3.1 পরমাণুর গঠন
চারপাশে তোমরা যা কিছু দেখো অথবা যেগুলো দেখতে পাও না তার সবকিছুই পরমাণু (atom) নামক অতিক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। পরমাণু এত ক্ষুদ্রাকার এটি শুধু যে খালি চোখে দেখা যায় না তা নয়, সবচেয়ে শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও দেখা যায় না। স্বাভাবিকভাবেই তোমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে পরমাণু কীভাবে গঠিত হয় কিংবা পরমাণুতে আসলে কী থাকে? এর উত্তরে সহজ করে বলা যায় পরমাণুর দুটি অংশ : (1) পরমাণুর কেন্দ্রে অবস্থিত নিউক্লিয়াস ও (2) নিউক্লিয়াসের বাইরে নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রন। ইলেকট্রন হচ্ছে ঋণাত্মক বা নেগেটিভ চার্জবিশিষ্ট এবং নিউক্লিয়াসে অবস্থিত প্রোটন ধনাত্মক বা পজিটিভ চার্জবিশিষ্ট এবং নিউট্রন হচ্ছে চার্জবিহীন। একটি পরমাণুতে যখন সমান সংখ্যক প্রোটন ও ইলেকট্রন থাকে, তখন তার মোট চার্জ শূন্য বলে পরমাণু চার্জ নিরপেক্ষ বলে। নিউট্রন ও প্রোটনের ভর ইলেকট্রনের ভর থেকে প্রায় দুই হাজার গুণ বেশি, কাজেই পরমাণুর ভর মূলত তার নিউক্লিয়াসের ভর। ভিন্ন ভিন্ন পরমাণুর গঠন ভিন্ন হয় কারণ, তাদের প্রত্যেকটিতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যক প্রোটন এবং ইলেকট্রন থাকে। মূলত এটাই বিভিন্ন মৌলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম প্রদর্শনের কারণ।
4.1.1 পরমাণু এবং পারমাণবিক মডেনের ধারণার উৎপত্তি ও বিকাশ
এখন তোমরা সবাই জানো যে, প্রত্যেক পদার্থই অত্যন্ত ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। অতীতে এই ক্ষুদ্র কণা সম্পর্কে বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও দার্শনিক তাদের বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে, লিউসিপাস (Leucippus) ও ডেমোক্রিটাস (Democritus) বলেছিলেন যে প্রতিটি পদার্থই নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্ষুদ্র কণা দিয়ে গঠিত। তাঁদের মতে এসব কণা অবিভাজ্য, যাদেরকে পুনরায় ভাঙা যায় না। ডেমোক্রিটাস এসব ক্ষুদ্র কণার নাম দেন এটম (atom)। 'এটম' শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ 'এটোমোস' (atomos) থেকে যারা অর্থ 'অবিভাজ্য' (indivisible)।
তাঁর সমসাময়িক দুইজন দার্শনিক প্লেটো এবং এরিস্টটল ভিন্ন মতামত উপস্থাপন ইলেকট্রন করেন। এরিস্টটলের মতে, যে কোনো পদার্থই আগুন, মাটি, বাতাস ও পানি এই চারটি উপাদানের বিভিন্ন সমন্বয়ে গঠিত এবং তাদেরকে ইচ্ছেমতো ভাগ করা যায়। কিন্তু তাঁরা সেই ধারণাগুলো প্রমাণের জন্য কোনোপ্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা বিবেচনা করেননি। 18 এবং 19 শতাব্দীতে বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন পারমাণবিক মডেলের সাহায্যে পরমাণুর গঠন বর্ণনা করার চেষ্টা করেন। এসব মডেলের যেমন সঠিক দিক আছে আবার কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে, সেগুলো বর্তমান আধুনিক পারমাণবিক মডেল গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরমানবিক মডেল গঠনের পিছনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞানীরা হলেন জন ডাল্টন (John Dalton), জে জে থমসন (J. J. Thomson), আর্নেস্ট রাদারফোর্ড (Ernest Rutherford) এবং নীলস বোর (Niels Bohr)।
