অজানা রাশির জগৎ

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গণিত - NCTB BOOK

আমরা সংখ্যা ও সংখ্যার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনেছি। সংখ্যা ব্যবহার করে নানারকম গাণিতিক সমস্যা সমাধান করাও শিখেছি। এছাড়া দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক বস্তুর আকৃতি সম্পর্কে জেনেছি। কিছু কিছু বস্তুর পরিসীমা, ক্ষেত্রফল ও আয়তন পরিমাপ করতে পারি। এবার আমরা গণিতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা বীজগণিত সম্পর্কে জানব। “বীজগণিত” গণিত শাস্ত্রের প্রাচীন ও অন্যতম একটি মৌলিক শাখা। বীজগণিতের ইংরেজি শব্দ “Algebra”। এই Algebra শব্দটি একটি আরবি শব্দ “আল-জাবর” থেকে এসেছে। শব্দটি ৮২০ খ্রিস্টাব্দের দিকে বিখ্যাত ফার্সি গণিতবিদ আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ মুসা আল খোয়ারিজমি (৭৮০-৮৫০) তাঁর বিখ্যাত একটি বইতে ব্যবহার করেছিলেন।

আল খোয়ারিজমি ছিলেন একাধারে গণিতজ্ঞ, ভূগোলবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী। তবে মূলত বীজগণিতের জন্যই তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হন। এজন্যই তাকে বীজগণিতের জনক বলা হয়ে থাকে।

বীজগণিতের ব্যবহার

তোমরা হয়তো ভাবছ, বীজগণিত কেন শিখব তাই না? আমাদের বাস্তব জীবনে কি বীজগণিতের ব্যবহার আছে? উত্তর হবে হ্যাঁ। বীজগণিতের ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সর্বত্র। আমাদের ঘরের রান্না থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিজ্ঞান, প্রকৌশলসহ নানাবিধ ক্ষেত্রে এর ব্যবহার রয়েছে।

তোমরা অনেকেই অবাক হচ্ছো, রান্নার ক্ষেত্রে বীজগণিতের ব্যবহার কোথায়? তোমার মা তোমাদের জন্য নিয়মিত যে রান্না-বান্না করেন, বাড়িতে অনেক মেহমান আসলেও কি তাই করেন? নাকি চেনা রান্নার উপকরণগুলোর অনুপাত পরিবর্তন করেন। তোমার কখনো কি মনে হয়েছে কীভাবে তোমার মা সেই রান্নার রেসিপিটির সামঞ্জস্য রক্ষা করেন? বিষয়টি মজার হলেও তোমার মা কিন্তু এখানে বীজগণিত ব্যবহার করেছে।

তুমি যদি কখনো কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নাও বা টাকা বিনিয়োগ করো, তার জন্য তোমাকে সুদ বা মুনাফা গণনা করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদি এই মুনাফা নির্ণয়ের জন্য বীজগণিতের সূত্র ব্যবহার করা হয়।

আমরা এক কথায় বলতে পারি, বীজগণিত যেমন গণিতের সকল শাখার মধ্যে সেতুবন্ধ রূপে কাজ করে, তেমনি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

একটি খেলা দিয়ে শুরু করলে কেমন হয় বলো তো?

খেলার নিয়মটি হলো:

▪️খাতায় তোমার পছন্দমতো একটি সংখ্যা লেখো। সংখ্যাটি পূর্ণসংখ্যা বা ভগ্নাংশ বা যেকোনো কিছুই হতে পারে।

▪️এবার খাতায় লেখা তোমার পছন্দের সংখ্যাটিকে 3 দ্বারা গুণ করো।

▪️গুণফলের সাথে 30 যোগ করো।

▪️যোগফলকে 3 দ্বারা ভাগ করো।

▪️প্রাপ্ত ভাগফল থেকে তোমার পছন্দ করা সংখ্যাটি বিয়োগ করো।

তোমার বন্ধু যদি খেলাটি জানে, তাহলে সে তুমি যে বিয়োগফলটি পেয়েছ বলে দিতে পারবে। যদিও তোমার পছন্দের সংখ্যাটি তোমার বন্ধু জানে না। সে তোমাকে বলে দিতে পারবে – বিয়োগফলটি হবে 10। 

খেলাটি কিন্তু খুব বেশি জটিল নয়। তুমি একটু ভাবলেই বুঝতে পারবে তোমার বন্ধু কীভাবে তোমার লেখা সংখ্যাটি না দেখে বিয়োগফল বলতে পারল।

আচ্ছা দেখো তো, উপরের খেলার নিয়মগুলো এক সাথে সাজালে নিচের মতো হয় কিনা – ফাঁকা ঘরে যেকোনো সংখ্যা নিয়ে অথবা অন্য সংখ্যা দ্বারা গুণ, যোগ ও ভাগ করেও খেলাটি খেলতে পারবে। চেষ্টা করে দেখবে নাকি?

