বাংলাদেশের সম্পদ ও শিল্প

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ভূগোল ও পরিবেশ - | NCTB BOOK

একটি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নর নির্ভর করে সম্পদ ও শিল্পের উপর। প্রাকৃতিক সম্পদকে সরাসরি অথবা অন্যান্য সম্পদকে কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করে ব্যবহার করা হয়। কৃষিজ ও বনজ সম্পদ, জি, প্রাকৃতিক গ্যাস, করলা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এ দেশে নিজের গুরুত্ব অপরিসীম। পোশাক শিল্প বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যথেষ্ট  অবদান রাখছে ।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

নিচের উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নের উত্তর দিন

শিশিরদের বাড়ি এমন একটি জেলায় যেখানটা আমের জন্য বিখ্যাত। সে নিজেও একজন আম চাষি। পাশাপাশি ব্যবসার উদ্দেশ্যে সে আরও কয়েকটি বাগান কিনে নেয়। আম যাওয়ানোর উদ্দেশ্যে গত রমজানের ঈদের ছুটি তার বাড়িতে কাটানোর জন্য বন্ধু এমদাদকে দাওয়াত করে। এমদাদ সেখানে যেতে অস্বীকৃতি জানালে শিশির বলে যে, তুমি যদি আস তবে এখানকার এমন কিছু ঐতিহাসিক নিদর্শন তোমাকে দেখাব যা তুমি কোনোদিন দেখনি। এমদাদ তার কথায় রাজি হয়ে যায় ।

নাটোরের দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি
গাজীপুরের ভাওয়াল রাজবাড়ি
রাজধানীর গণভবন
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি
নিচের উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নের উত্তর দিন

“মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই যেন গোরে থেকেও মোয়াযযেনের আযান শুনতে পাই।

কবি নজরুল
জসীম উদ্‌দীন
শামসুর রাহমান
বন্দে আলী মিয়া
নিচের উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নের উত্তর দিন

“রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এই দেশের মানুষকে মুক্ত কর ছাড়ব ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

জাতীয় উদ্যান
রমনা পার্ক
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
মুক্তাঙ্গন

কৃষিপণ্য (Agricultural Products)

কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লাভজনক, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা একটি দেশের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৮ অনুযায়ী, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের জিডিপিতে সার্বিক কৃষিখাতের অবদান ১৪.১০ শতাংশ। এ দেশের শ্রমশক্তির মোট ৪০.৬০ শতাংশ কৃষিখাতে নিয়োজিত। কৃষিখাতে প্রধান রপ্তানি পণ্য হচ্ছে হিমায়িত খাদ্য, কাঁচা পাট, পাটজাত দ্রব্য, চা প্রভৃতি।

বাংলাদেশের কৃষিজ ফসল ২ ধরনেরঃ ১।  খাদ্য-শস্য (ধান, গম, ডাল, তেলবাজ, আলু, ভুট্টা, সবজি ও ফলমূল ২। অর্থকরী ফসল (পাট, চা, ইক্ষু, তুলা, তামাক ও ফুল)
                                              
খাদ্য-শস্য (Food Crops )

ধান (Rice)
বাংলাদেশের খাদ্য-শস্যের মধ্যে ধানই প্রধান। এ দেশে আউশ, আমন, বোরো প্রভৃতি ধরনের ধান চাষ হয়। বাংলাদেশের সকল জেলায় ধান উৎপাদিত হয়। রংপুর, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, বরিশাল, ময়মনসিংহ, বগুড়া, দিনাজপুর, ঢাকা, নোয়াখালী প্রভৃতি অঞ্চলে ধান চাষ বেশি হয় (চিত্র ১১.১)। তবে রংপুরে আমন ধান ও সিলেটে বোরো ধান ভালো হয় ।

ধান চাষের উপযোগী অবস্থাঃ
ধান চাষের জন্য ১৬° থেকে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা | প্রয়োজন এবং ১০০ থেকে ২০০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপ্রবণ এলাকায় ধানের ফলন ভালো হয় । নদী অববাহিকায় পলিমাটি ধান চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। এজন্য বাংলাদেশের সর্বত্রই ধান জন্মে।

গম (Wheat)

বর্তমানে খাদ্য-শস্যের প্রয়োজনীয়তায় বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই গম চাষ হয়। তবে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো গম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। দিনাজপুর, রংপুর, পাবনা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, যশোর, বগুড়া প্রভৃতি অঞ্চলে গম চাষ ভালো হয় (চিত্র ১১.১)।

গম চাষের উপযোগী অবস্থাঃ
সাধারণত গম চাষের জন্য ১৬° থেকে ২২° সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ৫০ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। এ কারণে বাংলাদেশে বৃষ্টিহীন শীত মৌসুমে পানিসেচের মাধ্যমে গম চাষ ভালো হয় । বাংলাদেশের উর্বর দোআঁশ মাটি গম চাষের জন্য বিশেষ সহায়ক । অন্যান্য খাদ্য শস্যের মধ্যে তেলবীজ (তিল, সরিষা, বাদাম, ভিসি) এবং ডাল (মসুর, ফুল, মটর, মাসকলাই, খেসারি) এবং ভুট্টা, যব, আলু, সবজি ও ফলমূল প্রধান। বাংলাদেশে শীতকালে এসব খাদ্য-শস্য কম খরচে চাৰ করা যায়। পানিসেচের বিশেষ প্রয়োজন হয় না। বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। ফলে কৃষকের কৃষিপণ্য বিক্রয়ে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকে।
 