পরীক্ষামূলক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে, 1803 সালে ইংরেজ বিজ্ঞানী জন ডাল্টন বলেছিলেন যে, 'মৌলের ক্ষুদ্রতম কণা হলো পরমাণু যাকে পুনরায় বিভাজিত করা যায়না।' আমরা এখন জানি পরমাণু পদার্থের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কণা নয় এবং পরমাণু অবিভাজ্য নয়। পরমাণুকেও ভাগ করা যায়, পরমাণু আসলে ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রন নামক ছোট ছোট কণা নিয়ে গঠিত।
ডাল্টনের মডেলের সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্য পরবর্তী সময়ে অন্য বিজ্ঞানীরা বিকল্প মডেলের প্রস্তাব করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য হলো রাদারফোর্ড এবং বোরের পরমাণু মডেল।
রাদারফোর্ড এবং তাঁর সহকর্মীরা সঠিক পরমাণবিক গঠন জানার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে রাদারফোর্ড এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে, সম্পূর্ণ ধনাত্মক চার্জ এবং ভর পরমাণুর কেন্দ্রে একটি অতি ক্ষুদ্র জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, একে নিউক্লিয়াস বলে।
তিনি আরও বলেন যে, পরমাণুর অভ্যন্তরে অধিকাংশ জায়গাই ফাঁকা এবং কেন্দ্রের ধনাত্মক চার্জের চারদিকে ঘূর্ণায়মান ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট ইলেকট্রনের ভর অত্যন্ত নগণ্য। ইলেকট্রনের এইভাবে ঘূর্ণনকে তিনি সৌরজগৎে সূর্যের চারদিকে গ্রহগুলোর ঘূর্ণায়মান অবস্থার সাথে তুলনা করেন। কিন্তু রাদারফোর্ড নির্দিষ্ট কোনো কক্ষপথের কথা বলেননি। পরবর্তী কালে 1913 সালে, বিজ্ঞানী বোর ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট কণাসমূহের ঘূর্ণনের নির্দিষ্ট কক্ষপথের ধারণা প্রদান করেন।
উপরের আলোচনা থেকে তোমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ যে, পরমাণুকে ভাঙা যায় এবং ভাঙলে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন পাওয়া যায়। পরমাণুর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস থাকে। নিউক্লিয়াসের ভিতরে ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট প্রোটন এবং চার্জনিরপেক্ষ নিউট্রন থাকে। পরমাণুর অধিকাংশ ভরই পরমাণুর কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াসে থাকে। নিউক্লিয়াসের ব্যাসার্ধ পরমাণুর ব্যাসার্ধ থেকে প্রায় লক্ষ গুণ ছোট বলে ইলেকট্রনসমূহ এবং নিউক্লিয়াসের মাঝামাঝি সমস্ত জায়গাই খালি। আসলে পরমাণুর অধিকাংশ জায়গাই ফাঁকা।
3.1.2 পারমাণবিক সংখ্যা এবং ভর সংখ্যা
তোমরা ইতোমধ্যে পরমাণুর গঠন সম্পর্কে একটি ধারণা পেয়ে গেছ তবে পরমাণুর গঠন ভালোভাবে বুঝতে হলে পারমাণবিক সংখ্যা এবং ভর সংখ্যা সম্পর্কেও ধারণা থাকা প্রয়োজন।
পারমাণবিক সংখ্যা
