ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। বস্তুত জনসংখ্যার তুলনায় স্থান কমে যাচ্ছে বা স্থান সংকুলান হচ্ছে না। তাই মানুষ এখন ছুটছে ঊর্ধ্ব পানে। সে কারণেই তৈরি হচ্ছে বহুতল ভবনসমূহ। আর বহুতল ভবনের উপরে উঠার জন্য একটি মাধ্যম প্রয়োজন। সিঁড়ি এমনি একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে উলম্ব দূরত্ব অতিক্রম করা যায়। কিছু অনুভূমিক ও উলম্ব তলের সমন্বয়ে খাপ গঠিত হয় যার সাহায্যে উপরে নিচে উঠানামা করা যায়। এরূপ কিছু খাপের সমন্বয়ে তৈরি কাঠামোকে সিঁড়ি বলে। অর্থাৎ ভবনের একতলা থেকে অন্যগুলায় নিরাপদে, নির্বিঘ্নে ও দ্রুত যাতায়াত করার জন্য কিছু ধাপের সমন্বয়ে তৈরি কাঠামোকে সিঁড়ি বলে। ভবনের যে কক্ষে বা স্থানে সিঁড়ি তৈরি করা হয় তাকে সিঁড়িঘর বা Stair case বলে ।
সিঁড়িঘর বা Stair case আকৃতি ও গঠনের বা সজ্জার দিক থেকে কিংবা উপকরণের দিক থেকে বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে।
আকৃতি ও গঠনের বা সজ্জার দিক থেকে সিঁড়ি ২ প্রকার
সোজা বা একমুখী সিঁড়ি (Straight Stair)
টার্নিং বা মোড়ঘেরা সিঁড়ি (Turning Stair)
মোড়ঘেরা সিঁড়ি (Turning Stair) আবার নিম্নোক্ত প্রকার:
১. সমকোণী সিঁড়ি (Quarter Turn Stair)
২. হাফ-টার্ন সিড়ি (Half Turn Stair)
৩. থ্রি-কোয়ার্টার টার্ন সিড়ি (Three Quarter Turn Stair
৪. অবিচ্ছিন্ন বা ধারাবাহিক সিড়ি (Continuous Stair)
৫. জ্যামিতিক সিঁড়ি (Geometrical Stair)
৬. বাইফারকেটেড সিঁড়ি (Bifurcated Stair)
উপকরণের দিক থেকে সিঁড়ি নিম্নোক্ত প্রকার:
কাঠের সিঁড়ি (Timber Stair)
পাঘরের সিঁড়ি (Stone Stair)
ইটের সিঁড়ি (Brick Stair)
স্টিলের সিঁড়ি (Steel Stair)
আরসিসি সিঁড়ি (RCC Stair)
চিত্র ১৩.৩: সিঁড়ির বিভিন্ন অংশ ও ধাপ ডিটেইল
যে সকল অনুভূমিক ও উলৰ তলের সমন্বয়ে ধাপ গঠিত হয় সেই খাপ বা সিঁড়ির অনুভূমিক অংশ যাতে গা রেখে উপরে বা নিচে উঠানামা করা হয় তাকে সিঁড়ির ট্রেড (T) বলে। ধাপ বা সিঁড়ির উপর অংশ বা অনুভূমিক অংশকে ধরে রাখে বা সংযুক্ত করে তাকে সিঁড়ির রাইজার (R) বলে। আরামদায়ক উঠানামার জন্য সিঁড়ির ট্রেড (T) ও রাইজারের (R) মধ্যে একটি নির্দিষ্ট অনুপাত নির্ণয় করে সিঁড়ি ডিজাইন করা হয়। যদিও বর্তমানে রাইজারের উচ্চতা কম রাখার চেষ্টা করা হয় কিন্তু স্থান সংকুলান না হলে উচ্চতা বেশি দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ট্রেড ও রাইজারের মধ্যে অনুপাত নির্ণয়ের সূত্র নিম্নরূপ—
নিরাপদে, নির্বিঘ্নে ও দ্রুত উঠানামা করার জন্য সিঁড়ির ট্রেড (T) ও রাইজারের (R) মাপ আমাদের দেশে যথাক্রমে ১০" ও ৬" প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু আরামদায়কভাবে উঠানামা করার জন্য রাইজারের (R) মাপ ৫" হলে ভালো হয়। স্থানের সংকুলান না হলে এই মাপকে কমবেশি করে সমন্বয় করা হয়।
সিড়িঘর বা Stair case এ আলো বাতাসের প্রয়োজনীয়তাঃ
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নঃ
১. সিঁড়ি কাকে বলে?
২. উপকরণের দিক থেকে সিঁড়ি কত প্রকার ও কী কী?
৩. সিঁড়িঘর কাকে বলে?
৪. ট্রেড কাকে বলে?
৫. রাইজার কাকে বলে?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নঃ
১. ট্রেড ও রাইজার-এর পার্থক্য লেখ।
২. বিভিন্ন প্রকার মোড়ঘেরা বা টার্নিং সিঁড়ির নাম লেখ ।
৩. সিড়িঘরে আলো বাতাসের প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা কর ।
রচনামূলক প্রশ্নঃ
১. বিভিন্ন প্রকার সিঁড়ির নাম লেখ ।
২. সিঁড়ির চিত্র এঁকে বিভিন্ন অংশ দেখাও ।
৩. সিঁড়ির ট্রেড ও রাইজার-এর অনুপাত সম্পর্কিত সূত্রসমূহ ব্যাখ্যা কর।
আরও দেখুন...