SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ডিজিটাল ও তথ্য প্রযুক্তি - NCTB BOOK

সেশন ১    ছয়টি প্রশ্নের উত্তর খুঁজি

আচ্ছা, ছোটদের জীবনে বেশি সমস্যা নাকি বড়দের? আসলে ছোট বড় সবারই প্রতিদিন নানান রকম ঝামেলায় পড়তে হয়, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বড়রাই বড় সমস্যাগুলো আমাদের সমাধান করে দেন। কেমন হবে যদি আমরা ছোটরাও বড় বড় সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করি? বর্তমান সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে আমরা কিন্তু শুধু তথ্যের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে আমরা তথ্য এবং এর উৎস সম্পর্কে জেনেছি। সপ্তম শ্রেণিতে আমরা তথ্যের মাধ্যমে সুবিধা নেওয়ার জন্য তথ্যকে আরও গভীরভাবে জানার চেষ্টা করব।

তার আগে চল আমরা একটি গল্প পড়ি-

শিশিরের বাবা শিশিরের জন্য নতুন জুতা কিনে এনেছে না। শিশির ও তার ছোট বোন তৃণা বাবা- মায়ের সঙ্গে কাল শ্রীমঙ্গল বেড়াতে যাবে। অনেক দিন পর এত দূরে কোথাও বেড়াতে যাবে বলে শিশির অনেক খুশি, এর মধ্যে আবার সে উপহার পেয়েছে সুন্দর জলপাই রঙের জুতা। কাল সকালে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে ভাবতে ভাবতেই শিশির তার নতুন জুতা জোড়া পায়ে পরেই বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ল। গভীর রাতে হঠাৎ শিশিরের ঘুম ভেঙে গেলো ইঁদুরের কিচকিচ শব্দে। শিশির ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেল তার পড়ার রুমে যে ইঁদুরটি হঠাৎ হঠাৎ এক দৌড়ে এদিক থেকে ওদিক দৌড়াতে থাকে, সে ইঁদুরটি বিছানায় এসে শিশিরের নতুন জুতার সামনে চুপচাপ বসে আছে !

শিশির এই ইঁদুরের নাম দিয়েছিলো ‘ধূমকেতু’। ধূমকেতুকে গত এক সপ্তাহে শিশির একবারও দেখেনি, এতদিন পর ধূমকেতু এসে একেবারে ওর বিছানায় উঠে বসেছে ! শিশির বিরক্ত হলো খুব! একটু পর শিশিরকে অবাক করে দিয়ে ধূমকেতু বলে উঠল “ও শ্রীমঙ্গল যাচ্ছ তোমরা তাহলে?' শিশির একটু ভয় পেয়ে পা গুটিয়ে নিল কাথার নিচে। ধূমকেতু এখন ওভাবেই বসে আছে। এবার শিশিরের বিষ্ময় গিয়ে পৌঁছাল সপ্তম আকাশে, যখন কাথার ভেতর থেকে নতুন জুতা বলে উঠল ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, যাবে নাকি সঙ্গে? গেলে চল, শিশির তোমাকে তার পানির ফ্লাস্কে করে লুকিয়ে নিতে পারবে চাইলে, কী বল শিশির,পারবে না?” ভয়ে শিশিরের মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছিলনা, অনঘ পা ঝাড়া দিয়ে কোনোরকমে জুতা জোড়া খুলে নিতে চাইলো .....

এবার আমরা এই গল্প থেকে কিছু জিনিস বের করার চেষ্টা করব। প্রতিটি গল্প, ঘটনায় বা তথ্যে ৬টি মৌলিক বিষয় থাকে, এটিকে বলে ৬ক বা 5W1H - কে, কী, কোথায়, কখন, কেন, কীভাবে এই ছয়টি প্রশ্নের উত্তর এই গল্পে আছে কি না, আমরা খুঁজে বের করব। একটি করে উদাহরণ দেওয়া হলো, বাকিগুলো আমরা গল্প থেকে খুঁজে বের করব।

কে ?১. শিশির২.৩.
কী?১. ঘুমিয়ে পড়ল২.৩.
কখন?১. রাতে২.৩.
কোথায়?১. বিছানায়২.৩.
কেন?১. সকালে উঠতে হবে২.৩.
কীভাবে ?১. জুতা পড়ে২.৩.

যে কোনো তথ্য উপস্থাপন করার সময় এই ছয়টি প্রশ্নের উত্তর যখন আমরা একসঙ্গে তুলে ধরতে পারব তখন ঐ বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ বা পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া যাবে। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য প্রতি মুহূর্তে পেতে থাকি, এর কিছু কিছু তথ্য সব সময় সত্য হয় না। ভুলবশত আমরা যদি কোনো মিথ্যা তথ্য বিশ্বাস করে ফেলি তাহলে ছোট-বড় অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে, তাই যে কোনো তথ্য বিশ্বাস করা এবং সেই তথ্য অন্য একজনকে দেওয়ার আগে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে, তথ্যটি সঠিক। আর তথ্যটি সঠিক কি না, এটি বোঝার জন্য এই ৬ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবার আমরা যখন অন্য কাউকে তথ্য দেব, তখন লক্ষ্য রাখবো, আমার তথ্যের মধ্যে এই ডক এর উত্তর আছে কি না ৷

আগামী সেশনের প্রস্তুতি:

নিচের ছয়টি বৃত্তের প্রতিটির মাঝখানে তুমি কলম রাখবে, এরপর তোমার বন্ধু তোমার বইটি ঘোরাবে। তুমি যে কোনো একদিকে কলম নেবে। এভাবে ছয়টি বৃত্ত থেকে ছয়টি শব্দ বা বাক্যাংশ বের হবে। এই ছয়টি শব্দ বা বাক্যাংশ দিয়ে তুমি ‘শিশির ও তার জুতা' গল্পটি নিজের ইচ্ছেমতো বাকি অংশ লিখবে। শুধু লক্ষ্য রাখবে এই শব্দ বা বাক্যাংশগুলো যেন তোমার গল্পে থাকে । একইভাবে তুমিও তোমার পাশের বন্ধুকে তার ছয়টি শব্দ বের করতে সাহায্য করো।

উপরের ছয়টি বৃত্ত থেকে আমি যে ছয়টি শব্দ বা বাক্যাংশ পেয়েছি, তা নিচের ঘরে লিখব—

কে ?কোথায়?
কী?কেন?
কখন?কীভাবে ?

ভয়ে শিশিরের মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছিলনা, শিশির পা ঝাড়া দিয়ে কোনোরকমে জুতা জোড়া খুলে নিতে চাইলো...