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় হাইড্রোজেন পরমাণুতে শুধু একটি প্রোটন থাকায় তার পারমাণবিক সংখ্যা হলো 1। অক্সিজেন পরমাণুতে ৪টি প্রোটন থাকায় তার পারমাণবিক সংখ্যা ৪। যেহেতু প্রত্যেক পরমাণুতে প্রোটন সংখ্যার সমান সংখ্যক ইলেকট্রন থাকে সুতরাং আমরা বলতে পারি, হাইড্রোজেন পরমাণুতে 1টি এবং অক্সিজেন পরমাণুতে ৪টি ইলেকট্রন রয়েছে। একটি পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা থেকে কি ঐ পরমাণুতে কয়টি নিউট্রন আছে সেটি জানা সম্ভব? উত্তর হচ্ছে, না। একটি পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা থেকে সেই পরমাণুতে কয়টি নিউট্রন আছে তা জানা সম্ভব নয়। কোনো পরমাণুতে কয়টি নিউট্রন আছে সেটি জানার জন্য ঐ পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যার পাশাপাশি ভর সংখ্যা জানতে হবে।
ভর সংখ্যা
আগেই বলা হয়েছে যে, যদি কোনো পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা ও ভর সংখ্যা জানা থাকে তাহলে ঐ পরমাণুর নিউট্রন সংখ্যা জানা যায়।
উদাহরণ দেয়ার জন্য বলা যায় যে, কোনো একটি পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা Z = ৭ এবং ভর সংখ্যা A = 19 হলে সেই পরমাণুটিতে ৭টি প্রোটন এবং 19 - 9 = 10টি নিউট্রন রয়েছে।
3.1.3 পরমাণুর প্রকাশ (Notation of Atom)প্রত্যেকটি পরমাণুর জন্য একটি প্রতীক নির্দিষ্ট আছে, যেমন- হাইড্রোজেনের প্রতীক H, অক্সিজেনের এবং কার্বনের C। কোনো একটি পরমাণুকে প্রকাশ করতে হলে আমাদের ঐ মৌলের প্রতীক, পারমাণবিক সংখ্যা ও ভর সংখ্যা জানতে হবে। ভর সংখ্যাকে প্রতীকের উপরের দিকে এবং পারমাণবিক সংখ্যাকে নিচের দিকে লেখা হয়। উদাহরণ হিসেবে কার্বনের প্রকাশ দেখানো হলো :
3.2 আইসোটোপ
ইতোমধ্যে তোমরা জেনে গেছ যে, কোনো একটা মৌলের পরমাণুর একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রোটন ও ইলেকট্রন থাকে কিন্তু ঐ মৌলের বিভিন্ন পরমাণুতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যক নিউট্রন থাকতে পারে বলে ভর সংখ্যা ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণ দেয়ার জন্য বলা যায়, প্রতিটি হাইড্রোজেন পরমাণুতে একটি ইলেকট্রন এবং একটি প্রোটন থাকে এবং অধিকাংশ হাইড্রোজেন পরমাণুর কোনো নিউট্রন নেই। কিন্তু কিছু হাইড্রোজেন পরমাণুতে প্রোটনের সঙ্গে একটি নিউট্রনও থাকে যার কারণে তাদের ভর সংখ্যা হয় 2। শুধু তাই নয়, কিছু সংখ্যক হাইড্রোজেন পরমাণুতে একটি পরমাণুর সঙ্গে দুইটি নিউট্রনও থাকে কাজেই তাদের ভরসংখ্যা হয় ও। সুতরাং, হাইড্রোজেন পরমাণুর তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ভর সংখ্যা হওয়া সম্ভব। যে মৌলের পরমাণুতে একই সংখ্যক প্রোটন কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন তাদেরকে সেই মৌলের আইসোটোপ বলে। তাই হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ আছে। যদিও সাধারণত একটি পরমাণুর আইসোটোপের নাম ভিন্ন ভিন্ন হয় না, তাদের ভিন্ন ভর সংখ্যা দিয়ে আলাদা করা হয় কিন্তু হাইড্রোজেনের বেলায় তার অন্য দুটি আইসোটোপের জন্য ডিউটেরিয়াম এবং ট্রিটিয়াম এই দুইটি ভিন্ন নাম প্রচলিত। একইভাবে অধিকাংশ কার্বন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে চটি প্রোটন ও চটি নিউট্রন রয়েছে। কিন্তু, কিছুসংখ্যক কার্বন পরমাণুতে 7 অথবা ৪টি নিউট্রন থাকে। সুতরাং, কার্বনের তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ভরসংখ্যা (12, 13 এবং 14) হওয়া সম্ভব। এভাবে, কার্বন-12, কার্বন-13 এবং কার্বন-14 হলো কার্বনের তিনটি আইসোটোপ।
