আমাদের মুক্তিযুদ্ধ

পঞ্চম শ্রেণি (ইবতেদায়ী) - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় - | NCTB BOOK

যুদ্ধের সূচনা

Content added By

যুদ্ধের সূচনা

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গৌরবময় ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা লাভ করেছি আমাদের এই প্রিয় দেশ বাংলাদেশ। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা এই উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সৃষ্টি হয় দুইটি স্বাধীন রাষ্ট্র, একটি ভারত এবং অন্যটি পাকিস্তান। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান। পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জনগণের ওপর শুরু করে অত্যাচার ও নিপীড়ন। বাঙালিরাও সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ আম্মেলন শুরু করেন। এরকম কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিবাদ ও আন্দোলনের ঘটনা নিচের ছকে দেওয়া হলো :

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন
১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নারকীয় গণহত্যা ও বাঙালিদের প্রতিরোধ
১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের শুরু

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর এক মাসের মধ্যেই ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল গঠন করা হয় বাংলাদেশের প্রথম সরকার, যা 'মুজিবনগর সরকার' নামে পরিচিত। তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথ তলায় (বর্তমান নাম মুজিবনগর) আমবাগানে ১৭ই এপ্রিল এই সরকার শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তিনি পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকার কারণে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ সরকারের অন্যতম সদস্যরা হলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী (অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী) ও এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান (স্বরাষ্ট্র এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী)। মুক্তিযুদ্ধকে সঠিক পথে পরিচালনা এবং দেশে ও বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন ও সমর্থন আদায় করার ক্ষেত্রে এই সরকার সফলতা লাভ করে। মুজিবনগর সরকার' গঠনের পর মুক্তিযুদ্ধের গতি বৃদ্ধি পায়। এ সরকারের নেতৃত্বে সকল শ্রেণির বাঙালি দেশকে শত্রু মুক্ত করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

ক.এসো বলি

শিক্ষকের সহায়তায় আলোচনা কর :

# 'মুক্তিযুদ্ধ' বলতে কী বুঝ?

# মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য কী?

 

খ. এসো লিখি

১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান শাসনামলের একটা ঘটনাপঞ্জি তৈরি কর। সেই সমরের আন্দোলনের বছরগুলোকে চিহ্নিত কর।

 

গ. আরও কিছু করি

পরিবারের বড়দের কাছ থেকে পাকিস্তান শাসনামল সম্পর্কে শোন।

 

ঘ. যাচাই করি

মুজিবনগর সরকার কোন তিনটি কাজ করেছিল?

১…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

২…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

৩…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

Content added || updated By

মুক্তিযুদ্ধে সামরিক বাহিনী

১৯৭১ সালের ১১ই জুলাই মুক্তিবাহিনী নামে একটি বাহিনী গঠন করা হয়। এই বাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী। উপ-প্রধান সেনাপতি ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার।

মুক্তিবাহিনীকে তিনটি ব্রিগেড ফোর্সে ভাগ করা হয়েছিল : 

• মেজর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে 'কে' ফোর্স 

• মেজর কে এম শফিউল্লাহর নেতৃত্বে 'এস' ফোর্স 

• মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে 'জেড ফোর্স

আবার যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার জন্য সারাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। নিচে সেগুলো দেখানো হলো :

সেক্টর ১:- চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী জেলার অংশবিশেষ।

সেক্টর ২:- কুমিল্লা ও ফরিদপুর জেলা এবং ঢাকা ও নোয়াখালী জেলার অংশবিশেষ।

সেক্টর ৩:- মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ এবং কেরানিগঞ্জের অংশ বিশেষ।

সেক্টর ৪:- উত্তরে সিলেট সদর এবং দক্ষিণে হবিগঞ্জ, মধ্যবর্তী সমস্ত অঞ্চল।

সেক্টর ৫:- সিলেট জেলার উত্তরাঞ্চল।

সেক্টর ৬:- রংপুর ও দিনাজপুর জেলা।

সেক্টর ৭:- রাজশাহী, পাবনা , বগুড়া ও দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ।