🚻 জোড়ায় খেলা : সহপাঠীর সাথে একাধিকবার খেলাটি খেলো। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সাথেও খেলতে পারো।

বীজগণিতীয় প্রতীক ও চলক

বীজগণিতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো অক্ষর প্রতীকের ব্যবহার। অক্ষর প্রতীক ব্যবহার করে আমরা নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যার বদলে যেকোনো সংখ্যা বিবেচনা করতে পারি।

তোমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, পাটিগণিতে বা সংখ্যার গল্পে আমরা সংখ্যা প্রতীক বা অঙ্ক হিসেবে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ০ ব্যবহার করেছিলাম। বীজগণিতে সংখ্যা প্রতীক বা অঙ্কগুলো হলো 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 0। তাছাড়া বীজগণিতে সংখ্যা প্রতীকের সাথে অক্ষর প্রতীকও ব্যবহার করা হয়। আর ইংরেজি বর্ণমালাগুলোকে ছোট হাতের অক্ষর দ্বারা জানা বা অজানা সংখ্যা বা রাশিকে প্রকাশ করা হয়।

নিচের ছবিতে সামির ও অনন্যা দিয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে ইংরেজি বর্ণ C এর একটি প্যাটার্ন তৈরি করছে। প্রথম C তৈরিতে সামির ৩টি কাঠি (চিত্র-1) ব্যবহার করেছে। অনন্যা সামিরের তৈরি করা C এর সাথে আরও 3টি কাঠি দিয়ে চিত্র - 2 তৈরি করে। এই ভাবে উভয়ে মিলে চিত্র - 3 এবং আরও কিছু C তৈরি করতে থাকে।

এই সময়ে তাদের বন্ধু অমিয়া আসে। সে প্যাটার্নটি দেখে সামির ও অনন্যাকে প্রশ্ন করে 6 নং চিত্রটি তৈরি করতে কতগুলো কাঠি লাগবে? তখন সামির ও অনন্যা নিচের ছকটি তৈরি করে।

চিত্র নম্বর1234567---
প্রয়েজনীয় কাঠির সংখ্যা36912151821---

ছক-১

অমিয়া ছক দেখে তার উত্তর পেয়ে গেল। সে বলল প্যাটার্নের 6 নম্বর চিত্রে 18টি কাঠির প্রয়োজন হবে।

ছকটি তৈরির সময় সামির ও অনন্যা বুঝতে পারে প্রতিটি চিত্র তৈরি করতে চিত্রের সংখ্যার 3 গুণ কাঠির প্রয়োজন হচ্ছে। অর্থাৎ প্রয়োজনীয় কাঠির সংখ্যা = 3 x চিত্রের নম্বর।

যদি চিত্রের সংখ্যাকে একটি অক্ষর n দ্বারা প্রকাশ করা হয়, তবে প্রথম C এর জন্য n = 1, দ্বিতীয় C এর জন্য n = 2, তৃতীয় C এর জন্য n = 3. .... হবে। ফলে চিত্রের নম্বর n = 1, 2, 3, 4, .... ইত্যাদি স্বাভাবিক সংখ্যা হবে। ছক অনুসারে প্রয়োজনীয় কাঠির সংখ্যা হবে = 3 x n বা 3n এবং এটি একটি নীতি বা সূত্র।

অনন্যা বলে, এই সূত্র ব্যবহার করে আমি অতি অল্প সময়েই 100 তম চিত্র তৈরি করতে কতগুলো দিয়াশলাইয়ের কাঠি লাগবে তা বলে দিতে পারব। এক্ষেত্রে আমার চিত্র বা ছক তৈরির প্রয়োজন হবে না। অমিয়া ও সামির উভয়েই অনন্যার সাথে সহমত পোষণ করে।

উপরের উদাহরণ থেকে আমরা দেখতে পাই, পরিবর্তন হলে প্রয়োজনীয় কাঠির সংখ্যাও পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ n কোনো নির্দিষ্ট মান নয়। এটি যেকোনো মান গ্রহণ করতে পারে। n হলো চলকের (variable) একটি উদাহরণ। তোমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, n ছাড়া অন্য কোনো অক্ষর কি চলক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না?

