অজানা রাশির সূচক, গুণ ও তাদের প্রয়োগ

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গণিত - | NCTB BOOK
19
19

অজানা রাশির সূচক, গুণ ও তাদের প্রয়োগ

সূচক (EXPONENT)
বর্গ চিনি

চলো আমরা একটি বর্গাকার কাগজ নিই। [বর্গ একটি আয়ত, যার বাহুগুলো পরস্পর সমান]। চিত্রের মত করে কাগজটিকে পরপর দুইবার (একবার দৈর্ঘ্য বরাবর ও একবার প্রস্থ বরাবর) সমান অংশে ভাঁজ করি। এবার কাগজটি খোলার পর যে কয়টা ছোট ঘর হলো প্রতি ঘরে একটি করে মার্বেল রাখি। মোট কয়টি মার্বেল প্রয়োজন হলো?

একইভাবে আরেকটি বর্গাকার কাগজকে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর সমান তিনটি অংশে পরপর ভাঁজ করি। তোমাদের সুবিধার জন্য ভাঁজ বরাবর কাগজে স্কেলের দাগ দিয়ে ঘর করে নিতে পারো। এবার প্রতি ছোট ঘরে একটি মার্বেল বসালে কয়টি মার্বেল লাগবে?

  • একই ভাবে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর সমান চারটি, পাঁচটি, ছয়টি ও সাতটি করে ভাঁজের জন্য কয়টি মার্বেল লাগে তা দিয়ে নিচের ছকটি পূরণ করো।

এখানে কী দেখতে পেলে? দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর যতগুলি সমান অংশে ভাঁজ করা হচ্ছে ছোট ঘর সংখ্যা ততগুণ হচ্ছে। যেমন: 2 × 2=22=4। তাহলে কোনো ভাঁজ না দিলে কয়টি মার্বেল লাগবে এবং কেনো লাগবে তা চিন্তা করো।
একক কাজ: এখন কাগজটিকে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর ৮ ভাঁজ করে দাগ টেনে দেখো ঘর সংখ্যা কত হয়?

এখানে বর্গাকার কাগজে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর সমান ভাঁজ করে যতগুলো ঘর পাওয়া যাচ্ছে বা যতগুলো মার্বেল প্রয়োজন হচ্ছে সেই সংখ্যাগুলোকে বর্গ সংখ্যা বা পূর্ণবর্গ সংখ্যা বলা হয়।

যেমন: সমান তিনটি অংশে ভাঁজ করার পর প্রতিটি সারিতে ১টি করে 3টি সারিতে মার্বেল সাজানো হবে এবং মোট মার্বেলের সংখ্যা 3×3=32=9। এখানে, প্রত্যেক সারিতে মার্বেলের সংখ্যা এবং সারির সংখ্যা সমান। এক্ষেত্রে আমরা 3 এর বর্গ 9 বলি অর্থাৎ 3 একটি বর্গ সংখ্যা বা পূর্ণবর্গ সংখ্যা।

এভাবে 1, 4, 9, 25, 49 সংখ্যাগুলোর দিকে তাঁকালে দেখো এগুলোকে অন্য কোনো পূর্ণসংখ্যার বর্গ হিসেবে প্রকাশ করা যায়।

1, 4, 9, 25, 49 সংখ্যাগুলো পূর্ণবর্গ সংখ্যা।

অন্যদিকে 2, 5, 7, 12 ইত্যাদি সংখ্যাগুলিকে এভাবে একই সংখ্যার গুণফল হিসেবে প্রকাশ করা যায় না। তাই এগুলো পূর্ণবর্গ সংখ্যা নয়। এবার, একটি বর্গাকার কাগজকে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর সমান অংশে ভাঁজ করে মার্বেল বসানোর খেলার মাধ্যমে কোনটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা এবং কোনটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা নয় যাচাই করো।

দলগত কাজ: আমরা বর্গসংখ্যা কোনগুলো চিনলাম। এবার তোমাদের ক্লাস রোলের শেষ অঙ্ক অনুযায়ী দাঁড়িয়ে ১০ টি সারি করো। এখন তোমরা নিজেদের মধ্যে সারির পরিবর্তন করে বর্গসংখ্যার সমান করে একেকটি সারি বানাও।

এখন মনে করো, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর কতগুলো সমান অংশে ভাঁজ করা হয়েছে সেটা জানা নিই। তাহলে তো ভাঁজ করে বা মার্বেল বসিয়ে আমরা খেলাটা শেষ করতে পারবো না। কী করা যায়? চলো আমরা শুধু বর্গাকার কাগজের ছবি এঁকে কাগজের ক্ষেত্রফলের ধারণাটা ব্যবহার করি।

নিচের বর্গক্ষেত্রগুলি লক্ষ করি। সর্বশেষ ক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল কত হবে আমরা কি বলতে পারি? যেখানে x একটি অজানা রাশি যা বর্গক্ষেত্রের এক বাহুর দৈর্ঘ্য প্রকাশ করে।

