SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

পঞ্চম শ্রেণি (প্রাথমিক) - হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - NCTB BOOK
Please, contribute to add content into ঈশ্বরের স্বরূপ এবং উপাসনা ও প্রার্থনা.
Content

আমরা জানি, ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর অনন্ত শক্তি। অন্ত মানে শেষ। অনন্ত মানে যার শেষ নেই। ঈশ্বরের শক্তির শেষ নেই। তিনি সর্বশক্তিমান। আবার ঈশ্বরের অনন্ত গুণ। তাঁর গুণেরও শেষ নেই। তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আমাদের তিনি পালন করেন। আমাদের জীবন, আমাদের মৃত্যু—সবকিছুর মূলেও তিনি। তাঁর সমান কেউ নেই ৷

ঈশ্বর নিরাকার। তবে তিনি যে কোনো আকার ধারণ করতে পারেন। ঈশ্বর যখন নিরাকার, তখন তাঁকে বলা হয় ব্রহ্ম। ব্রহ্ম সকল জীব ও জগতের উপর প্রভুত্ব করেন। তাই ব্রহ্মের আরেক নাম ঈশ্বর। ঈশ্বর শব্দটির মানে হচ্ছে প্রভু। এই ব্রহ্ম বা ঈশ্বর যখন আমাদের কৃপা করেন, জগতের মঙ্গল করেন, তখন তাঁকে বলা হয় ভগবান ৷

নিচের ছকটি পূরণ করি:

১। ঈশ্বর যখন নিরাকার তখন তাঁকে বলা হয় 
২। সবকিছুর মূলে রয়েছেন 

ব্রহ্ম সকল প্রাণের উৎসস্বরূপ। তাঁর থেকেই জগতের সৃষ্টি। তাঁর মধ্যেই জগতের অবস্থান। আবার তিনিই আত্মারূপে জীবের মধ্যে অবস্থান করেন। তাই ধর্মগ্রন্থ উপনিষদে বলা হয়েছে ‘সর্বং খল্বিদং ব্রহ্ম’ অর্থাৎ, সবকিছুই ব্রহ্ম বা ঈশ্বর। সুতরাং ব্রহ্ম, ঈশ্বর, ভগবান, দেব-দেবী এবং আত্মা আলাদা কিছু নয়। একই ঈশ্বরের ভিন্ন-ভিন্ন নাম ও পরিচয়। জীবের মধ্যে আত্মারূপে ঈশ্বর অবস্থান করেন বলেই জীবকে ভালোবাসলে ঈশ্বরকেই ভালোবাসা হয়। তাই জীবকে ব্রহ্মজ্ঞানে সেবা করা আমাদের কর্তব্য।

ঈশ্বরের সাকার রূপ

দেব-দেবী

আমরা জানি, ঈশ্বরের কোনো আকার নেই। তিনি নিরাকার। তবে নিরাকার হলেও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যে কোনো আকার ধারণ করতে পারেন। তিনি যে কোনো রূপে নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন। নিজের গুণ বা ক্ষমতাকে তিনি আকার দিতে পারেন। ঈশ্বরের কোনো গুণ বা ক্ষমতা যখন আকার বা রূপ পায়, তখন তাকে দেবতা বা দেব-দেবী বলে। দেব-দেবীর মধ্য দিয়ে ঈশ্বরেরই শক্তির প্রকাশ ঘটে। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব, দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশ প্রভৃতি দেব-দেবী একই ঈশ্বরের ভিন্ন ভিন্ন শক্তি বা গুণের ভিন্ন ভিন্ন রূপ। যেমন ঈশ্বর যে-রূপে সৃষ্টি করেন, তাঁর নাম ব্রহ্মা। যে-রূপে তিনি পালন করেন, তাঁর নাম বিষ্ণু। তাঁর শক্তির প্রকাশ ঘটেছে দেবী দুর্গার মধ্য দিয়ে। দেবী সরস্বতী যে-বিদ্যা দান করেন, তা ঈশ্বরেরই একটি গুণ। বেদ, পুরাণ প্রভৃতি ধর্মগ্রন্থে দেব-দেবীর রূপ, গুণ, শক্তি ও পূজা করার পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। দেব-দেবীর পূজা করলে তাঁরা সন্তুষ্ট হন। দেব-দেবীরা সন্তুষ্ট হলে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন। সুতরাং দেব-দেবীর পূজার মাধ্যমে ঈশ্বরেরই পূজা করা হয় ।

নিচের ছকটি পূরণ করি :

