কম্পিউটার (ইংরেজি: Computer) একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে গণনা, তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদন করতে পারে। কম্পিউটারকে প্রধানত চারটি অংশে ভাগ করা যায়: ইনপুট, আউটপুট, প্রসেসিং, এবং স্টোরেজ। এটি বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবন, কাজকর্ম, শিক্ষা, এবং বিনোদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কম্পিউটারের প্রধান উপাদানসমূহ:
১. ইনপুট ডিভাইস (Input Devices):
এটি এমন ডিভাইস যা ব্যবহারকারীর থেকে তথ্য বা ডেটা গ্রহণ করে।
উদাহরণ: কীবোর্ড, মাউস, স্ক্যানার, মাইক্রোফোন।
২. আউটপুট ডিভাইস (Output Devices):
এগুলি ব্যবহার করে কম্পিউটার প্রক্রিয়াকৃত তথ্য ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে দেয়।
উদাহরণ: মনিটর, প্রিন্টার, স্পিকার।
৩. সিপিইউ (Central Processing Unit):
এটি কম্পিউটারের মস্তিষ্ক হিসেবে কাজ করে এবং ইনপুট ডেটা প্রক্রিয়াজাত করে।
সিপিইউ মূলত দুটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত:
Arithmetic Logic Unit (ALU): গণনা এবং লজিক্যাল অপারেশন সম্পাদন করে।
Control Unit (CU): বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে তথ্য প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
৪. মেমোরি (Memory):
কম্পিউটারের তথ্য এবং ডেটা সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহৃত।
দুই ধরনের মেমোরি থাকে:
RAM (Random Access Memory): অস্থায়ী মেমোরি যেখানে প্রোগ্রাম এবং ডেটা সংরক্ষণ করা হয় যখন কম্পিউটার কাজ করে।
ROM (Read Only Memory): স্থায়ী মেমোরি যা কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম এবং হার্ডওয়্যার কনফিগারেশন সংরক্ষণ করে।
৫. স্টোরেজ ডিভাইস (Storage Devices):
দীর্ঘমেয়াদী তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস।
উদাহরণ: হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (HDD), সলিড স্টেট ড্রাইভ (SSD), ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ।
কম্পিউটারের প্রকারভেদ:
১. ডেস্কটপ কম্পিউটার (Desktop Computer):
এটি সাধারণত টেবিল বা ডেস্কের উপর ব্যবহৃত হয় এবং একটি CPU, মনিটর, কীবোর্ড, মাউসের সমন্বয়ে গঠিত।
এগুলি সাধারণত অফিস, বাসা, এবং স্কুলে ব্যবহৃত হয়।
২. ল্যাপটপ কম্পিউটার (Laptop Computer):
এটি একটি পোর্টেবল কম্পিউটার যা ডেস্কটপের তুলনায় সহজে বহন করা যায়।
ল্যাপটপে ব্যাটারি, ইনপুট-আউটপুট ডিভাইস, এবং প্রসেসিং ইউনিট একত্রে থাকে।
৩. সার্ভার (Server):
এটি একটি শক্তিশালী কম্পিউটার যা অন্য কম্পিউটার বা ডিভাইসকে পরিষেবা প্রদান করে।
সার্ভারগুলি সাধারণত ডেটা সেন্টার বা ব্যবসায়িক পরিবেশে ব্যবহৃত হয়।
৪. ট্যাবলেট এবং স্মার্টফোন:
এগুলি মিনি কম্পিউটারের মতো, যা পোর্টেবল এবং স্পর্শ সংবেদনশীল স্ক্রিন দিয়ে কাজ করে।
স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটগুলি মোবাইল কম্পিউটিংয়ের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
কম্পিউটারের ব্যবহার:
ব্যবসা: অফিসিয়াল কাজ, ডেটা বিশ্লেষণ, অ্যাকাউন্টিং, এবং যোগাযোগের জন্য।
শিক্ষা: ই-লার্নিং, গবেষণা, এবং ভার্চুয়াল ক্লাসরুম।
বিনোদন: গেমিং, মুভি দেখা, গান শোনা, এবং সোশ্যাল মিডিয়া।
চিকিৎসা: রোগীর তথ্য সংরক্ষণ, গবেষণা, এবং মেডিকেল ইমেজিং।
কম্পিউটার প্রযুক্তির এই বৈপ্লবিক উন্নয়ন আমাদের জীবনকে সহজ, দ্রুত এবং আরও কার্যকর করে তুলেছে।