SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা - NCTB BOOK

তোমরা কি কখনো চিন্তা করেছ ভবিষ্যতে কোন পেশায় যেতে চাও ? সে পেশা গ্রহণের জন্য তোমাদের কী কী বিষয় জানতে হবে, কী কী দক্ষতা অর্জন করতে হবে? এ দক্ষতাগুলোই বা কীভাবে তোমরা অর্জন করতে পারবে? সেই পেশায় সফল হতে হলে তোমাদের কী ধরনের গুণ বা দক্ষতা থাকা দরকার? আমরা এ অধ্যায়ে এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব । তাহলে এসো কর্মক্ষেত্রে বা পেশায় সাফল্য লাভের উপায়, শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের মধ্যকার সম্পর্ক এবং পরবর্তী শিক্ষাস্তর সম্পর্কে জেনে নিই ।

এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা :

১. কর্মক্ষেত্রে সাফল্য লাভের প্রয়োজনীয় গুণ অর্জনের উপায়সমূহ ব্যাখ্যা করতে পারব;
২. শিক্ষা ও কর্মের মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করতে পারব;
৩. কর্মসংস্থানের সাথে পাঠ্য বিষয়সমূহের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে পারব;

 ৪. পরবর্তী শিক্ষাস্তরের শাখা ও বিষয় নির্বাচনে নিজের আগ্রহ ও প্রবণতা শনাক্ত করতে পারব;
৫. আত্মকর্মসংস্থানের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে প্রতিবেদন লিখতে পারব;
৬. বিদ্যালয়ের আয় সৃজনমূলক একটি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারব;
৭. পরবর্তী শিক্ষান্তরের বিভিন্ন শাখা ও বিষয়সমূহের গুরুত্ব জানতে আগ্রহী হব এবং
৮. শিক্ষা প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করব ।

পাঠ : ১ ও ২

কর্মক্ষেত্রে সফলতার চাবিকাঠি

পূর্বের শ্রেণিতে আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে ও কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার প্রয়োজনীয় গুণগুলো সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। এসো দেখি এই গুণগুলোর মধ্যে কোনটি কোন কাজে লাগে ৷

দলগত কাজ :
নিচে কিছু গুণ বা দক্ষতার তালিকা দেওয়া আছে । এসো দলে বসে আলোচনা করি এই দক্ষতাগুলো স্কুলে বা শ্রেণিকক্ষে কীভাবে কাজে লাগে, আর কর্মক্ষেত্রেই বা কীভাবে কাজে লাগতে পারে । প্রতিক্ষেত্রে একটি করে উদাহরণও চিন্তা করি আর তা ছক অনুযায়ী খাতায় লিখি ।
গুণ/দক্ষতা

               বিদ্যালয়ে 

       এটি কীভাবে কাজে

                   লাগে?

           কর্মক্ষেত্রে
   এটি কীভাবে কাজে

              লাগে?

১. স্মরণশক্তি বা মনে রাখার ক্ষমতা
২. সময়মতো কাজ করে তা নির্ধারিত সময়ে জমা দেওয়া
৩. মনোযোগ দিয়ে শোনা
৪. কাজের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়া
৫. নিজের কথা গুছিয়ে বলতে পারা
৬. নোট নেওয়া
৭. নিজে নিজে কাজ করতে পারা
৮. লিখতে পারা বা লিখে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারা
৯. সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা
১১. উদ্দীপ্ত বা উৎসাহিত বোধ করা
১২. নেতৃত্ব দেওয়া
১৩. গুছিয়ে/সুবিন্যস্তভাবে কাজ করা
১৪. দলে কাজ করার ক্ষমতা
১৫. নিয়ম মেনে চলা
১৬. পরিশ্রমী
  

আমরা দেখলাম যে কিছু সাধারণ গুণাবলি বা দক্ষতা রয়েছে যেগুলো উভয় ক্ষেত্রে জরুরি । হোক তা শিক্ষাজীবন কিংবা কোনো নির্দিষ্ট পেশাগত জীবন । তবে কিছু দক্ষতা রয়েছে যা শুধু নির্দিষ্ট পেশার জন্যই দরকার । অর্থাৎ কিছু দক্ষতা হলো সাধারণ যেগুলো সকল পেশায় সাফল্য লাভের জন্য প্রয়োজন । আবার কিছু বিশেষ দক্ষতা আছে যেগুলো শুধু বিশেষ বিশেষ পেশার জন্য প্রয়োজন । যেমন- মাটির জিনিসের উপর সুন্দর কাজ করা, এটি কুমোর পেশার জন্য দরকার। এ রকম আরও অনেক বিশেষ দক্ষতার উদাহরণ ভোমরা নিজেরাই দিতে পারবে ।

বাড়ির কাজ :
নিচের বিষয়গুলো নিয়ে বাবা/মা/আত্মীয়/প্রতিবেশী যে কারোর সাথে কথা বলো । 

• জেনে নাও তার পেশা এবং এই পেশার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো ।
• দক্ষতাগুলোর তালিকা তৈরি করো ।
• এগুলোর মধ্যে কোনগুলো তুলনামূলকভাবে সাধারণ এবং কোনগুলো বিশেষ শ্রেণির (শুধু নির্দিষ্ট ধরনের পেশার জন্য প্রয়োজন) তা চিহ্নিত করো ।

কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পুণ

নিচে কিছু পেশাজীবীর তালিকা দেয়া হলো। তোমরা তোমাদের শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে সুবিধামতো এসব পেশার একেকজন ব্যক্তিকে শ্রেণিকক্ষে আমন্ত্রণ জানিয়ে কর্মক্ষেত্রে তাঁদের যে দক্ষতাগুলো দরকার হয় তা জেনে নিতে পারো। এসো দেখি আমরা কাদেরকে আমন্ত্রণ জানাতে পারি-

১. শিক্ষক
২. চিকিৎসক
৩. মালী
৪. দপ্তরি
৫. কাঠমিস্তি
৬. দর্জি
৭. জেলে
৮. মাঝি

৯. দোকানদার
১০. প্রকৌশলী
১১. কৃষক
১২. ব্যাংকার
১৩. সরকারি চাকরিজীবী
১৪. নার্স
১৫. কুমোর

দলগত কাজ :
প্রত্যেক দল একেকজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেবে । এজন্য তোমরা একটি সাক্ষাৎকারপত্র (কী কী প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে তার তালিকা) তৈরি করে নাও । তাতে যেন নিচের প্রশ্নগুলো বাদ না পড়ে তা লক্ষ রেখো ।


সাক্ষাৎকারপত্রের জন্য প্রশ্ন
১. আপনি কবে থেকে এ পেশায় আছেন ?
২. আপনার সাধারণত কী কী কাজ করতে হয়?
৩. কাজগুলো করার জন্য আপনার কী কী দক্ষতার প্রয়োজন হয়? ৪. এ দক্ষতাগুলো আপনি কীভাবে অর্জন করেছেন?
৫. এর মধ্যে কোন কোন দক্ষতাগুলো আপনার এই কাজের জন্য অপরিহার্য?
৬. এই দক্ষতাগুলো উন্নয়নে আপনি কী করেন?


