ম নিয়েছে যে, এখানে মৃত্যুই জীবনের শেষ নয়। আমরা একদিন খ্রীষ্টের সাথে পুনরুত্থিত হব। কারণ যীশু নিজেই আমাদের বলেছেন যে, আমিই পুনরুত্থান, আমিই জীবন। যে আমাকে বিশ্বাস করবে সে অনন্ত জীবন লাভ করবে। প্রভু যীশুর পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা প্রত্যেকে তাঁর অনন্ত জীবনের সহভাগী হয়ে উঠেছি। যীশুর মহিমা আমাদেরকেও পরিত্রাণের মহিমায় মহিমান্বিত করে তুলেছে।
সুতরাং, প্রভু যীশুর সমগ্র জীবনই ছিল রহস্যে ভরপুর। তাঁর দেহধারণ থেকে শুরু করে যাতনাভোগের তিক্ত সিকা এবং পুনরুত্থানের শববস্ত্র পর্যন্ত সবকিছুই ছিল যীশুর জীবনের রহস্যগুলোর চিহ্ন। বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তা উদ্ঘাটন করতে হয়।
আমরা অনেকেই শিশু অবস্থায় দীক্ষাস্নান বাপ্তিস্ম সাক্রামেন্ত গ্রহণ করেছি। প্রভু যীশু বড়ো হয়ে দীক্ষাস্নান গ্রহণ করেছেন। তবে প্রভু যীশুর দীক্ষাস্নান আমাদের দীক্ষাস্নান থেকে ভিন্ন রকমের ছিল। তিনি দীক্ষাগুরু যোহনের কাছে মন পরিবর্তনের দীক্ষাস্নান গ্রহণ করেছিলেন। আমরা যে দীক্ষাস্নান গ্রহণ করি সেই দীক্ষাস্নান বলতে আমরা বুঝি প্রভু যীশু খ্রীষ্ট কর্তৃক স্থাপিত ও মণ্ডলী কর্তৃক স্বীকৃত বাহ্যিক চিহ্ন বা প্রতীক। এর মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের আশীর্বাদ বা অনুগ্রহ লাভ করি। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজে দীক্ষাস্নান গ্রহণ করে দীক্ষাস্নান সংস্কারের একটি নতুন রূপ দান করেছেন। তা হলো জল ও আত্মায় নতুন জীবন লাভ।
প্রভু যীশু তাঁর প্রকাশ্যজীবন শুরু করেছেন জর্ডন/যদন নদীতে দীক্ষাগুরু যোহনের দ্বারা দীক্ষাস্নান গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে। দীক্ষাগুরু যোহন মানুষকে পাপমোচনের উদ্দেশ্যে মন পরিবর্তনের আহ্বান করেন। তিনি এই বলে তাঁর মন পরিবর্তনের বাণী প্রচার করেন, তোমরা মন ফেরাও। তিনি মানুষকে মনের আঁকা-বাঁকা সমস্ত চিন্তা দূর করে সত্য ও সুন্দরের সহজ-সরল পথে চলতে আহ্বান করেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেক করগ্রাহক, ফরিসি, সাদুকি ও পাপী মানুষ মন পরিবর্তন করে দীক্ষাস্নান গ্রহণ করেছিলেন।
একদিন যীশু নিজে দীক্ষাগুরু যোহনের কাছে এলেন দীক্ষাস্নান গ্রহণ করতে। তিনি নিষ্পাপ হলেও দীক্ষাস্নান গ্রহণ করেছেন ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশের জন্য। যোহন প্রথমে যীশুকে দীক্ষাস্নান দিতে রাজি হননি। তিনি বলেছেন যে, তাঁরই বরং যীশুর কাছে দীক্ষাস্নান গ্রহণ করা উচিত। যীশু কিন্তু দমে যাননি। যীশু তাঁকে বললেন, যেন এখনকার মতো যোহন রাজি হন। অতএব যোহন যীশুকে দীক্ষাস্নান দিলেন। দীক্ষাস্নান গ্রহণ করার সাথে সাথে পবিত্র আত্মা এক কপোতের আকারে যীশুর উপর নেমে এলেন। আর তখনই স্বর্গ থেকে এই বাণী শোনা গেল, "ইনি আমার প্রিয় পুত্র, তোমরা এঁর কথা শোন"। উপস্থিত সকলে অবাক হয়ে তা শুনল ও দেখল। এই ঘটনাটি হলো ঈশ্বরপুত্র ও ইস্রায়েলের মশীহ বা ত্রাণকর্তারূপে যীশুর আত্মপ্রকাশের আরম্ভ।