আমরা জানি, আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য ×প্রস্থ।

আর, বর্গও কিন্তু একটি আয়ত, যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ পরস্পর সমান।

তাহলে ছবির শেষ বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য প্রস্থ = x.x = x2 বর্গ একক

আমরা দেখেছি, 3 × 3=33= 27 কে যেমন 3 এর বর্গ বলা হয়।

একইভাবে, X.X=X2কে X এর বর্গ (X squared) বলা হয়।

ঘন

রুবিক্স কিউবের সাথে তোমরা অনেকে পরিচিত। পাশের ছবিতে একটি 3 × 3 × 3 রুবিক্স কিউব দেখা যাচ্ছে। 3 × 3 × 3 এর মানে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বরাবর তিনটি করে ছোট ঘনক আছে। আর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা সমান হলে তাকে ঘনক বলা হয়। তাহলে, রুবিক্স কিউব নামের অর্থ কী বুঝতে পারলে? এখন, একটি রুবিক্স কিউব হাতে নিলে দেখতে পাবে এটি ছোট ছোট অনেকগুলো ঘনক দিয়ে তৈরি। তাহলে, ছবির রুবিক্স কিউবে কয়টি ছোট ঘনক আছে বলতে পারবে?

এবার আমরা একটি 2 × 2 × 2 কিউব তৈরি করবো। একই আকারের কয়েকটি ছোট ছোট ঘনক নাও। (এক্ষেত্রে কাঠের তৈরি ঘনক নিতে পারো অথবা কাগজ দিয়েও নিজেরাই তৈরি করে নিতে পারো।) চিত্রের মত করে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বরাবর দুইটি করে ঘনক বসিয়ে একটি বড় ঘনক বানালে কয়টি ছোট ঘনক প্রয়োজন হয় লক্ষ্য করো।

একক কাজ: এখন তিনটি ও চারটি করে ছোট ঘনক নিয়ে বড় ঘনক বানাও এবং কয়টি ছোট ঘনক লাগে দেখো

একটু লক্ষ করলে দেখবে প্রথমে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর দুইটি করে ছোট ঘনক নিয়ে 2 × 2 = 22 = 4 টি ঘনক নিয়েছ। আর এই 4টি ঘনকের উপরের তলগুলি একটা ২ এর বর্গ তৈরী করেছে। এরপর আবার উচ্চতা বরাবর দুইটি করে ঘনক নেওয়ার জন্য মোট 4 × 2 = 2 × 2 × 2 = 23 = 8 টি ঘনক প্রয়োজন হয়েছে ।

 আমরা দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বরাবর সমান সংখ্যক ছোট ঘনক নিয়ে একটি বড় ঘনক তৈরি করলাম। এখানে, মোট যতগুলো ছোট ঘনক প্রয়োজন হচ্ছে সেই সংখ্যাকে ঘন সংখ্যা বা পূর্ণঘন সংখ্যা বলা হয়। 

যেমন: দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বরাবর 2 টি করে ছোট ঘনক নিয়ে একটি বড় ঘনক তৈরি করতে মোট 2 × 2 × 2 = 23 = ৪ টি ছোট ঘনক প্রয়োজন হচ্ছে। এক্ষেত্রে, ৪ কে আমরা ২ এর ঘন বা 23 বলি এবং সেকারণেই ৪ একটি ঘন সংখ্যা বা পূর্ণঘন সংখ্যা।

তাহলে আমরা দেখলাম কোনো সংখ্যার ঘন নির্ণয়ের জন্য ঐ সংখ্যাকে তিনবার গুণ করতে হবে।

যেমন- 3 এর ঘন 3 × 3 × 3 = 33 = 27

এবার ছবির প্রতিটি রুবিক্স কিউব তৈরি করতে মোট কতগুলো ছোট ঘনক প্রয়োজন হয়েছে তা নির্ণয় করে ছক ৫.১ পুরণ করো।

বর্গ সংখ্যা চেনার সময় আমরা অজানা রাশির ব্যবহারের ক্ষেত্রে ক্ষেত্রফলের সাথে তুলনা করেছিলাম। এবার চিন্তা করে দেখতো ঘন সংখ্যার ক্ষেত্রে যদি দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বরাবর কতগুলো ছোট ঘনক আছে সেটা না জানা থাকে তাহলে কী করতে পারি?

আমরা জানি, কোন ঘনকের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা প্রত্যেকেই 1 একক হলে তাকে একক ঘনক বলা হয়। একক ঘনকের আয়তনকে আমরা 1 ঘন একক বলি। তাহলে আয়তনের সাথে খুব সহজেই আমরা ঘন সংখ্যার তুলনা করতে পারি ।

আয়তাকার ঘনবস্তুর আয়তন =  দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × উচ্চতা 

আর, ঘনকও কিন্তু একটি আয়তাকার ঘনবস্তু যার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা পরস্পর সমান।

তাহলে ছবির ঘনকের আয়তন দৈর্ঘ্য প্রস্থ উচ্চতা= x. x.x = x3 ঘন একক

আমরা দেখেছি, 3 × 3 = 32 যেমন 3 এর বর্গ বলা হয়।

একইভাবে, X.X.X=X3 কে X এর ঘন (x cubed) বলা হয়।

কিন্তু আমরা এটাও জানি যে আয়তাকার ঘনবস্তুর আয়তন =X.X. X = X3

উপরের উদাহরণ থেকে আমরা পেলাম যে, x3 গঠন করতে X কে X বার গুণ করতে হয়েছে। সুতরাং আমরা লিখতে পারি 

কোনো রাশিতে একই উৎপাদক যতবার গুণ আকারে থাকে তাকে ঐ উৎপাদকের সূচক বলে। আর ঐ উৎপাদকটিকে ভিত্তি বলে

নিচের ছবি থেকে সংখ্যার সূচকের সাথে অজানা রাশির সূচকের কি কোন মিল খুঁজে পাচ্ছ?

একক কাজ: নিচের টেবিলটি পূরণ করো

যখন আমরা একটি সূচকীয় রাশি দ্বারা অন্য সূচকীয় রাশিকে গুণ করি তখন কি ঘটে তোমরা লক্ষ করেছ কি? চলো আমরা দেখি কি ঘটে যখন x6 subset x3 দ্বারা গুণ করি।

সুতরাং আমরা লিখতে পারি, x6. x 3 = x(6 + 3) = x9

এবার নিচের খালিঘরগুলি পূরণ করো: 

তাহলে দেখা যাচ্ছে, একই ভিত্তির একাধিক সূচকীয় রাশিকে গুণ করলে এদের ভিত্তি অপরিবর্তিত থাকবে কিন্তু ঘাতগুলো যোগ হবে। সূচকের গুণের এই নিয়ম (Multiplication Rule of Exponent) টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সূচকের গুণের নিয়ম (Multiplication Rule of Exponent):

x.mxn = (x. x ... ... x). (x. x ... ...x) = xm+n

(x কে m সংখ্যক বার গুণ) (x কে n সংখ্যক বার গুণ)

চলো এবার x7 কে x3 দ্বারা ভাগ করলে কী হয় দেখি। আমরা ইতিমধ্যেই শিখেছি লবের হলো x কে 7 বার গুণ করা। একইভাবে হরের x3 হলো x কে 3 বার গুণ করা। হরে-লবে কাটাকাটি করি।

যদি ভিত্তি ভিন্ন ভিন্ন হয়, তবে ভিত্তি ভিন্ন ধরে হরে-লবে কাটাকাটি করতে হবে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, একই ভিত্তির একাধিক সূচকীয় রাশিকে ভাগ করলে এদের ভিত্তি অপরিবর্তিত থাকবে কিন্তু লবের ঘাত থেকে হরের ঘাত বিয়োগ হবে। সূচকের ভাগের এই নিয়ম বা বিধি (Division Rule of Exponent) টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ 

একক কাজ:

সূচকের গুণ ও ভাগের নিয়ম ব্যবহার করে নিচের রাশিগুলোকে সরল করো। 

এখন,

তাহলে দেখা যাচ্ছে, যদি কোন সূচকীয় রাশির উপর সূচক আরোপ করা হয়, তখন সূচকগুলো পরস্পর গুণ হয়। (Xm)n=Xmn = যেখানে স্বাভাবিক সংখ্যা এবং X শুন্য নয়।

এবার, (x2y2)4 এই রাশিটি নিয়ে একটু ভেবে দেখি।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, সূচকীয় রাশির ভিত্তিগুলোর গুণফলের উপর যদি একই সূচক আরোপিত হয়, ফলাফল হবে পৃথক পৃথক সূচকীয় রাশির গুণফল।

এবার একটি ভগ্নাংশ এর উপর সূচক প্রয়োগ করি।

ধরি x3x24 তাহলে আমরা লিখতে পারি

তাহলে দেখা যাচ্ছে, যদি ভিত্তির ভাগফল একই সূচক দ্বারা চালিত হয়, তাহলে ফলাফলটি লব এবং হর উভয়ই প্রদত্ত সূচক দ্বারা চালিত হবে।

একক কাজ:

উপরের আলোচনার সাহায্য নিয়ে নিচের রাশিগুলোকে সরল করো।

সূচকের শূন্য বিধি (Zero Exponent):

ভাগের সূচকীয় বিধি থেকে আমরা জানি  xmxn=xm-n যদি n = m হয়, তখন কি হবে?

চলো  x4x4 এই উদাহরণটি দেখি। সে ক্ষেত্রে x4x4=x4-4=x0

কিন্তু আমরা জানি x4x4 = x.x.x.xx.x.x.x= 1 অর্থাৎ, x° = 1 

একক কাজ: এখন, যদি x = 0 হয় তাহলে কী হবে?

(সংকেতঃ 00 এর মান কী হতে পারে?) x° = 1,x ≠ 0 

ঋণাত্মক সূচক (Negative Exponent)

সূচকের ভাগের ক্ষেত্রে আমরা  দেখেছি, xmxn=xm-n । এখন, n যদি m এর চেয়ে বড় হয়, তখন কি হবে?

চলো x4x6 এই উদাহরণটি দেখি।

সে ক্ষেত্রে,

অর্থাৎ,  x4x6=x 4-6 = x-2 তাহলে, দেখা যাচ্ছে,  x-21x2

যদি কোন ভিত্তির উপর ঋণাত্মক সূচক আরোপিত হয়, তখন ভিত্তি বিপরীত ধনাত্নক সূচক হয়।

একক কাজ: উপরের আলোচনার সাহায্য নিয়ে নিচের রাশিগুলোকে সরল করো।

বীজগণিতীয় রাশির গুণ (Algebraic Multiplication)

নিচের উদাহরণ এর মাধ্যমে সংখ্যারেখায় কীভাবে গুণ কাজ করে তা দেখানো হল। এখানে ৪ টি সমস্যা দেয়া আছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সংখ্যারেখায় প্রকাশ করা হয়েছে।

এবার নিচের সমস্যাগুলো লক্ষ করো

১) (+2)×(+3)

সংখ্যারেখায় গুণফলের অবস্থান (+6)। এক্ষেত্রে গুণফলের গতিপথ সংখ্যারেখার ডানদিকে দেখানো হয়েছে

(+2)×(+3) = 2 + 2 + 2 = 6

২) এখানে প্রথম সংখ্যার (+) চিহ্নর জন্য সংখ্যাটিকে সংখ্যারেখার ডান দিকে যেতে হয়েছে। অতঃপর গুনফলের আগে (-) চিহ্ন থাকায় গুণফলের গতিপথের দিক পরিবর্তন হয়ে শূন্য (০) এর সাপেক্ষে সংখ্যারেখায় বাম দিকে অবস্থান করছে।

(+2) (-3) = (-3) + (-3) =-6

আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সংখ্যারেখায় গুনফলের অবস্থান (-6)।

(+2) × (-3) = (-3)+(-3) = -6

৩) (-2) × (+3) সংখ্যারেখায় গুনফলের অবস্থান (-6)। কিন্তু এখানে প্রথম সংখ্যার (-) চিহ্নর জন্য সংখ্যাটিকে সংখ্যারেখার বাম দিকে বসানো হয়েছে।

(-2) x (+3) = (-2) + (-2) + (-2) = -6

8)

সংখ্যারেখায় গুণফলের অবস্থান (+6)। এক্ষেত্রে প্রথমসংখ্যার গতিপথ সংখ্যারেখার বামদিকে গিয়েছে এবং পরবর্তীতে গুণফলের আগে (-) চিহ্ন থাকায় দিক পরিবর্তন করে শূন্য ( 0 ) এর সাপেক্ষে (+6) এ যেতে হয়েছে।

(- 2)(- 3) = - [(- 2) + (- 2) + (- 2)] = - (- 6) = 6

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা নিচের সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারিঃ

1. (+1).(+1)=+1

2. (+1).(-1)=-1

3. (-1).(+1)=-1

4. (-1).(-1)=+1

লক্ষ করি:

# একই চিহ্নযুক্ত দুইটি রাশির গুণফল (+) চিহ্নযুক্ত হবে।

# বিপরীত চিহ্নযুক্ত দুইটি রাশির গুণফল (-) চিহ্নযুক্ত হবে।

উপরোক্ত আলোচনায় তোমরা সংখ্যার গুণের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে শিখেছো। পাটিগণিতে কেবল ধনাত্নক চিহ্নযুক্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বীজগণিতে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক উভয় চিহ্নযুক্ত সংখ্যা এবং সংখ্যাসূচক প্রতীকও ব্যবহার করা হয়। এ অধ্যায়ে আমরা বীজগণিতীয় রাশির গুণ ও ভাগ প্রক্রিয়া এবং বীজগণিতীয় রাশির গুণ ও ভাগের সূচক সম্বন্ধে শিখব।

কর্মপত্র ১: বিদ্যালয়ে বাগান তৈরির পরিকল্পনা

একটি বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান স্কুল আঙ্গিনায় একটি বাগান করার সিদ্ধান্ত নিলেন। বাগানের কিছু অংশ সবজি চাষের জন্য এবং কিছু অংশ ফল গাছ লাগানোর জন্য নির্ধারণ করা হলো। বাগানটির ক্ষেত্রফল কত হবে চলো আমরা এর সম্ভাব্য একটি পরিকল্পনা করি।