অর্থকরী ফসল (Cash or Commercial Crops)ঃ  যে সকল ফসল সরাসরি বিক্রির জন্য চাষ করা হয় তাকে অর্থকরী ফসল বলে।

পাট (Jute)

পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। বাংলাদেশে সাধারণত দুই প্রকার পাট চাষ হয়, দেশি এবং তোষা পাট। রংপুর, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, কুমিল্লা, যশোর, ঢাকা, কুষ্টিয়া, জামালপুর, টাঙ্গাইল, পাবনা প্রভৃতি জেলায় পাট চাষ ভালো হয় ।

পাট চাষের উপযোগী অবস্থাঃপার্ট উষ্ণ অঞ্চলের ফসল। পাট চাষের জন্য অধিক তাপমাত্রা (২০° থেকে ৩৫° সেলসিয়াস) এবং প্রচুর বৃষ্টিপাতের (১৫০ থেকে ২৫০ সেন্টিমিটার) প্রয়োজন হয়। নদীর অববাহিকায় পলিযুক্ত দোআঁশ মাটি পাট চাষের জন্য বিশেষ সহায়ক।

ইক্ষু (Sugarcane)

চিনি ও গুড় উৎপাদনের জন্য ইক্ষু বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ফসল। ইক্ষু চাষের জন্য সমতলভূমি প্রয়োজন। রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর ও ময়মনসিংহ ইক্ষু চাষের প্রধান অঞ্চল (চিত্র ১১.২)।

ইক্ষু চাষের উপযোগী অবস্থা: ইক্ষু উৎপাদনের জন্য ১৯° থেকে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং কমপক্ষে ১৫০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন ।
বেলে দোআঁশ ও কর্দমময় দোআঁশ মাটিতে ইক্ষু চাষ ভালো হয়।
 

চা (Tea)

বাংলাদেশের অর্থকরী ফসলের মধ্যে চা অন্যতম। দেশে উৎপাদিত চা-এর প্রায় বেশিরভাগ বিদেশে রপ্তানি হয়। পানি নিষ্কাশনবিশিষ্ট ঢালু জমিতে চা ভালো হয়। মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেটে সবচেয়ে বেশি চা বাগান রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ে চা চাষ হচ্ছে (চিত্র ১১.২)।

চা চাষের উপযোগী অবস্থা: চা চাষের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু প্রয়োজন। ১৬° থেকে ১৭° সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ২৫০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত প্ৰয়োজন ।
উর্বর লৌহ ও জৈব পদার্থ মিশ্রিত দোআঁশ মাটিতে চা চাষ ভালো হয় ।

কৃষি ফসলের প্রাকৃতিক নিয়ামক ছাড়াও মূলধন, শ্রমিক, পরিবহন, বাজার প্রভৃতি নিয়ামক-এর সম্প্রসারণ ও উৎপাদনের উপর প্রভাব ফেলে। সরকারি সহযোগিতা ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সমন্বয়ে কৃষির সম্প্রসারণ সম্ভব।

শস্য বহুমুখীকরণ (Crop diversification)

বাংলাদেশে শীতকাল প্রধানত রবিশস্য চাষের জন্য উপযোগী। এক্ষেত্রে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় একই ধরনের শস্য চাষ করা হয়। এর ফলে যেমন- কৃষক শস্যের মূল্য কম পায়। জমিতে একই শস্য চাষ মাটির পুষ্টিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পাশাপাশি বহু ধরনের শস্য চাষ উচ্চ মূল্য প্রাপ্তিতে কৃষককে উপকৃত করে। বিভিন্ন শস্য গাছের অংশ নানা ধরনের জৈব মাটিতে যোগ করে মাটির পুষ্টির ঘাটতি রোধ হয়। ফলে অত্যধিক সার ব্যবহার করতে হয় না । এভাবে কৃষক বহুমুখী শস্য চাষ করে নিজে এবং পরিবেশকে উপকৃত করতে পারে।

Content added By

বাংলাদেশের বনাঞ্চল ( Forest of Bangladesh )

বনভূমি থেকে যে সম্পদ উৎপাদিত হয় বা পাওয়া যায় তাকে বনজ সম্পদ বলে। কোনো দেশের পারস্পরিক ভারসাম্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মোট ভূমির ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট বনভূমির পরিমাণ শতকরা প্রায় ১৭.৪৭৯১ ভাগ। জলবায়ু ও মাটির গুণাগুণের তারতম্যের কারণে বাংলাদেশের বনভূমিকে তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায় (চিত্র ১১.৩)।

বাংলাদেশের বনভূমি

ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং পাতাঝরা গাছের বনভূমি : বাংলাদেশের খাগড়াঝড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের প্রায় সব অংশে এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের কিছু অংশে এ বনভূমি বিস্তৃত । পাহাড়ের অধিক বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চলে ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং কম বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চলে পাতাঝরা গাছের বনভূমি দেখা যায় ।