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

**এই পৃষ্ঠায় পুরো গল্প জায়গা না হলে একটি আলাদা কাগজে গল্পটি লিখে ওই কাগজের যেকোনো এক পাশে আঠা দিয়ে এই পৃষ্ঠার একপাশে আমরা যুক্ত করে দিতে পারি।

 

সেশন ২ - উপস্থিত বক্তৃতার মাধ্যমে সমস্যা নির্ধারণ

গল্প লেখার মাধ্যমে আমাদের জানা হয়ে গেল কীভাবে ৬ক এর মাধ্যমে একটি তথ্য, গল্প বা ঘটনাকে পূর্ণাঙ্গভাবে উপস্থাপন করা যায়। আমাদের আগামীর জীবন হবে অনেক তথ্যনির্ভর। তাই তথ্যকে সঠিকভাবে বুঝতে পারা এবং উপস্থাপন করতে পারা খুবই জরুরি। আজকে আমরা ৬ক এর মাধ্যমে কোনো একটি সমস্যাকে পূর্ণাঙ্গরূপে উপস্থিত বক্তৃতার মাধ্যমে তুলে ধরব।

দল গঠন: শ্রেণিকক্ষে আমরা দশটি দলে বিভক্ত হয়ে যাব। দশটি দল দশটি আলাদা বিষয় নিয়ে বক্তৃতা প্রস্তুত করব, দলের যেকোনো একজন বক্তৃতা শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করব।

বিষয় নির্বাচন: শিক্ষক আমাদের দশটি দলকে সাম্প্রতিক সময়ের দশটি বিষয় দিয়ে দেবেন, শিক্ষকের দেওয়া বিষয়টি আমরা দলে আলোচনা করে একটি বক্তব্য তৈরি করব। শিক্ষকের দেওয়া বিষয়ের বাইরে আমাদের নিজেস্ব কোনো পছন্দের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকলে সেটিও আমরা শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের বক্তৃতার বিষয় হিসেবে নিতে পারি।

বক্তৃতার পাণ্ডুলিপি তৈরি: আমাদের দল বক্তৃতার বিষয় হিসেবে যে সমস্যাটি নিয়েছি, সেটি উপস্থাপনের জন্য দলের সবার মতামত ও আলোচনার ভিত্তিতে আমরা একটি পাণ্ডুলিপি বা স্ক্রিপ্ট তৈরি করব। আমাদের মনে রাখতে হবে, সমস্যাটি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ একটি চিত্র যেন আমাদের বক্তৃতায় তুলে ধরতে পারি, এ ক্ষেত্রে আমাদের পাণ্ডুলিপিতে ৬ক এর উত্তর পাওয়া যায় কি না, তা একটু যাচাই করে নেব।

উপস্থিত বক্তৃতা শেষে দল গঠন ও সমস্যা চিহ্নিত: আমরা আমাদের আশপাশের সাম্প্রতিক কোনো সমস্যা নির্বাচন করে সে সমস্যার ‘কারণ' এবং ‘কোনো আচরণ পরিবর্তন' করে সেই সমস্যা সমাধান করা যায়, তা তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে খুঁজে বের করব। কাজটি দলীয়ভাবে করতে হবে।

অর্থাৎ আমাদের কাজ তিনটি -

* একটি সাম্প্রতিক সমস্যা নির্ধারণ; 

* তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ‘সেই সমস্যাটি কেন হয়' তার কারণ খুঁজে বের করা; 

* আমাদের আচরণের মধ্যে কি পরিবর্তন আনলে সে সমস্যাটি সমাধান করা সম্ভব, তা খুঁজে বের করা।

আমরা দুটি পদ্ধতিতে তথ্য খুঁজে বের করব,

* জরিপের মাধ্যমে আশপাশের বন্ধু, বড় ভাইবোন, অভিভাবক, শিক্ষক বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ;

* পত্রিকা, টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট বা অন্যান্য মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ।

সুতরাং আমাদের এমন সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে, যেটি সম্পর্কে আশপাশের মানুষের জানা থাকবে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও এই সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। আমরা আমাদের উপস্থিত বক্তৃতার বিষয়গুলো থেকেও আমাদের বিষয় নির্বাচন করতে পারি।

বিষয় নির্বাচন:

আমাদের দলের নাম 
আমরা যে বিষয়টি নিয়ে কাজ করব 

আমার দলের সদস্যদের নাম

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেশন ৩ - জরিপের মাধ্যমে সমস্যার পেছনের কারণ ও সমাধান অনুসন্ধান

আমরা আমাদের নির্ধারণ করা সমস্যাটির পেছনের কারণ খুঁজে বের করে এর সঠিক সমাধান কী হতে পারে সেটিও বের করার চেষ্টা করব। আমরা যে সমাধানটি পাব, সে সমাধানটি সবাইকে জানানোর জন্য একটি সচেতনতামূলক কনটেন্ট তৈরি করব এবং সেমিনারে উপস্থাপন করব। সবার আগে আমাদের একটু বুঝে নিতে হবে, জরিপ ব্যাপারটি কী!

মনে করি, আমি একটি সমস্যা নিয়ে অনুসন্ধান বা তথ্য সংগ্রহ করতে চাই, আমার সমস্যাটি হলো- ‘মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস কমেছে, নাকি বেড়েছে তা অনুসন্ধান'। এখন আমি অনুসন্ধান করতে চাই বা খুঁজে বের করতে চাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়ার কারণ কী'। এটি খুঁজে বের করার জন্য একটি পদ্ধতি হতে পারে জরিপ। আমি মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং তাদের শিক্ষকদের প্রশ্ন করে এর কারণ খুঁজে বের করতে পারি।

অর্থাৎ, কোনো একটি নির্দিষ্ট সমস্যা সম্পর্কে সে | সমস্যাটির সঙ্গে পরিচত/সম্পর্কিত ব্যক্তিদের | মতামত, দৃষ্টিভঙ্গি, আচরণ ইত্যাদি কিছু ধারাবাহিক প্রশ্নের মাধ্যমে খুঁজে বের করার কৌশল বা পদ্ধতি হলো জরিপ।

জরিপের প্রশ্নের ধরন

জরিপের প্রশ্নের ধরন বিভিন্ন রকম হতে পারে, আমরা মূলত দুই ধরন সম্পর্কে জানব এবং আমাদের নির্ধারিত সমস্যাটির কারণ এবং সমাধান অনুসন্ধানের জন্য এই দুই ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে একটি জরিপ প্রশ্নপত্র তৈরি করব-

১. বর্ণনামূলক 

২. বহুনির্বাচনী

চলো আমরা উদাহরণের মাধ্যমে জরিপের প্রশ্নের ধরনগুলো আরও বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করি।

বর্ণনামূলক প্রশ্ন -

প্রশ্ন: মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় আগ্রহী করতে কী করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?

উত্তর………………………………………………………………………………..

নৈর্ব্যক্তিক/ বহুনির্বাচনী প্রশ্ন-

প্রশ্ন: আপনি কি পাঠ্যপুস্তক ব্যতিত নিয়মিত অন্য কোনো বই (গল্পের বা অন্যান্য) বই পড়েন ?

