Job

Write an essay in Bangla on 'অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ভূমিকা'।

Created: 2 years ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago
Answer :

                                                                                                           অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ভূমিকা

যেকোনো দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। সার্বিক ব্যাংকিং খাতের সুস্বাস্থ্য একটি দেশের অর্থনীতির মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। কারণ ব্যাংকিং খাত ভালো থাকলেই কেবল বিনিয়োগ ত্বরান্বিত হয়, কমে বেকারত্ব। এর ফলে সামগ্রিক চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধিও বাড়তে থাকে। এভাবে দেশের অর্থনীতির আকারও বাড়তে থাকে। কাজেই ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রয়োজন সেজন্য ব্যাংকিং খাতকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। 

যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতির দুটি চলককে সর্বদাই একটি স্থিতিশীল (Stable) অবস্থায় থাকতে হয়। এর মধ্যে একটি হলো সুদের হার এবং অন্যটি হলো মুদ্রাস্ফীতি। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ বা ঝু-ঋণের পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমিয়ে এনে ব্যাংকিংখাতে স্থিতিশীলতা আনয়ন করতে হবে। কলমানি রেট ৩% থেকে ৪% এর মধ্যে রাখতে হবে এবং সুদের হার স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে রাখতে হবে যা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। 

প্রথমেই আসা যাক সুদের হার নিয়ে এই সুদের হারের সাথে দেশী ও বৈদেশিক বিনিযোগের (FDI) সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। সুদের হার এক অঙ্কে থাকলে বিনিয়োগ বেশি হয়। অর্থাৎ সুদের হার কমলে বিনিয়োগ বাড়ে। আর বিনিয়োগ বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়ে, বাড়ে সামগ্রিক চাহিদা (Aggregate Demand), বর্ধিত সামগ্রিক চাহিদা জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে যা অর্থনীতির উন্নয়নের পরিমাপক। এভাবে ব্যাংক ব্যবস্থা অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। 

এরপর আসবে মুদ্রাস্ফীতি। সামষ্টিক অর্থনীতির জনক জন মেনার্ড কেইন্সের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য Mild inflation ভালো। এজন্য তিনি ঐ দেশের GDP প্রবৃদ্ধির হারের সমান মুদ্রাস্ফীতি রাখার সুপারিশ করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন মুদ্রাস্ফীতি প্রণয়ন করে তখন এই ব্যাপারটি মাথায় রাখা উচিৎ। এছাড়া ব্যাংকিং খাতের আধুনিক পরিবর্তনের জন্য অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ, ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন সিআইবি, অনলাইন ব্যাংকিং, ই-কমার্স, ইআরপি, ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ, রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যাংকিংখাতকে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর খাত হিসেবে গড়ে তুলতে হবে যা সরাসরি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

০১. সমলা সংগ্রহ ও মূলধন গঠন উন্নয়নশীল দেশে অনেক সময় সপ্তাহযোগ্য মূলধন থাকা সত্ত্বেও বিক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকে। এসব দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংক মূলধন গঠন এবং সাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জনগণের অব্যবহৃত এবং উদ্বৃত সত্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন উৎপাদনশীল কাজে বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। একটি দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা মূলধনের ওপর নির্ভরশীল। উন্নয়নের জন্য যে মূলধন প্রয়োজন তা বেশিরভাগ দেশে নেই। এসব দেশের অনগ্রসরতার প্রধান কারণ মূলধনের মতো। মূলধন সৃষ্টির জন্য দরকার সঞ্চয়। আর এ সঞ্চয় সংগ্রহ করে বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে। 