এসো এবার আমরা দলে বসে প্রত্যেক পেশার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলোর তালিকা দিয়ে পোস্টার তৈরি করি । এর মধ্যে যেগুলো সাধারণ দক্ষতা সেগুলোকে একটি নির্দিষ্ট চিহ্ন দিয়ে চিহ্নিত করি । একইভাবে বিশেষ দক্ষতাগুলোকেও অন্য আরেকটি নির্দিষ্ট চিহ্ন দিয়ে চিহ্নিত করি । পোস্টারে চিহ্নগুলোর অর্থ লিখে দেই । প্রত্যেক দলের পোস্টার শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে লাগাই । সবাই অন্যান্য দলের পোস্টারগুলো দেখি । অতঃপর আলোচনা করি ।

পাঠ : ৩ ও ৪

কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার গুণাবলি

আমরা কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু গুনাবলি শনাক্ত করতে পেরেছি । এবার আমরা কিছু সাধারণ গুণাবলি যা কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার জন্য জরুরি তা অর্জনের উপায় সম্পর্কে জানব ।

দলগত কাজ:
আমরা কিছু শক্ত কার্ডে অথবা সাদা কাগজে নিচের তালিকা দেখে এক একটি কার্ডে এক একটি দক্ষতা বড় বড় করে লিখি-

এবার প্রতিটি দল একটি করে কার্ড তুলে নিই । যার কাছে যে দক্ষতার কার্ড রয়েছে সে দক্ষতাটি নিয়ে দলে আলোচনা করি । আলোচনা নিচের বিষয়কেন্দ্রিক হবে-

• এই দক্ষতাটি বলতে কী বোঝায়?
• এই দক্ষতাটি কেন প্রয়োজন ?
• এই দক্ষতাটি না থাকলে কাজ করতে কী সমস্যা হবে?
• কোন ধরনের পেশা/কর্মক্ষেত্রে এটি বেশি দরকার? • এই দক্ষতাটি কীভাবে অর্জন করা যায়?

প্রত্যেক দল থেকে একজন দলীয় আলোচনা থেকে পাওয়া মূল বিষয়বস্তুগুলো শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন কর 

কর্মক্ষেত্রে সাফল্য লাভের গল্প

রোদেলা ব্যাংকে চাকরি করেন । আজ একটি জরুরি মিটিং রয়েছে। তিনি ঠিক সময়ে মিটিং-এ এসে উপস্থিত হলেন। মিটিং-এ ব্যাংকের ব্যবস্থাপক একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব কে নিবে তা জানতে চাইলেন । রোদেলা সাথে সাথে হাত তুলে বললেন, “স্যার আমি এই দায়িত্বটি নিতে চাই ।” ব্যবস্থাপক খুশি হয়ে তাকে দায়িত্ব দিলেন । তিনি ভালোভাবে দায়িত্ব বুঝে নিলেন। দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে কম্পিউটারে কিছু কাজ করতে হবে । এর মধ্যে একটি কাজ কীভাবে করতে হয় তা রোদেলা জানতেন না, তাই তিনি এক সহকর্মীর কাছ থেকে তা শিখে নিলেন । পরের সপ্তাহের সভায় রোদেলা তাকে দেওয়া কাজটি উপস্থাপন করলেন । উপস্থাপনা শেষে সবাই খুশি হয়ে হাততালি দিল। ব্যবস্থাপক বললেন, 'চমৎকার' ।

দলগত কাজ ঃ

• উপরের ঘটনাটিতে রোদেলার কী কী গুণ ও দক্ষতার বিষয় ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করে নির্ধারণ করো।
• গুণগুলো না থাকলে কী ঘটতে পারত তা পোস্টার পেপারে উপস্থাপন করো ।

পাঠ : ৫ ও ৬

কর্মক্ষেত্রে সাফল্য লাভের ঘটনা : এসো নিজেরাই তৈরি করি

■ মীনা গ্রামের এক দোকানে সেলাইয়ের কাজ করে । এইবার ঈদে ..............
■ সাব্বির গ্রামে গ্রামে চিঠি বিলি করে.........
■ ডাক্তার মীরন কুমারের চেম্বারে আজ অনেক রোগীর ভিড়..........
■ তাহমিনা একটি জেলা শহরের স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে বিজ্ঞান পড়ায়। সামনের বার্ষিক পরীক্ষায়...
■ বিজয় চাকমা কাঠের কাজ করে । আজ..........

 ■ বাইরে অনেক বৃষ্টি । হাসান মাঝি.........

একক কাজ
উপরের অসমাপ্ত ঘটনাগুলো থেকে আগের পাঠের মতো করে একটি ঘটনা/ গল্প তৈরি কর যেখানে একজন মানুষের কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার বিভিন্ন গুণ প্রকাশ পাবে। গল্পটি অনুসারে একটি ছবি আঁক

এবার আমার লেখা ঘটনাটি পাশের বন্ধুটিকে পড়তে দিই। আঁকা ছবিটিও দেখাই। আমি পড়ি তার লেখা ঘটনাটি, দেখি তার আঁকা ছবিটি। ঘটনার মধ্য দিয়ে যে গুণ/দক্ষতাগুলো ফুটে উঠেছে সেগুলো বন্ধুটির লেখা ঘটনার নিচে তালিকাবদ্ধ করি। এবার দুজনে মিলে দুজনের লেখা ঘটনা ও তাতে যে গুণগুলো উঠে এসেছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করি।

শিক্ষা ও কর্মের সম্পর্ক

ঘটনা ১ : মীনা তার বাবার কাছে ছোটবেলা থেকেই মাটির জিনিস তৈরি করা শিখেছে । এখন সে মাটির জিনিসে সুন্দর ফুল, লতা-পাতার নকশা করা শিখছে। সে বাবার সাহায্য নিয়ে নিজে নিজে দুটি ফুলদানি তৈরি করল । তাতে কারুকাজ ও রঙ করল । গত শনিবার হাটে তার বাবা ফুলদানি দুটি ভালো দামে বিক্রি করেছে । সেই খুশিতে পরিবারের সবাই আজ পিঠা খাচ্ছে ।

ঘটনা ২ : মারিয়া পাইলট। সে বিমান চালায় । এজন্য তাকে বিভিন্ন এলাকা সম্পর্কে, আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা রাখতে হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা ও আবহাওয়া সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা সে বিদ্যালয়ে থেকে অর্জন করেছিল । এছাড়া সে ট্রেনিংয়ের সময় বিমান চালানোর কৌশল শেখার সাথে সাথে এগুলো ভালো করে রপ্ত করেছে, তাই সে অনেক আত্মবিশ্বাসী ।