ক. হ্যাঁ                খ. না             গ. মাঝে মাঝে

লক্ষ্য রাখব আমরা সমস্যটির যে সমাধান খুঁজছি, তা হলো আমাদের আচরণের পরিবর্তনের সমাধান। যেমন: সমস্যা যদি হয় ‘পানি অপচয়’ আমার সমাধান হয়তো এ রকম হতে পারে, ‘দাঁত ব্রাশ করার সময় পানির কল বন্ধ রাখতে হবে'। অথবা সমস্যা যদি হয় ‘বৃক্ষ নিধন' তাহলে সমাধান হতে পারে, ‘প্রতিটি শিশু জন্মালে তার নামে পাঁচটি করে গাছ লাগানো'। অর্থ্যাৎ আমরা এমন সমস্যা নির্ধারণ করব যা আমাদের আচরণের পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।

আমার দলের নির্ধারিত সমস্যার কারণ অনুসন্ধান ও সমাধান খুঁজতে নিজেদের জন্য জরিপের প্রশ্ন তৈরি করি-

এবার আমরা উপরের দুই ধরনের প্রশ্নের পদ্ধতি মাথায় রেখে দলের সবাই মিলে নিজেদের জরিপের জন্য কমপক্ষে দশটি প্রশ্ন তৈরি করব। জরিপের প্রশ্ন তৈরি হয়ে গেলে নিচের ঘরে প্রশ্নগুলো লিখে নিতে পারি, অতিরিক্ত কাগজের দরকার হলে কিছু প্রশ্ন খাতায় লিখে এই বইয়ের সমান করে কেটে এখানে কাগজটি আঠা বা পিন দিয়ে যুক্ত করে দেব।

১।

 

২।

 

৩।

 

৪।

 

৫।

 

৬।

 

৭।

 

৮।

 

৯।

 

১০।

 

প্রশ্ন তৈরি হয়ে গেলে আমরা এই জরিপ প্রশ্নপত্রটি অনলাইন জরিপ ফর্মের রূপে অনলাইন জরিপে রূপান্তর করব। ইন্টারনেটে বেশ কিছু জরিপ ওয়েবসাইট এবং অ্যাপলিকেশন রয়েছে, যেগুলো আমরা ব্যবহার করতে পারব। দলের সবাই মিলে বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ব্যবহার করে শিক্ষকের সহায়তায় এই কাজটি করতে পারি। ফর্ম বানানো হয়ে গেলে ২০ জনকে এই ফর্মটি পূরণ করার জন্য পাঠাব। এই ২০ জন হবে আমার নির্ধারিত সমস্যাটির সাঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তি।

কোনো দলের যদি বিদ্যালয় বা বাড়িতে কোথাও ইন্টারনেট না থাকে, সেক্ষেত্রে তারা কাগজে সুন্দর করে গুছিয়ে ফর্মটি হাতে লিখবে। আমরা যেহেতু এই জরিপ ২০ জনকে পাঠাব, তাই ফর্মটির ২০টি অনুলিপির প্রয়োজন হবে। তাই আমরা দলের সবাই কাজটি ভাগ করে নেব।

অনলাইন জরিপটি তৈরি করার জন্য যে যে ফ্রি টুলস ব্যবহার করা যেতে পারে, তার কয়েকটি নিচে দেওয়া হলো—

১. গুগল ফর্ম (Google Form)

২. সার্ভেমাঙ্কি (Survey Monkey )

৩. মাইক্রোসফট ফর্ম (Microsoft Form)

অনলাইন জরিপ ফর্ম যেমন হয়ে থাকেঃ

১. ‘Name of Form' এর উপর ক্লিক করলে আমি আমার ফর্ম-এর শিরোনাম দিতে পারব।

২. ‘Form Description' এ আমার এই জরিপটি কি নিয়ে তা সংক্ষেপে লিখব।

৩. ‘Email” এ আমার নিজের বা অভিভাবকের বা শিক্ষকের ইমেইল ঠিকানা দিব, এই ইমেইলেই পুরনকৃত ফর্মগুলো জমা            হবে।

8. ‘Untitled Question' ক্লিক করে আমি আমার প্রশ্নটি এখানে লিখব। কোন কোন ফর্ম এ ‘+' এ রকম যোগ চিহ্ন থাকে,               সেখানে ক্লিক করেও একটি একটি করে প্রশ্ন লেখা যাবে।

৫. এরকম V ত্রিভূজটার মধ্যে ক্লিক করে আমরা নির্দেশনা দিয়ে দিতে পারব আমার প্রশ্নটি কী ধরনের। এটি ‘নৈর্ব্যক্তিক বা            Multiple Choice’ নাকি ‘বর্ণনামূলক প্রশ্ন বা Short answer'

৬. নৈর্ব্যক্তিক ধরনের প্রশ্ন হলে আমার সম্ভাব্য উত্তর বা option দিয়ে দিতে হবে. একটি option লিখে Enter চাপলেই                  আরেকটি উত্তর লেখার জায়গা হয়ে যাবে।

৭. ‘Required’ অর্থ হচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তর আমার অবশ্যই প্রয়োজন। এ ছাড়া ‘** স্টার চিহ্ন দিয়েও একই ব্যাপার বোঝানো          হয়।

৮. ফর্ম সম্পূর্ণ তৈরি করা হয়ে গেলে ‘Send’ এ ক্লিক করে আমি যাদের কাছে তথ্য জানতে চাই, তাদের এটি পাঠাব। এটি               পাঠাতে তাদের ইমেইল ঠিকানা আমার প্রয়োজন হবে।

 

 

সেশন ৪ - আমাদের নির্ধারিত সমস্যার কারণ ও সমাধান কি অন্য কোথাও থাকতে পারে

আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে জেনেছিলাম, তথ্যের উৎস প্রধানত দুই ধরনের, মানবীয় ও জড় উৎস। মানবীয় (ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য) উৎস থেকে আমাদের তথ্য সংগ্রহ চলছে। তোমরা নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে অনলাইন ফর্ম তৈরি করে ২০ জনকে পাঠিয়ে দিয়েছ, অথবা হাতে লিখে ২০ জনের কাছ থকে জরিপের প্রশ্ন পূরণ করা চলছে। এবার আমরা জড় উৎস থেকে আমাদের সমস্যা সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় কি না, খুঁজে দেখব।

যেসব জড় মাধ্যম থেকে সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য (যথার্থ) তথ্য পাওয়া যেতে পারে, তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে গণমাধ্যম। ‘গণমাধ্যম' শব্দটি নিশচয়ই আমরা আগেও শুনেছি, তাই না? প্রচারের ধরনভেদে গণমাধ্যমের আবার বিভিন্ন ভাগ রয়েছে—

১. মুদ্রণ মাধ্যম – পত্রিকা, ম্যাগাজিন, বই ইত্যাদি

২. ইলেকট্রনিক মাধ্যম – রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি

৩. ইন্টারনেট বা নিউ মিডিয়া – ওয়েবসাইট, অনলাইন পত্রিকা, অনলাইন টেলিভিশন ইত্যাদি।