হাইড্রোজেনের আইসোটোপ
3.2.1 আইসোটোপের ধর্ম ও তাদের কিছু ব্যবহার
কোনো মৌলের আইসোটোপের নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ থাকে :
(ক) কোনো নির্দিষ্ট মৌলের বিভিন্ন আইসোটোপে সমান সংখ্যক ইলেকট্রন ও প্রোটন থাকে, তাই তাদের সবকটিতে ইলেকট্রনের বিন্যাস এক হয়। মূলত, ইলেকট্রন বিন্যাসই কোনো মৌলের সব ধরনের বৈদ্যুতিক ও রাসায়নিক ধর্মের জন্য দায়ী, সেজন্য বিভিন্ন আইসোটোপের রাসায়নিক ও বৈদ্যুতিক ধর্মে কোনো পার্থক্য থাকে না। তারপরও আইসোটোপের ভর আলাদা হওয়ায় তাদের একটি থেকে আরেকটি আলাদা করা যায়।
(খ) আইসোটোপের নিউক্লিয়াসে নিউট্রন সংখ্যার ভিন্নতা থাকায় তাদের ভৌত ধর্ম একটু আলাদা হয়। মৌলের যে আইসোটোপটি অন্যগুলোর তুলনায় বেশি স্থিতিশীল সেটিকে প্রকৃতিতে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। অস্থিতিশীল আইসোটোপগুলো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ধরনের আলোকরশ্মি ও কণা বিকিরণ করে থাকে। তাদেরকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলে। এইসব তেজস্ক্রিয় আইসোটোপকে বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নিচে আইসোটোপের কিছু ব্যবহার আলোচনা করা হলো।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার
চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম অসুস্থতা ও রোগ নির্ণয় এবং তাদের চিকিৎসায় তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ব্যবহার রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু ব্যবহার নিচে উল্লেখ করা হলো।
(ক) থাইরয়েড গ্রন্থির রোগ নির্ণয়ে আয়োডিন-131 আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
(খ) টেকনিশিয়াম-99 আইসোটোপ ব্যবহার করেও থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা করা যেতে পারে।
(গ) সরু ধমনিতে কোনো সমস্যা থাকলে ধমনিতে প্রবাহিত রক্তের মাধ্যমে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ পাঠিয়ে তা শনাক্ত করা যায়। ঠিক একইভাবে, ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ পাঠিয়ে আক্রান্ত কোষের অবস্থান নির্ণয় করা হয়। ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার কাজেও তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
(ঘ) চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্তকরণ করার কাজে তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণ ব্যবহার করা হয়।
কৃষিকাজে ব্যবহার
কৃষিতে আইসোটোপের ব্যবহার
কৃষিক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার হলো:
(ক) আইসোটোপ থেকে বিকিরণ পোকামাকড় ও পরজীবী নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা হয়।
(খ) তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ফসলের ফলন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আইসোটোপের সাহায্যে কোন ফসলের জন্য কোন ধরনের সার এবং কি পরিমাণ সার প্রয়োজন তা নির্ণয় করা যায়।
খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে আইসোটোপের ব্যবহার
ব্যাকটেরিয়া ও বিভিন্নরকম জীবাণুকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ থেকে বিকিরণের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যার ফলে, তেজস্ক্রিয় আইসোটোপকে খাদ্য ও ফল জীবাণুমুক্তকরণে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় ব্যবহার
তোমরা প্রায়ই খবর শুনে থাক যে, কয়েক কোটি বছরের পুরোনো জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা কীভাবে এসব জীবাশ্মের বয়স জানতে পারেন? এটি জানা যায় আইসোটোপের ক্ষয় থেকে। স্থিতিশীল ও অস্থিতিশীল আইসোটোপের অনুপাত থেকে জীবাশ্মটির বয়স কত তা বের করা সম্ভব হয়।
বিদ্যুৎ তৈরির কাজে ব্যবহার
পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্রে বিদ্যুৎ তৈরিতে পারমাণবিক চুল্লিতে জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম-235 ব্যবহার করা হয়। ইউরেনিয়াম-235 এর ভারী নিউক্লিয়াসে যখন ধীরগতিসম্পন্ন নিউট্রন দ্বারা আঘাত করা হয়, তখন সেটি ভেঙে গিয়ে ছোট ছোট নিউক্লিয়াস তৈরির পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ তাপশক্তি তৈরি করে। এই তাপশক্তিকে কাজে লাগিয়ে জেনারেটরের সাহায্যে আমরা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারি।
বাংলাদেশে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণ করা হচ্ছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে দুই হাজার চারশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
3.2.2 তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ক্ষতিকর প্রভাব
তোমরা ইতোমধ্যে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের অনেকগুলো ব্যবহার সম্পর্কে জেনে গেছ। এর সঙ্গে সঙ্গে এসব আইসোটোপ আমাদের বড়ো ধরনের ক্ষতি করারও ক্ষমতা রাখে। তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ থেকে বিকিরিত আলফা, বিটা ও গামা রশ্মি আমাদের জিনগত পরিবর্তন ঘটানোর মাধ্যমে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যে পারামাণবিক বোমা ফেলা হয়েছিল তাতে তাৎক্ষণিকভাবে লক্ষ লক্ষ লোক মৃত্যুবরণ করে এবং পরবর্তী সময়ে তেজস্ক্রিয়তার কারণে সৃষ্ট দীর্ঘমেয়াদি জটিলতায় অনেক লোক মারা যায়। 1986 সালে রাশিয়ায় ঘটে যাওয়া চেরনোবিল দুর্ঘটনায়ও অনেক মানুষ মারা যায় এবং স্থানীয় পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল।
3.3 পরমাণুতে ইলেকট্রন বিন্যাসের নিয়ম
নিউক্লিয়াসের চারদিকে ইলেকট্রনের ঘূর্ণনের কাল্পনিক স্তরগুলোকে কক্ষপথ বা অরবিট বলে। এইসব কক্ষপথ বা অরবিট নিউক্লিয়াস থেকে বাইরের দিকে বিস্তৃত থাকে। একটি নির্দিষ্ট ইলেকট্রনের নির্দিষ্ট অরবিট থাকে। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, একটি অরবিটে সর্বোচ্চ কয়টি ইলেকট্রন থাকতে পারে? তাদের বিন্যাসের নিয়মই-বা কী? আমরা পরবর্তী সময়ে এই বিষয়গুলো আরও অনেক বিস্তৃতভাবে জানব, আপাতত কয়েকটি সহজ নিয়ম জেনে নিই।
