প্রাক্কলনের ধর্ম ও প্রমাণ

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ২য় পত্র | | NCTB BOOK

প্রাক্কলনের ধর্ম (Properties of Estimation)

প্রাক্কলনের ধর্মগুলো নির্ধারণ করে যে একটি প্রাক্কলন কতটা কার্যকর এবং সঠিক। কার্যকর প্রাক্কলন পদ্ধতিকে চিহ্নিত করতে নিম্নলিখিত ধর্মগুলো বিবেচনা করা হয়:


১. পক্ষপাতহীনতা (Unbiasedness)

  • একটি প্রাক্কলন পক্ষপাতহীন হতে হবে, অর্থাৎ প্রাক্কলকের (estimator) গড় মান জনসংখ্যার প্রকৃত প্যারামিটারের সমান হতে হবে।
  • সূত্র:
    \[
    E(\hat{\theta}) = \theta
    \]
    এখানে,
    \( \hat{\theta} \) = প্রাক্কলকের গড় মান
    \( \theta \) = জনসংখ্যার প্রকৃত প্যারামিটার

উদাহরণ:
যদি কোনো এলাকার গড় আয়ের প্রকৃত মান $২০,০০০ এবং প্রাক্কলিত গড় বারবার $২০,০০০ প্রদান করে, তবে এটি পক্ষপাতহীন।


২. সামঞ্জস্যতা (Consistency)

  • একটি প্রাক্কলন সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে, নমুনার আকার বৃদ্ধি পেলে প্রাক্কলন জনসংখ্যার প্রকৃত প্যারামিটারের নিকটবর্তী হবে।
  • অর্থাৎ, \( n \to \infty \) হলে \( \hat{\theta} \to \theta \)।

উদাহরণ:
১০০ জনের নমুনার ভিত্তিতে গড় আয় $১৯,৮০০ এবং ১০০০ জনের নমুনার ভিত্তিতে গড় আয় $১৯,৯৫০, এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ।


৩. দক্ষতা (Efficiency)

  • প্রাক্কলকের বৈচিত্র্য (variance) যত কম, সেটি তত বেশি দক্ষ।
  • কম বৈচিত্র্য মানে প্রাক্কলন পদ্ধতি নির্ভুল।
  • সূত্র:
    \[
    Var(\hat{\theta})
    \]
    এখানে, \( \hat{\theta} \)-এর বৈচিত্র্য যত কম হবে, এটি তত বেশি কার্যকর হবে।

উদাহরণ:
দুইটি প্রাক্কলকের মধ্যে একটির বৈচিত্র্য ১০ এবং অপরটির বৈচিত্র্য ১৫। প্রথমটি বেশি কার্যকর।


৪. যথার্থতা (Sufficiency)

  • যথার্থ প্রাক্কলক এমন একটি প্রাক্কলন পদ্ধতি যা প্রাসঙ্গিক তথ্য ব্যবহার করে।
  • যথার্থ প্রাক্কলক সব প্রয়োজনীয় তথ্য ধারণ করে এবং কোন তথ্য বাদ দেয় না।

উদাহরণ:
নমুনার প্রতিটি মান ব্যবহার করে গড় নির্ধারণ যথার্থ প্রাক্কলন।


৫. সহমিতি (Robustness)

  • প্রাক্কলক সহমিতি তখনই বলে যখন এটি বিভিন্ন ধরনের তথ্য বা শর্তেও কার্যকর থাকে।
  • উদাহরণ: প্রাক্কলকের উপর অস্বাভাবিক মান (outlier) প্রভাব ফেলবে না।

প্রাক্কলনের ধর্মগুলোর প্রমাণ

প্রাক্কলনের ধর্মগুলো প্রমাণ করার জন্য গাণিতিক সূত্র এবং পরিসংখ্যানের বিভিন্ন নিয়ম ব্যবহার করা হয়। এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উল্লেখ করা হলো:


১. পক্ষপাতহীনতার প্রমাণ

ধরা যাক, \( \hat{\theta} \) একটি প্রাক্কলক এবং জনসংখ্যার প্যারামিটার \( \theta \)।
পক্ষপাতহীনতার জন্য,
\[
E(\hat{\theta}) = \theta
\]

উদাহরণ: গড়ের ক্ষেত্রে,
\[
\hat{\mu} = \frac{\Sigma x}{n}
\]
এবং,
\[
E(\hat{\mu}) = \mu
\]
অতএব, গড় একটি পক্ষপাতহীন প্রাক্কলক।


২. সামঞ্জস্যতার প্রমাণ

ধরা যাক, \( \hat{\theta}n \) একটি প্রাক্কলক। সামঞ্জস্যতার জন্য,
\[
\lim{n \to \infty} P(|\hat{\theta}_n - \theta| < \epsilon) = 1
\]
অর্থাৎ, \( n \)-এর মান বাড়ালে প্রাক্কলক \( \theta \)-এর কাছাকাছি পৌঁছাবে।


৩. দক্ষতার প্রমাণ

ধরা যাক, \( \hat{\theta}_1 \) এবং \( \hat{\theta}_2 \) দুইটি প্রাক্কলক। যদি,
\[
Var(\hat{\theta}_1) < Var(\hat{\theta}_2)
\]
তাহলে, \( \hat{\theta}_1 \) বেশি কার্যকর।

উদাহরণ:
গড়ের প্রাক্কলনের জন্য,
\[
Var(\bar{x}) = \frac{\sigma^2}{n}
\]
এটি দেখায় যে নমুনার আকার বৃদ্ধির সঙ্গে গড়ের বৈচিত্র্য কমে যায়।


৪. যথার্থতার প্রমাণ

ধরা যাক, \( \hat{\theta} \) একটি যথার্থ প্রাক্কলক। এটি জনসংখ্যার সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য ধারণ করবে।
পরীক্ষার জন্য, যথার্থ প্রাক্কলক সর্বাধিক সম্ভাব্যতা (maximum likelihood) পদ্ধতি দিয়ে যাচাই করা হয়।


সারসংক্ষেপ

প্রাক্কলনের ধর্মগুলো কার্যকর এবং নির্ভুল প্রাক্কলন পদ্ধতি নির্ধারণে সাহায্য করে। পক্ষপাতহীনতা, সামঞ্জস্যতা, দক্ষতা, যথার্থতা এবং সহমিতি একটি প্রাক্কলন পদ্ধতির সঠিকতা প্রমাণ করে। এগুলোর গাণিতিক ভিত্তি এবং ব্যবহারিক প্রয়োগ নিশ্চিত করে যে প্রাক্কলন বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলো সমাধানে কার্যকর।

Promotion