তোমরা কি কখনো কোনো গ্লাসের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে তোমাদের নিজের ছবি দেখার চেষ্টা করেছ? গ্লাস থেকে আলোর প্রতিফলনের ফলে তোমরা কি একটা অস্পষ্ট প্রতিবিম্ব দেখেছ? এই প্রতিবিম্বটা কি কোনো আয়নায় তৈরি তোমাদের প্রতিবিম্ব থেকে ভিন্ন? এটাকে অনেক বেশি আবছা লাগে কেন বলতে পার? গ্লাস হলো স্বচ্ছ মাধ্যম। অধিকাংশ আলোই এর মধ্য দিয়ে চলে যায়, কেবল খুবই কম অংশ প্রতিফলিত হয় বলেই প্রতিফলিত প্রতিবিম্বটি এতটা আবছা দেখা যায়। তাহলে আলো যখন এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে চলে গেল তখন এর গতিপথ কেমন? চলো আমরা এবার এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। তবে প্রথমে তোমরা নিচের কাজটি করে নাও।
কাজ : আলোর প্রতিসরণের ধারণা প্রয়োজনীয় উপকরণ : একটি পেন্সিল, একটি কাচের গ্লাস, পানি পদ্ধতি : একটি কাচের গ্লাসে ৩/৪ অংশ পূর্ণ করে পানি নাও। এবার বলতে পারবে একটি পেন্সিলকে একটু কাত করে চিত্রের মতো পানির ভিতর রাখলে পানির ভিতরে পেন্সিলের অংশটুকু কেমন দেখাবে ? |
উপরের কাজটির ক্ষেত্রে পানির ভিতরে পেন্সিলের নিচের অংশ থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে এসে পড়ছে। এর পূর্বে এটি এক স্বচ্ছ মাধ্যম পানি থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যম বায়ুতে এসে তোমাদের চোখে পড়ছে। দুইটি ভিন্ন মাধ্যমে আলো যদি একই সরল রেখায় চলত তাহলে পেন্সিলটিকে নিশ্চয়ই সোজা দেখাত। কিন্তু তোমরা দেখতে পেলে এটিকে পানির তলে ভেঙ্গে গেছে বলে মনে হচ্ছে। এর থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় যে আলো যখন এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশ করে তখন এটি তার গতিপথের দিক পরিবর্তন করে। আলোক রশ্মির এই দিক পরিবর্তনই হলো আলোর প্রতিসরণ। একটি নির্দিষ্ট স্বচ্ছ মাধ্যমে আলো সরল রেখায় চলে কিন্তু অন্য মাধ্যমে প্রবেশের সাথে সাথেই এটি মাধ্যমের ঘনত্ব অনুসারে দিক পরিবর্তন করে। এখানে উল্লেখ্য যে লম্বভাবে আলো এক মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে যাওয়ার সময় এর গতিপথের কোনো দিক পরিবর্তন হয় না।
আরও দেখুন...