ঘটনা ৩ : বিজয় চাকমা বিদেশে কাজ করে । তাকে ভারী জিনিস এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে হয় । তার মতো আরো অনেক বাংলাদেশি এসব কাজ করে । সে প্রতিমাসে দেশে টাকা পাঠায় । সে টাকায় তার বাবার চিকিৎসা হয়, ছোট বোনের পড়ার খরচ মেটে। তার সহকর্মী অনেকেরই ভারী জিনিস বহনের কারণে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু সে বেশ সুস্থ । সবাই তার কাছে এই সুস্থতার রহস্য জানতে চাইলে সে বলল, ভারী জিনিস কীভাবে তুলতে হয় ও নামিয়ে রাখতে হয় তার নিয়ম আমি দেশে একটি প্রশিক্ষণ থেকে শিখেছি । আরেক বাংলাদেশি সালাম বলল- “ইশ! আমি এ বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণই নেইনি” ।

দলগত আলোচনা :

উপরের ঘটনা তিনটি আলোচনার মাধ্যমে ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে উদাহরণ দিয়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে হবে:

■ আমরা যে পেশায় বা কাজে নিযুক্ত হতে চাই সেই পেশা বা কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো কী উপায়ে অর্জন করতে পারি?
■ কাজে সাফল্যের সাথে প্রয়োজনীয় দক্ষতার সম্পর্ক উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
■ প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে কর্মক্ষেত্রে কী ধরনের সমস্যা বা অসুবিধা হতে পারে?

প্রত্যেক পেশা বা কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন । এগুলো আমরা বিভিন্নভাবে অর্জন করতে পারি । কিছু কিছু দক্ষতা আছে যা আমরা কোনো প্রতিষ্ঠান ছাড়াই পরিবার বা অন্য কারো কাছ থেকে শিখে নিতে পারি । যেমন- হাতের কাজ, সেলাই, রান্না ইত্যাদি ।

আবার কিছু কিছু দক্ষতা অর্জনের জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দরকার হয় । যেমন— শিক্ষক, চালক, উকিল, ডাক্তার, নার্স, প্রকৌশলী, স্থপতি ইত্যাদি পেশার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে শিক্ষালাভ ও প্রশিক্ষণ গ্রহণের প্রয়োজন । তবে যেকোনো বিষয়েই প্রশিক্ষণ বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মানুষের দক্ষতা উন্নয়নে সাহায্য করে । যেমন- সেলাই বা রান্নার কাজ হাতে-কলমে পরিবারের কারো কাছ থেকে শিখলেও এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ আমাদের এ দক্ষতাগুলো বৃদ্ধিতে আরও সাহায্য করে ।

পাঠ : ৭ হতে ১০

পঠিত বিষয় ও কর্মসংস্থান

ঘটনা ১ : সাবিহার খুব ইচ্ছা সে বড় হয়ে ফার্মেসি/ঔষধ প্রযুক্তি বিষয়ে পড়ালেখা করবে । কারণ বিভিন্ন ধরনের ওষুধপত্র, সেগুলোর গঠন, গুণাগুণ ইত্যাদি বিষয়ে তার অনেক আগ্রহ। এসএসসি পরীক্ষার ফল বের হওয়ার পর যখন সাবিহা বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে চাইল তখন কলেজের শিক্ষকেরা জানালেন বিজ্ঞান আর গণিত বিষয়ে কম নম্বর পাওয়ায় সে ব্যবসায় শিক্ষা অথবা মানবিক শাখায় ভর্তি হতে পারবে, কিন্তু বিজ্ঞান শাখায় নয় । শিক্ষক বললেন, “ইংরেজিতে তুমি অনেক ভালো করেছ । তুমি বড় হয়ে ইংরেজি সাহিত্য পড়তে পার' । সাবিহা বলল, “কিন্তু ম্যাডাম আমি তো ফার্মেসি বিষয়ে পড়তে চেয়েছিলাম।” ম্যাডাম বললেন, “সাবিহা, বিজ্ঞান বিষয়ে যথেষ্ট নম্বর না থাকলে তো বিজ্ঞান শাখায় পড়া যাবে না । আর বিজ্ঞান শাখায় না পড়লে ভবিষ্যতে তুমি ফার্মেসি বিষয়ে পড়তে পারবে না।” সাবিহা বাসায় যেতে যেতে ভাবতে লাগল— “ইশ! যদি আগে জানতাম তাহলে গণিত আর বিজ্ঞানের বিষয়গুলো ভালো করে পড়তাম। এখন আর আমার ইচ্ছা পূরণের কোনো পথ থাকল না।”

ঘটনা ২ : আশরাফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে ঢুকেছে। এখানে প্রায়ই তাকে বিদেশি কোম্পানির ম্যানেজারদের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। কখনো কম্পিউটারে ই-মেইলের মাধ্যমে, কখনো ফোনে, কখনো বা সামনাসামনি মিটিং-এ। এসব ক্ষেত্রে তাকে ইংরেজিতে যোগাযোগ করতে হয়। আশরাফ বরাবরই ইংরেজিতে ভালো। সে ইংরেজি বিষয়টি সব সময়ই ভালো করে পড়েছে । অবসর সময় সে টেলিভিশনে ভালো ইংরেজি চলচ্চিত্র আর অনুষ্ঠান দেখত । বন্ধু-বান্ধবের সাথে প্রায়ই সে ইংরেজিতে কথা বলার চর্চা করত । এজন্য সে সাবলীলভাবে, শুদ্ধ করে ইংরেজিতে কথা বলতে পারে । তার অফিসের লোকজন বলেন, “আশরাফ সাহেব, আপনি তো চমৎকার ইংরেজি বলেন।”

সাবিহা আর আশরাফের ঘটনাগুলো আমরা পড়লাম । আমরা দেখলাম শিক্ষাজীবনের সাথে কর্মজীবনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । আসলে মানুষের জীবনের প্রতিটি ধাপ একটির সাথে আরেকটি সম্পর্কযুক্ত এবং নির্ভরশীল । একটি ধাপে যাওয়ার জন্য আগের ধাপে সাফল্য লাভ করা জরুরি। শুধু তাই নয়, জীবনের বিভিন্ন সময়ে আমাদের বিভিন্ন পথ বাছাই করতে হয়। একেক পথ একেক ধরনের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দেয় । আবার কিছু কর্মসংস্থানের পথ বন্ধও হয়ে যায় । তাই আমাদের প্রতিটি ধাপ যেমন সফলভাবে পার হওয়ার চেষ্টা করতে হবে, তেমনিভাবে নিজের ইচ্ছা, আগ্রহ, ক্ষমতা বিচার করে সঠিক পথটি বেছে নিতে হবে । পরবর্তী পাঠসমূহে আমরা উদাহরণ হিসেবে কয়েকটি বিষয়ের সাথে কর্মসংস্থানের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে জানব ।

দলগত কাজ :
দলে বসে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে আলোচনা করো –
১. সাবিহা কেন বিজ্ঞান শাখায় পড়তে চেয়েছিল? তার স্বপ্নপূরণ হওয়ার পথে বাধা কী?