নিশ্চয়ই যাবে। প্রতীকের পরিবর্তে x, y, z,………. ইত্যাদি প্রতীকও ব্যবহার করা যাবে। 

বাস্তব জীবনেও আমরা চলকের পরিচয় পেয়ে থাকি। চলো নিচের ছবিটি লক্ষ করি এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।

▪️সময়ের সাথে সাথে গাড়ির গতিবেগ কি একই রকম থাকে?

▪️পৃথিবীর সকল স্থানের প্রতিদিনের তাপমাত্রার কোনো পরিবর্তন হয় কি?

▪️সময়ের সাথে সাথে শিশুর বৃদ্ধির কোনো পরিবর্তন হয় কিনা?

▪️বছরের পর বছর মানুষের বয়স বাড়ে না কমে?

ছবির ঘটনাগুলোর কোনোটিই নির্দিষ্ট নয়। অর্থাৎ এখানে ব্যবহৃত সংখ্যাগুলোর সবগুলোই পরিবর্তনশীল। সুতরাং সংখ্যাগুলোকে আমরা চলক বলতে পারি। চলকের মান স্থান ও সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়।

জোড়ায় কাজ: সামিরা ও অনন্যার মতো দিয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে ইংরেজি F বর্ণের মতো প্যাটার্ন তৈরি করো। তারপর প্যাটার্নটিকে একটি ছকের মাধ্যমে দেখাও। ছক পর্যবেক্ষণ করে চিত্র ও প্রয়োজনীয় কাঠির সংখ্যার মধ্যকার সম্পর্ক একটি সূত্র বা নীতির মাধ্যমে প্রকাশ করো। সূত্রটি ব্যবহার করে 120 তম চিত্রের কাঠির সংখ্যা নির্ণয় করো।

চলক বা Variable সম্পর্কে আরও জানি

 

এবার চলো একটি উদাহরণের মাধ্যমে চলক বুঝতে চেষ্টা করি। তোমাদের ক্লাসে প্রতিদিন উপস্থিতির সংখ্যাটা কেমন? নিশ্চয়ই সংখ্যাটি একটি ভবঘুরে সংখ্যা। অর্থাৎ সব দিন এক রকম থাকে না। ক্লাসের সবাই একসাথে যুক্তি করে না আসলে সংখ্যাটা 0 হতে পারে, পরীক্ষার দিন আসলে আবার দেখা যাবে ক্লাসের সবাই উপস্থিত। তোমাদের ক্লাসের শিক্ষার্থীর মোট সংখ্যাটি নির্দিষ্ট হলেও দৈনিক উপস্থিতি দিনভেদে পরিবর্তিত হবে। এই “উপস্থিতি” রাশিটাকে তাই আমরা চলক নাম দিতে পারি এবং মজা করে বলতে পারি “থেমে না থেকে চলতে থাকে বলে চলক, vary করে বলেই variable। 

ধ্রুবক (Constant)

আলো চিনলে যেমন অন্ধকারকেও চিনতে হয় ঠিক তেমনিভাবে চলককে চিনলে ধ্রুবক (Constant) সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। চলকের মতো ধ্রুবকও হলো পরিমাপযোগ্য রাশি। যার মান পরিবর্তনশীল নয়। আমরা যেসকল সংখ্যা নিয়ে কাজ করি : 1, 2, 3, 4,……100,…..…500,………1000000,......... এরা সবাই একেকটা ধ্রুবক। কারণ এদের মানের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। তোমার মন খারাপ করা বন্ধু সকালবেলা তোমাকে এসে “এক শালিক দেখেছি” বললে তুমি ঠিক 1টা শালিকই কল্পনা করে নেবে, 5টা কিংবা 10টা নয়।

এই সংখ্যাগুলো এককবিহীন, একক আছে এমন ধ্রুবক খুঁজে পাওয়াও খুব কঠিন কিছু নয়। এই যেমন ধরো 0° সেলসিয়াসে বাতাসে শব্দের বেগ 332 m/s বললে তুমি এই নির্দিষ্ট গতিতেই শব্দকে চলতে কল্পনা করবে।

প্ৰক্ৰিয়া চিহ্ন:

পূর্বে আমরা পাটিগণিতে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, বৃহত্তর ও ক্ষুদ্রতর সম্পর্কে জেনেছি। এগুলো যেসব চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়ে থাকে, তাদেরকে আমরা প্রক্রিয়া চিহ্ন বলে থাকি। নিচের ছকটি লক্ষ করো :