পরিকল্পনার শুরুতেই প্রত্যেকেই খাতা কলম নিয়ে বাগাটির নিম্নরুপ সম্ভাব্য কাগজের মডেল তৈরি/অঙ্কন করো এবং সবজি ও ফল গাছ বাগানের অংশ দু'টিকে পৃথক রঙ করো। বাগানটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় করো। 

এ ক্ষেত্রে বাগানটির ক্ষেত্রফল =4(6+3) বর্গমিটার= (4×9) বর্গমিটার = 36 বর্গমিটার

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চায় সবজি বাগানটির দৈর্ঘ্য পরিবর্তন করতে। তাই বাগানটির দৈর্ঘ্য x দ্বারা পরিবর্তন করা হলো

এ ক্ষেত্রে বাগানটির ক্ষেত্রফলে পরিবর্তন লক্ষ করো।

এ ক্ষেত্রে বাগানটির ক্ষেত্রফল হবে = 4(x+3) বর্গমি. =(4x+12) বর্গমি.

এখন, প্রস্থ ঠিক রেখে গাছ বাগানের দৈর্ঘ্য y দ্বারা পরিবর্তন করা হলো। ফলে সম্পূর্ণ বাগানের ক্ষেত্রফলে কি পরিমাণ পরিবর্তন লক্ষ করলে?

এ ক্ষেত্রে বাগানটির ক্ষেত্রফল হবে = 4(x+y) বর্গমিটার। তাহলে এখানে বাগানের ক্ষেত্রফলকে বীজগণিতীয় রাশির মাধ্যমে প্রকাশ করা হল।

একক কাজ: কাগজ কেটে এই বাগানের মডেলটি তৈরি করো।

এ পর্যায়ে মনে কর, বাগানটিতে পানি ধরে রাখার জন্য একটি গর্ত রাখার ব্যবস্থা করার জন্য বাগানটি তিনটি অংশে বিভক্ত করা হলো এবং মডেলটি নিম্নরুপে পরিবর্তন করা হলো।

এ ক্ষেত্রে বাগানটির ক্ষেত্রফল হবে =4(x+y+z) বর্গমি. = (4x+ 4y+ 4z) বর্গমি.

তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি উপরে প্রতিটি ক্ষেত্রে, a(b + c) = ab + bc আকারে বীজগণিতীয় রাশির গুণের ফলাফল লেখা হয়ে থাকে, যাহা গুণের বন্টন বিধি নির্দেশ করে।

এবার স্কুল পরিকল্পনা করল বিদ্যালয় ভবনের করিডোর বাড়াতে হলে সবজি বাগানের দৈর্ঘ্য 3 মিটার কমাতে হবে। ফলে পরিকল্পনাটি তারা পুনরায় নিম্নরুপে পরিবর্তন করল।

এ ক্ষেত্রে বাগানটির ক্ষেত্রফল হবে = 4(x - 3) + 4y বর্গমি.

একক কাজ: এ পর্যায়ে তুমি আগের মডেলটিকে পরিবর্তন করে নতুন মডেল তৈরি করবে।

কর্মপত্র ২ – বিদ্যালয়ে পুকুর খনন পরিকল্পনা

এবার বিদ্যালয়ের আয় বাড়ানোর জন্য মৎস্য চাষের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধান বিদ্যালয়ের মাঠের পাশে একটি বর্গাকৃতি পুকুর খননের চিন্তা করল। শিক্ষার্থীরা পুকুর খননের জন্য কি পরিমাণ জমি লাগবে তা নির্ধারণ করার জন্য x দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট কাগজের বর্গাকৃতি একটি মডেল তৈরি করল:

এ ক্ষেত্রে পুকুরের সম্ভাব্য ক্ষেত্রফল =x2 বর্গমি.

 এবার শিক্ষার্থীরা পুকুরটিকে আয়তাকৃতি প্রদান করতে চাইল এবং পুকুরের দৈর্ঘ্যকে 3 মি. বাড়িয়ে নিম্নের 

চিত্রের মত মডেল তৈরি করল।

এ ক্ষেত্রে পুকুরটির ক্ষেত্রফল = (x + 3) x বর্গমি. = x(x + 3) বর্গমি.

এবার শিক্ষার্থীরা প্রস্থকেও 2মি. বাড়িয়ে দিলো এবং নিম্নের চিত্রের মত মডেল তৈরি করল।

এ ক্ষেত্রে পুকুরটির ক্ষেত্রফল

= (x + 3)(x + 2) = x2 + 3x + 2x + 6 = x2 + 5x + 6 বর্গমি.

একক কাজ: সাদা কাগজে রঙ করে উপরের মডেলটিকে তৈরি করো।

এবার পুকুরের ক্ষেত্রফল পরিবর্তনের বিকল্প হিসাবে প্রস্থকে 3 মি. কমিয়ে নিম্নের চিত্রের মত মডেল তৈরি করল।

এ ক্ষেত্রে পুকুরটির ক্ষেত্রফল = x (x - 3) বর্গমি = x2 - 3x বর্গমিটার

পূনরায় পুকুরের দৈর্ঘ্যকে 2 মি. কমিয়ে নিম্নের চিত্রের মত মডেল তৈরি করা হলো।

এ ক্ষেত্রে পুকুরটির ক্ষেত্রফল = (x-2)(x-3) বর্গমি. = x(x-3)-2(x - 3) বর্গমি.

