শিক্ষক জনাব আনিসুর রহমান শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানকালে বলেন, তোমরা কি জান চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক একজন মুসলিম? শিক্ষার্থীরা উত্তর দিল, না। তখন তিনি বললেন, আজ আমরা তার সম্পর্কে জানবো। চিকিৎসাবিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান নিয়েও আলোচনা করবো। ইবনে সিনা, আল রাজিসহ অনেক মুসলিম মনীষী চিকিৎসাশাস্ত্রে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। তাদের কাছে বিশ্ববাসী চিরঋণী।
জনাব আনিসুর রহমান চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক হিসেবে ইবনে সিনার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। প্রখ্যাত মুসলিম চিকিৎসাবিজ্ঞানী ইবনে সিনা (৯৮০-১০৩৭ খ্রিষ্টাব্দ) আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক। তার পুরো নাম আবু আলি হুসাইন ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সিনা।
উদ্দীপকের শিক্ষক জনাব আনিসুর রহমান শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকালে চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক হিসেবে একজন মুসলিম মনীষীর কথা বলেছেন। তিনি এখানে ইবনে সিনার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ইবনে সিনার অবদান অনস্বীকার্য। আদিম পদ্ধতির পরিবর্তে তিনি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করেন। সেজন্য তাকে আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র, চিকিৎসা প্রণালি এবং শল্যচিকিৎসার দিশারী মনে করা হয়। তিনি ওষুধ তৈরি, সংরক্ষণ ও তা প্রয়োগের আধুনিক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। এজন্য তাকে 'Master of Medicine' বলা হয়। তিনিই যক্ষ্মা রোগের ওপর প্রথম আধুনিক গবেষণা করেছিলেন। চিকিৎসাশাস্ত্রের ওপর তার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ 'কানুন ফিত-তিব'। এ গ্রন্থে তিনি বিভিন্ন রোগের লক্ষণ, ওষুধের বর্ণনা ও চিকিৎসা পদ্ধতির বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন। এতে ৭৬০টি ওষুধের বর্ণনা রয়েছে। ড. ওসলার এ গ্রন্থটিকে চিকিৎসাশাস্ত্রের বাইবেল বলে উল্লেখ করেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এর সমতুল্য কোনো গ্রন্থ আজও রচিত হয়নি। এছাড়াও ইবনে সিনার উল্লেখযোগ্য আরও কয়েকটি গ্রন্থ হলো- কিতাবুশ শিফা, কিতাবুন নাজাত, কিতাবুল হুলুদ, কিতাবুল কুলনজ ইত্যাদি।