 ২. আশরাফের শিক্ষাজীবন কীভাবে তার কর্মজীবনকে প্রভাবিত করেছে তা ব্যাখ্যা করো । 

৩. তুমি ভবিষ্যতে কী হতে চাও? এজন্য তোমায় কোন বিষয় পড়তে হবে? সেজন্য তোমাকে কোন শাখা বেছে নিতে হবে?

পোর্টফোলিও


পোর্টফোলিও হলো শ্রেণিকক্ষ ও বাড়িতে তোমার করা কাজ ও তোমার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যের সংরক্ষণ । এই | সংরক্ষণের কাজটি করার দায়িত্ব তোমার । এজন্য তোমার পড়ালেখা, আগ্রহ, সামর্থ্য, সম্ভাব্য পছন্দের পেশা | ইত্যাদি সম্পর্কিত কাজগুলো আলাদা পৃষ্ঠায় করলে ভালো হয় । এতে এটি পৃথকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যাবে । এ রকম গুরুত্বপুর্ণ তথ্য সংবলিত সব পৃষ্ঠা একত্র করে তোমার পোর্টফোলিও তৈরি হবে । প্রস্তুতকৃত পোর্টফোলিওতে তোমার ইচ্ছা, আগ্রহ, দক্ষতা, মূল্যবোধ ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য জমা থাকবে । প্রয়োজনে তুমি এগুলো প্রায়ই পড়ে দেখতে পারবে। এতে তোমার ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা ও পেশা বা কর্ম নির্বাচন করা সহজ হবে । এগুলো সংগ্রহের জন্য তুমি একটি সুন্দর ফাইল তৈরি করতে পারো ।

যে কাজগুলো পোর্টফোলিওর জন্য সংগ্রহ করতে হবে সেগুলোতে একটি নির্দিষ্ট চিহ্ন ব্যবহার করা প্রয়োজন ।

দলগত কাজ
এসো দলে বসে আলোচনা করে আমরা নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখি । প্রয়োজনে কিছু অংশ শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে লিখি ।

পঠিত বিষয় (যেমন— ইংরেজি/ বাংলা এবং কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা )

 ১. ইংরেজি/বাংলা বিষয়ে আমরা কী কী শিখি? কী কী দক্ষতা অর্জন করি ?

পাঠ : ১১

আমার জানার আগ্রহ

নিজের শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন পছন্দের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো 'আগ্রহ' । আমাদেরকে বুঝতে হবে আমাদের আগ্রহ কোন দিকে। অনেক সময় আগ্রহ ছাড়াই পড়ার কারণে শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং কখনো কখনো শেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে ।

ঘটনা ১ : সালামের বাসায় গণিত চর্চার খাতা দেখে তার বড় বোন অবাক । প্রতিটি পৃষ্ঠার কোণায় কোণায় কী যে সুন্দর কারুকাজ! আর কয়েক পৃষ্ঠা পর পরই নানা ছবি আঁকা। চিত্রগুলো এঁকেছে সালাম । বড় বোন সাদিয়া বলল, 'বাহ্ তোর আঁকার হাত তো বেশ ভালো।' সালাম বলল, “আমার আঁকতে খুব ভালো লাগে । সুন্দর সুন্দর আঁকা ছবির প্রতিও আমার অনেক আগ্রহ । আমি বড় হয়ে চিত্রশিল্পী হতে চাই । তাই উচ্চমাধ্যমিক পাস করে চারু ও কারুকলা নিয়ে পড়তে চাই ।”

সালামের আগ্রহ আঁকার দিকে । তোমার আগ্রহ কীসে? চলো একটু চিন্তা করে তা বের করার চেষ্টা করি।

একক কাজ
চারটি বিষয়ে (লোকজন, তথ্য, জিনিসপত্র, সৃজনশীলতা) তোমার নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ উল্লেখ করো । এক্ষেত্রে প্রতি অংশে যে বিবৃতিগুলো দেওয়া আছে সেগুলো পড়ে তোমার জন্য সত্য হলে হ্যাঁ মিথ্যা হলে না এর ঘরে টিক (/) চিহ্ন দাও ।

 

মানুষ লোকজন

বিবৃতিহ্যাঁনা
আমি শিশুদের সঙ্গ দিতে এবং তাদের সাথে খেলা করতে ভালোবাসি ।  
আমি বন্ধুদের সমস্যা মন দিয়ে শুনি ।  
কোনোকিছু কীভাবে করতে হয় তা মানুষকে শেখাতে আমার ভালো লাগে ।  
অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করতে আমার ভালো লাগে ।  
কোনো দল বা সংগঠনের কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিতে ভালো লাগে ।  
সাধারণ মানুষজনের সাথে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি ।  
সাধারণ মানুষজনের সাথে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি ।  
মোট  

 

তথ্য

 

বিবৃতিহ্যাঁনা
আমার পছন্দের কোনো বিষয় সম্পর্কে আমি জানার চেষ্টা করি ।  
আমি নিয়মিত দৈনিক সংবাদপত্র পড়তে ভালোবাসি ।  
বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আমার ভালো লাগে ।  
আমি সংখ্যা ও পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসি ।  
বাজারের হিসাব বা অন্যান্য হিসাব রাখতে আমার ভালো লাগে ।  
আমি বিভিন্ন দেশের ডাকটিকেট সংগ্রহ করি ।  
আমি বিভিন্ন ধরনের তথ্যকে শ্রেণিবিন্যাস করতে পছন্দ করি ।  
মোট  

 

বস্তু/সামগ্রী

বিবৃতিহ্যাঁনা
আমি নিজেই আমার খেলাধুলার সামগ্রী তৈরি করি ।  
বিভিন্ন যন্ত্রপাতি মেরামত করতে আমার ভালো লাগে ।  
সেলাই বা অন্যান্য হাতের কাজ করতে ভালোবাসি ।  
কাঠ দিয়ে কিছু তৈরি করতে আমার ইচ্ছে করে ।  
ক্যালকুলেটরের ব্যবহার আমার বেশ প্রিয় ।  
ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহার করতে আমার ইচ্ছা করে/ভালো লাগে ।  
আসবাবপত্র, বাড়ি-ঘর, মাঠ ইত্যাদির নকশা তৈরি করতে আমার ভালো লাগে ।  
মোট  

 

সৃজনশীলতা

বিবৃতিহ্যাঁনা
আমি একটি কক্ষকে সাজাতে পছন্দ করি ।  
আমি কবিতা বা গল্প লিখতে ভালোবাসি ।  
স্কুলের বা অন্য কোনো ধরনের পত্রিকা প্রকাশে আমি আগ্রহী ।  
ছবি আঁকতে ও রঙ করতে আমার ভালো লাগে ।  
নাটক/মঞ্চে অভিনয় করতে ভালো লাগে/ ইচ্ছা করে ।  
কোনো ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে ভালো লাগে ।  
নতুন কোনো জিনিস তৈরি/আবিষ্কার করতে পছন্দ করি ।  
মোট  