কাজ: যীশুর দীক্ষাস্নানের ঘটনাটি অভিনয় করে দেখাও। |
যীশু খ্রীষ্ট নিজে দীক্ষাস্নান গ্রহণ করে পরমেশ্বরের কষ্টভোগী সেবক হিসেবে তাঁর প্রেরণকর্ম শুরু করেছেন। তিনি পাপী মানুষের সাথে নিজেকে গণ্য করেছেন। দীক্ষাস্নান গ্রহণ করে কালভেরিতে নিজের রক্ত ঝরিয়ে মানুষের মুক্তির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। তিনি পিতার ইচ্ছার কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁর সেই সম্মতির প্রত্যুত্তরে পিতা ঈশ্বরও তাঁর প্রতি প্রীত আছেন বলে ঘোষণা করলেন। যীশুর দেহধারণের সময় থেকে যে আত্মা তাঁর ওপর অধিষ্ঠিত ছিল সেই একই আত্মা তাঁর ওপর এসে বিরাজ করে। আদমের পাপের ফলে স্বর্গের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দীক্ষাস্নানের ফলে আমরা পাপমুক্ত হয়ে স্বর্গে যাবার সুযোগ পাই। পবিত্র আত্মার অবতরণের ফলে এক নতুন সৃষ্টির সূচনা হলো।
দীক্ষাস্নানের মধ্য দিয়ে একজন খ্রীষ্টভক্ত প্রভু যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের সহভাগী হয়ে জল ও আত্মায় নতুন জন্মলাভ করে। প্রভু যীশুর মধ্য দিয়ে সে হয়ে ওঠে পিতা ঈশ্বরের একান্ত প্রিয়জন। সে চলতে পারে জীবনের নবীনতায়, যেখানে কোনো পাপ-কালিমা নেই। এভাবে দীক্ষাস্নাত প্রত্যেক ব্যক্তিই যীশুর পবিত্রতায় বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়।
কাজ: দীক্ষাস্নানের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবনে কী পরিবর্তন হয়, তা দলে আলোচনা করো। |
প্রভু যীশু দীক্ষাস্নানের মধ্য দিয়ে তাঁর প্রকাশ্যজীবন শুরু করেন। দীক্ষাস্নানের পরপরই প্রভু যীশু মরুপ্রান্তরে নির্জনে চল্লিশ দিন সময় কাটান। এ সময় তিনি পবিত্র আত্মায় পরিচালিত হয়ে বন্যপ্রাণীদের সাথে বাস করেন। স্বর্গদূতেরা তখন তাঁর পরিচর্যা করেছেন। তিনি শয়তান দ্বারা পরীক্ষিত হন এবং শয়তানের উপর বিজয় ছিনিয়ে আনেন। তারপর প্রচার কাজ শুরু করার জন্য বারজন শিষ্যকে বেছে নেন।
যাঁর দ্বারা প্রভু যীশু দীক্ষাস্নাত হয়েছিলেন সেই দীক্ষাগুরু যোহনকে কারাগারে বন্দি করা হলে পর যীশু গালিলেয়ায় চলে এলেন। গালিলেয়াতে তিনি তাঁর প্রচারকাজ শুরু করেন। তিনি বলতেন, "সময় হয়ে এসেছে: ঐশরাজ্য এখন খুব কাছেই। তোমরা মন ফেরাও; তোমরা মঙ্গলসমাচারে বিশ্বাস কর"। তাঁর প্রচারের মূল বিষয় ছিল ঐশরাজ্য এবং মন পরিবর্তন। আসলে ঐশরাজ্যের বিষয়ে সাক্ষ্য দিতেই তিনি পিতার বাণী মানুষকে শুনিয়েছেন।
এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকে যীশুর অনুসরণ করেছেন। আবার কাউকে কাউকে তিনি বিশেষভাবে বেছে নিয়েছেন ঐশরাজ্যের সাক্ষী হতে। বাণীপ্রচারের শুরুতে তিনি তাঁদের গালিলেয়া সাগরের ধার থেকে আহ্বান করেছেন। তিনি একদিন সাগরের ধার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি সিমোন ও তার ভাই আন্দ্রিয়কে সাগরে জাল ফেলতে দেখলেন। তিনি তাঁদের আমন্ত্রণ জানালেন তাঁর অনুসরণ করতে। আর তাঁরা তাঁর ডাক শোনার সঙ্গে সঙ্গে যীশুর সঙ্গ নিলেন, তাঁকে অনুসরণ করতে লাগলেন। এরপর একটু এগিয়ে গিয়ে তিনি জেবেদের দুই ছেলে- যাকোব ও তাঁর ভাই যোহনকে দেখতে পেলেন। তাঁরা নৌকায় বসে তাদের জাল সারাচ্ছিলেন। যখনই যীশু তাঁদের ডাক দিলেন তখনই তাঁরা তাঁদের পিতা জেবেদকে নৌকোয় মজুরদের সঙ্গে রেখে যীশুর সঙ্গে চললেন। এভাবে তিনি অন্যদেরও ডাকলেন এবং ঐশরাজ্যের মর্মসত্য বুঝিয়ে দিলেন।
কাজ: যীশুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে যারা যীশুর অনুসরণ করেছিলেন তাঁদের যে কোন ৫জনের নাম লিখ। |
পিতার ইচ্ছা পালন ও বাস্তবায়ন করাই ছিল প্রভু যীশুর এ জগতে বাণীপ্রচারের মূল বিষয়। আর পিতার ইচ্ছা হচ্ছে মানুষকে অনন্ত মৃত্যু অর্থাৎ পাপের হাত থেকে বাঁচিয়ে তোলা। এর উদ্দেশ্য হলো, মানুষ যাতে যীশুর প্রচারিত ঐশজীবনের সহভাগী হতে পারে। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ঐশরাজ্যের প্রতি বিশ্বাসী সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এ কাজ সম্পন্ন করেছেন। বিশ্বাসের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ জনমণ্ডলীই হচ্ছে খ্রীষ্টমণ্ডলী, যা এ জগতে ঐশরাজ্যের বীজ এবং সূচনা।
কাজ: তোমরা কীভাবে যীশুর পথ অনুসরণ করছ, সেই অভিজ্ঞতা দলে সহভাগিতা করো। |
প্রভু যীশুকে ঊর্ধ্বে তুলে নেওয়ার দিনগুলো যখন খুব কাছে এসে গিয়েছিল তখন তিনি পুণ্যনগরী যেব্রুসালেমে যাবার জন্য দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি জানতেন এই যেরুসালেমেই তাঁকে হত্যা করা হবে। তাঁর বাণীপ্রচারকালে তিনি তিনবার তাঁর শিষ্যদেরকে এই কথাটি স্মরণও করিয়ে দিয়েছিলেন। প্রভু যীশু যেরুসালেমে যাত্রার মধ্য দিয়ে এই ইঙ্গিত দিলেন যে, তিনি মৃত্যুবরণ করার জন্য যেরুসালেমে যাত্রা করছেন। কারণ যেব্রুসালেমেই সকল প্রবক্তাদের শহীদ মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। তাঁর বেলায়ও এর ব্যতিক্রম হবে না।
যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে যেরুসালেমের দিকে এগিয়ে আসছেন। এই সময় নিস্তার পর্বে যোগ দিতে বহু লোক যেরুসালেমে এসেছিল। তাঁরা যখন শুনতে পেল যীশু যেরুসালেমে আসছেন তখন তাঁরা তাঁকে স্বাগতম জানাতে বেরিয়ে পড়ল। এদিকে যীশুর শিষ্যেরা গ্রাম থেকে একটি গাধার বাচ্চা এনে তাঁর পিঠের উপর নিজেদের গায়ের চাদর পেতে দিলেন। তারপর যীশুকে তাঁর উপর বসালেন।