১। ঈশ্বর যে-রূপে পালন করেন তাঁর নাম 
২। দেবী সরস্বতী যে-বিদ্যা দান করেন তা 

অবতার

কখনো কখনো পৃথিবীতে খুবই খারাপ অবস্থা বিরাজ করে। অশুভ শক্তির কাছে শুভ শক্তি পরাজিত হয়। মানুষ ধর্মকে ভুলে গিয়ে অধর্মের আশ্রয় নেয়। চারদিকে দুঃখের আর্তনাদ শোনা যায়। এ অবস্থা দেখে ধার্মিক ব্যক্তিদের হৃদয় কেঁদে ওঠে। তাঁরা ঈশ্বরের নিকট দুঃখ মোচনের আকুল প্রার্থনা জানান। তখন করুণাময় ঈশ্বর জগতের কল্যাণের জন্য পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন। তিনি অশান্তি দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দুষ্কৃতিকারীদের ধ্বংস করেন, সাধু-সজ্জনদের রক্ষা করেন এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন।

শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন-

যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত।

অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ ॥ (৪/৭)

পরিত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্ ।

ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে ৷ (৪/৮)

অর্থাৎ পৃথিবীতে যখনই ধর্মের গ্লানি হয় ও অধর্ম বেড়ে যায়, তখনই আমি নিজেকে সৃষ্টি করি। সাধুদের পরিত্রাণ, দুষ্কৃতিকারীদের বিনাশ এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্যও আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই ।

পৃথিবীতে ঈশ্বরের এরূপ অবতরণকে বলে অবতার। এভাবেই ঈশ্বর অবতাররূপে এসে মানুষের এবং জগতের মঙ্গল করেন।

 

দশ অবতারের পরিচয়

ভগবান বিষ্ণু বিভিন্ন যুগে দশটি অবতারে নিজেকে প্রকাশ করেছেন। যেমন কূর্ম, বরাহ, নৃসিংহ, বামন, পরশুরাম, রাম, বলরাম, বুদ্ধ এবং কল্কি। লক্ষণীয়, - মৎস্য, দশ অবতারের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণের উল্লেখ নেই। এর কারণ হচ্ছে, অন্যান্য অবতার ভগবানের অংশবিশেষ। শ্রীমদ্‌ভাগবতপুরাণে বলা হয়েছে কৃষ্ণস্তু ভগবান্ স্বয়ম্। অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ নিজেই ভগবান। তাই দশ অবতারের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণের উল্লেখ নেই ।

এখানে সংক্ষেপে ভগবান বিষ্ণুর দশ অবতারের পরিচয় দিচ্ছি :

১। মৎস্য অবতার

হাজার হাজার বছর আগে সত্যব্রত নামে এক ধার্মিক রাজা ছিলেন। তাঁর রাজত্বকালে হঠাৎ পৃথিবীতে নানারূপ অন্যায়-অত্যাচার দেখা দেয়। রাজা তখন জগতের কল্যাণের জন্য ঈশ্বরের করুণা কামনা করেন ।

একদিন জলাশয়ে স্নানের সময় রাজা সত্যব্রতের নিকট একটি পুঁটি মাছ এসে প্রাণ ভিক্ষা চায়। রাজা কমণ্ডলুতে করে মাছটিকে বাড়ি নিয়ে এলেন। মাছটির আকার ভীষণভাবে বাড়তে থাকে। তাকে পুকুর, সরোবর, নদী, যেখানেই রাখা হয়, সেখানেই আর ধরে না। রাজা ভাবলেন, ইনি নিশ্চয়ই নারায়ণ । নারায়ণ বিষ্ণুর আরেক নাম । রাজা তখন মৎস্যরূপী নারায়ণের স্তব-স্তুতি করতে লাগলেন।

তারপর মৎস্যরূপী নারায়ণ রাজাকে বললেন, সাতদিনের মধ্যেই জগতের প্রলয় হবে। সে সময় তোমার ঘাটে এসে একটি স্বর্ণতরী ভিড়বে। তুমি বেদ, সব রকমের জীবদম্পতি, খাদ্য-শস্য ও বৃক্ষবীজ সংগ্রহ করে তাদের নিয়ে সেই নৌকায় উঠবে। আমি তখন শৃঙ্গধারী মৎস্যরূপে আবির্ভূত হবো। তুমি তোমার নৌকাটি আমার শৃঙ্গের সঙ্গে বেঁধে রাখবে।

মহাপ্রলয় শুরু হলো। রাজা মৎস্যরূপী ভগবান শ্রীবিষ্ণুর নির্দেশ মতো কাজ করলেন। ধ্বংস থেকে রক্ষা পেল তাঁর নৌকা। প্রলয় শেষে রাজা সমস্ত কিছু নিয়ে নৌকা থেকে নেমে এলেন। এভাবেই মৎস্য অবতাররূপে ভগবান শ্রীবিষ্ণু সৃষ্টিকে রক্ষা করলেন। বেদও সংরক্ষিত হলো।

 