ক্রান্তীয় পাতাঝরা গাছের বনভূমি : বাংলাদেশের প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহে এ বনভূমি রয়েছে। এ বনভূমিকে দুই অংশে ভাগ করা হয়েছে- (ক) ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলার মধুপুর ও ভাওয়ালের বনভূমি; (খ) দিনাজপুর ও রংপুর জেলায় বরেন্দ্র বনভূমি অবস্থিত। শীতকালে এ বনভূমির বৃক্ষের পাতা ঝরে যায়। গ্রীষ্মকালে আবার নতুন পাতা গজায় ।
স্রোতজ বনভূমি বা সুন্দরবন : উত্তরে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলা; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর; পূর্বে হরিণঘাটা নদী, পিরোজপুর ও বরিশাল জেলা এবং পশ্চিমে রাইমঙ্গল, হাড়িয়াভাঙ্গা নদী ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের | আংশিক প্রান্ত সীমা পর্যন্ত এ বনভূমি বিস্তৃত । এটি খুলনা বিভাগের ৬,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত । | সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা ও লোনা পানি এবং প্রচুর বৃষ্টিপাতের জন্য এ অঞ্চল বৃক্ষ সমৃদ্ধ ।

কাজ : বিভিন্ন উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য ও নাম দেওয়া হলো। এগুলো কোন বনভূমিতে অবস্থিত তা লেখ। 

 উদ্ভিদ ও বৈশিষ্ট্য  বনভূমির নাম
 ১। সুন্দরি, গরান, গেওয়া, ধুন্দল, কেওড়া ও গোলপাতা সাধারণত স্রোতময় মিঠা ও লোনা পানির সংযোগস্থলে জন্মে। ২। শাল, গজারি, কড়ই, হিজল প্রভৃতি গাছের পাতা একবারে
ঝরে যায়। ৩। চাপালিশ, ময়না, তেলসুর, বাঁশ প্রভৃতি গাছের পাতা
একসঙ্গে ঝরে যায় না।
 

বনাঞ্চলের গুরুত্ব (Importance of forest) : বনজ সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের বনজ সম্পদের পরিমাণ সীমিত এবং দিন দিন কমে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনভূমির গুরুত্ব অপরিসীম।

১। প্রাকৃতিক গুরুত্ব : জীববৈচিত্র্য রক্ষা, মাটি বা ভূমিক্ষয় রোধ, ভূমিধস রক্ষা, বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি, আবহাওয়া আর্দ্র রাখা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে বনভূমি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে ।

২। পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা : সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় স্থান। এর জীববৈচিত্র্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
৩। পণ্যসামগ্রী সংগ্রহ : মানুষ তার দৈনন্দিন প্রয়োজনে কাঠ, বাঁশ, বেত, মধু, মোম প্রভৃতি বন থেকেসংগ্রহ করে থাকে। এছাড়াও জীবজন্তুর চামড়া ও ভেষজ দ্রব্য বনভূমি থেকে সংগ্রহ করা হয়।
৪। নির্মাণের উপকরণ : মানুষ বনভূমি থেকে তার ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য কাঠ, বাঁশ,বেত ইত্যাদি যাবতীয় উপকরণ সংগ্রহ করে ।

৫। শিল্পের উন্নতি : কাগজ, রেয়ন, দিয়াশলাই, ফাইবার বোর্ড, খেলনার সরঞ্জাম প্রভৃতির উৎপাদন কাজে বনজ সম্পদ ব্যবহৃত হয়ে শিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। কর্ণফুলী কাগজকল, খুলনার নিউজপ্রিন্ট কারখানা বনজ সম্পদের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

৬। দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস : উপকূলীয় অঞ্চলের বনভূমি সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

৭। পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা : বনভূমি থেকে কাঠ সংগ্রহ করে তা দিয়ে রেললাইনের স্লিপার, মোটরগাড়ি, নৌকা, লঞ্চ, জাহাজ ইত্যাদির কাঠামো, বৈদ্যুতিক খুঁটি, রাস্তার পুল প্রভৃতি নির্মাণ করা হয়।

৮। সরকারের আয়ের উৎস : বনজ সম্পদ সরকারের আয়ের একটি উৎস। যেমন— বনজ সম্পদ বিক্রি ও এর উপর কর ধার্য করে সরকার রাজস্ব আয় বাড়িয়ে থাকে ।

৯। কৃষি উন্নয়ন : বনভূমি দেশের আবহাওয়াকে আর্দ্র রাখে। ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে যা কৃষি উন্নয়নে সহায়ক ।

১০। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন : বনের বিভিন্ন প্রাণীর চামড়া, দাঁত, শিং, পশম এবং কিছু জীবন্ত বন্য জন্তু রপ্তানি করে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। বনজ সম্পদ ব্যবহারে আমরা যত্নশীল হবো। আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার তাগিদে বনজ জীববৈচিত্র্যের প্রতি যত্নশীল ও রক্ষণশীল হতে হবে।

Content added || updated By

বাংলাদেশের খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা ও কঠিন শিলা

প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে খনিজ সম্পদ হিসেবে খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা ও কঠিন শিলা গুরুত্বপূর্ণ (চিত্র ১১.৪)। দেশের এই খনিজ সম্পদসমূহের অনুসন্ধান, উৎপাদন এবং বিতরণের মধ্যে সমন্বয় আনয়ন করলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।

খনিজ তেল (Petroleum)

বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে খনিজ তেল আছে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন। ১৯৮৬ সালে সিলেট জেলার হরিপুরে প্রাকৃতিক গ্যাসের সপ্তম কূপে তেল পাওয়া গেছে। এ কূপ থেকে দৈনিক প্রায় ৬০০ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল তোলা হচ্ছে। অপরিশোধিত তেল চট্টগ্রামের তেল শোধনাগারে পরিশোধন করা হয়। পরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল, কেরোসিন, বিটুমিন ও অন্যান্য দ্রব্য পাওয়া যায়। মৌলভীবাজার জেলার বরমচালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় তেলক্ষেত্রটি অবস্থিত। এ ক্ষেত্র থেকে দৈনিক প্রায় ১,২০০ ব্যারেল তেল
উত্তোলিত হয়।

