সমুদ্রপথ গড়ে ওঠার জন্য দেশের অবস্থান অবশ্যই সমুদ্রের তীরে হওয়া প্রয়োজন। শুধু সমুদ্র থাকলেই হবে না, তার ভৌগোলিক কিছু বৈশিষ্ট্যও দরকার যা থাকলে সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলা যাবে। বন্দর গড়ে উঠলে তবেই সমুদ্রপথ উন্নতি লাভ করবে।
সমুদ্রপথ গড়ে ওঠার ভৌগোলিক কারণ |
পোতাশ্রয় | উপকূলের গভীরতা | সুবিস্তৃত সমভূমি | জলবায়ু |
পোতাশ্রয় থাকলে ঝড়- বন্দরের উপকূলস্থ সমুদ্র ঝাপটা, সমুদ্রের ঢেউ প্রভৃতির কবল থেকে আধুনিক জাহাজ রক্ষা পায় । |
বন্দরের উপকূলস্থ সমুদ্র বেশ গভীর হওয়া বাঞ্ছনীয় । এতে সব ধরনের আধুনিক জাহাজ বন্দরে যাতায়াত করতে পারে । | বন্দরের জাহাজ মেরামত ও জেটি নির্মাণের জন্য সুবিস্তৃত সমভূমি থাকা প্রয়োজন । |
বরফ, কুয়াশা প্রভৃতি সমুদ্র যোগাযোগের বাধাস্বরূপ, যা বাংলাদেশের উপকূলে অনুপস্থিত । আর এ কারণে সমুদ্র যোগাযোগ প্রসার লাভ করেছে। |
দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে জলপথ তথা নৌপথ ও সমুদ্রপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের তিনটি সমুদ্রবন্দর আছে— চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের মোট আমদানির প্রায় ৮৫ শতাংশ এবং রপ্তানির ৮০ শতাংশ বাণিজ্য সম্পন্ন হয়। মংলা বন্দর দিয়ে মোট রপ্তানির প্রায় ১৩ শতাংশ এবং আমদানির প্রায় ৮ শতাংশ বাণিজ্য সম্পন্ন হয়। অর্থনৈতিক দিক থেকে অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থার চেয়ে নৌপথ ও সমুদ্রপথের অবদান উল্লেখযোগ্য।
আকাশপথ (Airways)ঃ
যাত্রী চলাচল এবং পচনশীল দ্রব্য প্রেরণেও আকাশপথের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। যুদ্ধবিগ্রহ, দুর্ভিক্ষ প্রভৃতি জাতীয় দুর্যোগের সময় আকাশপথ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে আকাশপথকে বাদ দিয়ে সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ কল্পনাও করা যায় না। শিক্ষা, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনে আকাশপথের গুরুত্ব অপরিসীম।
আকাশপথ গড়ে ওঠার অনুকূল অবস্থা |
সমতলভূমি | কুয়াশামুক্ত ও ঝড়ঝঞ্ঝার স্বল্পতা |
বিমান অবতরণ এবং উড্ডয়নের জন্য পর্যাপ্ত সমতলভূমি প্রয়োজন । |
আকাশপথের জন্য কুয়াশামুক্ত ও ঝড়ঝঞ্ঝামুক্ত বন্দর প্রয়োজন । |
বিমানের অভ্যন্তরীণ সার্ভিসে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, রাজশাহী, সৈয়দপুর, বরিশাল প্রভৃতি স্থানে যাতায়াত করা যায় (চিত্র ১২.৩)। অভ্যন্তরীণ রুটে বেসরকারি বিমান সার্ভিসও চালু রয়েছে। ঢাকার ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর' বাংলাদেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এছাড়াও আরও দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে তা হলো— চট্টগ্রাম শাহ আমানত ও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
বাণিজ্য (Trade)
মানুষের অভাব ও চাহিদা মেটানোর উদ্দেশে পণ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় এবং এর আনুষঙ্গিক কার্যাবলি হচ্ছে বাণিজ্য। আমাদের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো একই স্থানে উৎপাদন বা তৈরি হয় না যার ফলে পণ্যগুলো বণ্টনের প্রয়োজন দেখা দেয়, তখনই বাণিজ্যের প্রয়োজন হয়। বাণিজ্য নিম্নরূপ :
বাণিজ্য |
অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য | আন্তর্জাতিক বাণিজ্য |
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য |
আমদানি বাণিজ্য | রপ্তানি বাণিজ্য |
অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (Internal trade)
আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সাধারণত গ্রাম বা হাট থেকে কাঁচামাল, খাদ্য-শস্য সংগ্রহ করা হয় এবং উৎপাদিত শিল্পদ্রব্য জেলা সদর, গঞ্জ ও হাটে বণ্টন করা হয়। অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে দেশের চাহিদা ও ভোগের সমন্বয় ঘটে। অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে বাংলাদেশে যাতায়াত ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথ। এই পথগুলো বিভিন্ন প্রকার দ্রব্য, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ সহজ করে ।
কাজ : তোমার এলাকায় বিভিন্ন দোকানে কী কী পণ্য অন্য অঞ্চল থেকে আসে এবং কোন দ্রব্য বা
পণ্য অন্য অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে তার তালিকা তৈরি কর ।
কাজ : তোমার এলাকায় বাণিজ্যের সঙ্গে যাতায়াতের সম্পর্ক দেখাও । |
পণ্যদ্রব্য তোমার অঞ্চল থেকে যাচ্ছে | যাতায়াত ব্যবস্থা | পণ্যদ্রব্য তোমার অঞ্চলে আসছে |
আরও দেখুন...