কবিতা গ্রীষ্মের ছুটিতে মা-বাবার সাথে কুমিল্লার ময়নামতিতে শালবন বিহার পরিদর্শনে যায় । সেখানে গিয়ে লক্ষ করে যে, বিহারের মাঝখানে উঁচু ঢিবির উপর কেন্দ্রীয় মন্দির, চারপাশে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য অসংখ্য কক্ষ, দেয়ালে টেরাকাটা অঙ্কন। সবকিছু মিলিয়ে অপূর্ব প্রাচীন নিদর্শন ।
কবিতার দেখা প্রাচীন নিদর্শনের বৈশিষ্ট্যের সাথে প্রাচীন বাংলার কোন নিদর্শনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়?
মানুষ সামাজিক জীব । সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করাই তার স্বভাব। এভাবে বাস করতে হলে চাই একে অন্যের সাথে সহযোগিতা। এ কারণেই মানুষের প্রয়োজন পড়ে বিভিন্ন সামাজিক অর্থনেতিক ও রাজনৈতিকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। জীবন বাঁচাতে প্রধান তিনটি জিনিসের প্রথম প্রয়োজন- খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থান। এর পরই মানুষ জীবনকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে মনোযোগ দেয় শিক্ষা, বিজ্ঞান, শিল্পকলা, আইন প্রভৃতির উন্নয়নে । সমাজ জীবন বিকাশে মানুষের এ সমস্ত কাজকর্মের একত্রিত রূপই হচ্ছে তার সংস্কৃতি । আর্যদের আগমনের পূর্বে বাংলার প্রাচীন মানুষ একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন গড়ে তুলেছিল । বাংলার সমাজ-সংস্কৃতির এটাই সবচেয়ে প্রাচীন রূপ । পণ্ডিতদের মতে, এদের ভাষার নাম ছিল 'অস্ট্রিক । জাতি হিসেবে এদের বলা হতো নিষাদ । এরপর বাংলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাথে মিশে যায় 'আলপাইন' নামে এক জাতি । আর্যরা এদেশে আসার পূর্বে এরা মিলেমিশে বাংলার সংস্কৃতি গড়ে তোলে । বাঙালির জনপ্রকৃতিতে বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর ধারা এসে মিলিত হয়েছে। এটি তাদেরকে 'সংকর-জন' হিসেবে পরিচিত করেছে। বহু বছর বিচিত্র আদান-প্রদান ও মিশ্রণের ফলে বাঙালির একটি নিজস্ব দৈহিক বৈশিষ্ট্য তৈরি হয়েছে।
এই অধ্যায় শেষে আমরা –