প্রাকৃতিক গ্যাস (Natural Gass)

প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি সম্পদ। দেশের মোট বাণিজ্যিক জ্বালানি ব্যবহারের প্রায় ৭১ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস পূরণ করে। এ যাবৎ আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা ২৭টি। এই গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উত্তোলনযোগ্য সম্ভাব্য ও প্রমাণিত মজুদের পরিমাণ ২৭.৮১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে ১৯৬০ থেকে জুন, ২০১৮ পর্যন্ত ১৫.৯৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে এবং ১১.৯২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট প্রমাণিত মজুদ গ্যাস অবশিষ্ট রয়েছে। বর্তমানে ২১টি গ্যাসক্ষেত্রের ১১২টি কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ৯৬৮.৭ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হয়েছে। (উৎস: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা, ২০১৯)।

                                        গ্যাসক্ষেত্রঃ

                           উৎপাদনরত  উৎপাদনে যায় নাই  উৎপাদন স্থগিত নতুন আবিষ্কৃত
 বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, সিলেট, কৈলাশটিলা, রশিদপুর, তিতাস, নরসিংদী, মেঘনা, , সালদানদী, জালালাবাদ, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, মৌলভীবাজার, বিবিয়ানা, বাঙ্গুরা, শাহবাজপুর, সেমুতাং, সুন্দলপুর, শ্রীকাইল, বেগমগঞ্জ, রূপগঞ্জ  কুতুবদিয়া  ছাতক,  কামতা সাঙ্গু, ফেনী   ভোলা |  

 

 

কয়লা (Coal)

শক্তির অন্যতম উৎস কয়লা। কলকারখানা, রেলগাড়ি, জাহাজ প্রভৃতি চালানোর জন্য কয়লা ব্যবহৃত হয়। জ্বালানি হিসেবেও কয়লা ব্যবহৃত হয়। কয়লা সম্পদে বাংলাদেশ তত উন্নত নয়। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আবিষ্কৃত মোট ৫টি কয়লাক্ষেত্রের মোট মজুদ প্রায় ৭,৯৬২ মিলিয়ন টন। কয়লাক্ষেত্রের কয়লা উত্তোলন শুরুর পর থেকে ডিসেম্বর, ২০১৮ পর্যন্ত প্রায় ১০.৪০ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন করা হয়। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে দৈনিক প্রায় ৩,০০০ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলিত হয়। এছাড়া রংপুরের খালাশপীর, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি ও দীঘিপাড়া এবং বগুড়ার জামালগঞ্জে কয়লাক্ষেত্র রয়েছে (উৎস : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা, ২০১৯)।

বাংলাদেশের ফরিদপুরে বাঘিয়া ও চান্দা বিল, খুলনার কোলা বিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ এবং সিলেটের কিছু অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পীট জাতীয় নিম্নমানের কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া রাজশাহী, বগুড়া, নওগাঁ এবং সিলেট জেলায় উৎকৃষ্টমানের বিটুমিনাস ও লিগনাইট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে। দিনাজপুরে বড়পুকুরিয়ার কয়লাক্ষেত্র থেকে উৎকৃষ্টমানের লিগনাইট কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে।

কঠিন শিলা (Hard Rock)

রেলপথ, রাস্তাঘাট, গৃহ, সেতু ও বাঁধ নির্মাণ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি কাজে কঠিন শিলা ব্যবহৃত হয়। রংপুর জেলার রানীপুকুর ও শ্যামপুর এবং দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়ায় কঠিন শিলার সন্ধান পাওয়া গেছে। রংপুরের রানীপুকুর থেকে বৈদেশিক সহযোগিতায় শিলা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন, এখান থেকে বছরে প্রায় ১৭ লক্ষ টন শিলা উত্তোলন করা যাবে। দিনাজপুরের মধ্যপাড়া খনি হতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৭ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬৩৪.২৫ মেট্রিক টন কঠিন শিলা উত্তোলিত হয়েছে। (উৎস : জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৭-২০১৮)।

 

 

 কয়লা (Coal)

শক্তির অন্যতম উৎস কয়লা। কলকারখানা, রেলগাড়ি, জাহাজ প্রভৃতি চালানোর জন্য কয়লা ব্যবহৃত হয়। জ্বালানি হিসেবেও কয়লা ব্যবহৃত হয়। কয়লা সম্পদে বাংলাদেশ তত উন্নত নয়। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আবিষ্কৃত মোট ৫টি কয়লাক্ষেত্রের মোট মজুদ প্রায় ৭,৯৬২ মিলিয়ন টন। কয়লাক্ষেত্রের কয়লা উত্তোলন শুরুর পর থেকে ডিসেম্বর, ২০১৮ পর্যন্ত প্রায় ১০.৪০ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন করা হয়। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে দৈনিক প্রায় ৩,০০০ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলিত হয়। এছাড়া রংপুরের খালাশপীর, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি ও দীঘিপাড়া এবং বগুড়ার জামালগঞ্জে কয়লাক্ষেত্র রয়েছে (উৎস : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা, ২০১৯)।