আজকে আমরা একটি খেলা খেললে কেমন হয় বলতো ! উপরে তিন ধরনের যে গণমাধ্যমের নাম দেখতে পাচ্ছি, সেগুলোর নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। আমাদের শিক্ষক এক বাক্যে একটি করে বৈশিষ্ট্য বলবেন আর একটি বল আমাদের যেকোনো একজনের দিকে ছুড়ে মারবেন, যার দিকে বলটি মারা হলো সে বলটি নিয়েই শিক্ষক কোনো মাধ্যমটির বৈশিষ্ট্য বলছেন, তার নাম বলব। আমরা সবাই দাঁড়িয়ে খেলাটি খেলব। উত্তর সঠিক হলে বসে পড়ব, ভুল হলে দাঁড়িয়ে থাকব এবং বলটি আবার শিক্ষকের কাছে ফেরত দেব।

আমরা এবার আমাদের সমস্যাটি সম্পর্কে কোনো মাধ্যমে কোনো তথ্য আছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। আমাদের সমস্যা সম্পর্কে তথ্য খুঁজতে আমরা উপরের যেকোনো এক বা দুই ধরনের মাধ্যম ব্যবহার করতে পারি। শিক্ষক আমাদের কোনো পত্রিকা, কিংবা বই দেবেন সেখান থেকে আমরা আমাদের নির্ধারিত সমস্যা সম্পর্কে কিছু খুঁজে পাই কি না, দেখব। শিক্ষক আমাদের ইন্টারনেটের মাধ্যমেও খুঁজতে সহায়তা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আমরা শিক্ষকে বলে দেব আমাদের সমস্যাটি খুঁজতে কী কী মূল শব্দ (Key Word) দিয়ে খুঁজতে হবে (সার্চ দিতে হবে)।

কোনো বিদ্যালয়ে যদি পত্রিকা, ম্যাগাজিন, বই, রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট এমন কিছু না থাকে, তাহলে আমরা আমাদের শ্রেণির কিংবা অন্য কোনো শ্রেণির অন্য কোনো বই যেমন – ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, শিল্প ও সংস্কৃতি, বাংলা যে কোনো বইয়ে আমাদের সমস্যা সম্পর্কে কোনো তথ্য আছে কি না, খুঁজে বের করার চেষ্টা করব।

জড় উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে আমরা কিছু ব্যাপার লক্ষ্য রাখব –

১. তথ্যটি কত তারিখে প্রচার হয়েছে। (কারণ, সময়ের ব্যবধানে আজকের আপাত দৃষ্টিতে কোনো সত্য তথ্য আগামীকাল অসত্য প্রমাণ হয়ে যেতে পারে। যেমন: বাংলাদেশের মোট বিভাগ ৭টি। এটি ২০১৪ সাল পর্যন্ত সঠিক তথ্য হলেও ২০১৫ সালের জন্য এটি সঠিক তথ্য নয়, কারণ ২০১৫ সালে ময়মনসিংহকে নতুনভাবে বিভাগ ঘোষণা করা হয়) 

২. যতটা সম্ভব সাম্প্রতিক তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করব। 

৩. কোনো নিউজের হেডলাইন বা শিরোনাম দেখেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নেব না, পুরো খবর পড়ব। 

৪. কোনো মাধ্যমে একটি সংবাদ দেখার পর একই Key Word দিয়ে আবার সার্চ দেব এবং যাচাই করব, অন্য মাধ্যমও একই সংবাদ দিচ্ছে কি না (ইন্টারনেট এর সুবিধা থাকলে)। 

৫. পত্রিকা বা টেলিভিশনের লোগো দেখেই বিশ্বাস করে ফেলবনা সংবাদটি ঐ পত্রিকার বা টেলিভিশনের। যাচাই করার জন্য ঐ পত্রিকা বা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে যাব। 

৬. আমি যে প্রতিষ্ঠানের তথ্য নিতে চাই, সেই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে যাব। লক্ষ্য রাখব হাইপারলিংকটি ঠিক আছে কি না। যেমন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ- এর কোন ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে চাইলে হাইপারলিংকটি হবে এ রকম - http://www. - nctb.gov.bd/। অনেক সময় কেউ যদি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ- এর নামে কোনো ভুল প্রচারণা করতে চায়, তাহলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ- এর ওয়েবসাইটের মতো নকল একটি ওয়েবসাইট তারা বানিয়ে রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে হাইপারলিংকটি দেখতে অন্যরকম হতে পারে। সেই লিংকে কোনো একটি/দুটি অক্ষর এলোমেলো থাকবে, যেমন, C এর জায়গায় n, b এর যায়গায় d, o এর জায়গায় i এরকম এলোমেলো করে অক্ষরগুলো থাকবে, যা হয়তো আমাদের সহজে চোখে পড়বে না। তাই তথ্য নেওয়ার আগে লিংকটি ঠিক আছে কি না, তা দেখে নেওয়াটা জরুরি।

আগামী সেশনের প্রস্তুতি

আজকে শ্রেণিকক্ষে আমরা কিছু জড় উৎস থেকে আমার দলের নির্ধারিত বিষয়ের উপর তথ্য খোঁজার চেষ্টা করলাম। বাড়িতে গিয়ে আমরা আরও কিছু জড় উৎস থেকে একই বিষয়ে তথ্য খোঁজার চেষ্টা করব। যে তথ্য পেলাম, তা নিচের ঘরে লিখব। অতিরিক্ত কাগজের দরকার হলে, খাতায় লিখে আমরা এই বইয়ে এই পৃষ্ঠার মাঝখানে আঠা দিয়ে যুক্ত করে দেব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেশন ৫ - তথ্য সমন্বয়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চিহ্নিত করা

আমরা মানবীয় ও জড় এই দুই উৎস থেকেই তথ্য সংগ্রহ করেছি। কিন্তু তথ্যগুলো আসলে বিচ্ছিন্ন বা কিছু সংখ্যা এবং বর্ণনা। একটি সিদ্ধান্তে পৌছানোর জন্য এই সংখ্যা বা বর্ণনা যথেষ্ট নয়। তাই আমরা তথ্যগুলোকে বিশ্লেষণ করে এর থেকে মূল তথ্যটি খুঁজে বের করব।

যেমন আমাদের সমস্যটি যদি হয় ‘মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা/অভ্যাস কমে গেছে' এবং আমার প্রশ্নটি যদি হয়, ‘আপনি কি পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য কোনো বই পড়েন – ক. হ্যাঁ খ. না'। এখন আমাকে বিশ্লেষণ করে বের করতে হবে যে কত শতাংশ উত্তরদাতা ‘হ্যাঁ’ বলেছে আর কত শতাংশ উত্তরদাতা ‘না' বলেছে।

আমরা নিশ্চয়ই ট্যালির অঙ্ক করেছিলাম তাই, না? আমরা এবার ট্যালির মাধ্যমে বের করব কয়জন ‘হ্যাঁ’ বলেছে এবং কয়জন ‘না' বলেছে। এবার এই সংখ্যাকে শতাংশে রূপান্তরিত করব।

