SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

পঞ্চম শ্রেণি (প্রাথমিক) - বৌদ্ধধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - NCTB BOOK

জাতক

সাধারণ অর্থে জাতক বলতে যে জন্মগ্রহণ করেছে তাকে বোঝায়। কিন্তু বৌদ্ধ সাহিত্যে জাতক শব্দটি বিশিষ্ট অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। গৌতম বুদ্ধের অতীত জন্ম বৃত্তান্তকে জাতক বলা হয়। এককথায় জাতক বুদ্ধের পূর্বজন্মের বিচিত্র কথা ও কাহিনী ।

বুদ্ধ ধর্ম দেশনা কালে উদাহরণ স্বরূপ জাতক কাহিনীগুলো বলতেন। বোধিসত্ত্ব বা বুদ্ধাঙ্কুর রূপে তিনি অনেক ভালো ভালো কাজ করেছিলেন। অনেক কুশল কর্ম করে শেষ জন্মে পূর্ণজ্ঞান বা বুদ্ধত্ব লাভ করে বুদ্ধ হন।

পালি সাহিত্যে জাতকের সংখ্যা ৫৫০টি। জাতক পালি ভাষায় রচিত। ত্রিপিটকের অন্তর্গত সুত্ত পিটকের খুদ্দক নিকায়ের একাদশ গ্রন্থ হলো জাতক ।

জাতকের উপদেশ ও শিক্ষা

জাতকের উপদেশ ও শিক্ষা সর্বজনীন। জাতক কাহিনীগুলো অতি চমৎকার। সদাচরণ, জীবে দয়া, মৈত্রী, করুণা, মহানুভবতা, সাধুতা, নৈতিকতা, সেবা, শিষ্টাচার, সংযম, মানবতা ইত্যাদি জাতক সাহিত্যের উপদেশ। কুশল কর্ম বা পথ অবলম্বন করে মহৎ ও আদর্শ জীবন গঠন করা জাতকের মূল শিক্ষা।

বুদ্ধ ধর্মোপদেশ দানের সময় জাতকের নানা কাহিনীর বর্ণনা করতেন। জাতকের ঘটনাগুলো বোধিসত্ত্ব জীবনের সময়কালের। বোধিসত্ত্বের নানা জন্ম ও পারমী পূরণের অবিচল প্রচেষ্টার কথাই জাতকের শিক্ষা। জাতকের উপদেশ ও শিক্ষা মানুষের জন্য মণিরত্নের মতো।

জাতকের উপদেশ মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব, মৈত্রী, করুণা আর ভালোবাসার বন্ধন ও সৌহার্দ্য সৃষ্টি করে। এগুলো মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে। জাতকের উপদেশের মধ্যে মানুষের জীবনাচার, পেশা এবং সমাজের অসংগতি ধরা পড়ে। ন্যায়-অন্যায় বোধ জাগ্রত করা এবং কুসংস্কার পরিহার করা জাতকের শিক্ষা।

জাতক পাঠের উদ্দেশ্য

জাতক পাঠে অনেক কিছু জানা যায়। সাধারণত সৎ কাজের সুফল ও অসৎ কাজের কুফল বর্ণনা করাই জাতকের উদ্দেশ্য। বৌদ্ধধর্ম মতে,এক জন্মের কর্মফলে কেউ বুদ্ধ হতে পারে না। গৌতম বুদ্ধ বোধিসত্ত্ব বা বুদ্ধাঙ্কুর রূপে অসংখ্য কল্পকাল ধরে নানা কুলে জন্মগ্রহণ করেন। এই সকল জন্মে দান, শীল, মৈত্রী, সেবা, কুশল কর্ম সম্পাদনের দ্বারা পারমী পূরণ করে বুদ্ধ হন। বুদ্ধ তাঁর শিষ্যদের সৎকর্ম, ভালো-মন্দ জানার উদ্দেশ্যে জাতক বলতেন। মৈত্রী সাধনা ও কুশলকর্ম বোধিসত্ত্ব জীবনের লক্ষ্য ও আদর্শ। জাতক পাঠ মূলত শিষ্য ও প্রশিষ্যদের সঠিক পথে চলা, ভালো কাজ করা, সমাজ জীবন, পারিবারিক জীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের উন্নতি, পরোপকার করা, ন্যায়পরায়ণ হওয়া ইত্যাদির শিক্ষা পাওয়া যায়। বিশেষ করে তাঁদের চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে নির্বাণের পথে নিয়ে যাওয়ার শিক্ষা লাভ করা।