পাটিগণিত +-×÷<>
প্রক্রিয়া চিহ্নযোগবিয়োগগুনভাগবৃহত্তর ক্ষুদ্রত্তর
বীজগণিত +-×÷<>
প্রক্রিয়া চিহ্নplusminusinto বা  dotdivisiongrater thanless than

প্রক্রিয়া চিহ্নের প্রয়োগ

এমন একটি উপকরণের নাম বলতে পারবে যেখানে + এবং চিহ্ন দুইটি ব্যবহার করা হয়।

ছবির বস্তু দুইটির নাম নিশ্চয়ই বলতে পারবে।

ভেবে দেখো তো এটি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয়? আর কোনো বস্তুর নাম বলতে পারবে যেখানে আমাদের প্রক্রিয়া চিহ্ন ব্যবহার করা হয়?

এবার চলো বিভিন্ন প্রক্রিয়া চিহ্ন ব্যবহার করে x ও y চলক দুইটির মধ্যে নানারকম সম্পর্ক নিচের ছকে তৈরি করি:

ক্রমিক নম্বর

X ও Y এর মধ্যকার সম্পর্ক

x ও y এর মধ্যকার সম্পর্ক (প্রক্রিয়া চিহ্নের মাধ্যমে)

(কথার মাধ্যমে)

x ও y এর মধ্যকার সম্পর্ক (প্রক্রিয়া চিহ্নের মাধ্যমে)
1x প্লাস yx+y
2x মাইনাস yx-y
3x ইন্টু yx×y বা x.y বা xy
4x ডিভিশন yx÷y
5x ইন্টু 5X × 5 বা X.5 বা 5x; কিন্তু x5 লেখা হয় না। কারণ ইন্টু বা গুণের ক্ষেত্রে প্রথমে সংখ্যা প্রতীক ও পরে অক্ষর প্রতীক লেখা হয়। যেমন: 3x, 10y, 9z ইত্যাদি।
6x, y এর চেয়ে বৃহত্তর বা বড়x>y
7x, y এর চেয়ে ক্ষুদ্রতর বা ছোটx

বীজগণিতীয় রাশি, পদ ও সহগ

পাটিগণিত বা সংখ্যার গল্পে তোমরা দুই বা ততোধিক অঙ্ক বা সংখ্যার সমন্বয়ে অসংখ্য গাণিতিক সম্পর্ক তৈরি করেছ। যেমন: ৩ + (৪ × ৫) – ৬, ১০০ – ২৫ + ৮ ÷ ৭ ইত্যাদি। এই সম্পর্কগুলো ৩, ৪, ৫, ৬, ১০০, ২৫, ৮, ৭ ইত্যাদি অঙ্ক বা সংখ্যা দিয়ে তৈরি হয়েছে। লক্ষ করে দেখো অঙ্ক বা সংখ্যাগুলোর মাঝে +, -, ×, ÷ ইত্যাদি প্রক্রিয়া চিহ্ন ব্যবহার করে গাণিতিক সম্পর্ক তৈরি করা হয়েছে।

একইভাবে বীজগণিতে প্রক্রিয়া চিহ্ন, সংখ্যাসূচক প্রতীক বা চলক, ধ্রুবক ইত্যাদি ব্যবহার করে এক ধরনের রাশি তৈরি করা হয়, যা বীজগাণিতিক রাশি (Algebraic expression) হিসেবে আমরা জানি। একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে " বীজগাণিতিক রাশিতে অবশ্যই এক বা একাধিক চলক থাকতে হবে”।

যেমন: 2x + 5, 3x + 2y, 5x - 7y + z, 8x ÷ 12y - 16y × 6z ইত্যাদি।

🚻 জোড়ায় কাজ : একাধিক চলক ব্যবহার করে কমপক্ষে 10টি টি বীজগাণিতিক রাশি তৈরি করে খাতায় লেখো। তারপর পরস্পর খাতা বিনিময় করে একে অপরের ভুল-ত্রুটি চিহ্নিত করো।
👤 একক কাজ : নিচের ছকে প্রদত্ত সমস্যাগুলোর মধ্যে কোনটি বীজগাণিতিক রাশি এবং কোনটি পাটিগণিতীয় সম্পর্ক যৌক্তিক ব্যাখ্যাসহ লিখো।
ক্রমিক নম্বরসমস্যাবীজগাণিতিক রাশি অথবা পাটিগণিতীয় সম্পর্কযৌক্তিক ব্যাখ্যা
1তোমার বয়স তুমি জানো। তোমার মায়ের বয়স তোমার বয়সের চার গুণ থেকে 2 বছর বেশি।  
2এক কেজি চালের মূল্যে এক কেজি ডালের মূল্য অপেক্ষা 30 টাকা কম।  
3শীলার বাবার বর্তমান বয়স শীলার বয়সের চার গুণ। শীলার দাদার বয়স শীলা ও তার বাবার বয়সের সমষ্টি অপেক্ষা পনের বছর বেশি। শীলার দাদার বয়স কত?  
4