এবারে প্রত্যেক অংশে কয়টি হ্যাঁ আর কয়টি না উত্তর এসেছে তা হিসাব করে সবচেয়ে নিচে মোটের ঘরে বসাই । দেখ তো কোন অংশের জন্য তোমার ‘হ্যাঁ' উত্তরটি সবচেয়ে বেশি এসেছে? যে অংশে হ্যাঁ বেশি এসেছে সেটিই তোমার আগ্রহের দিক । নিচে তোমার আগ্রহের বিষয়টিতে টিক (/) চিহ্ন দাও ।

● মানুষ/লোকজন
●  তথ্য
● বস্তু/সামগ্রী
● সৃজনশীলতা

পাঠ : ১২

আমার দক্ষতা ও সামর্থ্য

ঘটনা : আজ চিন্তাপুর হাইস্কুলের পিকনিক। পিকনিকের যাবতীয় খরচের হিসাব-নিকাশের দায়িত্বে ছিল মাইকেল । সে সকল শিক্ষার্থীর চাঁদার হিসাব রেখেছে, তাদের চাঁদার রসিদ লিখে দিয়েছে । একেক জন একেক খাতে খরচ করেছে আর সব খরচের রসিদ জমা দিয়েছে মাইকেলকে । সে সকল রসিদ সংগ্রহ করে খরচের হিসাব মিলিয়েছে । এমনকি যখন পিকনিক স্পটে পুরস্কার বিতরণী হচ্ছিল তখনো সে হিসাব-নিকাশ নিয়ে ব্যস্ত । বাসে করে সবাই গান গাইতে গাইতে ফিরছিল । মাইকেল তাদের শ্রেণি শিক্ষককে হিসাবের খাতাটি বুঝিয়ে দিল। ম্যাডাম খুব খুশি হলেন। বাস থেকে নামার আগে ম্যাডাম সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন। আর বললেন, 'মাইকেল চমৎকারভাবে হিসাব-নিকাশের কাজটি করেছে। এ বিষয়ে সে আসলেই দক্ষ। সে নিশ্চয়ই বড় হয়ে হিসাব-নিকাশ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারবে' । সবাই মাইকেলের জন্য হাততালি দিয়ে উঠল ।

একক কাজ :
এখানে চারটি বিষয়ে বিভিন্ন দক্ষতার কথা উল্লেখ করা আছে । এর মধ্যে যেগুলো তোমার আছে সেগুলোর ডান পাশে টিক চিহ্ন দাও। এই পৃষ্ঠাগুলোও সংরক্ষণ করার চেষ্টা করবে ।

মাইকেল হিসাব-নিকাশে দক্ষ । কেউ হয়তো গান-বাজনায় দক্ষ, কেউ রান্নায় দক্ষ, কেউ কাজে নেতৃত্ব দিতে দক্ষ । তুমি কোন ধরনের কাজে পটু তা কি ভেবে দেখেছ? চলো আমরা তা একটু বের করার চেষ্টা করি ।

 

পাঠ : ১৩

আমাদের আগ্রহ ও সামর্থ্যের মধ্যে সম্পর্ক

সব সময়ই মানুষের যে বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে, সে বিষয়েই সে দক্ষ হবে এমনটি নাও ঘটতে পারে । আবার যে বিষয়ে একজন দক্ষ সে বিষয়ে তার তেমন আগ্রহ নাও থাকতে পারে । আগ্রহ হলো কোনো কাজ করার ইচ্ছা আর দক্ষতা বা সামর্থ্য হলো কাজ করার ক্ষমতা। আমাদের যদি কোনো বিষয়ে আগ্রহ থাকে তবে তা অর্জন করা সহজ । এখন আমরা একটি গল্পের মাধ্যমে জানব আগ্রহ কিভাবে সামর্থে পরিণত হয়েছে ।

আগ্রহ ও সামর্থ্য

সাইফের রান্নার ব্যাপারে খুব আগ্রহ। খবরের কাগজে বিভিন্ন রান্নার পদ্ধতি সে পড়ে, সংগ্রহ করেও রাখে । টিভির বিভিন্ন রান্নার অনুষ্ঠান সে মন দিয়ে দেখে। কিন্তু সে কখনো রান্না করেনি, কীভাবে করতে হয় তাও জানে না । তার আগ্রহ দেখে তার মা বললেন, 'সাইফ, আজ থেকে তুমি প্রতিদিন আমার সাথে একটু একটু করে রান্না শিখবে। এতে একদিন তুমিও ভালো রান্না করতে পারবে।' এক বছর পর সাইফ রাতে খাবার পরিবেশন করছে । মেঝেতে পাটি বিছিয়ে তার নিজের রান্না করা ভাত, সরষে দিয়ে ইলিশ, পালংশাক ভাজি ও ডাল ভর্তা এনে সাজিয়ে দিল । সবাই খুব তৃপ্তি নিয়ে খেল । তার ছোট বোন তো বলেই বসল, ‘এর পর থেকে ভাইয়াই রান্না করুক না মা।' সাইফ হেসে বলল 'আগে আমার রান্নার আগ্রহ ছিল, কিন্তু আমি রান্না করতে পারতাম না । এখন আমি আমার আগ্রহের বিষয়টি শিখে নিয়েছি।' এভাবেই সাইফের আগ্রহ সামর্থ্যে পরিণত হলো।

জোড়ায় কাজ :
সাইফের মতো তোমারও কি কোনো বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে? তোমার পাশের বন্ধুটির সাথে তা আলোচনা করে কিভাবে সামর্থ্যে পরিণত করা যায় উপস্থাপন করো।

একক কাজ :
তোমার আগ্রহ আছে কিন্তু সে বিষয়ে দক্ষতা নেই অথবা দক্ষতার ঘাটতি আছে। তাহলে নিচের বিষয়গুলো নিয়ে পরিবারের সদস্য ও অন্যদের সাথে আলোচনা করে একটি প্রতিবেদন লেখ ।
১. যে বিষয়ে তোমার আগ্রহ আছে সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন কি সম্ভব?

২. যদি সম্ভব হয় তবে কীভাবে? এক্ষেত্রে কারা, কীভাবে তোমাকে সাহায্য করতে পারে?
তোমার করণীয় কী? 