বহু লোকও তখন তাদের নিজেদের গায়ের চাদর পথের উপর বিছিয়ে দিতে লাগল। কেউ কেউ আবার ডালপালা কেটে এনে পথের উপর বিছিয়ে দিলেন। আর যীশুর সামনে ও পিছনে জনতা চিৎকার করে বলতে লাগল, "জয় জয়! প্রভুর নামে যিনি আসছেন, ধন্য তিনি ধন্য। আমাদের পিতৃপুরুষ দাউদের যে রাজ্য এবার প্রতিষ্ঠিত হবে, ধন্য ধন্য সেই রাজ্য। আহা, উর্ধ্বলোকে উঠুক জয়ধ্বনি।" এভাবে জয়রবের সাথে সাথে যীশু যেরুসালেমের মন্দিরে প্রবেশ করেন।
প্রভু যীশুকে অনেকে রাজা বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি সবসময় তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আপন নগরী তাঁকে পরিত্রাতারূপে কীভাবে গ্রহণ করে তা তিনি রাজার বেশে যেরুসালেমে প্রবেশের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করলেন। তিনি সাধারণ একটি গাধার পিঠে চড়ে দাউদের সন্তানরূপে যেরুসালেমে প্রবেশ করেছেন। কারণ তাঁর রাজত্ব ব্যতিক্রমধর্মী। এই রাজত্ব তিনি তাঁর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের নিস্তার রহস্যের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করবেন।
অনুসন্ধানমূলক কাজ: তপস্যাকালে কী কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে খ্রীষ্টভক্তরা ইস্টার বা পাস্কাপর্বের জন্য প্রস্তুত হয় এবং ইস্টারের আনন্দ কীভাবে একে অপরের সাথে সহভাগিতা করে তার ওপর একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করো। |
শূন্যস্থান পূরণ করো।
১. প্রভু যীশুকে অনেকে _______ বানাতে চেয়েছিল।
২. যীশু যেব্রুসালেমে গিয়েছেন ______ চড়ে।
৩. ঐশরাজ্য এখন খুব ______ ।
8. প্রচারকাজ শুরু করার জন্য ________ জন শিষ্যকে বেছে নেন।
৫. যীশু ______ দ্বারা পরীক্ষিত হন।
বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশের মিল করো।
বাম পাশ | ডান পাশ |
১. পিতা ঈশ্বর নিজেকে ২. যে আমাকে দেখেছে ৩. যীশুর সম্পূর্ণ জীবনটাই ৪. রাখালেরা যীশুর ৫. আমরা হয়ে উঠেছি |
|
১. যীশু বাণীপ্রচারকালে কতবার নিজ মৃত্যুর কথা বলেছেন?
ক. দুইবার
খ. তিনবার
গ. চারবার
ঘ. পাঁচবার
২. যীশু দীক্ষাস্নান গ্রহণ করেছেন কী প্রকাশের জন্য?
ক. ঈশ্বরের গৌরব
খ. স্বর্গদূতের মহিমা
গ. পবিত্রাত্মার মহিমা
ঘ. যোহনের গৌরব
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
মফস্বল এলাকায় প্রচারকগণ সাক্রামেন্ত গ্রহণের জন্য শিশু-কিশোরদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন, যাতে তারা ভালোমন্দ ন্যায়-অন্যায় ও মন পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে পারে। পুরোহিতগণ বছরে একবার দূরবর্তী গ্রামে পালকীয় কাজে যান। তখন হিমেলও সাক্রামেন্ত গ্রহণের জন্য উৎসাহিত হলো। পরে তাকে সাক্রামেন্ত দিয়ে মণ্ডলীভুক্ত করা হলো।
৩. হিমেল উক্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোন সাক্রামেন্ত গ্রহণ করেছে?
