মেগার (Megger)

এসএসসি(ভোকেশনাল) - জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস-২ - জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস-২ | NCTB BOOK

বৈদ্যুতিক স্থাপনা ও যন্ত্রপাতির ত্রুটি পরীক্ষার জন্য মেগার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। উচ্চমানের রেজিস্ট্যান্স মেগাওহম স্কেলে পরিমাপ করতে মেগার ব্যবহৃত হয়। যন্ত্রপাতির ত্রুটি পরীক্ষার জন্য যে বিদ্যুৎ সরবরাহ দরকার হয় তা একটি মেগারে হস্তচালিত ডিসি জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন করা যায়। আজকাল ব্যাটারি চালিত ডিজিটাল মেগার পাওয়া যায়। এগুলোর মাধ্যমে সরাসরি আর্থ রেজিটেন্সের মান পাওয়া যায়।

চিত্র -২.৮ মেগার

২.৩১ মেগার এর গঠন ও কাজ

২.১ নং চিত্রে একটি মেগারের সার্কিট ডায়াগ্রাম দেখানো হয়েছে। এতে ডিসি জেনারেটর, স্থায়ী ম্যাগনেট মুভিং কয়েল, পিএমএমসি (Permanent Magnet Moving Coil) থাকে। পিএমএমসি একটি মেগারের প্রধান অংশ। ফেগারে দুইটি টার্মিনাল থাকে: লাইন টার্মিনাল ও আর্থ টার্মিনাল। মেগারের সাহায্যে সর্বনিম্ন ৫০০ কলা (KO) বা ০.৫ মেগাও (IMSI) সঠিক ভাবে মাপা যায়। উচ্চ রেজিস্ট্যাল বিশিষ্ট পদার্থকে কুপরিবাহী বা ইনসুলেটর (Insulator) বলে। মেগারের সাহায্যে ইনসুলেশন রেজিস্ট মাপা হয়। একারণে যেগারকে ইনসুলেশন টেস্টিং মেগারও বলে। 

মেগারের সাহায্যে উচ্চ রেজিস্ট্যান্স বা ইনসুলেশন রেজিস্ট্যান্স মাপা ছাড়াও সুইচের পোলারিটি টেস্ট ও ওয়্যারিং এর কন্টিনিউটি টেস্ট করা যায়। 

মেগার একটি পারমানেন্ট ম্যাগনেট মুভিং কয়েল টাইপ ইনস্ট্রুমেন্ট । এই যন্ত্রে একটি ডিসি জেনারেটর ও একটি ওহম মিটার থাকে। ডিসি জেনারেটরটি ঘুরানোর জন্য যন্ত্রের বাহিরে একটি হাতল থাকে। ওহম মিটারের মধ্যে দুইটি কয়েল একই দন্ডের উপর সমকোণে আটকানো থাকে। একটি স্থায়ী চুম্বকের ক্ষেত্রের মধ্যে বসানো ঐ দন্ডটির মাথায় একটি মান নির্দেশক কাঁটা থাকে। কয়েল দুইটি হচ্ছে- প্রেসার কয়েল বা কন্ট্রোল কয়েল এবং কারেন্ট কয়েল বা ডিফ্লেকটিং কয়েল। কন্ট্রোল কয়েলের সাথে একটি কন্ট্রোল সার্কিট রেজিস্ট্যান্স সিরিজে সংযোগ করা থাকে এবং এই সমবায় জেনারেটরের লাইনে প্যারালালে সংযুক্ত থাকে। আবার ডিফ্লেক্টিং কয়েলের সঙ্গেও একটি ডিফ্লেক্টিং সার্কিট রেজিস্ট্যান্স সিরিজে সংযোগ করা থাকে। রেজিস্ট্যান্স যুক্ত ডিফ্লেক্টিং কয়েল সার্কিটের এক প্রান্ত জেনারেটরে নেগেটিভ (-ve) টার্মিনাল এবং অপর প্রান্ত মেগারের টেষ্টিং টার্মিনাল L এর সঙ্গে সংযোগ করা থাকে। জেনারেটরের পজেটিভ (+ve) টার্মিনাল মেগারের অপর টেষ্টিং টার্মিনাল E এর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ করা থাকে। এর জেনারেটিং ভোল্টেজ ৫০০ ভোল্ট কিংবা ১০০০ ভোল্ট হয়ে থাকে। এ অবস্থায় মেগারের হাতল ঘুরালে শুধু প্রেসার কয়েলের ভেতর দিয়ে কারেন্ট সরবরাহ হবে এবং স্থায়ী চুম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে ক্রিয়ার ফলে পয়েন্টারটি বামাবর্তে ঘুরে অসীম মান (o) দেখাবে। আবার মেগারের টেষ্টিং টার্মিনাল দুইটি শর্ট করে দিলে কারেন্ট কয়েলের ভেতর দিয়ে প্রচুর কারেন্ট প্রবাহিত হবে এবং স্থায়ী চুম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে ক্রিয়ার ফলে পয়েন্টারটি ডানাবর্তে ঘুরে শূন্য (০) মান দেখাবে। এর ব্যতিক্রম হলে বুঝতে হবে মেগার ঠিক নেই। যখন কোনো উচ্চ মানের রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করার জন্য রেজিস্ট্যান্সটিকে মেগারের L ও E টার্মিনালের সাথে কানেকশন দিয়ে হাতল ঘুরানো হয় তখন জেনারেটর হতে দুইটি কয়েলেই কারেন্ট প্রবাহিত হবে। দুইটি কয়েলের কারেন্টের অনুপাত অনুযায়ী পয়েন্টারটি ডানে বা বামে বিক্ষেপণ (Deflection) দিবে। রেজিস্ট্যান্স এর মান খুব কম হলে পয়েন্টারটি শূন্য মানের কাছাকাছি এবং রেজিস্ট্যান্স এর মান খুব বেশি হলে পয়েন্টারটি অসীম (Infinity, a) মানের কাছাকাছি অবস্থান করবে। এখানে উল্লেখ্য যে, মেগারের মধ্যস্থিত ডিসি জেনারেটরটি বাহিরের দিকের হাতলের সাথে সেন্ট্রিফিউগাল কাপলিং এর মাধ্যমে আটকানো থাকে। মেগারকে খুব দ্রুত ঘুরালেও এটি একটি নির্দিষ্ট আরপিএম এর বেশি গতিতে ঘুরবে না। মেগার ঘোরানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন এর হাতলটি মুক্ত ভাবে ঘোরে। এসময় এতে নির্দিষ্ট ভোল্টেজ উৎপন্ন হবে। মেগারে লিকেজ প্রতিরোধ করার জন্য গার্ড রিং ব্যবহার করা হয়। পরিমাপকৃত রেজিস্ট্যান্সের মান অসীম হলে ডিফ্লেকটিং কয়েল সার্কিটে কোন কারেন্ট প্রবাহিত হয় না। শুধু কন্ট্রোলিং কয়েলের মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয়। কন্ট্রোলিং কয়েলে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ায় চৌম্বক ক্ষেত্র উৎপন্ন হয় এবং মিটারের কাঁটা অসীম (Infinity) দেখায়। আবার পরিমাপাধীন রেজিস্ট্যান্সের মান শূন্য হলে ডিফ্লেকটিং কয়েলের মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ কারেন্ট প্রবাহিত হয়, ফলে মিটার শূন্য (০) পাঠ দেয় ।

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion

Promotion