উদাহরণ –

প্রশ্ন: আপনি কি পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য কোনো বই পড়েন      ক. হ্যাঁ    খ. না

- “হ্যাঁ' উত্তর দিয়েছে = ৫ জন

- ‘না’ উত্তর দিয়েছে = ১৫ জন

- মোট উত্তরদাতা = ২০ জন 

'হ্যাঁ' উত্তরকে শতাংশে রূপান্তর =  ৫জন x ১০০ ÷ ২০ জন = ২৫%

'না' উত্তরকে শতাংশে রূপান্তর = ১৫ জন × ১০০ ÷ ২০ জন =৭৫%

তাহলে, আমরা একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারলাম, ৭৫% মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী পাঠ্যবইয়ের বাইরে কোনো বই পড়ে না ।

আমরা আজ ২০ জনের হিসাব করছি বলে খুব সহজে ট্যালির মাধ্যমে হাতে গুনে গুনে হিসাবটা বের করে ফেললাম। কিন্তু যদি আমাদের ১০০ বা ১০০০ জনের জরিপের ফলাফল বের করতে হয়? বড় জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করার জন্য রয়েছে কম্পিউটার সফটওয়্যার বা স্প্রেডশিট ।

কম্পিউটার বা সফটওয়্যারকে আমাদের ভাষা বোঝাতে হয় কোড দিয়ে। ধরি, হ্যাঁ এর কোড হচ্ছে ‘ক’, না এর কোড হচ্ছে “খ”। আর ঠিকঠাক ফর্মুলা লিখতে পারলে মুহূর্তে বের হয়ে যাবে কঠিন কঠিন সব হিসাব। এটি কীভাবে কাজ করে তা নিচের টেবিলটি দেখে বোঝার চেষ্টা করি।

বাঁয়ে থেকে ডানে ঘরগুলোকে বলে = রো (Row) বা সারি

উপর থেকে নিচে ঘরগুলোকে বলে = কলাম (Column)

আর কলাম ও রো এর মাধ্যমে যে ছোট ছোট ঘরগুলো তৈরি হয়েছে, এগুলোকে বলে = সেল (Cell)

এখানে নীল রঙের ছোট Cell টার নাম C5, কেন এর নাম C5 হয়েছে বলতে পারো?

উত্তর:……………………………………………………………………

Column B তে আমার প্রথম প্রশ্ন থেকে আসা সব উত্তর নিচে নিচে Row তে টাইপ করব আবার Column C তে দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরগুলো লিখব, এভাবে আমার যতগুলো প্রশ্ন থাকবে তার উত্তর পাশাপাশি কলামে লিখব। তারপর সর্বডানের কলাম থেকে আমরা ফর্মুলা লিখব। বিদ্যালয়ে বা হাতের কাছে কম্পিউটার থাকলে আমরা বিভিন্ন ফর্মুলা বসিয়ে অনুশীলন করতে পারি এটি কীভাবে কাজ করে, এতে করে বড় হলে আমাদের কাজ করা সহজ হয়ে যাবে।

এভাবে আমরা আমাদের সবগুলো ‘বহুনির্বাচনী'— ধরনের প্রশ্নের উত্তরের শতাংশ বের করে ফেলতে পারব।

বর্ণনামূলক যে প্রশ্ন ছিল, সেগুলোকেও আমরা সমন্বয় করব, কিন্তু সংখ্যায় রূপান্তর করতে পারবনা। তাহলে সেগুলোর সমন্বয় কীভাবে করা সম্ভব! আমরা ঐ প্রশ্নগুলোর সবগুলোর উত্তরের মধ্যে কোনো মিল এবং অমিল খুঁজে পাই কি না, খুঁজে বের করব এবং সে অনুযায়ী একসঙ্গে লিখব। উদাহরণ,

‘মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেন বই পড়ার অভ্যাস কমে গেছে বলে আপনার মনে হয়?'

এই প্রশ্নের উত্তরে, চারজন উত্তরদাতা বলেছেন, ‘গল্পের বই এর দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী পছন্দের বই কিনতে পারছে না, তাই তাদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠছে না, এইজন্য অনেক বেশি লাইব্রেরি গড়ে ওঠা প্রয়োজন'। অন্যদিকে দুজন উত্তরদাতা বলেছেন, ‘বিদ্যালয়ের পড়ার চাপ এত বেশি, যার কারনে শিক্ষার্থীরা বই পড়ার সময় পায় না' তবে অন্য একজন কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেছেন, তিনি মনে করেন ‘ভিডিও গেমসের আসক্তি'র কারণে পড়ার অভ্যাস কমে গেছে,

দলে কাজ করে আমাদের তথ্যগুলো শতাংশে এবং বর্ণনায় সমন্বয় করি এবং জড় মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যও একইভাবে যুক্ত করব।

আগামী সেশনের প্রস্তুতি

দলীয়ভাবে আমাদের তথ্য সমন্বয় করা শেষ হলে আমরা সবাই নিজের খাতায় প্রাপ্ত তথ্যগুলো লিখে নেব এবং এর উপর ভিত্তি করে আমরা এককভাবে একটি রিপোর্ট তৈরি করব।

রিপোর্ট যেভাবে লেখা যেতে পারে: (টাইপ করে বা হাতে লিখে)

• ভূমিকা 

• সমস্যাটি বাছাই এর কারণ 

• যেভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছি 

• যে তথ্য পেয়েছি 

• আমরা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি – ১. সমস্যার কারণ ২. সমস্যার সমাধান 

• সমাধানটি আমরা যেভাবে কাজে লাগাব।

*** রিপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে প্রথমে আমাদের অভিভাবককে পড়ে শোনাব, তারপর আগামী দিন শিক্ষকের কাছে জমা দেব।

 

 

সেশন ৬- তথ্যের সংরক্ষণ

আমাদের রিপোর্ট তৈরির কাজ কি শেষ, নাকি এখনও চলছে? আরেকটু যদি সময় প্ৰয়োজন হয়, তাহলে নেওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে আমরা আজকে আরেকটি নতুন বিষয় নিয়ে বোঝার চেষ্টা করব। সেটি হচ্ছে ‘তথ্য সংরক্ষণ’। সংরক্ষণ মানে হচ্ছে ‘রক্ষা করা' বা ‘জমিয়ে রাখা' তাই না? আচ্ছা অনেক অনেক বছর আগে তথ্য কীভাবে রক্ষা করা হতো আমরা কী পড়েছি ইতিহাসে?

পাথরে খোদাই করে, গুহায় বিভিন্ন সাংকেতিক ভাষায় লিখে, কিংবা গাছের গুঁড়িতে লিখে।

আমরা বর্তমানে কীভাবে তথ্য সংরক্ষণ করি তুমি কি জানো?

