কম্পিউটারের সাহায্যে শব্দ প্রক্রিয়াকরণ করা হয় বলে একে ওয়ার্ড প্রসেসর বা শব্দ প্রক্রিয়াকারক বলে। ওয়ার্ড প্রসেসিং এর জন্য বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ প্রোগ্রাম পাওয়া যায়। কম্পিউটারের বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি ওয়ার্ড প্রসেসর প্যাকেজের নাম হলো-
১. মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড (Microsoft Word )
২. ম্যাকরাইট (Mac Write)
৩. ওয়ার্ড পারফেক্ট (Word Perfect )
৪. নোট প্যাড (Note Pad)
৫. ওয়ার্ড প্যাড (Word Pad)
৬. ওয়ার্ড স্টার (Word Star )
৭. পিএফএস : রাইট (PFS: Write) ইত্যাদি।
৮. ল্যাটেক্স (Latex )
প্রধানত লেখালেখির কাজ করার জন্য ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামকেই ওয়ার্ড প্রসেসর বা ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম বলে। স্ট্যান্ডার্ড ওয়ার্ড প্রসেসর হিসেবে কোনো স্বীকৃতি ওয়ার্ড প্রসেসর নেই। ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম হিসেবে ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রো প্রো ইন্টারন্যাশনাল এর তৈরি Word Star ছিল কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য এক চমকপ্রদ উপহার। Word Star দিয়ে কম্পিউটারে এত সহজে, স্বাচ্ছন্দে লেখালেখির কাজ করা যায় কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা কখনও তা ভাবতেই পারেনি। তখন শুধু স্ট্যান্ডার্ড নয়, Word Star-ই ছিল একমাত্র ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম।
বর্তমানে Microsoft word হলো বহুল ব্যবহৃত এবং ব্যাপকভাবে সমাদৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম। Microsoft word-এর জনপ্রিয়তার কাছে Windows বা Mac কোনো প্লাটফর্মে word Perfect টিকতে পারেনি। Microsoft word আইবিএম পিসি, Windows ও Mac অপারেটিং সিস্টেম উভয় প্লাটফর্মে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে ম্যাকিনটশ কম্পিউটারে Microsoft word প্রথমে চালু হয়। এরপর আইবিএম পিসি, উইন্ডোজ পরিবেশে Microsoft word এর ব্যবহার শুরু হয়। এখন আইবিএম পিসি, Windows Windows 95/98/2000/Me/XP/Vesta এবং Windows NT অপারেটিং সিস্টেমে ও ম্যাকিনটশ কম্পিউটারের ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম হিসেবে Microsoft Word এর ব্যাপক ব্যবহার। কাজেই Microsoft Word প্রোগ্রামকে বর্তমানের স্ট্যান্ডার্ড ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম বলে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে দেখা যাবে যে, Microsoft Word এর চেয়ে আরো উন্নত সফটওয়্যার চলে আসবে।
স্ট্যান্ডার্ড ওয়ার্ড প্রসেসর প্যাকেজ হতে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা
১. ওয়ার্ড প্রসেসর প্যাকেজ ব্যবহার করে সহজে কোনো ডকুমেন্ট তৈরি করা যায়।
২. মেমোরিতে লিপি সংরক্ষণ (save) এবং প্রয়োজনে সংরক্ষিত লিপির অনুলিপি (copy) প্রস্তুত করা যায়।
৩. মেমোরিতে সংরক্ষিত ডকুমেন্ট বা ফাইল প্রিন্টারের মাধ্যমে কাগজে প্রিন্ট করা যায় অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে প্রেরণ করা যায়।
৪. লেখার মাঝখানে নতুন কোনো লেখা সন্নিবেশিত করা যায় এবং অপ্রয়োজনীয় কোনো লেখা মুছে দেয়া যায় ।
৫. কোনো ফাইলে লেখার যে কোনো অংশ অন্য যে কোনো অংশে কপি বা স্থানান্তর করা যায় ।
৬. এক ফাইলের লেখা অন্য ফাইলে যে কোনো অংশে কপি বা স্থানান্তর করা যায়।
৭. বানান ভুল ও ব্যাকরণগত ভুল নির্ণয় ও সংশোধণ করা যায়।
৮. ডকুমেন্টের মাঝে যে কোনো শব্দের পরিবর্তে নতুন শব্দ প্রতিস্থাপন (Replace) করা যায়।
৯. ডকুমেন্টের মাঝে যে কোনো অংশ ব্লক করে Bold, Underline, Italic, Shadow ইত্যাদি করা যায়।
১০. ডকুমেন্টের যে কোনো শব্দ, বাক্য ও অংশের ফন্ট পরিবর্তন করা যায়।
১১. এক্ষেত্রে সর্টিং, সার্চিং, মেইলমার্জ, শর্ট হ্যান্ড ও গাণিতিক সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
১২. প্রয়োজনে ডকুমেন্টকে কম্পিউটার মেমোরিতে সংরক্ষণ করা যায় ।
১৩. প্রোগ্রাম ব্যবহারের মাধ্যমে লেখার বানান ভুল সংশোধন করা যায় ।
১৪. প্রিন্টারের সাহায্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কপি ছাপানো যায় ।
উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যের জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও ওয়ার্ডপ্রসেসর প্যাকেজের ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা অনেক। বর্তমানে আমাদের দেশে সাধারণ টাইপ রাইটারের বদলে ওয়ার্ড প্রসেসর এর ব্যবহারও দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে আমাদের দেশের মুদ্রণ শিল্পে এর ব্যবহার ব্যাপক রয়েছে।
আরও দেখুন...