নিয়মসমূহ
1) একটি কক্ষপথে সর্বোচ্চ ইলেকট্রন সংখ্যা হলো 2n² (যেখানে, n= 1, 2, 3, 4...... হলো কক্ষপথের ধারাবাহিক সংখ্যা। (সংশ্লিষ্ট কক্ষপথগুলো সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে K, L, M, N.. নামেও পরিচিত)। কাজেই আমরা কয়েকটি কক্ষপথের ইলেকট্রন সংখ্যা বের করে দেখতে পারি:
1ম কক্ষপথ : n=1 কাজেই 2n² = 2(1)² = 2×1 = 2; অর্থাৎ সর্বোচ্চ 2টি ইলেকট্রন থাকতে পারে
2য় কক্ষপথ: n=2 মাজেই 2n² = 2(2)² = 2×4 = 8; অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৪টি ইলেকট্রন থাকতে পারে
ওয় কক্ষপথ: n=3 কাজেই 2n² = 2(3)² = 2×9 = 18; অর্থাৎ সর্বোচ্চ 1৪টি ইলেকট্রন থাকতে পারে
2) পূর্ববর্তী কক্ষপথ সম্পূর্ণভাবে পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নতুন অরবিট বা কক্ষপথ শুরু হতে পারে না।
উল্লেখ্য যে, এসব কক্ষপথকে শক্তি স্তর বলা হয়, কারণ প্রতিটি কক্ষপথে থাকা ইলেকট্রনের জন্য একটি নির্দিষ্ট শক্তি রয়েছে। পরমাণুতে ইলেকট্রন বিন্যাস পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্যে নিচের উদাহরণ দুটি লক্ষ করতে পারো।'
লিথিয়াম পরমাণুতে ওটি ইলেকট্রন আছে। তাদের মধ্যে দুটি ইলেকট্রন প্রথম কক্ষপথে এবং তৃতীয় ইলেকট্রনটি দ্বিতীয় কক্ষপথে থাকে যা পাশের ছবিতে দেখানো হয়েছে। ঠিক একইভাবে, কার্বন পরমাণুতে চটি ইলেকট্রন থাকায় এদের মধ্যে 2টি ইলেকট্রন প্রথম কক্ষপথে এবং বাকি 4টি দ্বিতীয় কক্ষপথে থাকে।
এবার সোডিয়াম পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস দেখা যাক। সোডিয়াম পরমাণুতে 11টি ইলেকট্রন রয়েছে। তোমরা খুব সহজেই বের করতে পারবে যে সোডিয়ামের ইলেকট্রনগুলো ওটি কক্ষপথে থাকবে এবং এর ইলেকট্রনবিন্যাসকে কক্ষপথের পর্যায়ক্রমে এভাবে প্রকাশ করা যায়: (2, 8, 1)। অর্থাৎ, প্রথম কক্ষপথে 2টি, দ্বিতীয় কক্ষপথে ৪টি এবং তৃতীয় কক্ষপথে 1টি।
আরও কিছু মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস, পারমাণবিক সংখ্যা, এবং প্রতীকসহ নিচের ছকে বামপাশে দেখানো হয়েছে। উদাহরণগুলো দেখে ছকের ডানপাশে দেখানো মৌলগুলোর ইলেকট্রন বিন্যাস কেমন হবে সেটি লেখো।
মৌল | পারমাণবিক সংখ্যা | প্রতীক | ইলেকট্রন বিন্যাস |
হিলিয়াম | 2 | He | 2 |
নাইট্রো- জেন | 7 | N | 2, 5 |
অক্সি- জেন | 8 | O | 2, 6 |
ক্লোরিন | 17 | Cl | 2,8,7 |
মৌল | পারমাণবিক সংখ্যা | প্রতীক | ইলেকট্রন বিন্যাস |
হিলিয়াম | 1 | H | |
নাইট্রো- জেন | 5 | B | |
অক্সি- জেন | 16 | S | |
ক্লোরিন | 18 | Ar |
3.3.1 মৌনের ইলেকট্রন বিন্যাস ও তাদের ধর্ম
তোমরা ইতোমধ্যে মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা, প্রতীক এবং ইলেকট্রন বিন্যাস সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেছ। মৌলিক পদার্থের ধর্ম মূলত তাদের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর নির্ভর করে। ইলেকট্রন বিন্যাসের ভিন্নতার কারণেই পরমাণুগুলো সক্রিয়, নিষ্ক্রিয়, ধাতব, অধাতব, পরিবাহী, অপরিবাহী এরকম ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের হয়ে থাকে।