জানলে তোমার উত্তর লেখ –

১।……………………………………………………………………………………………………

২।……………………………………………………………………………………………………

৩।……………………………………………………………………………………………………

আচ্ছা কোনো তথ্য যদি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়, তখন আমাদের শিক্ষকরা কীভাবে এটিকে সংরক্ষণ করেন?

কাগজ বা প্লাস্টিকের ফাইল তৈরি করে আলমারিতে রাখেন;

কম্পিউটারে টাইপ করে কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে রাখেন।

আলমারি কিন্তু কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কাগজ পোকা কাটতে পারে, কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কও নষ্ট হয়ে যেতে পারে, মোবাইল মেমরি কার্ড যেখানে তথ্য জমা থাকে, সেটিও নষ্ট বা হারিয়ে বা চুরি হয়ে যেতে পারে। তাহলে এমন কিছু কি আছে যেখানে তথ্য অনেক বেশি নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করা যায়?

হ্যাঁ, এটিকে বলে ক্লাউড!

ক্লাউডের বাংলা হচ্ছে ‘মেঘ’! তাহলে কি মেঘের মধ্যে তথ্য থাকে?

আসলে তা নয়, বিশ্বের অনেক বড় বড় ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের আছে অনেক বড় বড় ডাটা সেন্টার বা তথ্যকেন্দ্র ! সেখানে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের সকল তথ্য জমা হতে থাকে। আমরা যখন নিজেদের অনলাইন আইডি খুলব, তখন আমাদের তথ্যও সেখানে জমা হয়ে যাবে, আর আমরা চাইলে আমাদের সেই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে পৃথিবীর যেখান থেকে ইচ্ছে যেকোনো কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে সেই অ্যাকাউন্ট লগ ইন করে আমার জমিয়ে রাখা তথ্য দেখতে পারব, পরিবর্তন করতে পারব এবং ব্যবহার করতে পারব।

তবে এটিও সত্যি, যদি অন্য কেউ আমার সেই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনে ফেলে, তাহলে আমার অ্যাকাউন্ট সে নিয়ে নিতে পারবে, আর আমার সকল তথ্যও নিয়ে নিতে পারবে! অনেকটা আলমারির চাবি অপ্রত্যাশিত কারও হাতে চলে যাওয়ার মতো!

আচ্ছা, তুমি যদি কোনো অ্যাকাউন্ট খোলো, সবার আগে কোনো তিনটি তথ্য তোমার সেই অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে চাও? (তথ্য হতে পারে কোলো লেখা, রিপোর্ট, গান, ছবি, ভিডিও, বিদ্যালয়ের কোনো প্রজেক্ট)—

১।

২।

৩।

এবার ভেবে দেখি তো এই তথ্যগুলো যদি অন্যের হাতে চলে যায় তাহলে আমার কোনো ক্ষতি হতে পারে কি না !

আচ্ছা, আমাদের কি মনে আছে আমরা আমাদের নির্ধারিত সমস্যার সমাধান নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করব?

তাহলে আমাদের আজকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কোনো সমাধানটি নিয়ে সেমিনারের জন্য সচেতনতামূলক কনটেন্ট তৈরি করব। তথ্যের মাধ্যম আমরা হয়তো অনেক সমাধান পেয়েছি, তবে ওখান থেকে আমরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমাধানটি নিয়েই কাজ করব।

নিজের দলের সমস্যা ও সমাধানটি এখানে লিখি –

দলের নাম:……………………………………………………………………………………………………………….

সমস্যা ছিল………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

যে সমাধানটি আমাদের সচেতনতামূলক কার্যক্রমে ব্যবহার করতে চাই:

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

 

 

সেশন ৭ - সমাধান জানাব সেমিনারে

শৈবাল আজকে বিদ্যালয় আসার সময় দেখল অনেক মেঘ করেছে, ও ক্লাসে এসে তার বন্ধুদের বলল ‘জানিস আজকে বৃষ্টি হবে'। শৈবাল তার বন্ধুদের তার চারপাশের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করে একটি তথ্য দিল। এটি হচ্ছে তার মতামত । একই তথ্য যদি শৈবাল একটি মেঘের ছবি তুলে, সেখানে তার নাম ও তারিখসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস লিখে কোনো একটি মাধ্যমে প্রচার করে তার বন্ধুদের জানাত তাহলে আমরা সেই তথ্যটিকে বলতে পারতাম শৈবালের তৈরি ‘বিষয়বস্তু বা কনটেন্ট'।

মালা গতকাল মায়ের সঙ্গে বাজারে গিয়েছিল, একটি দোকান থেকে মালা কলম কিনতে গিয়ে দেখল, দুটি কলম কিনলে দোকানি তাকে একটি কলম ফ্রি দিয়েছেন। মালা খুব খুশি হলো আর তার সব বন্ধুদের খবরটি জানিয়ে দিল। মালা তার অভিজ্ঞতা থেকে এই তথ্য তার বন্ধুদের দিল। মালা যদি বাজারে একটি পোস্টারে ওই দোকানের বিজ্ঞাপন দেখত, ‘দুটি কলম কিনলে একটি কলম ফ্রি' তাহলে ওই পোস্টারের বিজ্ঞাপনটিকে বলা যেত একটি ‘বিষয়বস্তু বা কনটেন্ট'।

কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু হলো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর বিভিন্ন রকম তথ্যের সংকলন (সংযোগ বা একত্র করা) যা বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে পাঠক বা দর্শকের বোঝার উপযোগী করে তৈরি করা হয়। বইয়ের গল্প, নাটক, সিনেমা, খবর, গান এ সবগুলোই হচ্ছে কনটেন্ট। কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু শুধু যে আমাদের তথ্য দেয় তা কিন্তু নয়, এটি আমাদের বিনোদনও দেয়।

আমরা একটু ভেবে দেখলেই বুঝতে পারব, আমরা সারা দিন নানান রকম কনটেন্ট আমাদের চারপাশে দেখতে পাই। যেমন গান শুনতে পাই, টেলিভিশন দেখতে পাই, দোকানের মধ্যে অনেক রকম পোস্টার দেখতে পাই। কিন্তু এর মধ্যে ডিজিটাল কনটেন্ট কোনোগুলো? যে কনটেন্টগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রচার এবং আমাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় সেগুলো হচ্ছে ডিজিটাল কনটেন্ট।

আমার পাশের বন্ধুর সঙ্গে গল্প করি

আমি গতকাল থেকে আজকে পর্যন্ত কি কি কনটেন্ট দেখেছি তা আমার পাশের বন্ধুর সঙ্গে গল্প করি। এর মধ্যে কোনোটা ডিজিটাল ছিল কিনা সেটিও বন্ধুকে বলব। বলার সময় একটু সুন্দর করে গুছিয়ে বলব, কী দেখেছি? কখন দেখেছি? কীভাবে দেখাছি? কার সঙ্গে দেখেছি?- কেন ভালো/মন্দ লেগেছে?