প্রতিটি বাক্সে 50টি করে আপেল থাকলে মোট আপেল সংখ্যা।

  
5কোনো এক মহাসড়কে বাসের প্রতি ঘণ্টায় বেগ ট্রাকের বেগের চেয়ে 12 কিলোমিটার বেশি।  
6একটি সংখ্যার চার গুণ থেকে অপর একটি সংখ্যার তিন গুণ বিয়োগ।  
7নাফিসা পরিমাণমতো পানি, গুড় ও লবণ ব্যবহার করে খাবার স্যালাইন তৈরি করল।  
8দশটি খাতা, পাঁচটি কলম ও তিনটি পেন্সিলের মোট দাম  
9আমেনার কাছে কিছু চকলেট আছে। লিয়ানার কাছে আমেনার   চেয়ে 5 টি বেশি আছে। লিটনের কাছে আছে 7টি চকলেট। তিন জনের কাছে মোট কতগুলো চকলেট আছে?  

ছক-৪

ক্রমিক নম্বরসাধারণ বর্ণনাচলক

বীজগাণিতীক রাশির

মাধ্যমে প্রকাশ

1মিতার চেয়ে ঐশির 5টি চকলেট বেশি আছে।মনে করো মিতার x টি চকলেট আছে। 
2বিনয় মানিকের চেয়ে 11 বছরের ছোট।মনে করো মানিকের বয়স X বছর। 
3রিফার কাছে কাজলের টাকার দ্বিগুণ অপেক্ষা 15 টাকা বেশি আছে।মনে করো কাজলের y টাকা আছে। 
44 বছর পর বিকাশের বয়স কত হবে?মনে করো বিকাশের বর্তমান বয়স X বছর। 
57 বছর পূর্বে লামিয়ার বয়স কত ছিল?মনে করো লামিয়ার বর্তমান বয়স y বছর। 
6শিহাবের গণিতের প্রাপ্ত নম্বর মতিনের প্রাপ্ত নম্বরের অর্ধেক থেকে 3 বেশি।মনে করো মতিনের প্রাপ্ত নম্বর x। 
7একটি আয়তাকৃতি বাগানের দৈর্ঘ্য প্রস্থের দ্বিগুণ হলে পরিসীমা কত?মনে করো বাগানটির প্রস্থ y মিটার। 
8তোমরা প্রতি বেঞ্চে 4 জন করে বসলে 3টি বেঞ্চ খালি থাকে। তোমাদের শ্রেণির বেঞ্চের সংখ্যা কত?মনে করো শ্রেণিতে তোমাদের সংখ্যা x। 
9প্রতি বেঞ্চে 3 জন করে বসলে 6 জন শিক্ষার্থীকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে তোমাদের শ্রেণির বেঞ্চের সংখ্যা কত হবে?  
10

রহিম সাহেব তার সঞ্চিত টাকা থেকে

তার বন্ধুকে 500 টাকা দিলেন।

  
11ব্যাংকে ডেবিড সাহেবের কিছু টাকা ছিল। তিনি ব্যাংকে আরও 1000 টাকা জমা রাখলেন।  

ছক-৫

👤 একক কাজ : (i) 2x + 4y – 52   (ii) 7a - 5bc + 8d ÷ m 

কোনো বীজগাণিতিক রাশির একাধিক পদ থাকলে তা আমরা নিচের চিত্রের (ট্রি) মতো করে আলাদা করতে পারি।

🚻 জোড়ায় কাজ : তিন পদ বিশিষ্ট কমপক্ষে ৩টি এবং চার পদ বিশিষ্ট কমপক্ষে ২টি বীজগাণিতীক রাশি লিখে পদগুলোকে ট্রি এর মাধ্যমে আলাদা করো।
👤 একক কাজ

নিচের ছকটি পূরণ করো :

