Write an essay in Bangla on "পরিকল্পিত পরিবার, সুরক্ষিত মানবাধিকার"
মানুষের জীবন যাপনে পরিবারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার বিভিন্ন রকমের হতে পারে যেমন একক পরিবার, যৌথ পরিবার, বিচ্ছিন্ন পরিবার। ব্যক্তির সুষ্ঠু জীবন যাপন ও শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য দরকার পরিকল্পিত পরিবার। পরিকল্পিত পরিবার বলতে এমন এক পরিবারকে বোঝায় যেখানে পরিবারের সদস্য সীমিত এবং প্রত্যেকেরই মৌলিক অধিকার মিটিয়ে মানবাধিকার রক্ষা করা/ সুরক্ষিত হয়। আর একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে পরিকল্পিত পরিবার যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি মানবাধিকার ও গুরুত্বপূর্ণ ।
বাংলাদেশের জনসংখ্যার অন্যতম সমস্যা হলো অল্প বয়সে বিয়ে ও সন্তান ধারণ। পরিবার পরিকল্পনার সাথে সুরক্ষিত মানবাধিকারের যে ডাক আজকে এসেছে, তা কোনোভাবেই সার্থকতার মুখ দেখবে না যদি না বাল্যবিবাহ ঠেকানো যায়। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফি অ্যান্ড হেলথ সার্ভের (বিডিএইচএস) রিপোর্টে দেখা গেছে, ১৫-১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের মধ্যে শতকরা ৩১ ভাগ সন্তান জন্ম দিয়েছে বা গর্ভাবস্থায় আছে (শতকরা ২৫ ভাগ মা হয়েছে ও ৬ ভাগ গর্ভবতী)।
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। বর্তমানে জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৮ লক্ষ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭% (অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৮)। জনসংখ্যা বাংলাদেশের এক নম্বর সমস্যা। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পিত পরিবারের বিকল্প নেই । আমাদের দেশে পারিবারিক ও সামাজিক সদস্যদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়। আর যে কোন দেশে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হলে শিশুর মানসিক বিকাশ সুষম/পরিপূর্ণ হয়। অপরিকল্পিত পরিবারে সদস্যদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অনেক সময় ঝগড়া-বিবাদ হয়ে থাকে। অপরপক্ষে পরিকল্পিত পরিবারে সদস্যদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় থাকে এবং একে অপরের খোঁজ খবর নেয়। বাংলাদেশে নাগরিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিতকরণে তাই প্রাথমিক ধাপ হলো পরিকল্পিত পরিবার গড়ে তোলা ।
পরিকল্পিত পরিবারে লোকসংখ্যা সীমিত থাকায় মৌলিক চাহিদা মিটিয়ে সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি গড়ে ওঠে। আমাদের দেশে দেশজ সঞ্চয় ২৩.৬১% ও জাতীয় সঞ্চয় ২৮.০৭% (অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৮)। দেশের মানুষের সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি একদিকে জীবনের আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করে অন্যদিকে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। অন্যান্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের তুলনায় সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি বেশি। সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে পরিকল্পিত পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০১৮, এবারের প্রতিপাদ্য 'পরিকল্পিত পরিবার, সুরক্ষিত মানবাধিকার'। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর নারীরা জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণে আগ্রহী। বিশ্বের ২২২ মিলিয়ন নারী গর্ভধারণ এড়াতে চায় কিংবা দেরিতে গর্ভধারণ করতে চায়।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তারা কার্যকর পরিবার পরিকল্পনা সেবা পাচ্ছে না এবং সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রতিদিন প্রাণ হারান গড়ে ৮০০ নারী। সন্তান জন্মদানে সক্ষম ৩৮ লাখ বিবাহিত নারী কোন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন না, প্রতিবছর মোট গর্ভধারণের ৪৮ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২৭ লাখ হচ্ছে অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ, বছরে প্রায় ১২ লাখ ইচ্ছাকৃত/ আরোপিত গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী, প্রতি মিনিটে সারা পৃথিবীতে জন্মায় যে ২৫০ শিশু তার ৯ জন শুধু বাংলাদেশেই জন্মাচ্ছে। জনসংখ্যা প্রক্ষেপণ/বিশ্লেষণ অনুযায়ী ২০৫০-৫৫ সালের দিকে দেশের জনসংখ্যা স্থিতাবস্থায় পৌঁছাবে, যখন মোট জনসংখ্যা হবে প্রায় ২৩ কোটি। সুতরাং পরিবার পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে যে বিশাল কর্মযজ্ঞ সেখানে লোকবল ও অর্থবল সবই নিয়োগ করতে হবে উদারভাবে। এখানে উল্লেখ্য যে, পরিবার পরিকল্পনা বলতে এর পরিষেবা সমূহ, এ সংক্রান্ত নীতিমালা, প্রয়োজনীয় তথ্য, পরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণের মনোভাব, অভ্যাস, পদ্ধতি, অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ, নিরাপদ গর্ভপাত সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত।
পরিশেষে বলা যায় যে, কেবল পরিকল্পিত জনসংখ্যাই জনশক্তি। আর পরিবার পরিকল্পনা সেবা দেওয়া মানে আসলে মানবাধিকার সেবাই সমুন্নত রাখা। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে প্রতিটি গর্ভধারণ হবে কাঙ্খিত, প্রতিটি শিশুজন্ম হবে নিরাপদ, মাতৃমৃত্যু হবে রূপকথার গল্পে শোনা কোন হৃদয়বিদারক ঘটনা ।
দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা’ বিষয়ে একটি নাতিদীর্ঘ রচনা লিখুন।
উল্লেখিত বিষয়ে সংক্ষিপ্ত রচনা লিখুন: আইনের শাসন
‘করোনা ভাইরাস’ (কোভিড-১৯) রোগের লক্ষণ ও তার প্রাদুর্ভাব রোধে করণীয় বিষয়টির উপর একটি রচনা লিখুন।
Write an essay in Bangla on "বৈশ্বিক উষ্ণায় সমস্যা ও প্রতিকার।
আপনি আমাকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন, যেমনঃ
Are you sure to start over?