নিচের ঘরে আমার বন্ধু যে যে কনটেন্ট দেখেছে তার যেকোনো তিনটি লিখি। এর মধ্যে কোনোটি ডিজিটাল কনটেন্ট এবং কোনোটি ডিজিটাল নয় তাতে টিক দিই-

আমার বন্ধু যে যে কনটেন্ট দেখেছেডিজিটালনন ডিজিটাল
১.  
২.  
৩.  

সেমিনার আয়োজন

আমরা গত কিছুদিন দলীয়ভাবে একটি সমস্যা নিয়ে গবেষণা করেছি এবং সমস্যার সমাধানও খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে সমাধান শুধু আমার প্রতিবেদনের লেখা হয়ে বন্দী থাকলে কী হবে? সবচেয়ে ভালো হয় আমরা যদি একটি সেমিনার আয়োজন করতে পারি। সেমিনারে আমরা আমাদের সমাধানগুলো বিভিন্নভাবে সবার কাছে উপস্থাপন করব। আমরা বিভিন্ন রকম কনটেন্ট বা বিষয়বস্তুর আকারে এগুলো উপস্থাপন করতে পারি, যেমন –

- কম্পিউটার ব্যবহার করে উপস্থাপনা; 

- ছবি দিয়ে গল্প বলা; 

- মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তৈরি নাটক; 

- ফোনের অ্যানিমেশন ব্যবহার করে গল্প বলা; 

- ডিজিটাল পোস্টার তৈরি; 

নাটক, ছড়া বা গান বানানো।

আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের যার যার কাছে যা যা রিসোর্স আছে তাই দিয়েই কনটেন্ট তৈরি করবো। এই কাজ করার জন্য নতুন কোন ডিভাইস (মোবাইল ফোন বা অন্যান্য) অথবা অন্য্য সামগ্ৰী কিনে অর্থ ব্যয় করবোনা।

আগামী সেশনের প্রস্তুতি

কেমন হবে আমাদের কনটেন্ট?

আমরা দলের সবাই মিলে চিন্তা করব আমরা কী বা কেমন কনটেন্টের মাধ্যম আমাদের বিদ্যালয়ের সবাইকে সচেতন করতে চাই। নিজে নিজে ভেবে নিয়ে আসব আর পরবর্তী দিন দলের সবাই মিলে ঠিক করব আমরা কোন কাজটি করতে পারি। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, আমাদের হাতের কাছে যে ধরনের প্রযুক্তিগত সুবিধা আছে সেগুলোকে কাজে লাগিয়েই আমরা আমাদের কনটেন্ট তৈরি করব। প্রযুক্তির সুবধা না থাকলে আমরা গান, কবিতা, ছড়া, গল্প বলা, নাটক মঞ্চায়ন ইত্যাদির মাধ্যমেও সচেতন করতে পারি।

প্রস্তুতি নিতে সুবিধার জন্য কিছু তথ্য

একটি বিষয় আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, আমাদের সমস্যা এবং সমাধান যাদের সঙ্গে সম্পর্কিত, তারা অথবা যাদেরকে আমরা সচেতন করতে চাই, তারা হচ্ছেন আমাদের লক্ষ্য দল বা টার্গেট গ্রুপ। বিষয়টি আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে জেনেছি। তারপরও আমরা আরেকটু উদাহরণ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে পারি।

আমার সমস্যাটি যদি হয়—

জরিপ ও অন্যান্য মাধ্যম থেকে আমরা যে তথ্য পেয়েছি সেখানে আমাদের সমস্যার প্রধান কারণ হতে পারে তিন রকম— 

১. ‘ভিডিও গেমসের আসক্তি'র কারণে পড়ার অভ্যাস কমে গেছে'; 

২. ‘বিদ্যালয়ের পড়ার চাপ এত বেশি, যার কারণে শিক্ষার্থীরা বই পড়ার সময় পায় না'; 

৩. ‘গল্পের বইয়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী পছন্দের বই কিনতে পারছে না'। 

তিনটি সমস্যার সমাধান হবে তিন রকম— 

১. অভিভাবকের উচিত শিক্ষার্থীদের হাতে নির্দিষ্ট বা অল্প সময়ের জন্য মোবাইল ফোন দেওয়া; 

২. শিক্ষকের উচিত শ্রেণিকক্ষেই অধিকাংশ পড়াশোনা শেষ করে ফেলা, যেন শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত কোচিং করতে না হয়; 

৩. বিদ্যালয়ের উচিত তাদের লাইব্রেরিতে গল্পের বই রাখা এবং শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে বা অল্পমূল্যে বই পড়ার সুযোগ করে দেওয়া । 

তিনটি সমাধানের জন্য টার্গেট গ্রুপ হবে ভিন্ন ভিন্ন-

১ নম্বর সমাধানের জন্য টার্গেট গ্রুপ বা লক্ষ্য দল  - অভিভাবক

২ নম্বর সমাধানের জন্য টার্গেট গ্রুপ বা লক্ষ্য দল - শিক্ষক

৩ নম্বর সমাধানের জন্য টার্গেট গ্রুপ বা লক্ষ্য দল – বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তাই আমাদের গল্পগুলো আমরা এমনভাবে সাজাব যেন আমাদের টার্গেট গ্রুপের পছন্দ, বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা এগুলোর ভিন্নতা অনুযায়ী তারা আমাদের গল্পটি পছন্দ করে এবং সচেতন হয়।

 

 

সেশন ৮ - সেমিনার আয়োজনে কনটেন্ট তৈরি

আজকের সেশনের শেষের দিকে আমরা আমাদের দলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব আমরা কেমন কনটেন্ট বানাতে চাই। যদি আমরা ক্যমেরায় ছবি তুলে গল্প বলতে চাই, কমিকস এঁকে গল্প বলতে চাই বা মোবাইল ফোনের ক্যমেরায় একটি নাটিকা বানাতে চাই, তাহলে কিছু ব্যপার আমাদের জানা থাকলে মন্দ হবেনা। আমি যে গল্প বলতে চাই তা যদি আমরা এঁকে কিংবা ছবিতে প্রকাশ করতে পারি তাহলে সেটি আরও অনেক বেশি মজার হতে পারে। তাই তোমাদের ভাবনার সুবিধার জন্য কিছু কৌশল নিচে দেওয়া হলো-

আমার চোখের ভাষা যদি না বলে বোঝাতে চাই:

আমরা আমাদের গল্পটিকে যেভাবে দেখছি তা আমাদের ছবিতে কীভাবে ফুটিয়ে তুলব তা একটু বুঝে নেওয়া যাক। এগুলো আমাদের মুখস্থ করতে হবে না, একটু বুঝে নিয়ে আমরা যখন ছবি তুলব কিংবা আকব তখন এগুলো কাজে লাগালেই হবে। *শট বলতে বোঝায় আমি আমার চিত্রের কতটুকু অংশে কীভাবে আমার বিষয়টিকে রাখব।