৩. যদি সম্ভব না হয় তবে কেন? এক্ষেত্রে আরেকটি বিকল্প আগ্রহ বেছে নাও।

 

পাঠ : ১৪ হতে ১৮

ব্যক্তিত্ব ও পেশা নির্বাচন

আমাদের ব্যক্তিত্ব হলো আমাদের আবেগ-অনুভূতি ও আচার-আচরণের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের একটি সামগ্রিক রূপ । কেউ বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকতে পছন্দ করে, এটি তার ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য। কেউ আবার পছন্দ করে বাইরে গিয়ে বন্ধু বান্ধবের সাথে হৈ-হুল্লোড় করতে, এটি তার ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য ।

ব্যক্তিত্ব ও কর্মসংস্থান

আদিবা একটি বিদ্যালয়ে চাকরির জন্য সাক্ষাৎকার দিয়ে বের হয়েছে। যারা সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা মনে করছেন, যে কাজটির জন্য তারা নিয়োগ দিতে চাচ্ছেন তার জন্য আদিবাই উপযুক্ত । আদিবা বেশ হাসি-খুশি, উচ্ছল এবং সবার সাথে কথা বলতে ভালোবাসে। স্কুলের ছোট্ট ছেলেমেয়েদের শিক্ষক হিসেবে এ রকম ব্যক্তিত্বের একজনকেই তারা খুঁজছেন। তাছাড়া ছোট শিশুদের পড়ানোর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাও আদিবার রয়েছে।

দলগত কাজ
দলে বসে নিচের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করে উপস্থাপন করো - যারা আদিবার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা কেন স্কুলের শিক্ষক হিসেবে তাকে উপযুক্তমনে করছেন?
একক কাজ
মানুষের ব্যক্তিত্ব কীভাবে তার কর্মজীবনকে প্রভাবিত করে তার বর্ণনাসহ একটি গল্প তৈরি করো ।

 

ব্যক্তিত্ব

এসো আজকে একটি খেলার মাধ্যমে একজন আরেকজন সম্পর্কে জানি। নিচের ছকটি পূরণ করো । এজন্য ক্লাসে নিচের তালিকার সাথে মিলিয়ে আরেকজনকে খুঁজে বের কর এবং তার নাম ও স্বাক্ষর সংগ্রহ করো ।

 তোমার আর তার পছন্দের বিষয় (subject) একই
তোমার আর তার পছন্দের টেলিভিশনের অনুষ্ঠান একই তোমাদের শখ একই রকম
তোমরা দুজনে একইভাবে (হেঁটে/সাইকেলে..... ) স্কুলে আস ।যে বাসায় কোনো পশুপাখি পোষে
এমন একজন যার পরিবারের কেউ একজন শিক্ষক এমন সহপাঠী যে সাঁতার জানে
 যে সহপাঠী বাগান করে ।

ব্যক্তিত্ব মানুষের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । একেক ব্যক্তিত্বের মানুষ একেক ধরনের কাজ পছন্দ করে । আবার একেক ব্যক্তিত্বের মানুষ একেক ধরনের কাজের জন্য উপযুক্ত । আদিবার ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য উচ্ছলতা । যা তার কর্মজীবন নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে । তোমার ব্যক্তিত্ব কেমন তা কি তুমি জানার চেষ্টা করেছ? এসো চেষ্টা করে দেখি ।

একক কাজ
তোমার ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করার জন্য নিচের চারটি অংশে দেওয়া তথ্যগুলো তোমার জন্য সত্য হয়ে থাকলে পাশের ঘরে টিক চিহ্ন দাও ।

লোকজন

তুমি কি...... 
আশপাশের মানুষের সাথে হাসিখুশি আচরণ করো? 
বন্ধু ও পরিবারের সবাইকে সাহায্য করো? 
দলে কাজ করার সময় সহযোগিতাপূর্ণ ? 
অন্যের চাহিদা সম্পর্কে সচেতন? 
কোনো দল বা সংগঠনের নেতা/নেত্রী ? 
নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে আগ্রহী ? 
মানুষের মতামত এবং দৃষ্টিভঙ্গির উপর প্রভাব বিস্তারকারী  
অন্যের প্রতি সহমর্মিতাসুলভ (understanding) আচরণ করো? 
মোট 

 

তথ্য

তুমি কি .......... 
তথ্য সংগ্রহ করো? 
হিসাব-নিকাশ করো ? 
সংখ্যা ও পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করতে চাও? 
গবেষণায় আগ্রহী? 
তথ্য সংরক্ষণ করো ? 
তথ্য সাজাতে পছন্দ করো ? 
তথ্য আদান-প্রদানে আগ্রহী? 
মোট  

 

বস্তু/সামগ্রী

তুমি কি ............ 
জিনিসপত্র মেরামত করতে পছন্দ করো? 
মানুষের চাইতে যন্ত্রপাতি এবং বস্তু/সামগ্রী নিয়ে কাজ করতে বেশি ভালোবাস? 
সাইকেল চালনায় পারদর্শী 
খাবার তৈরি করতে পছন্দ করো? 
কাঠের কাজ করতে জানো ? 
সেলাই বা হাতের কাজ করতে পারো? 
কোনো কিছু করা বা চালানোর ব্যাপারে উৎসাহী/অনুসন্ধিৎসু ? 
কাজের জন্য বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করো ? 
মোট  

 

সৃজনশীলতা

তুমি কি .......... 
কোনো ঘটনা কেন এবং কীভাবে ঘটছে তা জানতে ইচ্ছুক? 
যেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয় সেখানে কাজ করতে আগ্রহী ? 
কোনো কিছু করার জন্য নতুন পন্থা খুঁজতে পছন্দ করো ? 
শৈল্পিক/শিল্পমনা? 
নিজের রুটিন নিজেই তৈরি করতে ভালোবাস? 
কাজকর্ম ও আচরণের ক্ষেত্রে বহুমুখী ও নমনীয় ? 
লেখায় বা আঁকার মাধ্যমে সুন্দরভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারো ? 
মোট  

এবারও আগেরমতো (v) চিহ্নগুলো যোগ করে দেখ তোমার ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যে কোন ক্ষেত্রের প্রভাব বেশি ।

আমাদের কাজের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়গুলো

শাকিল, জামিল আর মিলা তিন বন্ধু একসাথে এইচএসসি পর্যায়ে পড়ালেখা করেছিল । প্রায় ছয় বছর পর এক বন্ধুর বাসায় তাদের দেখা হলো । পাস করে শাকিল ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে পড়ে এখন একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে । জামিল মাষ্টার্স পাস করে একটি কলেজের শিক্ষক । মিলা অনার্স ও মাস্টার্স করে এখন ব্যবসা করছে । আজ তারা নিজের জীবনের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলছে। তারা সবাই একমত যে তারা, যে ধরনের কাজকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তাই তারা করছে ।

শাকিল বলল: আমার ইচ্ছা ছিল আমি ভালো চাকরি করব, আমার গ্রামের উন্নয়ন করব । আমি তা করতে পেরেছি ।

জামিল বলল: মিলা, তোমার ভয় করে না, ব্যবসায় তো অনেক ঝুঁকি । মিলা বলল: নারে, আমার ঝুঁকি মোকাবেলা করতেই ভালোলাগে । তাইতো ব্যবসাটাই বেছে নিয়েছি । 
তোর তো মনে হয় এখনো অনেক লেখাপড়া করতে হয়, যেহেতু শিক্ষার্থীদের পড়াস !

