কার্যভিত্তিক সংগঠনের বেশ কিছু সুবিধা থাকলেও এরূপ সংগঠনের অসুবিধার পরিমাণও কম নয় । নিম্নে এর অসুবিধাসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. কর্মীদের কর্মভার বৃদ্ধি (Increase in workload of employees) : এরূপ সংগঠনে একটি বিভাগ প্রয়োজনে একাধিক বিভাগকে সেবা প্রদান করতে বাধ্য থাকে । যে কারণে কোনো একটি বিভাগীয় কর্মীদের ওপর একই সময়ে অন্য একাধিক বিভাগ হতে সেবা সুবিধা প্রদানের নির্দেশ আসতে পারে । আর এরূপ অবস্থায় উক্ত বিভাগের কর্মীদের কর্মভার বৃদ্ধি পায় এবং তারা সঠিকভাবে কার্য সম্পাদনে ব্যর্থ হয় ।
২. সরলরৈখিক কর্মকর্তাদের প্রভাব হ্রাস (Reduction in influnce of line-authority) : এ ধরনের সংগঠনে কাজের মূল দায়িত্ব থাকে বিশেষজ্ঞ কর্মীদের ওপর। যারা স্ব-স্ব বিভাগে নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করে । সরলরৈখিক নির্বাহী বলতে যা বুঝায় তা থাকে মূলত সংগঠন কাঠামোর একেবারে ওপর পর্যায়ে। বিশেষজ্ঞ কর্মীগণ মূল চালকের ভূমিকায় অবস্থান করায় সংখ্যালঘু সরলরৈখিক নির্বাহীদের কর্তৃত্ব এক্ষেত্রে হ্রাস পায়। যা প্রকারান্তরে সমস্যার সৃষ্টি করে ।
৩. দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ (Opportunity to avoid responsibility) : এক্ষেত্রে একটি বিভাগ বা বিভাগীয় কর্মীগণ একই সাথে একাধিক বিভাগের আদেশ-নির্দেশ পালন করায় কার্যক্ষেত্রে দ্বৈত অধীনতার সৃষ্টি হয় । ফলে কোনো কর্মী বা বিভাগ ইচ্ছা করলে অন্যের দোহাই দিয়ে কাজে ফাঁকি দিতে পারে । দ্বৈত অধীনতার কারণে এক্ষেত্রে অধস্তনদের সঠিকভাবে জবাবদিহিও করা যায় না ।
৪. শৃঙ্খলার অভাব (Lack of discipline) : এ ধরনের সংগঠনে কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করায় এমনিতেই যথাযথ তত্ত্বাবধান, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দেয় । তদুপরি কোনো অধস্তন কর্মী বা বিভাগ একাধিক ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞের অধীনে কাজ করায় কার্যক্ষেত্রে মারাত্মক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় । এরূপ সংগঠন ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ না করার পিছনে এটাকে অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়ে থাকে ।
৫. প্রয়োগ ক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতা (Limitation of applicability) : কার্যভিত্তিক সংগঠন কাঠামো এমনিতেই যথেষ্ট জটিল । নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বৃহদায়তন উৎপাদনধর্মী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বিভাগেই এর পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার সম্ভব । ক্রয়, বিক্রয়, অর্থ, শ্রমিক-কর্মী ইত্যাদি বিভাগে কার্যভিত্তিক সংগঠন কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার কার্যত সম্ভব নয় ।
আরও দেখুন...