১. দুইজন বন্ধু কথা বলছে, একজন বন্ধু হাসছে, আমি যদি হাসিটা দেখাতে চাই তাহলে একেবারে সামনে থেকে দেখতে হবে, যখন সামনে থেকে ক্যামেরায় ছবিটি তোলা হবে তখন হয়ে যাবে ‘ক্লোজ শট’।

২. দুজন বন্ধু নদীর পুকুরের পাশ থেকে কথা বলছে, তারা যে অনেক দূর থেকে কথা বলছে, তা বোঝানোর জন্য আমার দূরে থেকে ছবি নিতে হবে, আর এটি হলো ‘লং শট’ ।

৩. দুজন বন্ধু কথা বলা শেষে বাড়ি চলে যাচ্ছে, দুজন দুদিকে চলে যাচ্ছে দেখানোর জন্য আমাদের আরেকটু দূরে থেকে দেখতে হবে, এটি হলো ‘মিড শট’।

৪. দুজন বন্ধুর কথা শেষে একজন দাঁড়িয়ে আছে আরেকজন চলে যাচ্ছে। একজন যে চলে যাচ্ছে তা বোঝানোর জন্য অন্যজনের কাঁধের পেছন থেকে এমনভাবে ছবি তোলা হয় যেন একজন বন্ধুর একটি কাঁধ দেখা যায়, আর অন্য বন্ধুর চলে যাওয়া দেখা যায়, এই ধরনের শট কে বলে ‘ওভার দ্য শোলডার'।

৫. বন্ধু চলে যাওয়ার পর অন্য বন্ধুটি দেখতে পেল, তার বন্ধু একটি ডায়েরি ফেলে রেখে গেছে, তখন সে দাঁড়িয়ে থেকে ঘাসে পড়ে থাকা ডায়েরিটি দেখছে, অর্থাৎ উপর থেকে নিচে একটি জিনিস দেখছে, এঁকে বলে ‘বার্ডস আই ভিউ’ বা ‘পাখির চোখে দেখা’।

৬। ধরি, ডায়রিটির নীচে একটি পিপড়া চাপা পড়ে গেছে, সে নীচের থেকে উপরের ওই বন্ধুটির দিকে তাকিয়ে আছে, কখন সে ডায়রিটা তুলবে আর পিপড়াটি প্রাণে বাঁচবে। নিচের থেকে উপরের দিকে তাকিয়ে কিছু দেখাকে ক্যামেরা বা ছবির ভাষায় বলে ‘ফ্রগ আই ভিউ' বা ‘ব্যাঙের চোখে দেখা’

প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপন সফটওয়্যার ব্যবহার করেও আমরা খুব সহজে সমস্যাটির সমাধান সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে পারি। সাম্প্রতিক সময়ের বহুল ব্যবহৃত সফটওয়ার গুলো হলো

১. মাক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট (Microsoft PowerPoint) 

২. গুগল স্লাইড (Google Slide ) 

৩. প্রেজি (Prezi) 

৪. ক্যানভা (Canva) 

এই সফটওয়্যারগুলোর ফিচার কমবেশি প্রায় একই থাকে। কিছু সিম্বল বা চিহ্ন মনে রাখলেই আমরা খুব সহজেই আমরা ছবি এবং লেখা যুক্ত করে আমাদের ডিজিটাল উপস্থাপন করে ফেলতে পারব।

 

দলীয় আলোচনা ও নিজেদের কনটেন্ট তৈরির পরিকল্পনা

কনটেন্ট তৈরির প্রস্তুতি:

১. আমরা আমাদের কনটেন্ট তৈরির পরিকল্পনা শিক্ষককে জানাব। যদি আমাদের কনটেন্ট তৈরিতে প্রযুক্তির কোনো সহায়তা প্রয়োজন না হয়, তবে আগামী ক্লাসের আগেই একটু একটু করে আমরা প্রতিদিন কনটেন্টটি তৈরি করে ফেলব । 

২. যদি কোনো প্রযুক্তির প্রয়োজন হয় যেমন কপিউটার বা মোবাইল ফোন ইত্যাদি। তাহলে আমরা শিক্ষকের কাছ থেকে সহায়তা নিয়েই বিদ্যালয়েই আমাদের কনটেন্টটি একটু একটু করে তৈরি করে ফেলব। 

৩. কনটেন্ট তৈরি করার জন্য যদি মোবাইল ফোনের প্রয়োজন হয়, আমাদের শিক্ষকের সহায়তায় আগামী ক্লাসের আগেই শিক্ষকের ফোন ব্যবহার করে নিজেদের কনটেন্ট তৈরি করে ফেলতে পারি। 

৪. শিক্ষকের ছবি তোলার ফোন না থাকলে কিংবা ব্যবহার করা সম্ভব না হলে, প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিভাবকের ফোন এক দিনের জন্য নিয়ে আসার অনুমতি চেয়ে আবেদন করব। আবেদনপত্রটি অভিভাবককে দেখিয়ে তার ফোনটি অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে এক দিনের জন্য নিয়ে আসব (দলের একজন ফোন আনলেই হবে) 

৫. অভিভাবকের ফোন বিদ্যালয়ে আনা সম্ভব না হলে অভিভাবকের সহায়তায় আমরা দলের যেকোনো একজনের বাড়িতে গিয়ে তার অভিভাবকের ফোন ব্যবহার করে কাজটি সম্পন্ন করব। 

৬. শিক্ষক বা অভিভাবক কারও ফোন ব্যবহার করা সম্ভব না হলে আমরা ক্যামেরার শট অনুযায়ী ছবি এঁকে গল্প বানাব। এই ক্ষেত্রে ছবি যে খুব সুন্দর হতে হবে এমন নয়, শুধু বিষয়(সাবজেক্ট) বা চরিত্র বোঝা গেলে হবে। কারও যদি স্মার্ট ফোন/ট্যাব/ কম্পিউটার ব্যবহার করে কোনো এ্যাপের মাধ্যমে ছবি আঁকা সম্ভব হয়, তাহলে আমরা সেটিও করতে পারি।

সেমিনারে কনটেন্ট উপস্থাপন শ্রেণির বাইরের কাজ

আজকে আমাদের সেমিনার আয়োজন। আমরা প্রতিটি দল সময় ভাগ করে নিয়ে নিজেদের কাজটি সবার সামনে উপস্থাপন করব। আজ আমাদের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষের বাইরে থেকেও অতিথি এসেছেন। আমরা তাদের সুন্দর করে অভ্যর্থনা জানাব এবং আমাদের কাজগুলো সুন্দর করে উপস্থাপন করব।

উপস্থাপন শেষে নিচের ঘরে বিস্তারিত লিখি, বছর শেষে এগুলো আমাদের ডায়েরির মতো কাজে লাগবে।

দলের নাম 
উপস্থাপনের বিষয় 
উপস্থাপনের পদ্ধতি 
কনটেন্টের টার্গেট গ্রুপ বা লক্ষ্য দল 
অতিথিদের মতামত 

সফলভাবে সেমিনার আয়োজন করার জন্য সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন !

Content added || updated By
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.