ক. পাপস্বীকার
খ. কমুনিয়ন
গ. দীক্ষাস্নান
ঘ. হস্তার্পণ
8. হিমেল উক্ত সাক্রামেন্ত গ্রহণের ফলে লাভ করে-
i. ঈশ্বরের অনুগ্রহ
ii. নতুন জীবন
iii. মণ্ডলীর স্বীকৃতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
১. অনল একজন বাণীপ্রচারক। ছোটোবেলা থেকেই ধর্মের প্রতি তার মনোযোগ একটু বেশি। ধর্মীয় যে কোনো কাজে অনল সবার আগে। প্রচারকাজ করতে গিয়ে মানুষের বিভিন্ন সমালোচনার সম্মুখীন হয়। মানুষের ঘৃণা, অপমান সবই সহ্য করে তার কাজ সুন্দরভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ অনল খুব ভালোভাবে জানত যে ভালো কিছু করতে হলে অনেক কষ্ট স্বীকার করতে হয়। এমনকি আপনজনদের কাছেও অবহেলিত হতে হবে। ছোটোবেলার ধর্মীয় শিক্ষা তাকে স্থির থাকতে অনুপ্রাণিত করেছে। তাই সে আজও ঈশ্বরের বাধ্য থেকে একজন স্বাধীন মানুষ হয়ে উঠেছে।
ক. যীশুর জন্মের প্রথম সাক্ষী কারা?
খ. যীশু কোন গোশালায় জন্ম নিয়েছেন?
গ. অনল তার কাজে কার বৈশিষ্ট্যের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. অনলকে কি তুমি ঈশ্বরের মহিমা লাভের উপযুক্ত বলে মনে করো? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
২. প্লাসিড একজন সমাজকর্মী। সমাজের উন্নয়নের জন্য তিনি সকলের সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর সততা, বিশ্বস্ততা ও ন্যায়পরায়ণতার কথা এলাকার সবারই জানা। একসময় তাঁরই এক বন্ধু চক্রান্ত করে তার সততা যাচাই করার জন্য প্লাসিডকে পরীক্ষা করে। অনেক টাকার লোভ দেখিয়ে বলে তিনি যেন সেবামূলক কাজ কন্ধ করেন। প্লাসিড তাঁর বন্ধুর কথায় কোনো গুরুত্বই দেয়নি। বরং তিনি তাঁর সেবামূলক কার্যক্রম আরও জোরদার করার জন্য অনেক কর্মী নিয়োগ দিলেন, যাতে তার অনুপস্থিতিতে অন্যেরা সেবাকাজ চালিয়ে নিতে পারে।
ক. যীশু কার দ্বারা দীক্ষাস্নাত হন?
খ. একজন খ্রীষ্টভক্ত দীক্ষাস্নানের মাধ্যমে কী হয়ে ওঠেন?
গ. যীশুর জীবনের কোন ঘটনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে প্লাসিড প্রলোভন থেকে জয়ী হয়েছেন? বর্ণনা করো।
ঘ. যীশুর শিষ্যদের আহ্বান ও প্লাসিডের কর্মীদের নিয়োগ- এ দুটি বিষয়ের সাদৃশ্য বৈসাদৃশ্যের তুলনামূলক আলোচনা করো।
সংক্ষিপ্ত-উত্তর প্রশ্ন
১. যীশু কেন ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করেছিলেন?
২. যীশুর মহিমা আমাদের কী করতে সাহায্য করে?
৩. দীক্ষাগুরু যোহনের প্রচারের মূল বিষয় কী ছিল?
৪. যীশুর দীক্ষাস্নানের সময় কোন বাণীটি শোনা গেল?
৫. যীশু কেন পৃথিবীতে এসেছিলেন?
বর্ণনামূলক প্রশ্ন
১. দীক্ষাগুরু যোহন কর্তৃক যীশুর দীক্ষাস্নানের ঘটনাটি বর্ণনা করো।
২. যীশু কেন যেরুসালেমে গিয়েছিলেন?
৩. যীশুর যেরুসালেমে প্রবেশের ঘটনাটি বিস্তারিত বর্ণনা করো।
Read more
আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago