আল্লাহু কাদীরুন। কাদীর অর্থ সর্বশক্তিমান। তাঁর মতো শক্তি আর কারও নেই। সর্বশক্তিমান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষের জন্য এই বিশাল পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর সৃষ্টি করেছেন । গাছপালা, পশুপাখি, জীবজন্তু এসব তিনিই সৃষ্টি করেছেন ।
আমাদের মাথার উপর যে বিস্তীর্ণ আকাশ তা সৃষ্টি করেছেন কে? এই আকাশ, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকাপুঞ্জ, ছায়াপথ এসবই সৃষ্টি করেছেন সর্বশক্তিমান আল্লাহ। আমরা দেখি প্রতিদিন পূর্বদিক রাঙা করে সূর্য উঠে। দিন হয়, আবার দিন শেষে পশ্চিম আকাশে সূর্য অস্ত যায়। রাত হয়। দিন-রাতের এ পরিবর্তন কে করেন? সর্বশক্তিমান আল্লাহই এ পরিবর্তন করেন। তিনি অসীম শক্তির অধিকারী। তাঁর হুকুমে পৃথিবীর সবকিছু চলে। মহাকাশের সবকিছুই তাঁর হুকুমে চলে।
তাঁর ব্যবস্থাপনায় চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র ও নীহারিকাপুঞ্জ আপন কক্ষপথে পরিচালিত হয়। কোথাও কোনো অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা বা সংঘর্ষ দেখা যায় না। মহান আল্লাহ আলো, বাতাস, আগুন, পানি সৃষ্টি করেছেন। তিনিই এসব নিয়ন্ত্রণ করেন। মেঘমালা পরিচালনা করেন। বৃষ্টিবর্ষণ করে শুকনা মাটিতে প্রাণের সঞ্চার করেন। তাঁর ইচ্ছাতেই মরুভূমির বুক চিরে সুপেয় পানির ঝরনাধারা বেরিয়ে আসে। আমরা মাটিতে বীজ বপন করি, তা হতে চারা গজায় ৷
আলো, বাতাস, পানি অনেক সময় আমাদের বিপদের কারণ হয়। অতিবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি, গাছপালা ডুবে যায়। মানুষ ও পশুপাখি ভেসে যায়। ভূমিকম্প, ঝড়-তুফানে ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। বড় বড় গাছপালা উপড়ে যায়। সাজানো গোছানো জনপদ লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। আমাদের আশ্রয়টুকুও থাকে না। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ‘সিডর’ ও ‘আইলা-র তাণ্ডবের কথা আমরা আজও ভুলতে পারি নি। এ ধরনের দুর্যোগে আমরা আল্লাহর উপর ভরসা রাখব। দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসব। আলো-বাতাস, আগুন-পানি সবকিছুই মহান আল্লাহর শক্তির অধীন।
আল্লাহ শাস্তি দিতে চাইলে কেউ তাকে রক্ষা করতে পারে না। তিনি নমরুদ, ফিরআউনের মতো পরাক্রমশালী জালিম শাসকদের ধ্বংস করেছেন। হযরত নূহ (আ)-এর অবাধ্য সম্প্রদায়কে প্লাবনে ডুবিয়ে মেরেছেন। ছোট ছোট পাখি দ্বারা আবরাহা বাদশাহর বিশাল বাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
আল্লাহ তায়ালা রক্ষা করলে কেউ তাকে মারতে পারে না। অত্যাচারী নমরুদ হযরত ইবরাহীম (আ)কে পুড়িয়ে মারার জন্য অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করেছিল। কিন্তু আগুন তাঁকে স্পর্শও করতে পারে নি। কারণ আগুন সর্বশক্তিমান আল্লাহর অধীন। মহান আল্লাহ ফিরআউনের হাত থেকে হযরত মূসা (আ)-কে রক্ষা করেছিলেন। ঈসা (আ)-কে ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স)-কেও কাফিরদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
আমরা মহান আল্লাহকে সর্বশক্তিমান হিসাবে বিশ্বাস করব। তাঁর কাছেই সাহায্য চাইব । কেবলমাত্র তাঁরই উপর ভরসা রাখব।
আরও দেখুন...