মানুষের মন বলে, প্রয়োজন মিটলেই হবে না, তাকে সুন্দর হতে হবে। যেমন- নকশিকাঁথা, রাতে বিছানায় গায়ে দিয়ে শোওয়ার জন্য একটি সামগ্রী- সেটা তো সুন্দর-অসুন্দর হওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এই প্রয়োজনের জিনিসকে সুঁই আর রঙিন সুতা দিয়ে অপূর্ব নকশা করে সাজিয়েছেন গাঁয়ের বধূরা। নকশিকাঁথা দেখলেই সুন্দর লাগে, জিনিসটির প্রয়োজনের কথা মনেই পড়ে না। এ কারণেই জ্ঞানীরা বলেন, 'সব সুন্দরই সরাসরি প্রয়োজনের বাইরে। প্রয়োজনের কাজ মিটল তো শরীরকে তৃপ্ত করল আর প্রয়োজনের বাইরে যে সুন্দর তা মনকে তৃপ্ত করল।’
বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত এস. ওয়াজেদ আলি রচনাবলি থেকে, ‘জীবনে শিল্পের স্থান' শীর্ষক প্রবন্ধটি সংকলিত হয়েছে। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। তবে মন না থাকলে মানুষ হয় না। আর এ মনকে সর্বদা মানস-সৌন্দর্যের চর্চায় নিবেদিত হতে হয়। কথাবার্তা, আচরণ, খাদ্য গ্রহণ, পোশাক নির্বাচন, গৃহসজ্জা, গৃহের চারপাশের পরিচ্ছন্নতা প্রভৃতি মানুষের জীবনকে সুন্দর ও আনন্দময় করে তোলে । এর ফলে পরিবার, সমাজ, জাতি, দেশ নির্বিশেষে একটি সুদৃঢ় ব্যবস্থাপনার নিদর্শনরূপে গড়ে ওঠে। ‘জীবন শিল্পের স্থান' প্রবন্ধটিতে এস. ওয়াজেদ আলি জীবন ও সৌন্দর্যবোধের সম্পর্ক দেখিয়েছেন। প্রবন্ধটি সৌন্দর্যবোধে উদ্বুদ্ধ হবার শিক্ষা দেয়।