চলমান ধারণার নীতি অনুসারে প্রতিটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। প্রতিটি হিসাবকাল শেষে পুনরায় একই ধারাবাহিকতায় হিসাবরক্ষণের কার্যসমূহ পরিচালিত হয়। অর্থাৎ চলতি হিসাবকাল শেষে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী হিসাবকাল আরম্ভ হয় এবং নতুনভাবে হিসাব লেখা শুরু হয়। ফলে দেখা যায় ব্যবসায়িক লেনদেন সংঘটিত হওয়ার পর থেকে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত পর্যন্ত প্রতিবছর হিসাবসংক্রান্ত বিষয়গুলো পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে। চলতি বছরের সম্পদ ও দায়ের সমাপনী জেরসমূহকে পরবর্তী বছরের প্রারম্ভিক জের হিসাবে দেখানো হয় । এক্ষেত্রে চলতি বছরের শেষ তারিখের সম্পদসমূহকে ডেবিট এবং দায়সমূহকে ক্রেডিট করে পরবর্তী হিসাব বছরের শুরুতে প্রারম্ভিক দাখিলা প্রদানের মাধ্যমে হিসাবের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয় ।
যে সকল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের আয়তন ছোট ও লেনদেনের সংখ্যা কম, সে সকল প্রতিষ্ঠানে একতরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুযায়ী হিসাব সংরক্ষণ করা হয়। এই পদ্ধতিতে কোনো লেনদেনের একটি পক্ষের, কোনো লেনদেনের দুটি পক্ষেরই এবং কোনো লেনদেনের কোনো পক্ষই লিপিবদ্ধ করা হয় না। প্রকৃতপক্ষে একতরফা দাখিলা বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি নয় ।
এই পদ্ধতিতে কিছু সম্পদ ও দায়ের হিসাব সংরক্ষণ করা হলেও আয় ও ব্যয় হিসাবগুলো সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ব্যবসায়ের লাভ-ক্ষতি নিরূপণের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সূত্র । পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
লাভ/ক্ষতি = {(সমাপনী মূলধন+উত্তোলন) – (প্রারম্ভিক মূলধন+অতিরিক্ত মূলধন)}
প্রারম্ভিক মূলধন = প্রারম্ভিক মোট সম্পদ-প্রারম্ভিক মোট দায়
সমাপনী মূলধন = সমাপনী মোট সম্পদ— সমাপনী মোট দায়
সমাপনী মূলধন ও উত্তোলনের সমষ্টি প্রারম্ভিক ও অতিরিক্ত মূলধনের সমষ্টি অপেক্ষা পরিমাণে বড় হলে পার্থক্যটি লাভ এবং পরিমাণে ছোট হলে পার্থক্যটি ক্ষতিস্বরূপ গণ্য করা হয়। উদাহরণের মাধ্যমে দেখানো হলো—
মিসেস শাহেলা খাতুন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। নিম্নোক্ত তথ্য তার হিসাব বই হতে সংগ্রহ করা হয়েছে।
০১/০১/২০১৭ ৩১/১২/২০১৭
মোট সম্পদ ১,২০,০০০ ১,৫০,০০০
মোট দায় ৩৫,০০০ ৫৫,০০০
২০১৭ সালে অতিরিক্ত মূলধন আনয়ন ২০,০০০ টাকা এবং মালিকের মোট উত্তোলন ৩০,০০০ টাকা ২০১৭ সালের শাহেলা খাতুনের লাভ/ক্ষতি নির্ণয় কর :
সমাধান:
প্রারম্ভিক মূলধন =প্রারম্ভিক মোট সম্পদ-প্রারম্ভিক মোট দায়
=(১,২০,০০০ – ৩৫,০০০) = ৮৫,০০০
সমাপনী মূলধন= সমাপনী মোট সম্পদ-সমাপনী মোট দায়
=(১,৫০,০০০–৫৫,000 ) = ৯৫,০০০
# লাভ/ক্ষতি = {( সমাপনী মূলধন+উত্তোলন)—(প্রারম্ভিক মূলধন+অতিরিক্ত মূলধন)}
= {(৯৫,০০০+৩০,০০০) – (৮৫,০০০+২০,০০০)}
= (১,২৫,০০০-১,০৫,০০০ ) ২০,০০০
= ২০,০০০
.:. লাভের পরিমাণ = ২০,০০০ টাকা
আরও দেখুন...