২। কূর্ম অবতার

পাতালবাসী অসুরেরা একবার দেবতাদের পরাজিত করে স্বর্গরাজ্য দখল করে। তখন ব্রহ্মা ও ইন্দ্র নিপীড়িত দেবতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রীবিষ্ণুর কাছে গেলেন। অসুরদের অত্যাচারের কথা বললেন। শ্রীবিষ্ণু দেবতাদেরকে অসুরদের সঙ্গে নিয়ে ক্ষিরোদ সমুদ্র মন্থনের পরামর্শ দিলেন। তিনি বললেন, সমুদ্র মন্থনের ফলে যে অমৃত উঠে আসবে, তা পান করে দেবতাগণ অসুরদের পরাজিত করার শক্তি ফিরে পাবেন।

দেবতাগণ সমুদ্র মন্থন শুরু করলেন। মন্দর পর্বত হলো মন্থন দণ্ড। আর বাসুকি নাগ হলো মন্থনের রজ্জু। মন্দর পর্বত সমুদ্রের তলায় বসে যেতে লাগল। শ্রীবিষ্ণু বিরাট এক কূর্ম বা কচ্ছপরূপে মন্দর পর্বতকে নিজের পিঠে ধারণ করলেন । মন্থন চলতে থাকল। সমুদ্র থেকে অমৃত উঠল। দেবতাগণ তা পান করলেন এবং অসুরদের পরাজিত করলেন। দেবতারা আবার স্বর্গরাজ্য ফিরে পেলেন। এভাবে কূর্মরূপী শ্রীবিষ্ণু অসুরদের অত্যাচার থেকে ত্রিজগৎ রক্ষা করলেন ।

 

৩। বরাহ অবতার

একবার পৃথিবী জলে ডুবে যেতে থাকে। তখন শ্রীবিষ্ণু বরাহরূপে আবির্ভূত হয়ে পৃথিবীকে উদ্ধার করেন। তাঁর বিশাল দাঁত দিয়ে তিনি পৃথিবীকে জলের উপর তুলে ধরলেন। পৃথিবী রক্ষা পেল। 

এছাড়া বরাহরূপী শ্রীবিষ্ণু দৈত্যরাজ হিরণ্যাক্ষকে হত্যা করে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। 

নিচের ছকটি পূরণ করি :

১। শ্রীবিষ্ণু মৎস্য অবতাররূপে সৃষ্টি ও বেদকে 
২। শ্রীবিষ্ণু মন্দর পর্বতকে ধারণ করলেন 
৩। পৃথিবী যখন জলে ডুবে যাচ্ছিল, তখন শ্রীবিষ্ণু 

 

৪। নৃসিংহ অবতার

শ্রীবিষ্ণু হিরণ্যাক্ষকে বধ করেছেন জেনে তাঁর ভাই হিরণ্যকশিপু খুব দ্ধ হলেন। তিনি প্ৰচণ্ড বিষ্ণুবিরোধী হয়ে উঠলেন। কিন্তু তাঁর একমাত্র পুত্র প্রহ্লাদ ছিল বিষ্ণুভক্ত । বিষ্ণুভক্ত পুত্রের আচরণে হিরণ্যকশিপু রেগে গেলেন । পুত্রকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু ভগবান বিষ্ণু প্রহ্লাদকে রক্ষা করলেন।

একদিন ক্রুদ্ধ হিরণ্যকশিপু প্রহ্লাদকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোর বিষ্ণু কোথায় থাকে ?

প্রহ্লাদ উত্তর দিল, “ভগবান বিষ্ণু সর্বত্রই আছেন। ”

হিরণ্যকশিপু : তোর বিষ্ণু কি এই স্তম্ভের ভিতরেও আছে ?

প্রহ্লাদ : হ্যাঁ বাবা, তিনি এখানেও আছেন।

হিরণ্যকশিপু পদাঘাতে সে স্তম্ভ ভেঙে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে সেই স্তম্ভের মধ্য থেকে ভগবান বিষ্ণু নৃসিংহরূপে আবির্ভূত হন। ‘নৃ’ মানে মানুষ। নৃসিংহ হচ্ছে মানুষ ও সিংহের মিলিত রূপ। মাথাটা সিংহের মতো। শরীরটা মানুষের মতো। আবার নখগুলো সিংহের মতো।

নৃসিংহ তাঁর ভয়ঙ্কর নখ দিয়ে হিরণ্যকশিপুর বক্ষ বিদীর্ণ করেন। হিরণ্যকশিপু নিহত হন । বিষ্ণুর ভক্তরা দৈত্যদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পান ।

 

৫। বামন অবতার

বলি নামে অসুরদের এক রাজা ছিলেন। বলি দেবতাদের কাছ থেকে স্বর্গরাজ্য কেড়ে নেন । দেবতারা স্বর্গ হারিয়ে বিপদে পড়েন। তখন দেবতাদের রক্ষায় বিষ্ণু বামন রূপ ধারণ করলেন।