উদাহরণ দেওয়ার জন্য বলা যায়, যদি সর্বশেষ কক্ষপথে ধারণ ক্ষমতার সর্বোচ্চ পরিমাণ ইলেকট্রন থাকে তাহলে কক্ষপথটিকে সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ বলা হয় এবং এই ধরনের পরমাণুগুলো নিষ্ক্রিয় হয়। যেমন- হিলিয়াম পরমাণুতে 2টি ইলেকট্রন রয়েছে, এই দুটি ইলেকট্রন প্রথম কক্ষপথে অবস্থান করে। প্রথম কক্ষপথে যেহেতু সর্বোচ্চ 2টি ইলেকট্রন থাকতে পারে তাই হিলিয়াম পরামানু নিষ্ক্রিয়। একইভাবে নিয়ন (Ne-10) গ্যাসের বেলায় সর্বশেষ কক্ষপথে ৪টি ইলেকট্রন তার দ্বিতীয় কক্ষপথ সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ করেছে বলে এই গ্যাসটিও নিষ্ক্রিয়।
3.4 আয়ন সৃষ্টি (Formation of ions)
কখনো কখনো একটি পরমাণু তার সর্বশেষ কক্ষপথের এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ বা ত্যাগ করে তার নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারে। যেসব পরমাণু ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট ইলেকট্রন ত্যাগ করে তারা আর চার্জ নিরপেক্ষ না থেকে ধনাত্মক বা পজিটিভ চার্জে চার্জিত হয়। আবার যারা ইলেকট্রন গ্রহণ করে তারা ঋণাত্মক বা পজিটিভ চার্জে চার্জিত হয়। এসব চার্জযুক্ত পরমাণুকে আয়ন বলা হয়।
যখন কোনো পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর থেকে এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে, তখন সেটি ধনাত্মক বা পজিটিভ চার্জযুক্ত আয়নে পরিণত হয়। এই ধরনের আয়নকে ক্যাটায়ন বলে। উদাহরণ হিসেবে সোডিয়াম পরমাণুর কথা বিবেচনা করা যাক। সোডিয়ামের প্রথম শক্তিস্তরে 2টি ইলেকট্রন, দ্বিতীয় শক্তিস্তরে ৪টি ও সর্বশেষ তৃতীয় শক্তিস্তরে 1টি ইলেকট্রন থাকে। সোডিয়াম পরমাণু যদি তার তৃতীয় শক্তিস্তরের একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে তাহলে 2য় শক্তিস্তরটি সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে পরিণত হয় যেটি ৪টি ইলেকট্রন দ্বারা পরিপূর্ণ। এভাবে সোডিয়াম তার নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়নের মতো স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে। যখন অন্য কোনো পরমাণু যেগুলোর ইলেকট্রন গ্রহণ করার ক্ষমতা আছে, সোডিয়াম পরমাণুর সংস্পর্শে আসে, তখন সোডিয়াম খুব সহজেই তার তৃতীয় শক্তিস্তর থেকে একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে।
আবার যখন কোনো পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে, তখন সেটি ঋণাত্মক বা নেগেটিভ চার্জযুক্ত আয়নে পরিণত হয়, এই ধরনের আয়নকে অ্যানায়ন বলে। পারমাণবিক সংখ্যা 9 বিশিষ্ট ফ্লোরিন পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস হলো 2, 7। ফ্লোরিন স্থিতিশীল নয়, স্থিতিশীলতার জন্য এটির বহিঃস্থ স্তরে ৪টি ইলেকট্রন দরকার। দ্বিতীয় শক্তিস্তরে ৪টি ইলেকট্রনের জন্যে এটি তার বহিঃস্থ স্তরের টি ইলেকট্রন ত্যাগ করতে পারে অথবা কোথাও থেকে একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারে। শক্তির বিবেচনায়, দ্বিতীয় শক্তিস্তরে একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করা টি ইলেকট্রন ত্যাগ করার চেয়ে অনেক বেশি সহজ। সোডিয়াম পরমাণুর সংস্পর্শে এটি খুব সহজেই একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারে। ইলেকট্রন গ্রহণ করার পর ফ্লোরিন পরমাণুটি ঋণাত্মক বা নেগেটিভ চার্জযুক্ত আয়নে পরিণত হয়, যাকে অ্যানায়ন বলে।