বাংলাদেশের ফরিদপুরে বাঘিয়া ও চান্দা বিল, খুলনার কোলা বিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ এবং সিলেটের কিছু অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পীট জাতীয় নিম্নমানের কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া রাজশাহী, বগুড়া, নওগাঁ এবং সিলেট জেলায় উৎকৃষ্টমানের বিটুমিনাস ও লিগনাইট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে। দিনাজপুরে বড়পুকুরিয়ার কয়লাক্ষেত্র থেকে উৎকৃষ্টমানের লিগনাইট কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে।


কঠিন শিলা (Hard Rock)

রেলপথ, রাস্তাঘাট, গৃহ, সেতু ও বাঁধ নির্মাণ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি কাজে কঠিন শিলা ব্যবহৃত হয়। রংপুর জেলার রানীপুকুর ও শ্যামপুর এবং দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়ায় কঠিন শিলার সন্ধান পাওয়া গেছে। রংপুরের রানীপুকুর থেকে বৈদেশিক সহযোগিতায় শিলা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন, এখান থেকে বছরে প্রায় ১৭ লক্ষ টন শিলা উত্তোলন করা যাবে। দিনাজপুরের মধ্যপাড়া খনি হতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৭ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬৩৪.২৫ মেট্রিক টন কঠিন শিলা উত্তোলিত হয়েছে। (উৎস : জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৭-২০১৮)।

Content added By

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লার গুরুত্ব

আধুনিক সভ্য জগতে খনিজ তেল একটি প্রয়োজনীয় সামগ্রী। শক্তি, আলো, তাপ উৎপাদনের জন্য তেল প্রয়োজনীয়। খনিজ তেল পরিশোধিত করে গ্যাসোলিন, ডিজেল গ্যাস, কেরোসিন, পিচ্ছিলকারক তেল (Lubricant), প্যারাফিন প্রভৃতি পাওয়া যায়। রেলগাড়ি, মোটরগাড়ি, জাহাজ, বিমান ইত্যাদি চালাতে পেট্রোল ও ডিজেল ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশের তেলক্ষেত্রগুলো হতে তেল পর্যাপ্ত পরিমাণে উত্তোলিত হলে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় হ্রাস করা সম্ভব। এছাড়া এককভাবে জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করা যাবে । শিল্পকারখানায় কাঁচামাল হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয়। ফেঞ্চুগঞ্জের সার কারখানায় ও ছাতকের সিমেন্ট কারখানায় হরিপুরের প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয়। ঘোড়াশালের সার কারখানায় তিতাস গ্যাস কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কীটনাশক, ঔষধ, রাবার, প্লাস্টিক, কৃত্রিম তন্তু প্রভৃতি তৈরির জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়। চা বাগানগুলো রশিদপুরের প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফার্নেস তেলের পরিবর্তে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার হয়। যেমন— সিদ্ধিরগঞ্জ, আশুগঞ্জ, ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক কাজে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয় ।

কাজ : এককভাবে নিচের ছকটি পূরণ কর।

                     শিল্প    ব্যবহৃত গ্যাসক্ষেত্রের নাম

 ফেঞ্চুগঞ্জের সার কারখানায়

 ব্যবহৃত গ্যাসক্ষেত্রের নাম

 ছাতকের সিমেন্ট কারখানায়

ঘোড়াশালের সার কারখানায়

সিদ্ধিরগঞ্জের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে

আশুগঞ্জের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে

 

কয়লা জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের ও লাকড়ির পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। বর্তমানে বড়পুকুরিয়া থেকে উত্তোলিত কয়লার ৬৫ শতাংশ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে। অবশিষ্ট ৩৫ শতাংশ কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে ইটভাটা ও কলকারখানাসহ অন্যান্য খাতে। বনজ সম্পদ রক্ষায় কয়লা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরাসরি কাঠ বা লাকড়ি পোড়ালে পরিবেশের যে দূষণ হয় কয়লা ব্যবহার করলে সেই দূষণ হয় না। বনজ সম্পদ রক্ষা ও দূষণ রোধে কয়লা প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় সাহায্য করে।
কৃষির উন্নতি, বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় হ্রাস, সরকারি আয়ের উৎস, কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রভৃতি ক্ষেত্রে এই খনিজ দ্রব্যগুলো যথেষ্ট অবদান রাখে। এগুলো ব্যবহারের প্রতি আমাদের সচেতন ও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। আমরা এই মূল্যবান সম্পদগুলোর অপচয় করব না।

বাংলাদেশের প্রধান শিল্প (Main industry of Bangladesh )
কোনো দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত হচ্ছে শিল্পায়ন। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে শিল্পখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৯ অনুযায়ী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে জি.ডি.পি তে শিল্পখাতের অবদান হলো শতকরা ৩৫.১৪ ভাগ। বাংলাদেশের প্রধান শিল্পগুলো হলো—

পাট শিল্প (Jute industry) : বাংলাদেশে কৃষিনির্ভর শিল্পগুলোর মধ্যে পাট শিল্প অন্যতম। এ দেশের পর্যাপ্ত ও উৎকৃষ্ট পাট চাষ হওয়ায় কাঁচামালের সহজলভ্যতা পাট শিল্পের উন্নতিতে সহায়তা করছে। এ দেশে পাটের দক্ষ ও সুলভ শ্রমিক রয়েছে। সর্বোপরি পাট শিল্পের প্রতি সরকারের সাহায্য ও সহযোগিতা রয়েছে।