 জামিল বলল: তা তো বটেই । আমার এটা ভালো লাগে। শিক্ষক হিসেবে সবাই আমাকে সম্মান করে ।

দলগত কাজ :
উপরের গল্পটি পড়েছ তো । গল্পটির আলোকে ক্যারিয়ারে সফল হওয়ার গুরুত্ব আলোচনা করে উপস্থাপন করো।

 

আমাদের কাজের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়গুলো

শাকিল, জামিল আর মিলা তিন বন্ধু একসাথে এইচএসসি পর্যায়ে পড়ালেখা করেছিল । প্রায় ছয় বছর পর এক বন্ধুর বাসায় তাদের দেখা হলো । পাস করে শাকিল ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে পড়ে এখন একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে । জামিল মাষ্টার্স পাস করে একটি কলেজের শিক্ষক । মিলা অনার্স ও মাস্টার্স করে এখন ব্যবসা করছে । আজ তারা নিজের জীবনের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলছে। তারা সবাই একমত যে তারা, যে ধরনের কাজকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তাই তারা করছে ।
শাকিল বলল: আমার ইচ্ছা ছিল আমি ভালো চাকরি করব, আমার গ্রামের উন্নয়ন করব । আমি তা করতে পেরেছি ।
জামিল বলল: মিলা, তোমার ভয় করে না, ব্যবসায় তো অনেক ঝুঁকি । মিলা বলল: নারে, আমার ঝুঁকি মোকাবেলা করতেই ভালোলাগে । তাইতো ব্যবসাটাই বেছে নিয়েছি । তোর তো
মনে হয় এখনো অনেক লেখাপড়া করতে হয়, যেহেতু শিক্ষার্থীদের পড়াস ! জামিল বলল: তা তো বটেই । আমার এটা ভালো লাগে। শিক্ষক হিসেবে সবাই আমাকে সম্মান করে ।

দলগত কাজ :
উপরের গল্পটি পড়েছ তো । গল্পটির আলোকে ক্যারিয়ারে সফল হওয়ার গুরুত্ব আলোচনা করে উপস্থাপন করো।

 

 

কর্মক্ষেত্রে আমরা যেসব বিষয়কে মূল্য দেই
মিলা, জামিল, শাকিল- এরা প্রত্যেকেই জানত পেশা থেকে তারা সবচেয়ে বেশি কী আশা করে । সে অনুযায়ী তারা তাদের পেশা পছন্দ করেছে।

এসো তোমাদেরকে একজন সফল ব্যক্তির গল্প শুনাই যিনি তোমাদের পরিচিত । তিনি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন । খুব ছেলেবেলা থেকেই তাঁর ভালো লাগতো নদী, অবারিত প্রকৃতি আর মানুষ । আর এসব কিছুই সে ফুটিয়ে তুলতো রং তুলিতে আঁকা চিত্রে । তাঁর আঁকা চিত্রে মানুষ আর প্রকৃতি জীবন্ত হয়ে উঠতো । ছেলেবেলা থেকে তিনি তাঁর আগ্রহ ও সামর্থ্যের সংযোগে নিজেকে প্রস্তুত করেন । তাঁর তীব্র মানসিক চাওয়া তাকে শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে । তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতিটি পর্যায়ে চিত্রকলাকেই প্রাধান্য দেন । যদিও সে সময়ে এদেশে চিত্রকলার জন্য কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ ছিল না । জয়নুল তার বন্ধু ও সহকর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গড়ে তোলেন আর্ট ইনস্টিটিউট । যা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চারু ও কারুকলা ইনস্টিটিউট নামে পরিচিত ।

শিশুকাল থেকে তাঁর আগ্রহ, সামর্থ্য ও লালিত স্বপ্নই তাঁকে চিত্রশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে । তাঁর খ্যাতি ও যোগ্যতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি সর্বভারতীয় চিত্রকলা প্রদর্শনীতে স্বর্ণপদক লাভ করেন । পরবর্তীতে এদেশের মানুষ তাকে শিল্পাচার্য্য উপাধিতে ভূষিত করেন। তিনি ভালোবেসে চিত্রকলাকে পেশা হিসাবে নির্বাচন করে এদেশে চিত্রকলা পেশার সূচনা করেন ।

নিচে কয়েকটি বিষয় আছে । এর মধ্যে কোনগুলো তোমার পেশা নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তা বের করতে হবে । তালিকার শেষে ২টি পয়েন্ট শূন্য রাখা আছে । ইচ্ছে করলে সেখানে তুমি আরও কিছু বিষয় লিখে নিতে পারো যা তোমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ । বিষয়গুলোর মধ্যে তোমার কাছে যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটিকে প্রথম স্থান দাও । তারপর যেটি গুরুত্বপূর্ণ সেটিকে দ্বিতীয় স্থানে দাও । এভাবে যেটি সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ সেটিকে সর্বশেষ দশম স্থানে দাও ।

পেশা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

১. এডভেঞ্চার বা রোমাঞ্চ— এমন একটি পেশা যেখানে ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে ।

২. ক্ষমতা-ক্ষমতা অনুশীলন ও প্রয়োগের সুযোগ থাকা ।

৩. সৃজনশীলতা— কোনো কিছু করার নতুন পন্থা খুঁজে বের করা ।

৪. অন্যকে সাহায্য করা- অন্যদের সহযোগিতা ও সেবার জন্য কাজ করা ।

৫. অধিক আয়— অধিক উপার্জন করা ।

৬. বিভিন্ন দায়িত্বের সমন্বয়- বিভিন্ন ধরনের কাজ করা ।

৭. স্বাধীনতা— নিজের কাজ কীভাবে করবে তা নিজেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকা ।

৮. নেতৃত্বের চর্চা— কোনো কাজে নেতৃত্ব দেওয়া ।

৯.

১০. 

১.

২.

৩.

৪.

৫.

৬.

৭.

৮.

৯.

১০.

কোন পেশা বেছে নেব?
আমরা আমাদের আগ্রহ, সামর্থ্য, ব্যক্তিত্ব, কাজের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ বের করার চেষ্টা করেছি । এবারে সেগুলো একনজর দেখি । সাথে আরও কিছু বিষয় নিয়ে চিন্তা করি-

একক কাজ :
তোমার জানা সব ধরনের পেশা/কাজের নাম লিখ । একটি চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে দেয়ালে লাগাও । এগুলোকে আগের মতো ৪টি শ্রেণিতে ভাগ করতে পারো।
একক কাজ :
পেশা/কাজের পারিবারিক বৃক্ষ
তোমার পরিবারের অভিজ্ঞ সদস্যদের কাছ থেকে পরিবারের অন্যদের (দাদা, দাদি, নানা, নানি, চাচা, ফুপু, মামা, খালা ....) পেশা/কাজ কী ছিল তা জেনে নিয়ে তা দিয়ে একটি বৃক্ষ তৈরি কর । নিচের ছবির মতো করে এই তথ্যগুলো উপস্থাপন কর ।

ভালো করে চিন্তা করে বের কর তোমার কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষার পথটি কেমন হবে । এজন্য নিচের ছবিটি ব্যবহার করতে পারো।

প্রয়োজন হলে একাধিক স্বপ্নের পেশা নির্বাচন করে একাধিক পথের নকশা তৈরি করতে পারো। এটিও তোমার পোর্টফোলিওতে যুক্ত করো ।

 