সেক্টর ৮:- কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনা জেলা।

সেক্টর ৯:- বরিশাল, পটুয়াখালী এবং খুলনা এবং ফরিদপুর জেলার অংশবিশেষ।

সেক্টর ১০:- কোনো আঞ্চলিক সীমানা ছিল না, নৌবাহিনীর  কমান্ডো নিয়ে গঠিত। নৌ অভিযানের প্রয়োজনে যে কোনো                             সেক্টর এলাকায় গিয়ে অপারেশন শেষে ১০ নং সেক্টরে ফিরে আসতো।

সেক্টর ১১:- টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার অংশবিশেষ।

এছাড়াও স্থানীয় ছোট ছোট যোদ্ধাবাহিনী ছিল। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। তারা গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিতেন। ত্রিশ হাজার নিয়মিত যোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত এই বাহিনীর নাম মুক্তিফৌজ। এক লক্ষ গেরিলা ও বেসামরিক যোদ্ধার সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন এই মুক্তিফৌজ ।

 

ক. এসো বলি

শিক্ষকের সহায়তার আলোচনা কর : 

১. মুক্তিবাহিনীকে কেন নিয়মিত বাহিনী ও গেরিলা বাহিনীতে ভাগ করা হয়েছিল? 

২. বাংলাদেশকে কেন ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল? 

৩. তোমাদের অঞ্চলটি কোন সেক্টরের অধীনে ছিল। 

৪. সেক্টর ১০ এর প্রধান কাজ কী ছিল?

 

খ. এসো শিখি

মুক্তিবাহিনী কীভাবে সংগঠিত হয়েছিল, সে সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ লেখ।

 

গ. আরও কিছু করি

জেনারেল ওসমানী 'বঙ্গবীর' নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৭২ সালে চাকরি থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর সম্পর্কে তোমরা আর কী কী জানো?

 

ঘ. যাচাই করি

বাক্যটি সম্পূর্ণ কর :

মুক্তিবাহিনী ছিল……………………………………………………………….…….।

Content added || updated By

মুক্তিযোদ্ধা

মুক্তিযুদ্ধে সমগ্র বাঙালি জাতি জড়িয়ে পড়েন। এ যুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষও এ যুদ্ধে অবদান রাখেন। নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, আশ্রর এবং তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন। অনেক নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। সংস্কৃতি কর্মীরা তাঁদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেন। এছাড়াও প্রবাসী বাঙালিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন।

প্রতিটি সেক্টরেই গেরিলা বাহিনীর জন্য নির্দেশনা ছিল : 

• 'অ্যাকশন গ্রুপ' অগ্র বহন করত এবং সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিতেন। 

• “ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ” শত্রুপক্ষের গতিবিধি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করতেন। 

সে সময়ে দেশের মানুষের প্রিয় অনেক গানের একটি ছিল 'জয় বাংলা বাংলার জয়। 'জয় বাংলা' ধ্বনি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রিয় স্লোগান ।

 

ক. এসো বলি

মুক্তিযুদ্ধে নারীরা কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তা শিক্ষকের সহায়তায় আলোচনা কর। তোমাদের পরিচিত কোনো ব্যক্তি বা শিক্ষক কি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন?

 

খ. এসো লিখি

'জয় বাংলা বাংলার জয়' গানটির কথাগুলো লেখ। শ্রেণিতে সকলে মিলে গানটি গাও ।

 

গ. আরও কিছু করি

'মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষ কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন?' একটি নমুনা উত্তর নিচে দেওয়া হলো-

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে এদেশের সাধারণ মানুষ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এদেশের সাধারণ মানুষ নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন। পুরুষেরা সরাসরি সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। অনেকেই গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন। অনেক নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। এদেশের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। খাদ্য, আশ্রয় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ করতে প্রেরণা যুগিয়েছেন। নারীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এদেশের সকল শ্রেনি পেশার সদস্যরা যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। শুধু রাজাকাররাই মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ছিল।

নমুনা উত্তরের সাথে তোমরা নতুন আর কী যোগ করবে?