বলি বিরাট এক যজ্ঞ করছিলেন। যজ্ঞের সময় যে যা চাইছিলেন তাই তিনি দান করছিলেন। বামনরূপী বিষ্ণু বলির কাছে গিয়ে ত্রিপাদ ভুমি চাইলেন । বলি তা দিতে রাজি হলেন । সঙ্গে সঙ্গে বামন বিশাল আকার ধারণ করলেন। তিনি তার এক পা স্বর্গে এবং আর এক পা মর্ত্যে রাখেন । তৃতীয় পা রাখার কোনো জায়গা ছিলনা। অসুর হলেও প্রবল বিষ্ণুভক্তির কারণে বলি তার মাথার উপর সেটি রাখতে বলেন। বামণরূপী ভগবান বিষ্ণু তখন বলির মাথায় পা রেখে তাকে পাতালে নামিয়ে দিলেন। এভাবেই ভগবান বিষ্ণু অসুর রাজা বলিকে দমন করলেন। দেবতারাও তাঁদের হারানো স্বর্গরাজ্য ফিরে পেলেন।

 

৬। পরশুরাম অবতার

ত্রেতা যুগে এক সময়ে রাজা কার্তবীর্যের নেতৃত্বে ক্ষত্রিয়েরা খুব অত্যাচারী হয়ে ওঠে।

তখন সমাজে ধর্মভাব জাগাতে মহর্ষি ঋচীক তপস্যা করেন। তপস্যায় তুষ্ট হয়ে ভগবান বিষ্ণু ঋচীকের পৌত্র এবং জমদগ্নির পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নাম ছিল ভৃগুরাম। ভৃগুরাম ছিলেন মহাদেবের উপাসক। মহাদেব তুষ্ট হয়ে তাঁকে দিলেন একটি পরশু। পরশু মানে কুঠার। এই পরশু হলো তাঁর অস্ত্র । পরশু হাতে থাকায় তাঁর নাম হলো পরশুরাম। পরশু হাতে থাকলে কেউ তাঁকে পরাজিত করতে পারে না।

একদা ক্ষত্রিয় রাজা কার্তবীর্যের সঙ্গে পরশুরামের পিতা জমদগ্নির বিবাদ বেধে যায়। কার্তবীর্য ধ্যানমগ্ন জমদগ্নিকে হত্যা করেন। পরশুরাম পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে ছুটে যান। কুঠারের আঘাতে তিনি কার্তবীর্যকে হত্যা করেন। পরশুরাম একুশবার অত্যাচারী ক্ষত্রিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের ধ্বংস করেন। পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসে। ধর্মের জয় হয় ।

 

৭। রাম অবতার

ত্রেতা যুগে রাক্ষসরাজ রাবণ খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। তিনি দেবতাদের উপর অত্যাচার শুরু করেন। পৃথিবীতে অশান্তির সৃষ্টি হয়। তখন শ্রীবিষ্ণু রাজা দশরথের পুত্ররূপে রাম নামে আবির্ভূত হন । তিনি পিতৃসত্য পালনের জন্য স্ত্রী সীতা ও ভাই লক্ষ্মণকে নিয়ে বনবাসে যান। বন থেকে রাবণ সীতাকে হরণ করেন। রাম ও রাবণের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে রাবণ সবংশে নিহত হন। রাম সীতাকে উদ্ধার করে নিজ রাজ্যে ফিরে আসেন। স্বর্গ ও পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসে।

 

৮। বলরাম অবতার

দ্বাপর যুগে শ্রীবিষ্ণু বলরামরূপে অবতীর্ণ হন। তিনি ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই ৷ বলরাম গদাযুদ্ধে শ্রেষ্ঠ বীর। তাঁর হাতে একটি লাঙল থাকত । এই লাঙল বা হল আকৃতির অস্ত্র দিয়ে তিনি যুদ্ধ করতেন। তাই তাকে বলা হয় হলধর । তিনি অনেক অত্যাচারীকে শাস্তি দেন। ফলে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। 

 

৯। বুদ্ধ অবতার

খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে মানুষের মধ্য থেকে হিংসা, নীচতা দূর করতে শ্রীবিষ্ণু রাজা শুদ্ধোদনের পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নাম রাখা হয় গৌতম। পরে তিনি ‘বোধি’ অর্থাৎ বিশেষ জ্ঞান লাভ করে গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিত হন। তিনি অহিংসার বাণী প্রচার করে মানুষকে শান্তির পথ দেখান। তাঁর ধর্মের মূল কথা ছিল, ‘জীবসেবা” এবং ‘অহিংসা পরম ধর্ম।' তিনি জীবসেবা ও অহিংসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছেন।

 

১০। কল্কি অবতার

এতক্ষণ আমরা যে অবতারদের কথা জানলাম তাঁরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়ে গেছেন। কিন্তু কলি যুগের শেষ প্রান্তে অন্যায় দমন করতে শ্রীবিষ্ণু কল্কিরূপে আবির্ভূত হবেন। তিনি জীবের দুঃখ দূর করার জন্য সচেষ্ট হবেন। তাঁর হাতে থাকবে খড়্গগ। এই খড়্গগ দিয়ে তিনি অত্যাচারী ব্যক্তিদের হত্যা করবেন। মানুষের দুঃখ দূর হবে। পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

ঈশ্বর অবতাররূপে এভাবেই নেমে এসে জীবের কল্যাণ করেন। এভাবেও ঈশ্বর আমাদের একটি শিক্ষা দেন। তা হলো প্রয়োজনে দুষ্টদের দমন করতে হবে। সজ্জনদের শান্তিতে থাকার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আর এর মধ্য দিয়ে ধর্ম অর্থাৎ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাহলে সমাজে থাকবে শৃঙ্খলা। মানুষও শান্তিতে বাস করতে পারবে।

Content added By

শূন্যস্থান পূরণ কর :

১। ঈশ্বরের কোনো ___ নেই ৷

২। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব, দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী প্রভৃতি দেব-দেবী একই ___ বিভিন্ন রূপ।

৩। ব্ৰহ্মা ___ করেন।'

81 ___ পালনকর্তা।

৫। বামন ___ অবতারের অন্যতম ।

৬। পরশু হাতে থাকায় ভৃগুরামের নাম হলো ___।

 

ডান পাশ থেকে শব্দ এনে বাম পাশের শব্দের সঙ্গে মেলাও :

১। ঈশ্বরের সাকার রূপ

২। দেব-দেবীদের সন্তুষ্ট করার জন্য

৩। অবতাররূপে ঈশ্বর 

৪। যিনি ব্রহ্ম, তিনিই

৫। উপাসনা করলে দেব-দেবী

দুষ্টের দমন করেন।

দেব-দেবী।

সন্তুষ্ট হন।

পূজা করা হয়।

ইন্দ্ৰ 

ঈশ্বর।

 

নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষেপে উত্তর দাও :

১। ব্রহ্ম কাকে বলে ? 

২। ঈশ্বর যখন কোনো রূপ ধারণ করেন তখন তাঁকে কী বলে? 

৩। ব্রহ্মা কিসের দেবতা? 

৪। অবতাররূপে পৃথিবীতে আসার পর ঈশ্বরের প্রধান কাজ কী? 

৫। রাম কেন বনে গমন করেছিলেন?

 

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

১। ব্রহ্ম ও ঈশ্বর বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 

২। ঈশ্বর ও দেব-দেবীর সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর। 

৩। অবতার বলতে কী বোঝায়? সংক্ষেপে লেখ ৷ 

৪। পরশুরাম অবতারের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও । 

৫। শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতার অবতার সম্পর্কিত শ্লোকটি সরলার্থসহ লেখ।

Content added By
হিরণ্যাক্ষ
সত্যব্রত
হিরণ্যকশিপু
গৌতম বুদ্ধ

উপাসনা

উপাসনা অর্থ ঈশ্বরকে স্মরণ করা। একাগ্রচিত্তে ঈশ্বরকে ডাকা। ঈশ্বরের আরাধনা করা। উপাসনা ধর্মপালনের অন্যতম প্রধান অঙ্গ বা পদ্ধতি। ধ্যান, জপ, কীর্তন, পূজা, স্তব- স্তুতি, প্রার্থনা প্রভৃতি পদ্ধতিতে উপাসনা করা হয়।

একাগ্রচিত্তে ঈশ্বরের চিন্তা করার নাম ধ্যান। নীরবে ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ করাকে বলে জপ। সরবে ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ বা গুণগান করার নাম কীর্তন। ঈশ্বরের প্রশংসা করে তাঁর নাম উচ্চারণ করাকে বলা হয় স্তব বা স্তুতি।

উপাসনা করলে দেহ-মন পবিত্র হয়। উপাসনার সময় আমরা ঈশ্বরের প্রশংসা করি। তাঁর আশীর্বাদ প্রার্থনা করি। সকলের কল্যাণ কামনা করি ।

নিচের ছকটি পূরণ করি :

উপাসনা করার তিনটি পদ্ধতির নাম লিখি :
১।
২।
৩।

 

সাকার উপাসনা

‘সাকার’ অর্থ যার আকার বা রূপ আছে। আকার বা রূপের মাধ্যমে ঈশ্বরের আরাধনা করাই সাকার উপাসনা। বিভিন্ন দেব-দেবী, যেমন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব, কালী, দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী প্রভৃতি ঈশ্বরের সাকার রূপ। আমরা ঈশ্বরকে দেব-দেবীর প্রতিমারূপে ও অবতাররূপে উপাসনা করি। এরূপ উপাসনায় ভক্ত ঈশ্বরকে সাকাররূপে কাছে পায়। তাঁকে পূজা করে। তাঁর নিকট প্রার্থনা করে।