০২. ঋণদান৷ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রহণকৃত আমানতের একটি অংশ আমানতকারীদের দাবি মেটানোর জন্য নিজের কাছে তারনা হিসেবে রেখে দেয় এবং বাকি অংশ ব্যবসায়ী, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও জনগণকে ঋণ হিসেবে প্রদান করে। এসব ঋণের উপর ব্যাংক নির্দিষ্ট হারে সুদ বা মুনাফা চার্জ করে থাকে। বিভিন্ন রকম জামানতের বিপরীতে বাণিজ্যিক ব্যাংকে ক্ষণ ও অগ্রিম জমাতিরিক ও নগদ ঋণ প্রদান করে থাকে। অবশ্য ব্যাংক অনেক ক্ষেত্রে জামানতহীন ঋণ প্রদান করে। থাকে এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে মূলধনজনিত সমস্যা দূর হয়ে থাকে। 

০৩. বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টির ব্যাংকিং ইতিহাসের প্রথম দিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নোট প্রচলন করতে পারলেও বর্তমানে এ দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংক চেক, হুন্ডি, বন্ড, ঋণপত্র, সিকিউরিটিজ, ড্রাফট, পে-অর্ডার ইত্যাদি বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে থাকে। এর ফলে লেনদেন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে গতিশীলতা সৃষ্টি হয়। যা ব্যবসা-বাণিজ্যের ইতিবাচক হিসেবে কাজ করে থাকে। 

০৪, অর্থের স্থানাস্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাংক ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে এক স্থান হতে অন্য স্থানে সহজে ও নিরাপদে অর্থ স্থানান্তরের সুযোগ দিয়ে থাকে। এমনকি ব্যবসায়ীদের টাকা এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর করে থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্য উ ব্যাংকগুলোর শাখা ও তাদের প্রতিনিধি এই সকল কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে। এ ধরনের কার্যক্রম দ্বারা ব্যবসায়ীদের আর্থিক ঝুঁকি থেকে চিন্তা মুক্ত করে। 

০৫. ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ বাণিজ্যিক ব্যাংককে কেন্দ্র করেই একটি দেশের কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য গড়ে ওঠে। এতে বৃদ্ধি পায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সম্ভব হয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কাজেই একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশেষ করে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দেশের শিল্প, ব্যবসা, কৃষি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তাদের কার্যাবলী সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। 

০৬. কৃষি উন্নয়নঃ বাণিজ্যিক ব্যাংক কৃষি উন্নয়নের জন্য কৃষকদের বিভিন্ন প্রকার ঋণ প্রদান করে থাকে। যেমনঃ খাদ্যশস্য ঋণ, অর্থকরী ফসল ঋণ, ফলের বাগানের জন্য ঋণ, গুদামজাতকরণের জন্য ঋণ, পল্লী ঘর-বাড়ি তৈরির জন্য ঋণ, খামার প্রকল্প ঋণ, ক্ষুদ্র হস্তচালিত শিল্প ঋণ, উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ঋণ ইত্যাদি। এতে একটি দেশের কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতি হয়। ফলে একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হয়। 

০৭. শিল্প উন্নয়নঃ বাণিজ্যিক ব্যাংক শিল্প উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। এই ব্যাংক শিল্পে দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদী মূলধন সরবরাহ, বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ, পণ্য বাজারজাতকরণ, পণ্যের মান উন্নয়ন, শিল্পকে আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণসহ শিল্প উন্নয়নের জন্য নানাভাবে সাহায্য ও সহায়তা করে থাকে। 

০৮. জীবন যাত্রার মান উন্নয়নঃ বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের আয়, বিনিয়োগ শু কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। ফলে মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ে। সর্বোপরি জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটে থাকে। পরিশেষে এ কথা বলা যায় যে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাণিজ্যিক ব্যাংকের অবস্থান অত্যন্ত সুদৃঢ়। দেশের কৃষি ও শিল্প উন্নয়নে বাণিজ্যিক ব্যাংক যেমন ভূমিকা রাখে তেমনি বিভিন্ন প্রতিনিধিত্বমূলক সেবা প্রদান করেও জনগণের জীবন যাত্রার মান উন্নত করে। তাই বাণিজ্যিক ব্যাংককে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন চিন্তা করা যায় না।

1 year ago

English

**'Provide valuable content and get rewarded! 🏆✨**
Contribute high-quality content, help learners grow, and earn for your efforts! 💡💰'
Content
Promotion