ইমপ্ল্যান্টেশন (Implantation):
নিষেকের পর ৬ থেকে ৯ দিনের মধ্যে যে প্রক্রিয়ায় জাইগোটটি ব্লাস্টোসিস্ট অবস্থায় জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়ামে (স্তন্যপায়ী প্রাণীর জরায়ুর অন্তর্গাত্রে অবস্থিত রক্তবাহিকা ও গ্রন্থিসমৃদ্ধ স্থূল মিউকাস ঝিল্লি) সংস্থাপিত হয় তাকে ইমপ্ল্যান্টেশন বলে।
নারীর ডিম্বাণু ডিম্বনালির (ফেলোপিয়ান নালি) উর্দ্ধপ্রান্তে নিষিক্ত হয়ে জাইগোটে পরিণত হয়। এটি দ্রুত বিভক্ত হয়ে মরুলা (morula) নামক একটি নিরেট কোষপুঞ্জের সৃষ্টি করে এবং ডিম্বনালির সিলীয় আন্দোলন ও ক্রমসংকোচনের ফলে নিম্নগামী হয় । জাইগোটের পর্যায়ক্রমিক মাইটোসিস বিভাজনকে ক্লিভেজ (cleavage) বলে। নিরেট কোষপুঞ্জটি ডিম্বনালি থেকে সংগৃহীত তরলে পূর্ণ অন্তঃস্থ গহ্বর (ব্লাস্টোসিল) সমন্বিত ও এককোষস্তরীয় ব্লাস্টোসিস্ট (blastocyst)-এ পরিণত হয়। ব্লাস্টোসিস্টে প্রায় ১০০টির মতো কোষ থাকে। প্রতিটি কোষকে ব্লাস্টোমিয়ার (blastomere) বলে। ব্লাস্টোমিয়ারের স্তরকে বলে ট্রফোব্লাস্ট (trophoblast)। ৪-৫ দিনের ভিতর ব্লাস্টোসিস্ট জরায়ুতে এসে পৌঁছালে দু'দিনের মধ্যে এর জোনা পেলুসিডা আবরণ অদৃশ হয়ে যায় । তখন ট্রফোব্লাস্ট কোষ ও জরায়ুর এন্ড্রোমেট্রিয়াম কোষের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়। ব্লাস্টোসিস্ট এন্ডোমেট্রিয়ামের যেখানে গ্রোথিত হবে সেখানকার আবরণি টিস্যু ট্রফোব্লাস্ট থেকে নিঃসৃত এনজাইমের প্রভাবে বিগলিত হয় । তখন ব্লাস্টোসিস্টটি সেখানে যুক্ত হয় । এভাবে নিষেকের ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম দিনের মধ্যে নিষিক্ত ডিম্বাণু বা জাইগোটটি ব্লাস্টোসিস্ট অবস্থায় জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়ামে আবদ্ধ হয়। জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়ামে ব্লাস্টোসিস্টের গ্রোথিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ইমপ্ল্যান্টেশন বলে।
আরও দেখুন...