 

নিরাকার উপাসনা

ঈশ্বরকে নিরাকারভাবেও উপাসনা করা যায়। নিরাকার উপাসনায় ভক্ত নিজের অন্তরে ঈশ্বরকে অনুভব করেন। ঈশ্বরের নাম জপ করেন অর্থাৎ নীরবে ঈশ্বরের নাম মনে মনে উচ্চারণ করেন। ঈশ্বরের নাম কীর্তন করেন। তাঁর স্তব-স্তুতি করে তাঁর নিকট প্রার্থনা জানান। নিজের ও জগতের কল্যাণ কামনা করেন ।

উপাসনার পদ্ধতি সাকার বা নিরাকার যা-ই হোক-না-কেন, সবই ঈশ্বরের উপাসনা । ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে, নিরাকার ব্রহ্মই প্রয়োজনে সাকার রূপ ধারণ করেন। অর্থাৎ যিনি নিরাকার, তিনিই আবার সাকার। গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ‘আমাকে যে যেভাবে ভজনা করে, আমি তাকে সেভাবেই কৃপা করি।' সুতরাং ঈশ্বরকে সাকার ও নিরাকার দুভাবেই উপাসনা করা যায় ৷

নিরাকাররূপে ঈশ্বরের ধ্যান করা হয়। সাকাররূপে তাঁর পূজা করা হয় ৷

সুতরাং ধ্যান, জপ, কীর্তন, পূজা, স্তব-স্তুতি, প্রার্থনা প্রভৃতি পদ্ধতিতে আমরা ঈশ্বরের উপাসনা করব।

উপাসনা একটি নিত্যকর্ম। প্রতিদিন উপাসনা করতে হয়। প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় তিনবার ঈশ্বরের উপাসনা করা কর্তব্য। উপাসনার জন্য আমাদের দেহ-মনের পবিত্রতা প্রয়োজন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে উপাসনা করতে হয়। মন্দিরে বা ঘরে বসে উপাসনা করা যায়। দেবতার সামনে বসে সাকার উপাসনা করতে হয়। উপাসনার সময় সোজা হয়ে উত্তর বা পূর্ব দিকে মুখ করে বসতে হয়।

নিচের ছকটি পূরণ করি :

১। ঈশ্বরকে ব্রহ্মভাবে উপাসনা করাই 
২। প্রতিদিন উপাসনা করার সময় 

উপাসনা করার জন্য অনেক আসন বা বসার পদ্ধতি আছে। তবে পদ্মাসন ও সুখাসন উপাসনার জন্য বিশেষ উপযোগী। এখানে পদ্মাসন ও সুখাসনের ছবি দেওয়া হলো :

একা বসে যেমন উপাসনা করা যায়, তেমনি অনেকে একসঙ্গে বসেও উপাসনা করা যায় । অনেকে একসঙ্গে বসে উপাসনা করাকে সমবেত উপাসনা বলে ।

এজন্য সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিনে সকলে মন্দিরে বা পবিত্র স্থানে মিলিত হয়ে একসঙ্গে বসে উপাসনা করতে হয়।

আমরা জানি, উপাসনার সময় আমরা ঈশ্বরের স্তুতি বা প্রশংসা করি। ঈশ্বরের মহিমা চিন্তা করি। উপাসনা আমাদেরকে সৎপথে বা ধর্মপথে পরিচালিত করে। তাই সৎপথে চলার জন্য আমরা নিয়মিত উপাসনা করব। ঈশ্বরের নিকট শক্তি প্রার্থনা করব। নিজের ও অন্যের মঙ্গল কামনা করব।

 

প্ৰাৰ্থনা

প্রার্থনা হচ্ছে ঈশ্বরের নিকট কিছু চাওয়া। ঈশ্বর এ বিশ্বের সর্বময় কর্তা। তিনি করুণাময়। তাঁর দয়ার উপরেই আমাদের সবকিছু নির্ভর করে। তাই ঈশ্বরের নিকট আমাদের প্রাণের আবেদন জানাই। তাঁর কাছে নিজের ও অন্যের মঙ্গল কামনা করি। এই যে ঈশ্বরের কাছে কিছু চাওয়া, একেই বলে প্রার্থনা। উপাসনার একটি অঙ্গ হলো প্রার্থনা। উপাসনার সময় ছাড়াও আমরা ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করতে পারি। কোনো শুভ কাজের পূর্বে আমরা ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা জানাই। আবার কোনো বিপদে পড়লে বিপদ থেকে মুক্তির জন্যও আমরা ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা জানাই ।

নিচের ছকটি পূরণ করি :

