ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের বর্তমান সভাপতির নাম সাদিক কায়েম।
সাদিক কায়েম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি হিসেবে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছেন। তিনি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত। সাদিক এতদিন ঢাবির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তবে ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে তিনি প্রথমবারের মতো নিজেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন।
সাদিকের এই ঘোষণাটি অনেকের কাছে আশ্চর্যজনক ছিল, কারণ ঢাবিতে দীর্ঘ ১৭ বছর পর শিবিরের কোনো সভাপতি প্রকাশ্যে এসেছেন। তাঁর এই পদক্ষেপ ঢাবির রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সাদিক তাঁর ফেসবুক পোস্টে ফ্যাসিবাদী শোষণ এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করেন এবং ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংস্কারের আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, সহিংসতা এবং আধিপত্যবাদী মানসিকতা থেকে মুক্ত একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন যেখানে মতপার্থক্যকে শ্রদ্ধা করা হবে এবং সক্রিয় ছাত্রসংসদ ও রাজনীতির চর্চা হবে।
সাদিকের ঘোষণার প্রধান পয়েন্টগুলো হলো:
ফ্যাসিবাদী শোষণের সমালোচনা: তিনি অভিযোগ করেছেন যে ঢাবির ছাত্র রাজনীতি ফ্যাসিবাদী ও শোষণমূলক হয়ে উঠেছে এবং সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্তি প্রয়োজন।
গণতন্ত্র ও সংলাপের আহ্বান: সাদিক ছাত্র রাজনীতিতে গণতন্ত্র এবং মতপার্থক্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সংলাপের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
রাজনৈতিক সংস্কার: ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ও ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের জন্য সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন।
সাদিকের এই ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ উত্তপ্ত হয়েছে। তাঁর সমর্থকরা তাঁকে সাহসী নেতা হিসেবে প্রশংসা করছেন, অন্যদিকে সমালোচকরা শিবিরের মতো একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক সংগঠনের নেতার পদে থাকার কারণে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করছেন।
সাদিক কায়েম হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেছেন, যা ঢাবির ছাত্র রাজনীতিতে এক বড় ঘটনা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
সাদিক এতদিন ঢাবির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, যেখানে তিনি বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে লড়াই করতেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যায্য ও নিরপেক্ষ পরিবেশের দাবি জানাতেন। তিনি ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং ছাত্র রাজনীতির সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন।
তাঁর পরিচয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়:
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে সাদিক নিজেকে ঢাবি শিবিরের সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন। এই পদক্ষেপের ফলে ঢাবিতে শিবিরের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে দীর্ঘ ১৭ বছর পর কোনো নেতা প্রকাশ্যে এলেন।
রাজনৈতিক অবস্থান: সাদিক ফ্যাসিবাদী শোষণ, সহিংসতা, এবং কর্তৃত্ববাদী আচরণের সমালোচনা করেছেন। তিনি ঢাবির ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছেন, যেখানে ভিন্নমতকে সম্মান করা হবে এবং ছাত্র রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা হবে।
আলোচিত পোস্ট: তাঁর পোস্টে তিনি ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং ছাত্র রাজনীতিতে সংলাপের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। এছাড়া, তিনি ক্যাম্পাসে সহিংসতা মুক্ত একটি একাডেমিক পরিবেশ গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
সাদিক কায়েমের এই ঘোষণার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
সাদিক কায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। তার এই ঘোষণা ১৭ বছর পর শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির পরিচয়কে প্রকাশ্যে নিয়ে আসে।
সাদিক তার ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা এবং ছাত্র রাজনীতির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি ফ্যাসিবাদের সমালোচনা করে এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে ছাত্র রাজনীতি হিংসা ও ভীতির পরিবেশ থেকে মুক্ত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ঢাবির শিবির সভাপতি পরিচয়ে দেয়া পোস্টে কায়েম বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শোষণ শুধু ছাত্ররাজনীতি নয়, রাজনীতির সংজ্ঞাই পালটে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি থাকে না। বিরাজনীতি ফ্যাসিবাদের ভাষা। ফ্যাসিবাদ ছাড়া সকল বাদ, ইজম ও রাজনীতি ফ্যাসিবাদে অনুপস্থিত থাকে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি নাই, শুধু ফ্যাসিবাদই আছে। টেন্ডারবাজি, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, ফাঁসি, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি এসব রাজনীতি না। এগুলো ফ্যাসিবাদ।’