ক্রমিক নম্বরসাধারণ বর্ণনা+, -, X, + চিহ্নের মাধ্যমে লেখোপদ সংখ্যাপদগুলো হলো
1x এর পাঁচ গুণ থেকে y এর তিন গুণ বিয়োগ   
2

a ও b এর গুণফলের সাথে C এর

চার গুণ যোগ

   
3x কে 12 দ্বারা গুণ করে গুণফল থেকে 3 বিয়োগ   
43 কে x দ্বারা, 7 কে y দ্বারা এবং 9 কে z দ্বারা ভাগ করে প্রাপ্ত ভাগফলগুলোর যোগ   
5p ও q এর যোগফলকে দ্বারা ভাগ   

পদের উৎপাদক বা গুণনীয়ক (Factors of a term )

আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি 5x – 2yz রাশিতে 5x ও – 2yz পদ দুইটি রয়েছে। এখানে 5x পদটির - উৎপাদক বা গুণনীয়ক হলো 5, x এবং – 2yz পদটি হলো - 2, y, z এর গুণফল। আমরা খুব সহজেই কোনো বীজগাণিতিক রাশির পদগুলোকে ট্রি এর মাধ্যমে নিচের মতো করে প্রকাশ করতে পারি:

সহগ (Coefficient)

আমরা জানতে পারলাম পদগুলো কীভাবে দুই বা ততোধিক উৎপাদকের গুলফলের মাধ্যমে লেখা যায়। আমরা আরও বুঝতে পারলাম পদের উৎপাদকগুলোর মধ্যে কোনোটি সংখ্যা আবার কোনোটি বীজগণিতীয় রাশি বা প্রতীক। কোনো পদের চলকের সাথে যখন সংখ্যা গুণক হিসেবে যুক্ত থাকে, তখন ঐ গুণককে সাংখ্যিক সহগ বা সহগ বলব।

যেমন : 4x, 6xy – 15xyz এর সাংখ্যিক সহগ যথাক্রমে 4, 6, 15

👤 একক কাজ : একটি তিন পদ ও একটি চার পদ বিশিষ্ট বীজগণিতীয় রাশি লিখে প্রতিটি পদের উৎপাদকগুলো ট্রি এর মাধ্যমে দেখাও।

বীজগণিতীয় রাশির কোনো পদের সাথে যখন কোনো সংখ্যা গুণক হিসেবে যুক্ত থাকে না, তখন ঐ রাশি বা পদের সহগ 1 ধরা হয়। কারণ 1x কে লেখা হয় শুধুমাত্র x, – 1xy কে লেখা হয় শুধুমাত্র - xy ইত্যাদি। সুতরাং x, এবং xy এর সহগ যথাক্রমে 1 এবং – 1 আর যখন কোনো চলকের সাথে কোনো অক্ষর প্রতীক গুণক হিসেবে যুক্ত থাকে, তখন ঐ গুণককে রাশি বা পদের আক্ষরিক সহগ বলে থাকি। 

মনে করো 10abc একটি একপদী রাশি। এখানে 10 হলো abc এর সাংখ্যিক সহগ, a হলো 10bc এর, b হলো 10ac এর এবং c হলো 10ab এর আক্ষরিক সহগ।

তাহলে একটি বীজগাণিতিক রাশিকে কাটাকুটি করলে কী কী পাওয়া যায়, তা একনজরে দেখে নিই

👤 একক কাজ : নিচের ছকটি পূরণ করো:

সদৃশ ও বিসদৃশ পদ (LIKE AND UNLIKE TERMS )

সামিরা ও অনন্যা দোকানে গেল। দোকান থেকে সামিরা পাঁচটি কলম ও তিনটি খাতা এবং অনন্যা চারটি কলম ও দুইটি পেন্সিল ক্রয় করে।

তোমরা নিশ্চয়ই বলতে পারবে দু'জনের কেনা জিনিসগুলোর মধ্যে কোন জিনিসটি একই বা মিল রয়েছে? যে একই রকম জিনিস (কলম) দু'জনেই ক্রয় করেছে, ঐটিই হলো সদৃশ জিনিস। তারা দু'জনে আরও দুইটি ভিন্ন জিনিস (খাতা ও পেন্সিল) কিনেছে। তাহলে ঐ ভিন্ন জিনিস দু'টি হলো বিসদৃশ জিনিস।

তাহলে সদৃশ ও বিসদৃশ সম্পর্কে তোমাদের কিছুটা ধারণা হয়তো হয়েছে।

এবার চলো বীজগাণিতিক রাশির মধ্যে সদৃশ ও বিসদৃশ পদ খোঁজার চেষ্টা করি।

নিচের বীজগাণিতিক রাশিগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করো:

