আল্লাহু সালামুন। সালাম অর্থ শান্তি । আল্লাহ্ সালামুন অর্থ আল্লাহ্ শান্তিদাতা। আমাদের মন যখন ভালো থাকে, তখন শান্তি লাগে। শরীর ভালো থাকলে মনে শান্তি থাকে।
যখন আমাদের মন খারাপ হয় তখন শান্তি লাগে না। শরীর খারাপ হলেও মনে শান্তি থাকে না। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করেন। আল্লাহ আমাদের রোগমুক্ত করেন। আমরা সুস্থ হই। শান্তি পাই।
আমাদের পরিবারে আছেন আব্বা-আম্মা, ভাইবোন। আছেন দাদা-দাদি। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে আমরা অস্থির হয়ে পড়ি। আমাদের শান্তি থাকে না। আমরা তাঁদের সেবা করি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি। তিনি আমাদের বিপদমুক্ত করেন। আমরা শান্তি পাই।
অনেক সময় আমাদের বইখাতা, কলম-পেন্সিল হারিয়ে যায় তখন আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। শান্তি থাকে না। আবার যখন তা খুঁজে পাই, তখন শান্তি পাই। আমরা যখন বন্ধু ও সহপাঠীদের সাথে মিলেমিশে থাকি, তখন ভালো লাগে। বন্ধু ও সহপাঠীদের সাথে কখনো কখনো ঝগড়া হয়। মন খারাপ হয়। তখন শান্তি লাগে না। আমরা তাড়াতাড়ি ঝগড়া মিটিয়ে ফেলব, তা হলে শান্তি লাগবে।
রাসুল (স) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তিই সত্যিকার মুসলমান যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।' রাসুল (স) সবসময় শান্তির জন্য কাজ করতেন। শান্তির জন্য অমুসলিমদের সাথেও সন্ধি করেছেন । একে অপরের সাথে দেখা হলে আমরা সালাম দেই । শান্তি কামনা করি। বলি ‘আসসালামু আলাইকুম’। অর্থ: আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। সালামের জবাবে বলি “ওয়া আলাইকুমুস সালাম'। অর্থ: আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক । সালাম বিনিময় একটি সুন্দর নিয়ম। এতে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় ।
প্রচুর ধনসম্পদ থাকলেই শান্তি পাওয়া যায় না। অনেক আগে কারুন নামে এক ব্যক্তি ছিল। তার ধনসম্পদ ছিল প্রচুর। কিন্তু তৃপ্তি ছিল না, শান্তি ছিল না। সে আরও সম্পদ লাভের জন্য অস্থির ছিল। সে আল্লাহর শোকর করত না। গরিবের হক আদায় করত না। যাকাত দিত না। আল্লাহর হুকুমে সে তার ধনসম্পদসহ ধ্বংস হয়ে গেল ।
আল্লাহ তায়ালা যাকে শান্তি দেন সেই শান্তি পায়। কুঁড়েঘরে থাকলেও শান্তি পায়। অভাব-অনটনেও শান্তিতে থাকে। আল্লাহ শান্তি দিলে কেউ তার ক্ষতি করতে পারে না ।
অত্যাচারী শাসক নমরুদ নিজেকে উপাস্য দাবি করেছিল। হযরত ইবরাহীম (আ) তা মানতে পারলেন না। শাস্তি দেওয়ার জন্য নমরুদ তাঁকে জ্বলন্ত আগুনের কুণ্ডে নিক্ষেপ করল। আল্লাহ তায়ালা আগুনকে বললেন, “ হে আগুন! ইবরাহীমের জন্য ঠাণ্ডা হও, শান্তিদায়ক হও।” আগুন হযরত ইবরাহীম(আ) কে স্পর্শও করতে পারল না।
একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই শান্তিদাতা। যারা আল্লাহর হুকুম মেনে চলে তিনি তাদের শান্তি দেন। দুনিয়াতে শান্তি দেন। আখিরাতেও শান্তি দিবেন। তাঁর একটি গুণবাচক নাম “সালাম”। শান্তিদাতা।
আমরা আল্লাহ তায়ালাকে পরম শান্তিদাতা বলে বিশ্বাস করব। তাঁর কাছেই শান্তি চাইব। সবার সাথে শান্তিতে বাস করব। শান্তির পক্ষে কাজ করব।
আরও দেখুন...