পোস্টে তিনি চব্বিশের চেতনা নিয়ে আগামী দিনে ছাত্ররাজনীতি পরিচালিত হবে উল্লেখ করে লিখেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদের গত ১৬ বছরের ভয়ঙ্কর দিনগুলো কিংবা তারও পূর্বের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো রাজনীতির প্রতি তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি করেছিল তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। কিন্তু চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সমস্ত ভুল ভেঙে দিয়েছে। রাজনীতি সম্পর্কে তৈরি হয়েছে নতুন সচেতনতা। দেয়ালে দেয়ালে লেখা হচ্ছে, ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’।”
তিনি আরও লিখেন, ‘ভবিষ্যতের ছাত্ররাজনীতিতে মত-দ্বিমত হবে, যুক্তির পাথরে সবাই বিক্ষিপ্ত হবে, কিন্তু কোনো হকিস্টিক কিংবা স্ট্যাম্প থাকবে না। কোনো গেস্টরুম, গণরুম থাকবে না। চব্বিশের আকাঙ্ক্ষাকে বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে এই ছাত্ররাজনীতি। মধুতে ভিন্নমতের কেউ চা খেলে অপর পক্ষের কেউ তেড়ে আসবে না।’
তার মতে, ‘আমরা জানি এই স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছে রাজনৈতিক দলসংশ্লিষ্ট এবং দলের আওতামুক্ত রাজনীতি সচেতন ছাত্র-জনতা। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানোর চেয়ে বড় রাজনীতি, আর কোনো রাজনীতিই না। আমরা চাই সেই রাজনীতির আদর্শে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপক ইতিবাচক সংস্কার হবে।’
ছাত্র সংসদ সক্রিয় করার দাবি জানিয়ে পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘একাডেমিক পরিবেশে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ছাত্রসংসদ-ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি। গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমতের প্রতি থাকবে সম্মান, কিন্তু কেউ যেন স্বৈরাচারি না হয়ে উঠতে পারে সে বিষয়ে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণদৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই ছাত্ররাজনীতির সংস্কার গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্যদিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
পোস্টের শেষে পরিচয় উল্লেখ করে লেখা হয়, ‘সাদিক কায়েম, সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’।
সাদিক কায়েম
সভাপতি
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সাদিক কায়েমের পরিচয় প্রকাশের পর এ নিয়ে ফেসবুকজুড়ে চলছে নানা আলোচনার ঝড়। রোববার এক স্ট্যাটাসে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান লিখেছেন, ‘ছেলেটাকে আমি চিনতাম সালমান নামে, পরিচয় জুলাইয়ের ২৫ তারিখ থেকে, তারপর নিয়মিতই কথা হতো।’ হঠাৎ সালমানের শিবির পরিচয়ে অবাকও হয়েছেন জুলকারনাইন।
তিনি লেখেন, ‘সালমানের প্রকৃত নাম শাদিক কাঁইয়ূম এবং তার রাজনৈতিক পরিচয়, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি। অবশ্যই অবাক হয়েছি, বেশ অবাক হয়েছি।’
সাদিক কায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে পরিচিত এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবেও কাজ করেছেন।
২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, তিনি একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে শিবিরের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন, যা ১৭ বছর পর ঢাবির শিবির সভাপতির নাম প্রকাশ্যে নিয়ে আসে। তার পোস্টে তিনি ফ্যাসিবাদ, রাজনৈতিক শোষণ, এবং ছাত্র রাজনীতির সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি হয়েছে এবং মুক্ত মতামত ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাদিক কায়েমের বক্তব্যে তিনি দাবি করেন যে, রাজনৈতিক সংস্কারে চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, এবং ছাত্র রাজনীতি একটি একাডেমিক পরিবেশে পরিচালিত হওয়া উচিত। তার বক্তৃতা ও পোস্টগুলো নেট দুনিয়ায় ব্যাপক আলোচনা ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
আগামী দুয়েকদিনের মধ্যেই ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সেক্রেটারিসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।
শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি।
সাদিক কায়েম প্রসঙ্গে শিবির সভাপতি বলেন, তিনি শিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি। ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে উনি আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লাউঞ্জে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিজেকে শিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন সাদিক কায়েম।
