এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আজ মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছরে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮। গতবার এই পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪। এ বছর পাসের হার কমেছে দশমিক ৮৬ শতাংশ। সব বোর্ডের ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে। নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অনলাইনে একযোগে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডের দুই হাজার ৬৯৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৬৬ হাজার ১৩ জন ও ছাত্রী ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫ জন।
ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ২১ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ২৪ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে পাশের হার ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ, যশোর বোর্ডে পাশের হার ৬৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে পাশের হার ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮১ দশমিক ৮৫ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে পাশের হার ৭৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে পাশের হার ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। আর ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৯২ হাজার ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী। সে হিসেবে এবার জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৫৩ হাজার ৫৪৬ জন।
২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বিভিন্ন বোর্ডের জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা এবং পাসের হার প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৮,৫৪৮ জন, রাজশাহী বোর্ডে ২৪,৯০২ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৭,৯২২ জন, যশোর বোর্ডে ৯,৭৪৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ১০,২৬৯ জন, বরিশাল বোর্ডে ৪,১৬৭ জন, সিলেট বোর্ডে ৬,৬৯৮ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ১৪,২৯৫ জন, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৪,৮২৬ জন, মাদরাসা বোর্ডে ৯,৬১৩ জন, এবং কারিগরি বোর্ডে ৪,৯২২ জন।
পাসের হারের দিক থেকে ঢাকা বোর্ডে ৭৯.২১ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৮১.২৪ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭১.১৫ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৬৪.২৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭০.৩২ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮১.৮৫ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৮৫.৩৯ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৭.৫৬ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৬৩.২২ শতাংশ, মাদরাসা বোর্ডে ৯৩.৪০ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে ৮৮.০৯ শতাংশ পাস করেছে।
এছাড়া ছাত্রীদের পাসের হার ৭৯.৯৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮০,৯৩৩ জন ছাত্রী, যেখানে ছাত্রদের পাসের হার ৭৫.৬১ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৪,৯৭৮ জন ছাত্র।
এইচএসসি রেজাল্ট ২০২৪ চেক করার জন্য আপনাকে কয়েকটি উপায় অনুসরণ করতে হবে:
অনলাইন পদ্ধতি: শিক্ষা বোর্ডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ফলাফল দেখতে পারেন। যেমন: www.educationboardresults.gov.bd।
এসএমএস পদ্ধতি: নির্দিষ্ট ফরম্যাটে SMS পাঠিয়ে রেজাল্ট দেখতে পারেন। উদাহরণ:
HSC <space> বোর্ডের নামের প্রথম ৩ অক্ষর <space> রোল নম্বর <space> পাসের সাল
পাঠিয়ে দিন 16222 নম্বরে।
এখানে ঢাকা বোর্ড এর একজন কল্পিত শিক্ষার্থীর নমুনা এসএমএস এর ফরম্যাট দেখানো হলো।
HSC<স্পেস>DHA<স্পেস>321245<স্পেস>2024 Send to 16222
এখানে <স্পেস> মানে ফাঁকা জায়গা যা দুটি শব্দ পাশাপাশি লিখতে মাঝখানে ব্যবহার করি।
উদাহরণ: HSC DHA 321245 2024 সেন্ড করুন 16222 নম্বরে।
Alim<স্পেস>MAD<স্পেস>321245<স্পেস>2024 Send to 16222
HSC<স্পেস>TEC<স্পেস>321245<স্পেস>2024 Send to 16222
সঠিক তথ্য দিয়ে সঠিক ফরম্যাটে এসএমএস পাঠানোর কিছুক্ষণের মধ্যে, ফিরতি এসএমএস এর মাধ্যমে কাঙ্খিত রেজাল্ট পাওয়া যাবে।
এইচএসসি সমমান রেজাল্ট দেখার মেসেজ পাঠাতে, আপনার মোবাইলে মেসেজ প্রেরণের জন্য ফি প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ইংরেজি নামের প্রথম তিন অক্ষর নিচে উল্লেখ করা হলো:
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড: DHA
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড: RAJ
বরিশাল শিক্ষা বোর্ড: BAR
সিলেট শিক্ষা বোর্ড: SYL
যশোর শিক্ষা বোর্ড: JES
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড: CHI
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড: COM
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড: DIN
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড: MYN
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড: TEC
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড: MAD
এগুলো পরীক্ষার ফলাফল SMS বা অনলাইনে চেক করার জন্য প্রয়োজন হতে পারে।
ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে টাইপ করুন:
RSC<space>First 3 Letter of Your Board Name<space>roll<space>subject_code
and send to 16222
পাঠিয়ে দিন 16222 নম্বরে
আবেদনের সময়: ১৬/১০/২০২৪ হতে ২২/১০/২০২৪
প্রতি পত্রের জন্য আবেদন ফি ৳১৫০ (একশত পঞ্চাশ) টাকা।
এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফল নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করা হবে। আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে যেসব বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হবে। আর যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোর ফলাফল এসএসসির ফলাফলের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হবে।
বিষয় ম্যাপিংয়ের নীতিমালার মাধ্যমে, একজন পরীক্ষার্থী যেসব বিষয়ে এসএসসিতে নম্বর পেয়েছে, সেগুলোকে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বিবেচনা করা হবে। যদি বিষয়গুলি ভিন্ন হয়, তবে সেই ক্ষেত্রে বিষয় ম্যাপিংয়ের নীতিমালা অনুযায়ী নম্বরগুলো মূল্যায়ন করা হবে। এর ফলে, যারা এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল পেয়েছেন, তাদের জন্য একটি সুবিচারমূলক প্রক্রিয়া কার্যকর হবে, যা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অর্জনকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কমবে এবং শিক্ষাবর্ষের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তবে এই পরিবর্তনের ফলে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগও সৃষ্টি হতে পারে, কারণ এর মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণের প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এই বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে, যাতে সবাই এই পরিবর্তনটি গ্রহণ করতে পারে এবং যথাযথভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।
গত আগস্টে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও ঘেরাও করলে এবারের এইচএসসি বা সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ।
এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা গত ৩০ জুন শুরু হয়েছিল, যেখানে মোট ১৪ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। প্রথমদিকে সাতটি পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের কারণে পরীক্ষাগুলো বারবার স্থগিত করা হয়। ছয়টি বিষয় ও ব্যবহারিক পরীক্ষাও বাকি ছিল। আন্দোলনের চাপে ৫ আগস্ট সরকারের পতন ঘটে এবং ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। পরে, পরীক্ষার্থীদের দাবি মেনে অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়, যা শিক্ষাব্যবস্থায় এক নাজুক পরিস্থিতি তৈরি করে।
এই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীদের মানসিক চাপ এবং সরকারের প্রতিক্রিয়া একটি নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সরকারের সঙ্গে শিক্ষাবোর্ডের আলোচনা এবং পরীক্ষার্থীদের উদ্বেগ মোকাবেলা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।