জাতকের প্রভাব ও ঐতিহাসিক মূল্য

জাতকের প্রভাব ও ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম। সকলের কাছে জাতক পাঠ গুরুত্ব লাভ করেছে। জাতকের প্রভাব সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা ও প্রাচীন সাহিত্যে বিদ্যমান। প্রাচীন কালের ঈশপের গল্প ও ডেকামেরনে জাতকের প্রভাব পাওয়া যায়। আরব্য রজনীর কাহিনীতেও জাতকের প্রভাব রয়েছে। ভারতীয় সাহিত্যে জাতকের প্রভাব সবচেয়ে বেশি । যেমন- বৃহৎকথা, পঞ্চতন্ত্র, হিতোপদেশ, কথাসরিৎসাগর ইত্যাদি। এমনকি ইহুদি সাহিত্য ও বাইবেলেও জাতকের প্রভাব রয়েছে।

জাতকের ঐতিহাসিক মূল্য অত্যধিক। প্রাচীন ভারতের রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও ভৌগোলিক ইতিহাস রচনার অনেক উপাদান জাতকে রয়েছে। আড়াই হাজার বছর পূর্বের প্রাচীন শিক্ষা ব্যবস্থা, রাজ্যশাসন প্রণালি, সামাজিক রীতিনীতি ইত্যাদি জাতকে বর্ণিত আছে। জাতক সাহিত্যে বিভিন্ন রাজ্য, নগর, বন্দর, রাজন্যবর্গ, শ্রেণি, বণিক, বিহার, নদ-নদী প্রভৃতির উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন- কোশল, বৈশালী, মগধ, রাজগৃহ, শ্রাবস্তী, বারাণসী প্রভৃতি। আবার রাজাদের মধ্যে প্রসেনজিৎ, বিম্বিসার, উদয়ন, অজাতশত্রু প্রমুখ রাজার নাম পাওয়া যায়। শ্রেষ্ঠী ছিলেন ধনঞ্জয়, অনাথপিণ্ডিক প্রমুখ। জাতকের নানা দিক বিবেচনা করে ভিনসেন্ট স্মিথ, রিসডেভিড, ফৌসবল প্রমুখ ইতিহাসবিদ, পুরাতত্ত্ববিদ ও ঐতিহাসিকেরা জাতককে ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিহাসের অন্যতম রত্নভাণ্ডার বলে অভিহিত করেছেন। তাই বলা যায় জাতকের প্রভাব ও ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম। জাতক সাহিত্যের আলোকে তোমরা এবার কয়েকটি জাতক কাহিনী এবং উপদেশ সম্পর্কে জানতে পারবে।

মহাধর্মপাল জাতক

প্রাচীন কালে বারাণসীর রাজা ছিলেন ব্রহ্মদত্ত। তখন কাশীরাজ্যে ধর্মপাল নামে একটি গ্রাম ছিল। এই গ্রামে এক পণ্ডিত ব্রাহ্মণ বাস করতেন। তিনি ছিলেন দশ কুশল ধর্ম আচরণকারী। তাঁকে লোকে বলত ধর্মপাল। তাঁর পরিবারের সব লোক ও দাস-দাসীরা পর্যন্ত দানশীলপরায়ণ ছিলেন। তাঁরা শীল ও উপবাস ব্রত পালন করতেন।

বোধিসত্ত্ব এই বংশে পণ্ডিত ব্রাহ্মণের পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নাম রাখা হলো ধর্মপাল কুমার। তিনি বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তাঁর পিতা তাঁকে বিদ্যাশিক্ষার জন্য তক্ষশিলায় এক আচার্যের কাছে পাঠালেন। আচার্যের পাঁচশত শিষ্য ছিল। ক্রমে বোধিসত্ত্ব সেই সব শিষ্যদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হয়ে উঠলেন।

একদিন আচার্যের জ্যেষ্ঠ পুত্রের তরুণ বয়সে মৃত্যু হলো। আচার্য, জ্ঞাতি, বন্ধু ও ছাত্ররা সকলে কান্না করতে লাগলেন। একমাত্র ধর্মপাল কুমার বোধিসত্ত্ব রোদন করলেন না। তিনি শুধু হাসলেন।