পাঠ : ১৯ও ২০

নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই গড়ি

সাব্বির মন খারাপ করে নদীর ধারে বসে পানিতে ঢিল ছুড়ছিল । পলক এসে তার পাশে বসে কাঁধে হাত রাখল । বলল 'কী খবর বন্ধু!' সাব্বির দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল 'বেকার মানুষের আবার কী খবর?' ।
পলক : তুই বেকার থাকতে চাইলে কার কী করার আছে?
সাব্বির : কত চাকরি খুঁজলাম । কোথাও হলো না । মা মন খারাপ করে থাকেন, বাবা বকাবকি করেন । বন্ধুরা যে যার কাজে ব্যস্ত । হতাশা পেয়ে বসেছে।
পলক : চাকরি না পেলে নাই । তুই নিজেই কিছু করো । সাব্বির : নিজে? কীভাবে?
পলক : কত কিছুই তো করা যায়। তোদের পুকুরে মাছ চাষ করতে পারিস। পুকুর পাড়ে ফলজ, ঔষধি বা বনজ গাছ লাগাতে পারিস...
সাব্বির : আমি এমএ পাস ছেলে, লোকে কী বলবে?
পলক : শোন, নিজেই নিজের কাজের ক্ষেত্র তৈরি করে নেওয়ার মাঝে কোনো অসম্মান নেই, বরং রয়েছে গৌরব । তাছাড়া এখন তুই কি খুব সম্মান পাচ্ছিস ?
সাব্বির চিন্তা করতে থাকল....

৫ বছর আগের ঘটনা                                                                                                                                                                       ৫ বছর পরের ঘটনা

পলক ঢাকায় থাকে । ঢাকা থেকে সে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছে । গ্রামে ঢুকতেই দেখে পুরাতন স্কুলের পাশে নতুন স্কুল হচ্ছে। গ্রামের লোক তাকে জানাল সাব্বির ভাই এই উদ্যোগ নিয়েছে। সে যেমন উপার্জন করে তেমনি ভালো কাজে ব্যয় করে । মাছ চাষ করে সে টাটকা মাছ বাজারে বিক্রি করে । গাছের ফল ঢাকায় বিক্রি হয় প্রতি মৌসুমে। এ থেকে যে আয় হয়েছে তা দিয়ে সে তার চাষ ও ব্যবসার কাজ বাড়িয়েছে । পলক সাব্বিরের বাড়ির দিকে রওনা হলো। পলককে দেখে সাব্বির ছুটে এসে জড়িয়ে ধরল। পলক বলল 'তোর সুখবর শুনে তোকে দেখতে এলাম।' সাব্বির বলল শুধু দেখলে হবে না। তুই বস। আমার পুকুরের মাছ, আর ক্ষেতের সবজি দিয়ে আজ তোকে খাওয়াব । যাওয়ার সময় এক বোতল মধু দিয়ে বলল 'আমি মৌমাছি থেকে মধুও চাষ করি । সেদিন তোর কথাটা না শুনলে আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে যেত।'

আমাদের দেশে অনেক সময় শিক্ষাজীবন শেষে অনেকেই কোনো পেশা বা চাকরি পায় না । কারণ শিক্ষিত মানুষ বাড়ছে কিন্তু সেই তুলনায় চাকরি বাড়ছে না । পছন্দমতো চাকরি বাড়ছে না । এমনকি অনেক মানুষ বাধ্য হয়ে তার ইচ্ছা, সামর্থ্য, ব্যক্তিত্ব, আগ্রহ, মূল্যবোধের সাথে সম্পর্ক নেই এমন পেশা গ্রহণ করছে । এজন্য শুধু একটি পেশাকে নির্ধারণ না করে স্বপ্নের পেশা হিসেবে বেশ কয়েকটি পেশা নির্বাচন করা উচিত ।

যেকোনো মানুষ সামান্য মূলধন (টাকা, জায়গাজমি, যন্ত্রপাতি......) নিয়ে সাব্বিরের মতো নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করতে পারে । একে বলে আত্মকর্মসংস্থান । এক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করার আনন্দও পাওয়া যায় ।

•একক কাজ (বাড়ির কাজ) :
তোমার আত্মকর্মসংস্থানের পরিকল্পনার বিস্তৃত বিবরণ দিয়ে একটি প্রতিবেদন লেখ
প্রতিবেদনের রূপরেখা
• নিজের আগ্রহের বর্ণনা
• নিজের সামর্থ্যের বর্ণনা
• নিজের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা নিজের কর্মক্ষেত্র নির্বাচনে যে বিষয়কে গুরুত্ব দাও তার বর্ণনা
তোমার শিক্ষা পরিকল্পনা
আত্মকর্মসংস্থান পরিকল্পনা
• কী করতে চাও ?
কীভাবে করতে চাও ?
কাদের কাছ থেকে কতটুকু সাহায্য নেবে কী কী সম্পদের দরকার হবে এবং তার উৎস কি?
কীভাবে উপার্জন হবে ?
• পেশার সম্প্রসারণ করবে কীভাবে ?
• ঝুঁকিসমূহ ও তা দূর করার উপায় কী ? শিক্ষকের বিবেচনায় শ্রেষ্ঠ তিনটি প্রতিবেদন শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে হবে ।

 

পাঠ : ২১-৩০

বিদ্যালয়ের আয় সৃজনমূলক কর্মকাণ্ড (এসো আমরা নিজেরা কিছু করি তোমরা শিক্ষকের সহযোগিতায় নিচের কাজগুলো করবে ।
দল গঠন ও কাজ বণ্টন-
যেমন- দল-১: কৃষিশিক্ষার বিষয়বস্তু ব্যবহার করে কৃষি সংক্রান্ত বিক্রয় উপযোগী দ্রব্য তৈরি করো । দল-২: গার্হস্থ্যবিজ্ঞান বিষয়বস্তু ব্যবহার করে বিক্রয় উপযোগী দ্রব্য তৈরি করো ।
প্রত্যেক দল কী কী দ্রব্য তৈরি করবে তার তালিকা তৈরি করবে এবং প্রত্যেকে নিজেদের কাজ বুঝে নাও
প্রত্যেকে বিভিন্ন দ্রব্য তৈরি করবে ও অন্যদের তা তৈরিতে সাহায্য করবে । দ্রব্যগুলোকে বিক্রয় আকর্ষণীয় এবং উপযোগী করবে ও দাম নির্ধারণ করবে । মেলার জন্য স্থান ও সময় নির্ধারণ করবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ।
মেলায় নিজেদের তৈরি জিনিস প্রদর্শন ও বিক্রি করো । মেলা থেকে প্রাপ্ত অর্থ কী কাজে ব্যয় করা হবে তা নির্ধারণ করো ।
মেলা থেকে কী কী শিখলে তা দলে আলোচনা করে শ্রেণিতে উপস্থাপন করো ।

 

Content added || updated By
Please, contribute to add content into বহুনির্বাচনি প্রশ্ন.
Content
Please, contribute to add content into সৃজনশীল প্রশ্ন.
Content
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.