PWM (Pulse Width Modulation)

Computer Science - ডিজিটাল সার্কিট (Digital Circuits) টাইমার এবং কাউন্টার সার্কিট (Timers and Counters Circuits) |
360
360

পালস-ওয়াইড মডুলেশন বা PWM হল একটি কৌশল যা পালসের প্রস্থ নিয়ন্ত্রণ করে আউটপুট ভোল্টেজ বা শক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত হয়। PWM মূলত ডিজিটাল সিগন্যালের মাধ্যমে বিভিন্ন মাত্রার শক্তি বা ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে। এটি একটানা ভোল্টেজ পরিবর্তনের বদলে দ্রুত পালসিংয়ের মাধ্যমে কার্য সম্পাদন করে, যেখানে পালসের প্রস্থ পরিবর্তন করে গড় আউটপুট পাওয়া যায়।

PWM এর মূল ধারণা

PWM-এর ক্ষেত্রে আউটপুট সিগন্যাল দ্রুত অন এবং অফ অবস্থায় পরিবর্তিত হয়। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (যা "পিরিয়ড" হিসেবে পরিচিত), কতটুকু সময় সিগন্যাল অন থাকবে তার উপর ভিত্তি করে আউটপুট ভোল্টেজ পরিবর্তিত হয়। একে "ডিউটি সাইকেল" বলা হয়, এবং এটি শতকরা (%) হিসেবে প্রকাশ করা হয়।

  • ডিউটি সাইকেল: PWM সিগন্যালের অন থাকার সময়কে মোট সময়ের সাথে ভাগ করে শতকরা হিসেবে প্রকাশ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি PWM সিগন্যালের মোট সময় ১০০ মিলিসেকেন্ড হয় এবং ২০ মিলিসেকেন্ড অন থাকে, তাহলে ডিউটি সাইকেল হবে ২০%।
ডিউটি সাইকেল (%)অন থাকার সময়গড় আউটপুট ভোল্টেজ
0%সব সময় বন্ধ0V
25%অন কম সময়স্বল্প ভোল্টেজ
50%সমানভাবে অন-অফমাঝারি ভোল্টেজ
75%অন বেশিক্ষণবেশি ভোল্টেজ
100%সব সময় অনপূর্ণ ভোল্টেজ

PWM এর ব্যবহার

PWM বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, বিশেষত মোটর নিয়ন্ত্রণ, আলো নিয়ন্ত্রণ, এবং অডিও এম্প্লিফায়ার ইত্যাদিতে। এর কিছু সাধারণ ব্যবহার নিচে দেওয়া হলো:

১. মোটর স্পিড নিয়ন্ত্রণ

PWM সিগন্যাল ব্যবহার করে মোটরের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ডিউটি সাইকেল বেশি হলে মোটরে বেশি শক্তি সরবরাহ হয়, ফলে এটি দ্রুত ঘুরতে পারে। আর ডিউটি সাইকেল কম হলে কম শক্তি সরবরাহ হয় এবং মোটর ধীরে চলে।

২. আলো নিয়ন্ত্রণ (ডিমিং)

PWM-এর সাহায্যে LED-এর উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ৫০% ডিউটি সাইকেল হলে LED মাঝারি উজ্জ্বলতায় জ্বলে, আর ১০০% ডিউটি সাইকেলে পূর্ণ উজ্জ্বলতায় থাকে।

৩. তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

PWM পদ্ধতি ব্যবহার করে হিটিং এলিমেন্টগুলোর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ডিউটি সাইকেল বাড়িয়ে বা কমিয়ে তাপমাত্রা বাড়ানো বা কমানো সম্ভব।

৪. অডিও সিগন্যাল তৈরি

PWM সিগন্যাল দিয়ে অডিও সিস্টেমে বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির সাউন্ড জেনারেট করা যায়। এছাড়া অডিও এম্প্লিফায়ারেও PWM ব্যবহার করে সাউন্ডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

PWM কীভাবে কাজ করে

PWM সিস্টেমের আউটপুট ভোল্টেজ গড় পাওয়ার জন্য একটি পালসকে অন ও অফ করে ফ্রিকোয়েন্সি তৈরি করে। নিচের ধাপগুলোতে PWM-এর কাজের মূল প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলো:

  1. পিরিয়ড নির্ধারণ: PWM সিগন্যালের একটি পিরিয়ড থাকে, যা নির্দিষ্ট সময় অন্তর পুনরাবৃত্ত হয়।
  2. অন ও অফ সময় নির্ধারণ: পিরিয়ডের মধ্যে কতটুকু সময় অন থাকবে এবং কতটুকু সময় অফ থাকবে তা নির্ধারণ করা হয়।
  3. ডিউটি সাইকেল পরিবর্তন: ডিউটি সাইকেল পরিবর্তন করে গড় ভোল্টেজ পরিবর্তন করা হয়। ডিউটি সাইকেল বেশি হলে আউটপুট ভোল্টেজ বেশি হয়, আর কম হলে আউটপুট ভোল্টেজ কম হয়।

PWM-এর সুবিধা

  1. উচ্চ কার্যক্ষমতা: PWM পদ্ধতিতে শক্তি অপচয় কম হয়।
  2. নিয়ন্ত্রণের সঠিকতা: ডিউটি সাইকেল পরিবর্তন করে নির্ভুলভাবে ভোল্টেজ এবং শক্তি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  3. সহজ বাস্তবায়ন: সার্কিট ডিজাইন সহজ এবং কম খরচে বাস্তবায়নযোগ্য।

উদাহরণ:
ধরুন, একটি মোটরের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, যেখানে ৫০% ডিউটি সাইকেলে মোটর মাঝারি গতিতে চলে, আর ৭৫% ডিউটি সাইকেলে উচ্চ গতিতে চলে। PWM পদ্ধতি ব্যবহার করে মোটরের গতি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

Content added By
Promotion