(i) 2x + 3x (ii) 5aby - 7yba (iii) - xyz + 11yxz

(i) নং এ 2x এর উৎপাদক 2, x এবং 3, x হলো 3x এর উৎপাদক। দেখা যাচ্ছে, উভয়ের বীজগণিতীয় উৎপাদক একই। অর্থাৎ পদ দুইটির একমাত্র পার্থক্য রয়েছে সাংখ্যিক সহগে। এই ধরনের পদগুলোকে সদৃশ পদ বলা হয়।

একইভাবে (ii) এবং (iii) নং রাশির পদগুলো সদৃশ পদ হবে কিনা ভেবে দেখো তো? অপর দিকে(iv) 3xy – 2y (v) 13p + 13q (vi) 2ab + 5a - 19c রাশিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, (iv) নং এর 3xy এবং – 2y পদ দুইটির বীজগণিতীয় উৎপাদক ভিন্ন। তাই এ ধরনের পদগুলোকে বিসদৃশ পদ বলে থাকি। একাধিক পদের বীজগণিতীয় উৎপাদক ভিন্ন হলে এবং তাদের সাংখ্যিক সহগ সমান হলেও পদগুলো বিসদৃশ পদ হবে। যেমন: (v) 13p + 13q এর 13p এবং 13q পদদ্বয় বিসদৃশ পদ।

🚻 জোড়ায় কাজ : উভয়েই আলাদা আলাদাভাবে কমপক্ষে 5 টি করে সদৃশ ও 5 টি করে বিসদৃশ পদ লেখো। তারপর খাতা বিনিময় করে ভুল-ত্রুটি চিহ্নিত করো। উভয়ে আলোচনা করে ভুল হলে সংশোধন করো।
👤 একক কাজ : নিচের ছকে প্রদত্ত পদ দুইটি সদৃশ পদ অথবা বিসদৃশ পদ কারণসহ ব্যাখ্যা করো

বীজগণিতীয় রাশির যোগ (Addition of Algebraic Expressions)

আমরা জেনেছি, দোকান থেকে সামিরা পাঁচটি কলম ও তিনটি খাতা এবং অনন্যা চারটি কলম ও দুইটি পেন্সিল ক্রয় করেছে। যদি প্রশ্ন করা হয়, তারা দু'জনে মোট কয়টি জিনিস ক্রয় করেছে? তোমরা সবাই হয়তো বলবে- নয়টি কলম, তিনটি খাতা ও দুইটি পেন্সিল ক্রয় করেছে। একবার ভেবে দেখো তো – তোমরা কিন্তু দু'জনের কেনা কলমগুলোই শুধু যোগ করে নয়টি বলেছ, বাকি দুইটি জিনিস আলাদা আলাদা বলেছ। অর্থাৎ একই রকম বা সদৃশ জিনিসগুলোর সংখ্যা যোগ করা যায় আর বিসদৃশ জিনিসগুলো আলাদাভাবে যোগ হয়।

এবার চলো দুই বা ততোধিক বীজগণিতিয় রাশি কীভাবে যোগ করতে হয় তা জেনে নিই। আর এর জন্য প্রয়োজন হবে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা যোগ করতে পারা। আমরা অবশ্য পূর্বের অধ্যায়ে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা যোগ করা শিখেছি।

যেমন: 5 + 3 = 8. 5+(-3)=2, - 5 + 3 = 2, -5 + (-3) = -8 ইত্যাদি। আবার বীজগণিতীয় রাশির সহগ, সদৃশ পদ ও বিসদৃশ পদ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এখন দুই বা ততোধিক বীজগণিতীয় রাশি যোগ করতে হলে প্রথমে সদৃশ পদের সহগগুলো চিহ্নযুক্ত সংখ্যার

নিয়মে যোগ করতে হয়। এরপর প্রাপ্ত সংখ্যা বা সহগের ডান পাশে প্রতীকগুলো বসাতে হয়। প্রশ্ন হলো বিসদৃশ পদ বা পদগুলোর কী হবে?

