শিক্ষক জনাব আনিসুর রহমান শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানকালে বলেন, তোমরা কি জান চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক একজন মুসলিম? শিক্ষার্থীরা উত্তর দিল, না। তখন তিনি বললেন, আজ আমরা তার সম্পর্কে জানবো। চিকিৎসাবিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান নিয়েও আলোচনা করবো। ইবনে সিনা, আল রাজিসহ অনেক মুসলিম মনীষী চিকিৎসাশাস্ত্রে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। তাদের কাছে বিশ্ববাসী চিরঋণী।
চিকিৎসাশাস্ত্রে মুসলিমদের অবদান সম্পর্কে শিক্ষক আনিসুর রহমানের বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। চিকিৎসাশাস্ত্রের উদ্ভব, বিকাশ ও আধুনিকায়নে মুসলিমদের অবদান অপরিসীম। কুরআন মাজিদে মানুষের অসুস্থতা ও সেবা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের পর মুসলিমগণ এ বিষয়ে সচেতন হতে শুরু করেন। রাসুলুল্লাহ (স) তাঁর বাণীতে বিভিন্ন ভেষজ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসার নির্দেশনা দেন। যেসব মুসলিম মনীষী চিকিৎসাশাস্ত্রে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে ইবনে সিনা, আল রাজি, হাসান ইবনে হায়সাম, আলী তাবারি, আন- নাফিস, আল-আব্বাস, ইবনে রুশদ ও আবুল কাসিম প্রমুখ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইবনে সিনা হলেন আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক। আদিম পদ্ধতির পরিবর্তে তিনি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করেন। যক্ষ্মা রোগের ওপর আধুনিক গবেষণা তিনিই প্রথম করেছিলেন। চিকিৎসাশাস্ত্রের ওপর তার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ 'কানুন ফিত-তিব'। এ গ্রন্থে তিনি বিভিন্ন রোগের লক্ষণ, ওষুধের বর্ণনা ও চিকিৎসা পদ্ধতির বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন। আরেকজন খ্যাতনামা মুসলিম চিকিৎসাবিজ্ঞানী হলেন আবু বকর আল রাজি। তিনিই প্রথম বসন্ত ও হাম রোগের প্রকৃতি, লক্ষণ, সংক্রমণ ও নিরাময় নিয়ে গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তার লেখা 'আল-জুদারি ওয়াল হাসবাহ' ছিল অত্যন্ত মৌলিক গ্রন্থ। তিনি মূত্রনালি ও কিডনির পাথর রোগ সম্পর্কেও প্রাথমিক আলোচনা করেন। তিনি সার্জারি বা শল্য চিকিৎসায় বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন।