ব্লক ছাপা

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - বস্ত্র ছাপা ও রংকরণ | NCTB BOOK

সত্যিকার অর্থে কত্র ছাপার ইতিহাসে সর্বপ্রথম যে কৌশল বা উপকরণ অবলম্বন করা হয়েছিল তা হচ্ছে ব্লক। অন্যান্য প্রিন্টিং পদ্ধতির পাশাপাশি ব্লক প্রিন্টিং-এর মাধ্যমে আমরা এখনো পরিধানের কাপড়, বিছানার চাদর, টেবিল ক্লথ ইত্যাদি প্রিন্ট করে থাকি এবং আমাদের কুটিরশিল্পে এর জনপ্রিয়তাও অনেক বেশি।

ব্লক তৈরি- ব্লক প্রিন্টে ব্যবহৃত কাঠের ব্লকগুলো - ইঞ্চি বা .০৮১০.১৬ সে.মি. পুরু হওয়া উচিত। নতুবা এরা টেকসই হবে না। ব্লকের আকৃতি যদিও ডিজাইনের উপর নির্ভর করবে, তবে লম্বায় ১২-১৬ ইঞ্চি বা 0.88-80.68 সে.মি. বেশি না হওয়াই ভালো। ব্লক তৈরির জন্য কাঠ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাবলা, গাব, লিনোলিয়াম (শিরীষ) ইত্যাদিকে গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে। আলু, ঢেঁড়শ ইত্যাদিও ব্লক প্রিন্টে তাৎক্ষণিক কাজের জন্য ব্যবহার করা যায়।

ডিজাইনের যে অংশ কাপড়ের উপর ফুটিয়ে তুলতে হবে, সে অংশ ব্লকের উপরে উঁচু করে রেখে বাকি অংশ গভীরভাবে কেটে তুলে ফেলতে হবে। এর ফলে কালার ট্রেতে যখন ব্লক ডুবিয়ে কাপড়ে ছাপ দেওয়া হবে, তখন কেবল ডিজাইন যুক্ত অংশেরই রং কাপড়ে ফুটে উঠবে। একই কাপড়ের উপর একাধিক রঙের ডিজাইন ছাপানো যায়। ক্ষেত্রে প্রত্যেক রঙের জন্য নির্দিষ্ট ব্লকের কাজ শেষ করার পর দ্বিতীয় ব্লকের কাজ শুরু করতে হবে।

প্রিন্টিং টেবিল কালার ট্রে প্রস্তুত ব্লক প্রিন্ট এর জন্য পাথর, সিমেন্ট, লোহা, ষ্টিল কিংবা ভালো কাঠের তৈরি মজবুত টেবিল হলে সুবিধা হয়। টেবিলের উপর কয়েক প্রস্থ কম্বল বিছিয়ে তার উপর কোরা কাপড় এমনভাবে পিন দিয়ে আটকিয়ে দিতে হয় যাতে প্রিন্টিংয়ের সময় কাপড় টানটান করে ছড়িয়ে থাকে বা কোনো ভাঁজ সৃষ্টি না হয়। ছাপার রঙের জন্য একটি কালার ট্রে-এর নিচে রাবার ক্লথ দিয়ে আটকিয়ে তার উপর মাপমতো - সে.মি. পুরু ফোমের টুকরা বিছিয়ে দিতে হয়। এবার ফোমের উপর এক টুকরা পশমি কাপড় বা চট বিছিয়ে তার উপর রং প্রয়োগ করে ব্রাশের সাহায্যে রং ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ছাপা কাজের সময় ব্লকটি পশমি কাপড় বা চটে / বার লাগিয়ে প্রকৃত কাপড়ে ছাপ দেওয়া হয়। কাজের শেষে ব্লক ধুয়ে রাখতে হয়

 

রং প্রস্তুত (গ্লসিযান) - ব্লক প্রিন্টিংয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুত রং বাজারে কিনতে পাওয়া যায়, যা বুকে ভালোভাবে লাগিয়ে কাপড়ের উপর ছাপ দিলেই ছাপা হয়ে যায়। তবে রঙের প্রডুত প্রণা না থাকলে নিজের পছন্দমতো রং তৈরি করে কাপড়ে ছাপ দেওয়া যায়। এখানে প্রুশিয়ান পেস্ট তৈরি ও ছাপা পদ্ধি উল্লেখ করা হলো।

পেস্টের উপকরণ ও শতকরা হিসাব

मियांग झर

ফুটন্ত গরম পানি

ইউরিয়া সার

বার সোডা

কাপড় কাচার সোডা

রেজিস্ট স

গ্লিসারিন

পেষ্ট তৈরি – পেস্ট তৈরির ২৪ ঘণ্টা লাগেই মাথা লিটার পানিতে ১ তোলা ফাইন গাম মিশিয়ে রাখতে হয়। এরপর পরিষ্কার পাত্রে হালকা গরম পানিতে রং গুলে ইউরিয়া সার, খাবার সোডা, কাপড় কাচার সোডা, রেজিস্ট সট রঙের সাথে মিশিয়ে তৈরিকৃত গামের সাথে একত্র করে মেশাতে হবে (বর্ষাকালে ইউরিয়া সার ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই)।

প্রিন্টিং পদ্ধতি - পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে ছাকনির সাহায্যে হেঁকে গ্লিসারিন মিশিয়ে কাপড় ফিস্ট করতে হবে। এই পেস্ট দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কাজ করাই উত্তম। কেননা ৪ ঘণ্টা পর এর গুণগত মান নষ্ট হরে বার। খ্রিস্ট করা হয়ে গেলে ছায়ায় এবং কিছুদিন রোদে শুকাতে হবে। প্রুসিয়ান রঙে ব্লক প্রিন্ট করার পর স্টিম ও খোলাই করতে হয়। স্টিমিং-এর জন্য একটি হাঁড়িতে পানি ফুটাতে হবে। এবার চট দিয়ে কাপড়টি ঢেকে হাঁড়ির উপ একটি চালনি বসিয়ে, তার উপর কাপড়টি রেখে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে স্টিমিং করা যেতে পারে।

কাজ- শ্রেণিকক্ষে একটি টেবিল রুথে ব্লক ছাপা করে দেখাও।

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion

Promotion