গ্রহ-নক্ষত্রের প্রকৃতি, স্বরুপ, গতিবিধি ইত্যাদি সম্পর্কে প্রাচীনকাল থেকেই বিজ্ঞানীদের অপরিসীম কৌতূহল ছিল। বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ টাইকো ব্র (Tycho Brahe), জোহান্স কেপলার (Johannes Kepler) গ্রহ, নক্ষত্রের গতিবিধি সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। কেপলার প্রথম উপলব্ধি করেন যে গ্রহগুলো কোন এক বলের প্রভাবে সূর্যকে কেন্দ্র করে অবিরত ঘুরছে। কিন্তু কি ধরনের বল ক্রিয়াশীল তা সঠিকভাবে বোঝাতে সমর্থ হননি। 1681 খ্রিস্টাব্দে মহাবিজ্ঞানী স্যার আইজাক নিউটন (Sir Isaac Newton) প্রথম “মহাকর্ষ সূত্র' আবিষ্কার করে এ সমস্যার সমাধান করেন। কথিত আছে, নিউটন তাঁর গৃহ-সংলগ্ন বাগানে একটি আপেল গাছের নিচে বসে বই পড়ছিলেন। এমন সময় একটি আপেল তাঁর নিকটে মাটিতে পড়ে। তিনি ভাবলেন গাছের উপরে ফাঁকা, নিচে ফাঁকা, ডানে ফাঁকা এবং বামেও ফাঁকা। আপেল ফল মাটিতে পড়ল কেন ? এই 'কেন' এর উদ্ঘাটন করতে গিয়ে তিনি মহাকর্ষ (Gravitation) এবং অভিকর্ষ (Gravity) আবিষ্কার করেন এবং সূর্যের চারদিকে গ্রহ-উপগ্রহের আবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করেন। এ অধ্যায়ে আমরা মহাকর্ষ, অভিকর্ষ, নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র, অভিকর্ষজ ত্বরণ, মুক্তি বেগ, কেপলারের সূত্র, গ্রহের গতি ইত্যাদি আলোচনা করব।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আইজাক নিউটন আবিষ্কার করেন যে এ মহাবিশ্বের যে কোন দুটি বস্তু বা বস্তু কণার মধ্যে একটি পারস্পরিক আকর্ষণ রয়েছে। দুটি বস্তু বা বস্তুকণার মধ্যকার এই পারস্পরিক আকর্ষণ বলকে কখনও মহাকর্ষ আবার কখনও অভিকর্ষ বলা হয়।
এ দুটি বলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তাহলে প্রশ্ন জাগে মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ কি ? এদের সংজ্ঞা নিম্নে দেয়া হল :
সূর্য এবং চন্দ্রের মধ্যকার পারস্পরিক আকর্ষণ বলের নাম মহাকর্ষ, অপর পক্ষে পৃথিবী ও চন্দ্রের মধ্যকার পারস্পরিক আকর্ষণ বলই অভিকর্ষ। আরও সোজা ভাষায় বলা যায় পৃথিবী এবং আম গাছের একটি আমের মধ্যকার যে আকর্ষণ বল তা অভিকর্ষ। কিন্তু একই আম গাছের দুটি আমের মধ্যকার পারস্পরিক আকর্ষণ বলের নাম মহাকর্ষ।