বাংলাদেশে বেসরকারিভাবে অনেক পাটকল গড়ে উঠেছে। সরকারি ও বেসরকারি মোট পাটকলের সংখ্যা ২০৫টি (চিত্র ১১.৫)। গড় বার্ষিক উৎপাদন ৬,৬৩,০০০ মেট্রিক টন। আমরা সহজে পাট শিল্পকে নিম্নোক্তভাবে দেখতে পারি। 

পাট শিল্প কেন্দ্র অঞ্চল  পাট শিল্পজাত দ্রব্য  রপ্তানির দেশসমূহ 
 নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রাম, ডেমরা, ঘোড়াশাল, নরসিংদী, ভৈরববাজার, গৌরীপুর, মাদারিপুর, চাঁদপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও হবিগঞ্জ ।  চট, বস্তা, কার্পেট, দড়ি, ব্যাগ, স্যান্ডেল, ম্যাট, পুতুল, শোপিস ও জুটন ।  আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মিসর, রাশিয়া, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ইতালি, জার্মানি, জাপান ও ফ্রান্স ।

বস্ত্র শিল্প (Cotton Textile Industry )

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মিসর, রাশিয়া, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ইতালি, জার্মানি, জাপান ও ফ্রান্স ।
কার্পাস বয়নশিল্প বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। মানুষের খাদ্যের পরই বস্ত্রের প্রয়োজন হয় । তাই বস্ত্র শিল্পের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ এ শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। এ দেশের আবহাওয়া বস্ত্র শিল্পের অনুকূল। আলোচনার সুবিধার্থে বাংলাদেশের কার্পাস বয়নশিল্পকে কতিপয় অঞ্চলে বিভক্ত করা হয় (চিত্র ১১.৫)। যেমন—

 ঢাকা অঞ্চল  চট্টগ্রাম অঞ্চল  কুমিল্লা ও নোয়াখালি অঞ্চল  রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চল
 ঢাকার মিরেরবাগ, পোস্তগোলা, শ্যামপুর, ডেমরা, সাভার; নারায়ণগঞ্জ জেলার নারায়ণগঞ্জ, মুড়াপাড়া, কাঁচপুর, ধমগড়, লক্ষণখোলা, ফতুল্লা, গাজীপুর জেলার টঙ্গী, জয়দেবপুর, কালিগঞ্জ; নরসিংদী জেলার নরসিংদী, মাধবদী, বাবুরহাট ও ঘোড়াশাল ।  ফৌজদারহাট, | উত্তর কাউলি, ষোলশহর, পাঁচলাইশ, জুবলী আরিগোলা, রোড, , হালিশহর ও কালুরঘাট।  কুমিল্লার দূর্গাপুর,
দৌলতপুর, হালিমানগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বাঞ্ছারামপুর ; নোয়াখালী অঞ্চলের ফেনী ও রায়পুর ।
রাজশাহী বিভাগে রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা; রংপুর বিভাগে দিনাজপুর এবং খুলনা বিভাগে কুষ্টিয়া, মাগুরা ও যশোর জেলার নোয়াপাড়া ।

বিদেশ থেকে আমদানিকৃত তুলা ও সুতা দিয়ে বাংলাদেশের সুতা ও বস্ত্রকলগুলো পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ প্রতি বছর জাপান, সিঙ্গাপুর, হংকং, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ তুলা, সুতিবস্ত্র ও সুতা আমদানি করে।

কাগজ শিল্প (Paper Industries)

কাগজ শিল্প বাংলাদেশের একটি অন্যতম বৃহৎ শিল্প। ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশের চন্দ্রঘোনায় প্রথম কাগজের কল স্থাপিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারিভাবে ৬টি কাগজকল, ৪টি বোর্ড মিলস ও ১টি নিউজপ্রিন্ট কারখানা আছে (চিত্র ১১.৫)।

 কাগজকলসমূহ  উৎপাদনের কাঁচামাল   উৎপন্ন কাগজ
  বাংলাদেশ হার্ডবোর্ডচন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী কাগজকল, পাবনায় পাকশীর উত্তরবঙ্গ কাগজকল, ছাতকের সিলেট মণ্ড ও মাগুড়া ও শাহজালাল কাগজকল, খুলনা নিউজপ্রিন্ট কারখানা মিলস, আদমজী পার্টিক্যাল বোর্ড মিলস, কাপ্তাই ও টঙ্গী বোর্ড মিলস ।  বাঁশ, নরম কাঠ, নলখাগড়া, আখের ছোবড়া, পাটকাঠি ও কাঁচা পাট। লেখার কাগজ, ছাপার কাগজ,  প্যাকিং ও অন্যান্য কাগজ এবং নিউজপ্রিন্ট।
 

সার শিল্প (Fertilizer Industry)
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত ফসল। আর এজন্য প্রয়োজন সার। ১৯৫১ সালে বাংলাদেশে প্রথম সার কারখানা সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে স্থাপিত হয়। বর্তমানে ১৭টি সার কারখানা থেকে সার উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে প্রধান সার কারখানাগুলো হলো- ঘোড়াশাল সার কারখানা, আশুগঞ্জ সার কারখানা, পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা, চট্টগ্রাম ট্রিপল সুপার ফসফেট সার কারখানা, চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা, জামালপুর জেলার তারাকান্দিতে যমুনা সার কারখানা ও ফেঞ্চুগঞ্জ অ্যামোনিয়াম সালফেট সার কারখানা (চিত্র ১১.৫)।