জানা যায়, সাদিক খাগড়াছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ থেকে আলিম পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। সাদিক কায়েম ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি শহরের বাজার এলাকায়। মেধাবী এই তরুণ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ফলাফলে নিজ বিভাগে তৃতীয় হয়েছিলেন। স্নাতকে তার সিজিপিএ ছিল ৩ দশমিক ৭৮। তবে স্নাতকোত্তরে সাদিক কায়েমের সিজিপিএ সম্পর্কে জানা যায়নি।
সাদিক কায়েম এতদিন ঢাবির ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং মূলত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে নিজেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। এ ঘোষণাটি সাম্প্রতিক সময়ে ঢাবির রাজনীতিতে একটি বড় ঘটনা হিসেবে ধরা হচ্ছে, কারণ দীর্ঘ ১৭ বছর পর ঢাবিতে শিবিরের কোনো সভাপতি প্রকাশ্যে আসলেন।
এই ঘোষণার মাধ্যমে সাদিক কেবল শিবিরের নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেননি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সংস্কার, মতপার্থক্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল পরিবেশ ও ছাত্র রাজনীতির গণতান্ত্রিক মূলবোধের জন্যও তাঁর দাবি ব্যক্ত করেছেন। তিনি ফ্যাসিবাদী শোষণের সমালোচনা করে ছাত্র রাজনীতিতে সংলাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁর এই পদক্ষেপ ঢাবির ক্যাম্পাসে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।
ছাত্রশিবির (Islami Chhatra Shibir) হল একটি ছাত্র সংগঠন, যা বাংলাদেশের ইসলামী রাজনৈতিক দল জামাত-এ-ইসলামী’র ছাত্র শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এটি ১৯৭৭ সালে গঠিত হয় এবং ইসলামী আদর্শ, শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রচার এবং ছাত্রদের অধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে কাজ করে। ছাত্রশিবির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে সক্রিয়, তবে তাদের কর্মকাণ্ড অনেক সময় বিতর্কের সৃষ্টি করে, বিশেষ করে রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং বিভিন্ন আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে।
ছাত্রশিবির একটি ইসলামি ছাত্র সংগঠন, যা বাংলাদেশে জামাত-এ-ইসলামী দলের যুব শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এটি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো:
ইসলামী মূল্যবোধ প্রচার: সংগঠনটি ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রসার ঘটাতে কাজ করে।
ছাত্রদের অধিকার: ছাত্রদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠনটি বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচি চালায়।
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড: ছাত্রশিবির কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ অন্তর্ভুক্ত।
বিরোধিতা ও বিতর্ক: ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ড অনেক সময় বিতর্কের জন্ম দেয়, বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ ওঠে যে তারা সহিংসতা বা অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ডে জড়িত।
সামাজিক কার্যক্রম: সংগঠনটি শিক্ষামূলক এবং সামাজিক উন্নয়নের প্রকল্পে অংশগ্রহণ করে, যেমন স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা কার্যক্রম এবং সমাজসেবা।
ছাত্রশিবিরের সদস্যরা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী আদর্শের প্রচার এবং ছাত্রদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। তাদের কর্মকাণ্ড ছাত্রদের মধ্যে সমর্থন ও বিরোধ উভয়ই তৈরি করে।
সাংগঠনিক পরিবর্তন: সাদিক কায়েমের মতো নেতাদের সামনে আসা এবং তাঁদের বক্তৃতা ছাত্রশিবিরের সংগঠন ও রাজনীতিতে একটি নতুন দিক তুলে ধরেছে। সাদিকের ফেসবুক পোস্টে রাজনৈতিক সংস্কার ও সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান প্রকাশ করা বিষয়টি উল্লেখযোগ্য।
ছাত্র রাজনীতির আলোচনা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলোর সংলাপ এবং ছাত্রশিবিরের অংশগ্রহণ ছাত্ররাজনীতির বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন ও রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
বিরোধী দলগুলোর মধ্যে প্রতিক্রিয়া: ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ড এবং তাদের দাবি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করেছে, যা রাজনৈতিক চিত্রকে আরও জটিল করেছে।
গণমাধ্যমের দৃষ্টি: মিডিয়ায় সাদিক কায়েমের কার্যক্রম এবং ছাত্রশিবিরের প্রভাব নিয়ে আলোচনা ছাত্রশিবিরকে কেন্দ্র করে নতুন মতামত ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
এগুলো মিলিয়ে ছাত্রশিবির বর্তমানে ছাত্র রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে উঠেছে।