আচার্য ধর্মপালকে হাসার কারণ কী জানতে চান। তখন ধর্মপাল বলল, তাঁর বংশে কেউ তরুণ বয়সে মারা যায় না। এ কথার সত্যতা জানতে আচার্য একদিন একটি মৃত ছাগলের অস্থি নিয়ে ধর্মপালের বাড়ি গেলেন। ধর্মপাল মারা গেছে বলে আচার্য তাঁর পিতাকে বলল। কিন্তু ধর্মপালের পিতা বিশ্বাস করলেন না। তখন আচার্য ছাগলের অস্থি দেখিয়ে বলল, এ অস্থি ধর্মপালের। ধর্মপালের পিতা কোনোভাবে বিশ্বাস করল না। তখন আচার্য সত্যতা স্বীকার করল ৷

আচার্য এবার প্রসন্ন হয়ে বললেন, ব্রাহ্মণ, আপনার পুত্র জীবিত আছে। সে আমার সর্বশ্রেষ্ঠ শিষ্য এবং তারই ওপর আমার অন্য শিষ্যদের বিদ্যাশিক্ষার ভার দিয়ে আমি এখানে এসেছি। আপনার পুত্র আমাকে বলেছে, আপনার বংশে তরুণ বয়সে কারো মৃত্যু হয় না। আমি এখন আপনার কাছে তার কারণ জানতে চাই। এ কথা শুনে ব্রাহ্মণ যে যে গুণের প্রভাবে তাঁর বংশে অকাল মৃত্যু হয় না তার গুণগুলো বর্ণনা করলেন। তিনি বললেন, আমরা সৎ ও অসৎ ধর্মের কথা শুনে কখনো আসক্ত হই না। অসৎকে ত্যাগ করে, সদা সর্বদা সৎ এর ভজনা করি। তাই আমাদের বংশে তরুণ বয়সে কারো মৃত্যু হয় না।

দানের পূর্বে আমাদের মন সুপ্রসন্ন থাকে। প্রীতি ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দান করি। দানের পর আমরা কোনো অনুতাপ করি না। তাই তরুণের মরণ হয় না। শ্রমণ, ব্রাহ্মণ, পথিক, যাচক, দরিদ্র, ভিখারি, দ্বারস্থ হলে তাদের আহার ও পানাহারে তুষ্ট করি। সাধ্যমতো তাদের দান করি ৷

আমাদের বংশের স্বামীরা সতীব্রত, স্ত্রীরা পতিব্রতা। সমগুণে ব্রহ্মচর্য পালন করি। এ বংশের সতী স্ত্রীর গর্ভে যে সন্তান জন্মায় সে মেধাবী, ধার্মিক, প্রজ্ঞাবান, সর্বশাস্ত্রবিদ ও দেবপরায়ণ হয়। মৃত্যুর পর সদ্‌গতি লাভের আশায় সকলেই ধর্মপথে বিচরণ করে। যে দাস-দাসী আশ্রিত আছে তারাও ধর্মপথে চলে ।

এরপর ব্রাহ্মণ বললেন, যে ধর্মপথে চলে, ধর্মই তাকে রক্ষা করে। বর্ষা ও রৌদ্রে ছাতা যেমন মানুষকে রক্ষা করে তেমনি ধর্মপরায়ণ ব্যক্তিকে ধর্ম রক্ষা করে। ধার্মিকের কখনো অকল্যাণ হয় না। তাই বলি আপনি যে অস্থি এনেছেন, তা অন্য কারো। আমার পুত্রের তরুণ বয়সে মৃত্যু হতে পারে না। এ কথা শুনে আচার্য পরমপ্রীত হয়ে ব্রাহ্মণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি ব্রাহ্মণকে বলেন, আমি আপনাকে পরীক্ষা করার জন্য ছাগ অস্থি এনেছিলাম। আপনার পুত্র সুস্থ আছে। এখন আপনি যে ধর্ম রক্ষা করেন সেই কথাগুলো অনুগ্রহ করে বলুন ।

আমরা আর্যধর্ম পালন করি, চার আর্যসত্য, আর্য অষ্টাঙ্গিকমার্গ, ব্রহ্মবিহার, উপোসথ ব্রত, পঞ্চশীল পালন করি। আচার্য কয়েকদিন সেখানে অবস্থান করে তক্ষশিলায় ফিরে গেলেন। তারপর ধর্মপাল কুমারকে সমস্ত বিদ্যা দান করে তাকে বহু অনুচরসহ গৃহে পাঠিয়ে দিলেন ।