 

ঘ. যাচাই করি

নিজের ভাষায় লেখ :

মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষ কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন?

Content added By

পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার নির্দেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও শিক্ষকদের বাসভবনসহ ঢাকা শহরের বিভিন্নস্থানে একযোগে আক্রমণ করে। এ সময় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের পুলিশ সদস্যরা তাঁদের থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে সশল্প প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কিন্তু হানাদার বাহিনীর আধুনিক অস্ত্রের আক্রমণে তাঁরা টিকে থাকতে পারেন নি। সেই ভয়াল রাতে হানাদার বাহিনী দেশের অন্যান্য বড় বড় শহরেও আক্রমণ করে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ইপিআর সদস্যসহ অসংখ্য নিরীহ বাঙালী জনগণকে হত্যা করে। এটি বিশ্বের বুকে নৃশংসতম গণহত্যা ও ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের এক ঘূপিত উদাহরণ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর এই আক্রমণের নাম দিয়েছিল 'অপারেশন সার্চলাইট । ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ বাঙালি শহিদ হন। এক কোটির বেশি মানুষ তাঁদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে প্রাণের ভয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে সংঘটিত নির্মম গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে প্রতিবছর ২৫শে মার্চ 'জাতীয় গণহত্যা 'দিবস' পালন করা হয়।

এদেশের কিছু মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তারা শান্তিকমিটি, রাজাকার, আলবদর, আল-শামস নামে বিভিন্ন কমিটি ও সংগঠন গড়ে তোলে। এরা মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা তৈরি করে হানাদারদের দেয়। রাজাকাররা হানাদারদের পথ চিনিয়ে, ভাষা বুঝিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সাহায্য করে ।

মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা করে। ১০ই ডিসেম্বর থেকে ১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে তারা আমাদের অনেক গুণী শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, চিকিৎসক এবং কবি-সাহিত্যিকদের ধরে নিয়ে হত্যা করে। তাঁদের স্বরণে প্রতিবছর ১৪ই ডিসেম্বর 'শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস' পালন করা হয়।

 

ক. এসো বলি

মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পাকিস্তানি বাহিনী কেন এদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল- শিক্ষকের সহারতার আলোচনা কর।

 

খ. এসো লিখি

বিষয়বস্তু ২ ও ৪ এর আলোকে নিচের ছকটি পূরণ কর :

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বাহিনীমুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের বাহিনী

 

গ. আরও কিছু করি

এখানে কয়েকজন শহিদ বুদ্ধিজীবীর ছবি দেওয়া আছে। তারা কে কোন ক্ষেত্রে বিখ্যাত ছিলেন তা খুঁজে বের কর :

ক. অধ্যাপক গোবিন্দচন্দ্ৰ দেব                খ. অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী                     গ. অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার    

ঘ. অধ্যাপক রাশীদুল হাসান                   ঙ. সাংবাদিক সেলিনা পারভীন               চ.  ফা. আলীম চৌধুরী

ছ. ডা. আজহারুল হক

 

ঘ. যাচাই করি

বাক্যটি সম্পূর্ণ কর :

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য………………………………………………………………………………….।

Content added || updated By

পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও আমাদের বিজয়

মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টায় প্রতিবেশী দেশ ভারত নানাভাবে আমাদের সাহায্য করে। আশ্রয়গ্রহণকারী বাঙালি শরণার্থীদের ভারত খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিৎসা সেবা দেয়। তারা মিত্রবাহিনী নামে একটি সহায়তাকারী বাহিনী গঠন করে। 'অপারেশন জ্যাকপট' নামক আক্রমণে এই বাহিনী বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ করে। মিত্রবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২১শে নভেম্বর মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী মিলে গঠন করা হয় যৌথবাহিনী।

