মানুষের গ্রীবাদেশীয় কশেরকা সংখ্যা কত?

Created: 2 years ago | Updated: 2 years ago
Updated: 2 years ago

একটি আদর্শ কশেরুকার গঠন (An ideal vertebral structure):

দেহের বিভিন্ন অঞ্চলের এমনকি একই অঞ্চলের বিভিন্ন কশেরুকায়ও পার্থক্য দেখা যায়। তা সত্ত্বেও সকল কশেরুকাই একটি মৌলিক গড়নের উপর প্রতিষ্ঠিত। নিচে মানুষের একটি আদর্শ কশেরুকার (মধ্য-বক্ষদেশীয় কশেরুকা) বর্ণনা দেয়া হলো ।

সেন্ট্রাম (Centrum) বা ভার্টিব্রাল বডি  (Vertebral body) : এটি কশেরুকার বৃহত্তম ও সম্মুখস্থ স্থূল অংশ, দেখতে ডিম্বাকার রডের একটি খন্ডের মতো । কোমলাস্থি নির্মিত সিমফাইসিস (symphysis) বা আন্তঃকশেরুকীয় চাকতি (intervertebral disc)-র সাহায্যে সমস্ত কশেরুকার দেহ পরস্পরের সঙ্গে আটকে থাকে সেন্ট্রাম শক্ত, পুরু ও স্পঞ্জি অস্থিতে গঠিত ।

আর্চ (Arch) : এটি কশেরুকা-দেহের পৃষ্ঠতলে অবস্থিত রিংয়ের মতো। আর্চ নিম্নোক্ত অংশগুলো ধারণ করে।

পেডিকল (Pedicle) : কশেরুকা-দেহের উভয় পশ্চাৎ-পার্শ্ব থেকে উত্থিত ও পিছনে বর্ধিত খাটো শক্ত গঠন ৷

ট্রান্সভার্স প্রসেস (Transverse process) : উভয় পাশে পেডিকল ও ল্যামিনার সংযোগস্থল থেকে উত্থিত পার্শ্বীয় প্রবর্ধন।

ল্যামিনা (Lamina) : উভয় পাশে ট্রান্সভার্স ও স্পাইনাস প্রসেসের মাঝখানে অবস্থিত চওড়া, চাপা, তির্যক ও ঢাল পেটের মতো অস্থি ।


আর্টিকুলার প্রসেস (Articular process) : উভয় পাশে ল্যামিনা ও পেডিকলের সংযোগস্থল থেকে উদগত একটি সুপিরিয়র ও একটি ইনফিরিয়র আর্টিকুলার প্রসেস। একটি কশেরুকার সুপিরিয়র আর্টিকুলার প্রসেস অন্য কশেরুকার ইনফিরিয়র আর্টিকুলার প্রসেসের সঙ্গে যুক্ত থাকে ।

স্পাইনাস প্রসেস (Spinous process) : দুই ল্যামিনির (ল্যামিনার বহুবচন) সংযোগস্থল থেকে একটি পশ্চাৎ মধ্যরেখীয় প্রবর্ধন যা নিম্নমুখী প্রসারিত । ২য়-৬ষ্ঠ সারভাইকাল কশেরুকার এ প্রসেস প্রান্তের দিকে দ্বিখন্ডিত।

কশেরুকার ছিদ্রপথ ও নালি : পেডিকলের ঊর্ধ্ব ও নিম্নদেশে যে খাঁজ (notch) থাকে সম্মিলিতভাবে ইন্টারভার্টিব্রাল ফোরামেন (intervertebral foramen) বা নিউরাল ছিদ্র (neural foramen) গঠন করে। এ ছিদ্রের ভিতর দিয়ে সুষুম্না স্নায়ু ও রক্তবাহিকা অতিক্রম করে। কশেরুকার যে বড় ছিদ্রটি সামনে দেহ, পিছনে আর্চ ও পাশে পেডিকলে নির্মিত, তাকে ভার্টিব্রাল ফোরামেন (vertebral foramen) বলে। সকল কশেরুকার ছিদ্র সম্মিলিতভাবে ভার্টিব্রাল ক্যানেল ( vertebral canal) নির্মাণ করে। এর ভিতরে ঝিল্লি বা মেনিনজেস সহ সুষুম্না কান্ড (spinal cord) ও রক্তনালিকা সুরক্ষিত থাকে।

কশেরুকার প্রকারভেদ (Types of Vertebrae):
অবস্থান অনুযায়ী কশেরুকাগুলোকে নিম্নোক্ত ৫টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়ে থাকে;

১.সারভাইকাল (গ্রীবাদেশীয়) কশেরুকা (Cervical vertebrae) — ৭টি 
২.থোরাসিক (বক্ষদেশীয়) কশেরুকা (Thoracic vertebrae) —১২টি
৩.লাম্বার (কটিদেশীয়) কশেরুকা (Lumbar vertebrae) —৫টি
৪.স্যাক্রাল (শ্রোণিদেশীয়) কশেরুকা (Sacral vertebrae) —১টি (৫টি একীভূত)
৫.কক্কিজিয়াল (পুচ্ছদেশীয়) কশেরুকা (Coccygeal vertebrae)—১টি (৪টি একীভূত)

পরিণত বয়সে স্যাক্রাল কশেরুকাগুলো একীভূত হয়ে স্যাক্রাম (sacrum) এবং কক্কিজিয়ালগুলো কক্কিক্স (coccyx) গঠন করে । ফলে, সর্বমোট কশেরুকার সংখ্যা কমে ২৬টি হয়।

Content added By
Promotion