আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও আমরা শক্তি শব্দটা অনেকভাবে ব্যবহার করি কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানের ভাষাতে শক্তি শব্দটার একটা নির্দিষ্ট অর্থ আছে। সাধারণ মুখের ভাষায় বল প্রয়োগ করা আর শক্তি প্রয়োগ করার মাঝে কোনো পার্থক্য নেই, কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় এই দুটি বাক্যাংশ সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয় বোঝায়। বল বলতে কী বোঝায় সেটা আমরা আগের অধ্যায়ে পড়ে এসেছি, এই অধ্যায়ে শক্তি বলতে কী বোঝার সেটা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
শক্তি বলতে কী বোঝায় আমাদের সবার মাঝে তার একটা ভাসাভাসা ধারণা আছে, কারণ আমরা কথাবার্তায় বিদ্যুৎ শক্তি, তাপ শক্তির কথা বলে থাকি। মাঝে মাঝে আমরা রাসায়নিক শক্তি বা নিউক্লিয়ার শক্তির কথাও শুনে থাকি। আলোকে শক্তি হিসেবে সেভাবে বলা না হলেও আমরা অনুমান করতে পারি আলোও হচ্ছে এক ধরনের শক্তি। দৈনন্দিন কথাবার্তায় যে শক্তিটার কথা খুব বেশি বলা হয় না, কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানে অসংখ্যবার যে শক্তির কথা বলা হবে সেটা হচ্ছে গতিশক্তি কাজেই আমাদের ধারণা হতে পারে প্রকৃতিতে বুঝি অনেক ধরনের শক্তি আছে, কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে সব শক্তিই কিন্তু এক এবং আমরা শুধু এক ধরনের শক্তিকে অন্য ধরনের শক্তিতে রূপান্তর করি। তাহলে শক্তিটা কী?
শক্তি হচ্ছে কাজ করার সামর্থ্য। শুধু তা-ই না, যখন কোনো বস্তুর ওপর কোনো বল প্রয়োগ করে ধনাত্মক কাজ করা হয় তখন সেই বলটি আসলে বস্তুটির মাঝে একটা শক্তি সৃষ্টি করে। বস্তুটির মাঝে যতটুকু কাজ করা হয়েছে বস্তুটির মাঝে ততটুকু শক্তি সৃষ্টি হয় এবং যে বল প্রয়োগ করছে তাকে ঠিক সেই পরিমাণ শক্তি দিতে হয়।
কাজেই এবারে তুমি নিশ্চয়ই ঋণাত্মক বা নেগেটিভ কাজের অর্থ বুঝতে পেরেছ। কোনো বল যদি কোনো বস্তুর উপর নেগেটিভ কাজ করে তাহলে বুঝতে হবে বস্তুর যেটুকু শক্তি ছিল সেখান থেকে খানিকটা শক্তি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যেটুকু ঋণাত্মক বা নেগেটিভ কাজ করা হয়েছে ঠিক ততটুকু শক্তি সরিয়ে নেওয়া হয় এবং যে বল প্রয়োগ করেছে সে এই শক্তিটুকু কোনো না কোনোভাবে পেরে যায়। অর্থাৎ কোনো বস্তুর উপর
ধনাত্মক কাজ করা→ বস্তুটিকে শক্তি দেওয়া
ঋণাত্মক কাজ করা → বস্তুটি থেকে শক্তি সরিয়ে নেওয়া
তোমরা নিশ্চরই বুঝতে পারছ শক্তির কোনো দিক নেই এবং এটি একটি স্কেলার। যেহেতু কাজ করে আমরা শক্তি তৈরি করি কিংবা শক্তি খরচ করে কাজ করি তাই দুটোরই একই একক এবং একই মাত্রা।
শক্তির একক J (জুল)
শক্তির মাত্রা [W] =
আরও দেখুন...