১৯৭১ সালের ৩রা ডিসেম্বর হঠাৎ পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতের কয়েকটি বিমানঘাঁটিতে বোমা হামলা চালায়। এর ফলে যৌথবাহিনী একযোগে স্থল, নৌ ও আকাশপথে পাল্টা আক্রমণ করে। তীব্র আক্রমণের ফলে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ফলে মাত্র নয় মাসের যুদ্ধে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি।

ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে যৌথবাহিনীর পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এবং পাকিস্তানের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন। এর মধ্য দিয়ে আমাদের সত্যিকারের বিজয় অর্জিত হয়। প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর আমরা বিজয়দিবস পালন করি। এর কিছুদিন পর ১৯৭২ সালের ৮ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন এবং ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি মদেশ প্রত্যাবর্তন করেন।

 

ক. এসো বলি

 

মাত্র নয় মাসের যুদ্ধে বাঙালি জাতি কীভাবে বিজয় অর্জন করেন – শিক্ষকের সহায়তায় - আলোচনা কর। যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে সেগুলো হলো : 

• সামরিক বাহিনী

• সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ 

• বৈদেশিক সমর্থন ও সহায়তা 

• মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত কারণ

 

খ. এসো শিখি

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করার ছবিটি নিয়ে একটি ছোট অনুচ্ছেদ লেখ।

 

গ. আরও কিছু করি

পাশের ছবিটি লেফটেন্যান্ট জেনারেল অরোরার। তিনি পাঞ্জাবে জন্মগ্রহণ   করেন।  মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অংশগ্রহণ নিয়ে আরও কিছু তথ্য সংগ্রহ কর।

ঘ. যাচাই করি

১৯৭১ সালের এই দিনগুলোতে কী ঘটেছিল?

২১ শে নভেম্বর……………………………………………………………………………………………………………………………………………………

৩ৱা ডিসেম্বর………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

১৬ই ডিসেম্বর……………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

Content added By

মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় উপাধি

মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতা প্রদর্শনের স্বীকৃতিরূপ বাংলাদেশ সরকার বীরত্বসূচক রাষ্ট্রীয় উপাধি প্রদান করে। মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসের সাথে যুদ্ধ করে শহিদ হয়েছেন এমন সাতজনকে বীরশ্রেষ্ঠ (সর্বোচ্চ) উপাধি প্রদান করা হয়। নিচে তাঁদের ছবি দেওয়া হলো।

ক. ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর 

খ. ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান 

গ. সিপাহি হামিদুর রহমান 

ঘ. ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ 

. সিপাহি মোস্তফা কামাল 

চ. ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার রুহুল আমিন 

. ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ

এছাড়াও সাহসিকতা এবং ড্যাপের জন্য আরও তিনটি উপাধি দেওয়া হয়েছে। উপাধিগুলো হলো :

★ বীর উত্তম 

★ বীর বিক্রম 

★ বীর প্রতীক

সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং অগণিত সাধারণ মানুষের অবদানে আমরা লাভ করেছি আমাদের স্বাধীনতা ।

 

ক. এসো বলি

মনে কর, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্যকে তোমরা সংবর্ধনা দেবে। মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ অবদানের জন্য তাঁদের পরিবারকে দেশের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তৃতা দাও ।

 

খ. এসো লিখি

‘এসো বলি'র বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতাটি লেখ।

 

গ. আরও কিছু করি

এটি ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এই জাদুঘরে কী আছে বলে তোমাদের মনে হয়?

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বা ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি স্মৃতিসৌধের নকশা তৈরি কর। স্মৃতিসৌধের ফলকে খোলাই করার জন্য কিছু কথা লেখ।

 

ঘ. যাচাই করি

বামপাশের সাথে ডানপাশের বাক্যাংশগুলো মিল কর :

. মুক্তিবাহিনী প্রধান 

খ. পাকিস্তানের এদেশীয় সহযোগী 

গ. মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও ত্যাগের জন্য দেওয়া সর্বোচ্চ উপাধি 

ঘ. যৌথবাহিনী প্রধান

লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী 

রাজাকার 

বীর বিক্রম

বীরশ্রেষ্ঠ

 

Content added || updated By
Promotion