১। উপাসনার জন্য উপযোগী আসন হলো 
২। প্রার্থনা হচ্ছে 

উপাসনার মতো প্রার্থনা করার সময়ও দেহ ও মন পবিত্র থাকা প্রয়োজন। সাধারণত করজোড়ে ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করতে হয়। প্রার্থনার সময় মনে দীনতার ভাব থাকতে হবে। তিনি প্রভু, আমি তাঁর দাস, তিনি দাতা আমি গ্রহীতা—এরূপ মনোভাবই দীনতার ভাব। উপাসনার মতো প্রার্থনাও ঈশ্বরের নিকট একা বা সমবেতভাবে করা যায়।

 

মন্ত্র, শ্লোক ও প্রার্থনামূলক বাংলা কবিতা

বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারত, শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতা প্রভৃতি ধর্মগ্রন্থে অনেক মন্ত্র ও শ্লোক রয়েছে। মন্ত্র ও শ্লোকে ঈশ্বর ও বিভিন্ন দেব-দেবীর স্তব করা হয়। স্তব বা স্তুতির অর্থ হচ্ছে ঈশ্বর বা দেব-দেবীর রূপ, গুণ ও মাহাত্ম্য কীর্তন করা। তাঁদের প্রশংসা করা, তাঁদের স্মরণ করা। শুধু স্তবই নয়, আমরা ঈশ্বর ও দেব-দেবীর কাছে প্রার্থনাও করি। যেন সকলের মঙ্গল হয়। সকলেই যেন শান্তি পায়।

হিন্দুধর্মের ধর্মগ্রন্থগুলোতে স্তব ও প্রার্থনামূলক অনেক মন্ত্র ও শ্লোক আছে। ধর্মগ্রন্থগুলো সংস্কৃত ভাষায় লেখা। তাই স্তব-স্তোত্রগুলোও সংস্কৃত ভাষায় রচিত। এছাড়া বাংলা ভাষায় অনেক প্রার্থনামূলক কবিতা আছে।

ঈশ্বর বা দেব-দেবীর স্তব করা হিন্দুধর্মের অঙ্গ। স্তব করলে ঈশ্বর ও দেব-দেবীগণ খুশি হন। তাঁরা আমাদের মঙ্গল করেন। স্তব করলে আমাদের মন পবিত্র হয়। মনে ঈশ্বরের অনুভূতি জাগ্রত হয়।

প্রার্থনা করার সময় আমরা মন্ত্র ও শ্লোকগুলো শুদ্ধভাবে আবৃত্তি করব। সেগুলোর বাংলা সরলার্থও জেনে রাখব ।

নিচের ছকটি পূরণ করি :

১। উপাসনা দুই প্রকার 
২। নীরবে মন্ত্র বা শ্লোক উচ্চারণ করা 

আমরা এখন বেদ, উপনিষদ, শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতা ও শ্রীশ্রীচণ্ডী থেকে কিছু মন্ত্র ও শ্লোক এবং সেগুলোর সরলার্থ জানব। প্রার্থনামূলক বাংলা কবিতাও শিখব।

বেদ

সবিতা পশ্চাতাৎ সবিতা পুরস্তাৎ 

সবিতোত্তরাত্তাৎ সবিতাধরাত্তাৎ। 

সবিতা নঃ সুবতু সর্বতাতিং 

সবিতা নো রাসতাং দীৰ্ঘমায়ুঃ ৷৷

                      (ঋগ্‌ বেদ, ১০/৩৬/১৪)

সরলার্থ

কি পশ্চিম দিকে, কি পূর্ব দিকে, কি উত্তর দিকে, কি দক্ষিণ দিকে – সূর্যদেব আমাদের - পরিপূর্ণতা দিন, সূর্যদেব আমাদের পরমায়ু দীর্ঘ করুন।

 

উপনিষদ

যুক্তায় মনসা দেবান্ 

সুবৰ্ষতো ধিয়া দিবম্ 

বৃহজ্ জ্যাতি করিষ্যতঃ 

সবিতা প্ৰসুবাতি তান্ ॥

               (শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ, ২/৩)

সরলার্থ

সূর্যদেব আমার মনকে পরমাত্মার সঙ্গে যুক্ত করুন। পরমাত্মা অভিমুখী ইন্দ্রিয়গুলোকে জ্ঞানের দ্বারা সেই পরমাত্মাকে উপলব্ধি করার শক্তি দিন।

 

শ্রীমদ্‌ভগবদ্‌গীতা

অনেকবাহূদরবজ্রনেত্র 

পশ্যামি ত্বাং সর্বতোনন্তরূপম্ । 

নান্তং মধ্যং ন পুনস্তবাদি 

পশ্যামি বিশ্বেশ্বর বিশ্বরূপ ৷৷

                 (শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতা, ১১/১৬)

সরলার্থ

অসংখ্য তোমার হাত, অসংখ্য উদর, অসংখ্য মুখ ও চোখ। তোমার অনন্ত রূপ আমি সর্বত্র দেখছি। কিন্তু হে বিশ্বেশ্বর, বিশ্বরূপ, তোমার আদি, অন্ত, মধ্য কোথাও কিছু খুঁজে পাচ্ছি না।