উপদেশ : ধর্মপরায়ণ ব্যক্তিকে ধর্ম রক্ষা করে।

নক্ষত্র জাতক

প্রাচীনকালে বারাণসীর রাজা ছিলেন ব্রহ্মদত্ত। তাঁর রাজত্বকালে এ জাতকের ঘটনাটি ঘটেছিল। বারাণসী নগরের লোকেরা তাদের এক পাত্রের সাথে জনৈক গ্রামবাসীর মেয়ের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করলেন। আজীবক নামে নগরবাসীদের এক কুলগুরু ছিলেন। তাঁর নিকট গিয়ে নগরবাসীরা বলল, প্রভু, আজ আমাদের একটি শুভ কাজ আছে ।

এখানকার এক কুলপুত্রের সাথে এক গ্রামবাসী মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। নক্ষত্ৰ লগ্ন শুভ হবে কি? আজীবক মনে মনে অসন্তুষ্ট হলেন। ভাবলেন, বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে এরা লগ্ন শুভ কি না জানতে এসেছে। আগে জানার প্রয়োজন বোধ করেনি। তাই বিয়ের অনুষ্ঠান পণ্ড করার জন্য বললেন, আজ নক্ষত্র লগ্ন মোটেই শুভ নয় । বিয়ে সম্পন্ন হলে অমঙ্গল হবে। নগরবাসীরা তাঁর কথায় বিশ্বাস করে ঐদিন পাত্ৰী আনতে গেল না ।

এদিকে গ্রামবাসীরা সারাদিন অপেক্ষা করল। রাত হয়ে এলো। তবু বরযাত্রীদের দেখা নেই। উপায় না দেখে তারা রাতের মধ্যে অন্য বরের সাথে কনের বিয়ে দিয়ে দিল।

Content added By

শূন্যস্থান পূরণ কর :

১. গৌতম বুদ্ধের অতীত ___ জাতক বলা হয়।

২. জাতকের উপদেশ ও শিক্ষা মানুষের জন্য ___ মতো।

৩. সার্থক পণ্ডিত নাম ধর তুমি ___।

৪. শুভ কাজের কোনো ___ নেই ৷

৫. শ্রেষ্ঠী বোধিসত্ত্বের একটি ___ গ্রাম ছিল।

৬. বিপদে প্রকৃত ___ পরিচয় হয়।

 

বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশের মিল কর :

বামডান

১. জাতকের উপদেশ ও

২. এক জন্মের কর্মফলে কেউ

৩. তুমি শুধু পণ্ডিত বলে এক ভাগ,

৪. মূর্খরাই নক্ষত্র লগ্ন শুভ

৫. যে ধর্মপথে চলে

৬. বোধিসত্ত্ব সেই ছাতিম গাছের

১. অশুভ চিন্তা করে বসে থাকে।

২. ধর্মই তাকে রক্ষা করে।

৩. ফল খেত।

৪. শিক্ষা সর্বজনীন।

৫. আমি অতিপণ্ডিত তাই দুই ভাগ।

৬. বুদ্ধ হতে পারে না।

৭. জাতকের প্রভাব পড়ে।

 

নিচের প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

১. জাতক কাকে বলে?

২. জাতক পাঠের উদ্দেশ্য কী?

৩. ধর্মপাল কুমারের আচার্য কিসের অস্থি নিয়ে গিয়েছিল?

৪. অতিপণ্ডিতের শঠতা কীভাবে ধরা পড়েছিল ?

৫. নক্ষত্র জাতকের উপদেশ কী?

৬. শ্রেষ্ঠী বোধিসত্ত্ব বন্ধুদের কী ধর্মোপদেশ দিলেন?

 

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

১. জাতকের প্রভাব ও ঐতিহাসিক মূল্য নির্ধারণ কর। 

২. মহাধর্মপাল জাতক মতে তরুণ বয়সে মৃত্যু না হওয়ার গুণগুলো লেখ । 

৩. নক্ষত্র জাতকের বিষয়বস্তু লেখ। 

৪. ‘কাউকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়’. . এ কথাটি ব্যাখ্যা কর 

৫. কালকর্ণী কীভাবে শ্রেষ্ঠী বোধিসত্ত্বের ধনসম্পদ রক্ষা করেছিল? আলোচনা কর। । 

৬. উপদেশসহ কুরঙ্গমৃগ জাতকের বিষয়বস্তু লেখ ।

Content added By
বিনয়সম্মত জীবন গঠন
পরিপূর্ণ জীবন গঠন
অর্থনৈতিক জীবন গঠন
মহৎ ও আদর্শ জীবন গঠন
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.