এবার শিক্ষার্থীরা তৃতীয় একটি বিকল্প চিন্তা করল। তারা দৈর্ঘ্যকে 3 মি. বাড়িয়ে এবং প্রস্থকে 2 মি. কমিয়ে নিম্নরুপ মডেল তৈরি করল।

এ ক্ষেত্রে বাগানটির ক্ষেত্রফল = (x + 3)(x - 2) বর্গমি. = x2 + 3x - 2x - 6 বর্গ মি.

একক কাজ: কাগজ কেটে বীজগণিতীয় রাশির গুণের মডেল তৈরি করো।

নিচের উদাহরণ লক্ষ করো। এখানে দুইটি বীজগণিতীয় রাশিকে কাগজ কেটে গুণ করার পদ্ধতি দেখানো হয়েছে।

উদাহরণ ১: গুণফল নির্ণয় করো: (x + 4)(2x + 1)

গুণফল নির্ণয় করার জন্য তোমরা কাগজ কেটে নিম্নরুপ কাগজ কেটে টাইলস বানাও।

নিম্নের চিত্রের মত উৎপাদক গুলিকে টাইলস আকারে কাগজ কেটে বসাও।

এবার কলাম অংশের প্রত্যেক টাইলস দিয়ে সারির অংশের প্রত্যেক কাগজকে গুণ করে সারি-কলাম এর সমন্বয়ে তৈরি ক্ষেত্রে বসাও। ফলে নিচের চিত্রের মত একটি আয়তাকার ক্ষেত্রফল পাবে

টাইলসগুলো দিয়ে তৈরি আয়তাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল পেতে সব গুলো কাগজ পর্যায়ক্রমে যোগ করো। যেমন:

= 2x2 + 9x + 4 

একক কাজ: কাগজ কেটে গুণ করার মাধ্যমে নিচের উদাহরণটি নিজেরা করে দেখো।

কাগজ কেটে গুণ করো: 2x + y - 1 , 3x

উদাহরণ: (x + 2)(3x - 2) বাহু বিশিষ্ট আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করার জন্য তোমরা উৎপাদক দু'টিকে কাগজ দিয়ে নিম্নের মত সাজাও। এ ক্ষেত্রে ধনাত্নক ও ঋণাত্মক কেটে দেয়া যাবে। 

এ ক্ষেত্রে (x + 2)(3x - 2) = 3x2+ 6x - 2x - 4 

                                        = 3x2 + 4x - 4

একক কাজ: কাগজ কেটে গুণ করো (x + 3)(x + 4)

উদাহরণ: গুণফল নির্ণয় করো: (x + 3)(x - 7)

ফলে গুণফল পাওয়ার জন্য পদগুলোকে পর্যায়ক্রমে নিম্নরুপে বসাও।

(x+3)(x-4)=x2-7x+3x-21=x2-4x-21

একক কাজ: কাগজ কেটে গুণ করো (2x + 1)(x - 2)

কর্মপত্র ৩: (a + b) (a-b) এর ক্ষেত্রফল নির্ণয় (পেপার মডেল)

প্রথমে একটি সাদা কাগজ নাও। তারপর a বাহু বিশিষ্ট একটি বর্গ আঁক। একে চিত্রের মত রঙ করো। অত:পর এটির এক কোণায় b বাহু বিশিষ্ট আরেকটি বর্গ আঁক এবং লাল রঙ করো। এবার বড় বর্গ অর্থাৎ ৭ বর্গক্ষেত্র থেকে ছোট বর্গ অর্থাৎ ৮ বর্গক্ষেত্র কেটে বাদ দাও। ফলে চিত্রটি নিম্নরুপ আকৃতি ধারণ করবে।

উৎপন্ন আয়তক্ষেত্রটি ক্ষেত্রফল হবে= (a + b)(a - b)

পরিশেষে আমরা উপরের চিত্র থেকে পাই,

(a+b)(a-b)=a2-b2

একক কাজ: কাগজ কেটে গুণফল নির্ণয় করো: (a-b) (a-b)

এবার, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাগানে পানি দেওয়ার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে বাগানের পাশে আরো একটি পানির ট্যাঙ্ক স্থাপন করার ব্যবস্থা রাখল।

পানির ট্যাঙ্কের দৈর্ঘ্য (x + 2) মি. প্রস্থ x মি. ও উচ্চতা (2x + 1) মি. হলে, উহার আয়তন নির্ণয় করার জন্য শিক্ষার্থীরা নিম্নের চিত্রের ন্যায় কাগজ কেটে বক্স বানালো এবং নিম্নরুপে উহার আয়তন নির্ণয় করল।

পানির ট্যাঙ্কের দৈর্ঘ্য (x + 2) . এবং প্রস্থ x মি. এবং উচ্চতা (2x + 1) মি.