বিসদৃশ পদ বা পদগুলো তাদের চিহ্নসহ যোগফলে বসাতে হবে। তাহলেই দুই বা ততোধিক বীজগণিতীয় রাশি যোগফল পেয়ে যাব।

চলো উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা আরও একটু বোঝার চেষ্টা করি :

▪️মনে করো 7x এবং 9x দুইটি পদ। বুঝতেই পারছ পদ দুইটি সদৃশ পদ। সুতরাং পদ দুইটির যোগফল = 7x + 9x

= (7 + 9) x

= 16x

▪️আরও একটি উদাহরণ দেয়া যাক। মনে করো 2xy – 3xy, 6xy এবং 11z চারটি পদ। এখানে সবগুলো পদই কি সদৃশ পদ? ভেবে দেখো তো? তাহলে পদগুলোর যোগফল হবে 

= 2xy - 3xy + 6xy + 11z

= ( 8 - 3 ) xy + 11z

= ( 2 - 3 + 6 ) xy + 11z

= 5xy + 11z

এখন দুই বা ততোধিক বীজগণিতীয় রাশির যোগফল কীভাবে নির্ণয় করা হয়, সেটা নিয়ে আলোচনা করব। 

মনে করো 20ab + 15b + 12a এবং 4ab - 11b - 14a দুইটি বীজগণিতীয় রাশি। রাশি দুইটির যোগফল নির্ণয় করতে হবে।

প্রথম পদ্ধতি :

নির্ণেয় যোগফল 

= (20ab + 15b + 12a) + (4ab - 116 - 14a ) 

= (20ab + 4ab) + (15b - 11b) + (12a - 14a)

= (20+ 4)ab + (15 - 11)b + (12 - 14)a

= 24ab + 4b + (- 2 )a

= 24ab + 4b - 2a

দ্বিতীয় পদ্ধতি :

সদৃশ পদগুলো তাদের স্ব-স্ব চিহ্নসহ নিচে নিচে সাজিয়ে লিখে পাই,

20ab + 15b + 12a

+ 4ab - 11b - 14a

 -----------------

    24ab + 4b - 2a

নির্ণেয় যোগফল : 24ab + 4b - 2a

🚻 জোড়ায় কাজ: প্রত্যেকেই যোগ-বিয়োগ চিহ্ন সংবলিত তিন বা চার পদবিশিষ্ট কমপক্ষে তিনটি সদৃশ ও বিসদৃশ পদযুক্ত বীজগণিতিয় রাশি তৈরি করো। তারপর রাশিগুলোর যোগফল নির্ণয় করে খাতা বিনিময় করো। একে অপরের ভুল (যদি থাকে) চিহ্নিত করো এবং আলোচনার মাধ্যমে সংশোধন করো। প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তা নিতে পারবে।

বীজগণিতীয় রাশির বিয়োগ (Subtraction of Algebraic Expressions)

আমরা পূর্বের অধ্যায়ে যোগাত্মক বিপরীত সংখ্যা (Additive Inverse) সম্পর্কে জেনেছি। চলো আবার একটু মনে করে নিই।

দুইটি সংখ্যার যোগফল শূন্য (0) হলে, তাদের একটিকে অপরটির যোগাত্মক বিপরীত সংখ্যা বলব। যেমন: 3 + (- 3) = 0, 7 + (- 7) = 0

এখানে 3 এর যোগাত্মক বিপরীত সংখ্যা হলো –3। একইভাবে 7 এর যোগাত্মক বিপরীত সংখ্যা হলো - 7 চলো সংখ্যারেখার মাধ্যমে দেখি:

বলো তো 0 এর যোগাত্মক বিপরীত সংখ্যা কত ?

অজানা রাশির জগৎ

xএকটি রাশি এবং যেহেতু x + (- x) = 0 সুতরাং x এর যোগাত্মক বিপরীত রাশি - x একইভাবে a – b এর যোগাত্মক বিপরীত রাশি হবে (a + b)।

 কারণ, a - b + (a + b) = a - b - a + b = (a - a) + (b – b) = 0 + 0 = 0 

এবার একটি বীজগণিতীয় রাশি থেকে অপর একটি বীজগণিতীয় রাশি কীভাবে বিয়োগ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করবো।

একটি বীজগণিতীয় রাশি থেকে অপর একটি বীজগণিতীয় রাশি বিয়োগ করা মানে, প্রথম রাশির সাথে দ্বিতীয় রাশির যোগাত্মক বিপরীত রাশি যোগ করা। অর্থাৎ দ্বিতীয় রাশির প্রতিটি পদের চিহ্ন পরিবর্তন করে যোগ করা। চলো উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি:

মনে করো, 5x + 4y - 5z থেকে 3x – 4y - 6z বিয়োগ করতে হবে। 

প্রথম পদ্ধতি:

 3x – 4y - 6z এর যোগাত্মক বিপরীত রাশিটি হলো – 3x + 4y + 6z 

সুতরাং প্রথম রাশির সাথে দ্বিতীয় রাশির যোগাত্মক বিপরীত রাশির সদৃশ পদগুলো নিচে নিচে লিখে যোগ করে পাই,