বাংলাদেশে বৃহৎ শিল্পের মধ্যে সার অন্যতম। প্রাকৃতিক গ্যাসের সহজলভ্যতার জন্য সার শিল্পের উন্নয়নের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে সার রপ্তানি করতে বাংলাদেশ সক্ষম হবে।



 

Content added || updated By

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পের অবদান (The contribution of garment industries to the economy of Bangladesh)

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে। সত্তর দশকের শেষে এবং আশির দশকের প্রথম থেকে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। এরপর এ শিল্প অতিদ্রুত বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের শীর্ষে নিজের স্থান করে নেয়। বর্তমানে দেশে অনেকগুলো রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প ইউনিট রয়েছে। এগুলোর প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগ ঢাকা অঞ্চলে অবস্থিত। অবশিষ্টগুলো প্রায় সবই চট্টগ্রাম বন্দর সাময়িক নগরীতে এবং কিছু খুলনা এলাকায় রয়েছে। ২০১৭-১৮* সালে এ শিল্পে বাংলাদেশ ১৫,৪২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে, যা মোট রপ্তানি আয়ের শতকরা ৪২.০৭ ভাগ (উৎস : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা, ২০১৮* সাময়িক)।

 উৎপাদিত পোশাক  রপ্তানিকৃত দেশসমূহ
 ট্রাউজার, জিন্স প্যান্ট, স্কার্ট, টপস, সোয়েটার, জ্যাকেট, মেয়েদের পুলওভার, কার্ডিগান, ব্লাউজ, টি-শার্ট, শার্ট ও প্যান্ট ইত্যাদি।  আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, বেলজিয়াম, স্পেন ও যুক্তরাজ্য।

বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্প বিকাশের অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান। অন্যান্য নিয়ামকের মধ্যে স্বল্প মজুরিতে শ্রমশক্তির সহজলভ্যতা অন্যতম। এ দেশে এ শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে দক্ষ ও অদক্ষ বিপুল শ্রমশক্তির, বিশেষ করে সমাজের নিম্ন আয়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়-রোজগারের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও সুফল বয়ে আনছে। পোশাক শিল্পকে এখন বলে ‘বিলিয়ন ডলার' শিল্প।

 EPZ : Export Processing Zone (রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল)

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প (Tourism Industry of Bangladesh )

প্রাকৃতিক ঋতু বৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ। সপ্তম শতাব্দীতে প্রখ্যাত চৈনিক পরিব্রাজক কবি হিউয়েন সাং এই দেশে এসে উচ্ছ্বসিতভাবে উল্লেখ করেছেন, ' A sleeping beauty emerging from mists and water.' তিনি তখন এই জনপদের সুপ্ত সৌন্দর্যটিকে কুয়াশা ও পানির অন্তরাল থেকে ক্রমশ উন্মোচিত হতে দেখেছিলেন। তার সেই উপলব্ধি আজও এই বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য। পর্যটনের জন্য সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমুদ্রসৈকত, ঘন অরণ্য ও পাহাড়ি এলাকা প্রকৃতিগতভাবেই এখানে বিদ্যমান। বাংলাদেশের পর্যটকদের ভ্রমণ কেন্দ্রগুলোর মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য এ দেশের পর্যটন শিল্পের জন্য বিরাট সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র । এ দেশে পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুময় সমুদ্রসৈকত, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, দ্বীপ, হ্রদ, নদী ও পালতোলা নৌকার অনুপম দৃশ্যাবলি, সবুজ-শ্যামলিকা ঘেরা পাহাড়ি ভূমি রয়েছে, যা দেখলে মন ভরে যায়। এখানে রয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার ও মঠসহ প্রাচীন সভ্যতার নানা নিদর্শন। সিলেটের পাহাড়, হাওর ও চা বাগানের নয়নাভিরাম নৈসর্গিক দৃশ্য, কুয়াকাটায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য। এছাড়াও এ দেশে বহু প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিক স্থান ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতি রয়েছে, যা আকর্ষণীয় পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে দেশি-বিদেশি পর্যটককে আকর্ষণ করতে সক্ষম।

বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব (Importance of Tourism Industry of Bangladesh)

 বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প, এই শিল্পের উন্নয়নের বদৌলতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক গতিশীলতা, আঞ্চলিক উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়ন ও পরিবেশগত উন্নয়নে অনন্য অবদান রাখতে পারে। এই শিল্পের মাধ্যমে প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব সুলভ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার পথ সুগম হয়। বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং স্থাপত্যের নিদর্শনসমূহ বিশ্ব দরবারে পর্যটনের মাধ্যমেই তুলে ধরার মুখ্য পন্থা হিসেবে গণ্য করা যায় ।
বাংলাদেশ পর্যটনকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ২০০৫ সালে প্রণীত জাতীয় শিল্পনীতিতে একে অগ্রাধিকার শিল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে আয়, কর্মসংস্থান ও জাতীয় রাজস্ব বৃদ্ধি করা যায়। পর্যটন শিল্প বিকাশের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের নিকট উপস্থাপন করা যায়। এমন একটি ঝুঁকিহীন শিল্পে বাংলাদেশ আজও প্রাথমিক স্তরে অবস্থান করছে। বাংলাদেশে ২০১৮ সালে বিদেশি পর্যটক এসেছে প্রায় ২,৯২,৮৮২ জন। এতে বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে আয় হয়েছে ২০১৮ সালে ১০৫৬.৭৪০ মার্কিন ডলার ।