পানির ট্যাঙ্কের আয়তন

= (x + 2) মি. × প্রস্থ x মি. × উচ্চতা (2x + 1) মি.

=(x+2).x. (2x + 1) = x(x + 2)(2x + 1)

=(x2+2x)(2x+1)=2x3+x2+2x2+2x=2x3+3x2+2x ঘনমি

একক কাজ:

৭. নিচের চিত্রটির লাল রংয়ের ক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় করো:

বীজগণিতীয় সূত্রাবলি ও প্রয়োগ (দ্বিপদী ও ত্রিপদী রাশির বর্গ) দ্বিপদী রাশির বর্গ

তোমাকে যদি প্রশ্ন করা হয় দুইকে দুই দিয়ে গুণ করলে কত হয়? তুমি নিশ্চয়ই উত্তরে বলবে চার হয়, তিনকে তিন দিয়ে গুণ করলে কত হয়? তুমি নিশ্চয়ই উত্তরে বলবে নয় হয়, কারণ ইতিমধ্যেই পূর্ববর্তী ক্লাসে তুমি তা জেনে এসেছ। কিন্তু যদি বলা হয় কোন একটি আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য 2 সে.মি. ও প্রস্থ 2 সে.মি. হলে এর ক্ষেত্রফল কত? তুমি এবার নিশ্চয়ই এমন একটি আয়তক্ষেত্র অঙ্কন করবে যার দৈর্ঘ্য 2 সে.মি. ও প্রস্থ 2 সে.মি.এবং তোমার অংকিত চিত্রটি হবে নিম্নরুপ

এবার যদি দৈর্ঘ্য 3 সে.মি. ও প্রস্থ 3 সে.মি.হয় তখন ক্ষেত্রফল কত হবে, যদি দৈর্ঘ্য 5 সে.মি. ও প্রস্থ 5 সে.মি.হয় তখন ক্ষেত্রফল কত হবে, যদি দৈর্ঘ্য (a + b) সে.মি. ও প্রস্থ (a + b) সে.মি.হয় তখন ক্ষেত্রফল কত হবে? চল, নিচের চিত্রগুলি লক্ষ করি।

এবার চল আমরা (a + b)2 এর মান কত হবে তা বের করার চেষ্টা করি। প্রথমে বর্গাকৃতি একটি কাগজ নাও। উহা হতে নিচের চিত্রের মতো aও b বাহু চিহ্নিত কর, ফলে চারটি ক্ষেত্র চিহ্নিত হবে।

ক্ষেত্রগুলো কেটে কেটে আলাদা করো। নিচের চিত্রের মতো চারটি ক্ষেত্রফল পাওয়া যাবে।

এবার আলাদা করা ক্ষেত্র গুলোকে সাজালে নিচের চিত্রের মতো ফলাফল পাওয়া যাবে।

পরিশেষে আমরা নিচের চিত্র থেকে পাবো

চল, এবার সূত্রটি সত্যতা যাচাই করি। এ ক্ষেত্রে আমরা জ্যামিতিক পদ্ধতি অবলম্বন করব। ধরি, a = 3 এবং b = 2

(a+b)2=a2+2ab+b2

এখন একটি বর্গ অঙ্কন কর যার এক বাহুর দৈর্ঘ্য (a + b) অর্থাৎ (3+2)

সম্পূর্ন বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল হবে (3+2)2=52=25

3 একক বাহু বিশিষ্ট বর্গের ক্ষেত্রফল= 9 বর্গ একক

2 একক বাহু বিশিষ্ট বর্গের ক্ষেত্রফল= 4 বর্গ একক

3 একক এবং 2 একক বাহু বিশিষ্ট আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল= 6 বর্গএকক

2 একক এবং 3 একক বাহু বিশিষ্ট আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল= 6 বর্গএকক

এ ক্ষেত্রেও সম্পূর্ন বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল হবে = (9 + 4 + 6 + 6) বর্গ একক = 25 বর্গএকক

যেহেতু, উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষেত্রফলের মান সমান। কাজেই বলা যায়,  (a+b)2=a2+2ab+b2  একক কাজ: উপরের মতো ছবির সাহায্যে বর্গ নির্ণয় করো।

1. (m + n)

4. 105

2. (4x + 3)

5.99

3. (3x + 4y)

 

কাগজ কেটে প্রমাণ করো। a2+b2=(a+b)2-2ab

সহজ উপায়ে (বীজগণিতের সূত্র) বর্গসংখ্যা নির্ণয়:

আমরা বীজগণিত অংশে বর্গ নির্ণয়ের সূত্র   (a+b)2=a2+2ab+b2 সম্পর্কে জেনেছি। তাহলে চলো 42 সংখ্যাটির বর্গ নির্ণয় করি।