 

শ্রীশ্রীচণ্ডী

শরণাগতদীনার্তপরিত্রাণপরায়ণে। 

সর্বস্যার্তিহরে দেবি নারায়ণি নমোস্তু তে ৷৷

                                          (শ্ৰীশ্ৰীচণ্ডী, ১১/১২)

সরলার্থ

হে দেবী, শরণাগত, দরিদ্র ও পীড়িতজনের পরিত্রাণকারিণী, সকলের দুঃখবিনাশিনী, হে নারায়ণী, তোমাকে প্রণাম জানাই ।

 

বাংলা প্রার্থনামূলক কবিতা

গাব তোমার সুরে দাও সে বীণাযন্ত্র 

শুনব তোমার বাণী দাও সে অমর মন্ত্র । 

করব তোমার সেবা দাও সে পরম শক্তি, 

চাইব তোমার মুখে দাও সে অচল ভক্তি ৷৷ 

সইব তোমার আঘাত দাও সে বিপুল ধৈর্য,

বইব তোমার ধ্বজা দাও সে অটল স্থৈর্য ৷৷

                                           (সংক্ষেপিত)

                             [ গীতবিতান (পূজাপর্ব, গান – ৯৭), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ]

এ পরিচ্ছেদে যে-সকল ধর্মগ্রন্থ থেকে মন্ত্র বা শ্লোক নেওয়া হয়েছে, সেগুলো থেকে তিনটি ধর্মগ্রন্থের নাম লিখি :

১।
২।
৩।

এভাবে উপাসনা ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে ইষ্ট দেবতার নাম সংকীর্তন করতে হয়।

উপাসনা ও প্রার্থনার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। প্রার্থনা ও উপাসনার মাধ্যমে মনে স্থিরতা ও একাগ্রতা আসে। এ একাগ্রতা শুধু ধর্মের ক্ষেত্রে নয়, জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজন ।

উপাসনা ও প্রার্থনা করে আমরা সৎ ও ধার্মিক হতে পারি। আর আমরা সকলে ধার্মিক হলে আমাদের সমাজ শান্তিপূর্ণ হবে। আমরা সকলে ভালো থাকব। তাই সকলের মঙ্গলের জন্য আমরা প্রার্থনা করব।

Content added By

শূন্যস্থান পূরণ কর :

১। ঈশ্বর নিরাকার, তবে তিনি ___ হতে পারেন।

২। নিয়মিত উপাসনা করা আমাদের ___।

৩। পদ্মাসন ও ___ উপাসনার জন্য বিশেষ উপযোগী। 

৪। প্রার্থনা হচ্ছে ঈশ্বরের নিকট কিছু  ___।

৫। প্রার্থনা করার সময় দেহ ও মন. ___ থাকা প্রয়োজন ।

 

ডান পাশ থেকে শব্দ এনে বাম পাশের শব্দের সঙ্গে মেলাও :

১। মন্ত্র ও শ্লোক শুদ্ধভাবে আবৃত্তি করা হয়।

২। উপাসনা মানুষকে সৎপথে

৩। প্রার্থনার সময় মনে

৪। ঈশ্বরকে ব্রহ্মজ্ঞানে উপাসনা করাই

৫। বিভিন্ন দেব-দেবীকে প্রতিমায় আরাধনা করা

দীনতার ভাব থাকতে হবে।

সাকার উপাসনা।

প্রার্থনা করার সময় ।

পরিচালিত করে।

পূজা করা হয় ৷

নিরাকার উপাসনা ।

 

নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষেপে উত্তর দাও :

১। উপাসনা কাকে বলে ? 

২। নিরাকার উপাসনা কাকে বলে? 

৩। সাকার উপাসনা কাকে বলে? 

৪। উপাসনার দুটি আসনের নাম লেখ। 

৫। কীভাবে প্রার্থনা করতে হয়?

 

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

১। উপাসনার অর্থ কী? সাকার ও নিরাকার উপাসনার বর্ণনা দাও ৷ 

২। উপনিষদ থেকে প্রদত্ত প্রার্থনামূলক মন্ত্রটি সরলার্থসহ লেখ। 

৩। আমরা উপাসনা করব কেন? ব্যাখ্যা কর। 

৪। প্রার্থনার প্রয়োজনীয়তা কী? 

৫। তোমার পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলা প্রার্থনামূলক কবিতাটি লেখ ।

Content added By
দুই প্রকার
চার প্রকার
ছয় প্রকার
আট প্রকার
সাপ্তাহিক কর্ম
পাক্ষিক কর্ম
মাসিক কর্ম
নিত্যকর্ম
দেহ ও মন পবিত্ৰ হয়
জনবল বাড়ে
মান-সম্মান বাড়ে
শরীর সুস্থ হয়
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.