(উৎস : বাংলাদেশ পর্যটন মন্ত্রণালয় - বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৮-২০১৯)।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রসমূহ (Importance of Tourism Centres of Bangladesh)

  বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত, প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধ একটি দেশ। তাই বাংলাদেশের প্রতিটি স্থানেই পর্যটনের আকর্ষণীয় উপাদান রয়েছে। বাংলাদেশের অঞ্চলভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থানের নাম উল্লেখ করা হলো (চিত্র ১১.৬)।

বৃহত্তর ঢাকার পর্যটন স্থানসমূহ (Tourism places of Greater Dhaka)

ঐতিহাসিকভাবে ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী ও প্রধান শহর। সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত সাত গম্বুজ মসজিদ, অষ্টাদশ শতাব্দীর তারা মসজিদ এবং সাম্প্রতিককালের নির্মিত বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদ। একাদশ শতাব্দীতে নির্মিত ঢাকেশ্বরী মন্দির। মোগল সম্রাটদের বুড়িগঙ্গার নির্মিত লালবাগ দুর্গ, ১৮৫৭ সালের স্মৃতিসৌধ বাহাদুর শাহ পার্ক, আহসান মঞ্জিল জাদুঘর, কার্জন হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্থাপত্যসমূহ, জাতীয় কবির সমাধি, জাতীয় সংসদ ভবন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, মীরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, রায়েরবাজার বধ্যভূমি, ধানমণ্ডিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতিকৃতি ও মিউজিয়াম, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের জাতির জনক কর্তৃক ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ইত্যাদি পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ। গাজীপুরের ভাওয়াল গড় ও জমিদারবাড়ি, নারায়ণগঞ্জের ঐতিহাসিক সোনারগাঁও এবং পানাম নগর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

পূর্ববঙ্গের পর্যটন স্থানসমূহ (Tourism places of the Eastern Bengal)

টাঙ্গাইলের আটিয়া মসজিদ, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর মাজার ও বঙ্গবন্ধু সেতু, মধুপুরের গড় ও ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর স্মৃতি বিজড়িত দরিরামপুর। সিলেটে হযরত শাহজালাল (রা) ও শাহপরান (রা) মাজার, কিন ব্রিজ, জাফলং-এ জয়ন্তিয়া পাহাড়, মৌলভীবাজারে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া ইকোপার্ক ইত্যাদি। কুমিল্লার ময়নামতি বৌদ্ধ ও শালবন বিহার এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকদের সমাধিস্থল, নোয়াখালীর বজরা শাহী মসজিদ, গান্ধী আশ্রম, হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপ ইত্যাদি ।

উত্তরবঙ্গের পর্যটন স্থানসমূহ (Tourism places of the Northern Bengal)

রাজশাহী বরেন্দ্র জাদুঘর ও শাহ মখদুম (রা) মাজার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনা মসজিদ, নাটোরের রানি ভবানীর বাড়ি ও দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি (উত্তরা গণভবন), নওগাঁয় পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড় ও শাহ সুলতান বলখী (রা) মাজার, দিনাজপুরে কান্তজিউ মন্দির ইত্যাদি।

দক্ষিণবঙ্গের পর্যটন স্থানসমূহ (Tourism places of the Southern Bengal)

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সমাধি, সরমী কবি লালন শাহের মাজার ও শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি, যশোরের সাগরদাঁড়িতে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান, নড়াইলে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান শিশু স্বর্গ ও আর্ট গ্যালারী চিত্রা নদীর তীরে, মেহেরপুরে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ, বাগেরহাটে ষাট গম্বুজ মসজিদ, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত, বৃহত্তর খুলনার অবস্থিত প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ইত্যাদি।


রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পর্যটন স্থানসমূহ (Tourism places of Chittagong Hill Tracts)

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ এখানকার প্রধান আকর্ষণ (চিত্র ১১.৭)। এই হ্রদের চারদিকে সবুজ ঘেরা পাহাড়, নীলাভ পানি এবং হ্রদের ধারে ছোট ছোট টিলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে, অনাবিল আনন্দ উপভোগের এক মোহনীয় স্থানে রূপান্তরিত করেছে। এখানে বৌদ্ধ বিহার ও চাকমা রাজার রাজবাড়ি অন্যতম দর্শনীয় স্থান। খাগড়াছড়ির বনভূমি, পাহাড় ও প্রাকৃতিক ঝরনা। বান্দরবানের মেঘলা, শৈলপ্রপাত, নীলপির ও নীলাচল (চিত্র ১১.৮) ইত্যাদি পর্যটন স্পট অত্যন্ত আকর্ষণীয়।

চট্টগ্রামের পর্যটন স্থানসমূহ (Tourism places of Chittagong)

চট্টগ্রামের আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানগুলো হচ্ছে হযরত শাহ আমানত (রা) মাজার, ফর'স লেক, ডিসি হিল, কোর্ট বিল্ডিং, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, সীতাকুণ্ড ইত্যাদি।

কক্সবাজার এলাকার পর্যটন স্থানসমূহ (Tourism places of Cox's Bazar)

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত ও বনভূমির নয়নাভিরাম দৃশ্য কল্পবাজারকে একটি আকর্ষণীর পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করেছে। কক্সবাজারের করেকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থান হলো হিমছড়ি, ইনানি বিচ, কলাতলি বিচ, রামু বৌদ্ধ মন্দির, সোনাদিয়া দ্বীপ, মহেশখালী দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ (চিত্র ১১.৯) ।

 

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

Promotion