422=(40+2)2=402+2*40*2+22=1600+160+4=1764

কাজ: সহজ উপায়ে 52, 71, 21, 26, 103 এর বর্গ নির্ণয় করো।

এবার নিচের সারণিতে 1 থেকে 20 সংখ্যার বর্গসংখ্যা দেওয়া আছে। সহজ উপায়ে বর্গ নির্ণয়ের নিয়মের সাহায্যে খালি ঘরগুলো পূরণ করো। (ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না)

সারণিভূক্ত সংখ্যাগুলোর এককের ঘরের অঙ্কগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে কোন মিল খুঁজে পেলে কিনা দেখ।

কাজ:

১। কোনো সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক কত কত হলে সংখ্যাটি বর্গসংখ্যা হতে পারে?

২। পাঁচটি সংখ্যা লেখ যার একক স্থানের অঙ্ক দেখেই তা বর্গসংখ্যা নয় বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।

(a - b)2 সূত্রের জ্যামিতিক প্রমাণ

বর্গক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় করার জন্য প্রথমে আমরা একটি বর্গাকৃতি কাগজ কেটে নিই। এরপর নিচের চিত্রের মত a ও b বাহু দ্বারা চিহ্নিত করি। এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করি।

  • সবুজ বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্য কত?
  • সবুজ বর্গের ক্ষেত্রফল কত?
  • হলুদ আয়তের ক্ষেত্রফল কত?
  • লাল বর্গের ক্ষেত্রফল কত?
  • নীল আয়তের ক্ষেত্রফল কত?

উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেয়েছ কি? তা হলে চিত্রের সাথে মিলিয়ে দেখো।

সবুজ বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্য = (a-b)

সবুজ বর্গের ক্ষেত্রফল =(a-b)2

হলুদ আয়তের ক্ষেত্রফল =(a-b)b

লাল বর্গের ক্ষেত্রফল =b2

নীল আয়তের ক্ষেত্রফল =(a-b)b

 

এখন, সবুজ বর্গের ক্ষেত্রফল=সমগ্র বর্গের ক্ষেত্রফল-[ হলুদ আয়তের ক্ষেত্রফল লাল বর্গের ক্ষেত্রফল+ নীল আয়তের ক্ষেত্রফল] অর্থাৎ,

(a-b)2=a2-{(a-b)b+b2+(a-b)b}

=a2-{2ab-b2}=a2-2ab+b2

একক কাজ: উপরের মতো ছবির সাহায্যে বর্গ নির্ণয় করো।

1. (m + n)

4. 95

2. (4x + 3)

5.99

3. (3x + 4y)

 

একক কাজ: ত্রিপদী রাশির বর্গ

ইতিমধ্যে (a + b)2 এর প্রমাণ শিখলাম। সে ক্ষেত্রে বর্গক্ষেত্রটি ছিল নিম্নরুপ।

কিন্তু যদি বর্গক্ষেত্রটির এক বাহুর দৈর্ঘ্য (a+b+c) একক হয়, তবে চিত্রটি হবে নিম্নরুপ:

এবার চল, আমরা (a+b+c) বাহু বিশিষ্ট বর্গক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফলের মান (a + b + c)2 কত হবে তা বের করার চেষ্টা করি।

প্রথমে বর্গাকৃতি একটি কাগজ নিয়ে নিচের চিত্রের মতো a, b ও c বাহু চিহ্নিত করো। বাহুগুলো দ্বারা বর্গক্ষেত্রটি টি ক্ষেত্রে বিভক্ত হবে।

এবার, এই ক্ষেত্রগুলির ক্ষেত্রফল a, b ও C এর সাহায্যে প্রকাশ করে চিত্রে দেখাও।

এখন, চিত্রে প্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলির ক্ষেত্রফলের যোগফল আকারে নিচের বক্সে লিখ।

আবার, চিত্রের বর্গক্ষেত্রের এক বাহুর দৈর্ঘ্য 

=

তাহলে, সম্পূর্ণ ক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল 

=

তাহলে সম্পূর্ণ ক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল তুলনা করে আমরা পাই,

(a+b+c)2=

একক কাজ: নিচের সমস্যাটি কাগজ কেটে বা ছবি এঁকে সমাধান করো।

(2x + 3y + 4z) এর বর্গ নির্ণয় করো।

একক কাজ:

১) কাগজ কেটে নিচের রাশিগুলোর বর্গ নির্ণয় করে শিক্ষকের কাছে জমা দাও।

1. a + 3
2. 3x-5
3. 999 
4. 2x + y + 3z

২) কাগজ কেটে প্রমাণ করো।

1.a2+b2=(a-b)2+2ab
2.(a-b)2=(a+b)2-4ab
3.(a+b)2=(a-b)2+4ab
4.(a+b)2+(a-b)2=2(a2+b2)
5.(a+b)2-(a-b)2=4ab

Content added By
Promotion