এভাবেই ইলেকট্রন গ্রহণ বা ত্যাগের মাধ্যমে পরমাণুসমূহ আয়নে পরিণত হয়। বিপরীত চার্জবিশিষ্ট ক্যাটায়ন এবং অ্যানায়নের মধ্যকার আকর্ষণ বলের কারণে রাসায়নিক বন্ধনের সৃষ্টি হয়। এভাবেই 2টি ভিন্ন মৌলের পরমাণু থেকে যৌগ তৈরি হয় যেগুলো সম্পর্কে তোমরা তোমাদের পরবর্তী ক্লাসে বিস্তারিত জানতে পারবে। নিচে সোডিয়াম ফ্লোরাইড তৈরির উদাহরণটি দেখানো হলো। প্রথমে সোডিয়াম (Na) পরমাণু একটি ইলেকট্রন (e) ত্যাগ করে ক্যাটায়নে (Na') পরিণত হয়েছে। সেই ইলেকট্রনটি গ্রহণ করে ফ্লোরিন অ্যানায়নে (F) পরিণত হয়েছে, তখন সোডিয়াম ক্যাটায়ন (Na) ফ্লোরিন অ্যানায়নের (F) সাথে যুক্ত হয়ে সোডিয়াম ফ্লোরাইড (Na'F- অথবা NaF) যৌগে পরিণত হয়েছে।
সোডিয়াম ফ্লোরাইড একটি প্রয়োজনীয় যৌগ, দাঁতের ক্ষয় রোধ করার জন্য এটি পানিতে এবং টুথপেস্টে ব্যবহার করা হয়।
3.4.1 ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের সাহায্যে যৌগের রাসায়নিক সংকেত লিখার নিয়ম
যদি তোমরা সোডিয়াম ফ্লোরাইডের মতো অন্য কোনো আয়নিক যৌগের নাম জানো তাহলে তার রাসায়নিক সংকেতও লিখতে পারবে। প্রথমে যৌগটির অন্তর্ভুক্ত মৌলদুটিকে অ্যানায়ন এবং ক্যাটায়নে বিভক্ত করতে হবে। সেজন্য তোমাকে জানতে হবে কাছাকাছি পূর্ণ কক্ষপথ করার জন্য কয়টি ইলেকট্রন পরিত্যাগ করে ক্যাটায়ন হতে পারে অথবা কয়টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে অ্যানায়ন হতে পারে। তারপর আয়নদুটিকে তার চার্জসহ লিখে, কোন আয়নটি কয়টি করে নিলে পুরো যৌগটি চার্জ-নিরপেক্ষ হবে সেটি নির্ধারণ করা হয়। নিচে দুইটি উদাহরণ দেখানো হলো।
নিথিয়াম অক্সাইড
লিথিয়াম (Li-3) ও অক্সিজেন (০-৪) মিলে লিথিয়াম অক্সাইড যৌগ তৈরি হয়। লিথিয়াম একটি ইলেকট্রন পরিত্যাগ করে সর্বশেষ n = 1 শক্তিস্তর পূর্ণ করতে পারে। কাজেই তার ক্যাটায়ন হচ্ছে Li অন্যদিকে অক্সিজেন দুইটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে তার সর্বশেষ n = 2 শক্তিস্তর পূর্ণ করতে পারে কাজেই তার অ্যানায়ন 02-।
তাহলে দুইটি লিথিয়াম পরমাণু এবং একটি অক্সিজেন পরমাণু মিলে চার্জ-নিরপেক্ষ লিথিয়াম অক্সাইড Li₁₂O যৌগ তৈরি হয়।
ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড
ম্যাগনেসিয়াম (Mg-12) ও অক্সিজেন (০-৪) মিলে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড যৌগ তৈরি হয়। ম্যাগনেসিয়াম দুইটি ইলেকট্রন পরিত্যাগ করে সর্বশেষ n = 2 শক্তিস্তর পূর্ণ করতে পারে। কাজেই তার ক্যাটায়ন হচ্ছে Mg2+ অন্যদিকে অক্সিজেন দুইটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে তার সর্বশেষ n = 2 শক্তিস্তর পূর্ণ করতে পারে কাজেই তার অ্যানায়ন O2-।
তাহলে একটি ম্যাগনেসিয়াম পরমাণু এবং একটি অক্সিজেন পরমাণু মিলে চার্জ-নিরপেক্ষ ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড MgO যৌগ তৈরি হয়।
আরও দেখুন...