উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এ অধ্যায়ে আমরা ইন্ডিকেটর, ফিউজ, সুইচ ও সকেটসহ সুইচবোর্ড ফিক্সআপ করব এবং ওয়্যারিং বোর্ডে ব্যাটেন হোল্ডার ও সিলিং রোজ ফিক্সআপ সম্পন্ন করার দক্ষতা অর্জন করব। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ সম্পর্কে জানব ।
বৈদ্যুতিক বাতির হোল্ডারের শেডসহ ধরে রাখার জন্য সমস্ত সরঞ্জাম যেগুলো ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সুবিধা ভোগ করা যায় সেগুলোকে বৈদ্যুতিক ফিটিংস বলে। এটি বৈদ্যুতিক ইন্সটলেশনের অংশ বিশেষ ।
নিচে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফিটিংস এর নামের তালিকা দেয়া হলো- এটি
১। ইন্ডিকেটর ল্যাম্প
২। ল্যাম্প হোন্ডার
৩। মেইন সুইচ
৪। সার্কিট ব্রেকার
৫। সিলিং রোজ
৬। সকেট
৭। সকেট আউটলেট
৮। রেগুলেটর
৯। সুইচ
১০। এম সি বি
১১। প্রাগ
১২। ফিউজ
১৩। জাংশন বক্স
১৪। ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড
১৫। সাব-ডিস্ট্রিবিউশন বোড
১৬। সুইচবোর্ড
ফিক্সার হচ্ছে এমন সব হার্ডওয়্যার সামগ্রী যেগুলো দেয়ালের সাথে বৈদ্যুতিক ফিটিংস আটকানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। আবার কিছু কিছু বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও ফিক্সারের অন্তর্ভুক্ত। নিচে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফিক্সারের নামের তালিকা দেয়া হলো-
১। কাপলার
২। লক নাট
৩। কানেক্টর
৪। রাওয়াল প্লাগ
৫। পেরেক
৬। হুক
৭। তারকাটা
৮। স্যাডল
৯। বুশ
১০। রিডিউসার
১১। কর্ণার
১২। ক্লিপ
১৩। মেশিন স্কু
১৪। বেড
১৫। স্টপিং প্লাগ
১৬। কট স্কু
১৭। আর্থিং ক্ল্যাম্প
এখন কতিপর ফিটিংস নিয়ে আলোচনা করা হলো-
যখন কোনো ইন্ডিকেটর সুইচ বোর্ডে স্থাপন করা হয় তখন তাকে ইন্ডিকেটরসহ সুইচ বোর্ড বলে। কোনো সুইচ বোর্ডে ইন্ডিকেটর জ্বলতে থাকলে বুঝা যায় যে ঐ বোর্ডে বিদ্যুৎ আছে।
ইলেকট্রিক সুইচ বোর্ডে যে উপাদানটি সবসময় জ্বলে, আমরা যেটার সাহায্যে ইলেকট্রিক সুইচবোর্ডের দিকে তাকালে বুঝতে পারি বিদ্যুৎ আছে কি নাই তার নাম হলো ইন্ডিকেটর। এটি বোর্ডে রেজিস্টরসহ প্যারালালে সংযোগ করা থাকে। এর দুটি দিনের মধ্যে একটি ফেজ ও একটি নিউট্রাল লাইনে সংযোগ থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইন্ডিকেটর ত্রুটিযুক্ত সার্কিটকে নির্দেশ করে। একে ফন্ট সার্কিট ইন্ডিকেটরও বলা হয়। এটি ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ও সুইচবোর্ডে ব্যবহার করা হয়।
এটি সাধারণত: ৫-১০ mA, ১.৫V এর হয়ে থাকে। ইন্ডিকেটর বিভিন্ন প্রকৃতির যেমন: নিয়ন ল্যাম্প, লাইট ইমিটিং ডায়োড (LED) এবং লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে (LCD) ল্যাম্প। লাইট ইমিটিং ডায়োড এর ক্ষমতা ৭.৫ mw থেকে ১৫ mw পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কোনো সার্কিট বা যন্ত্রপাতির অপারেটিং অবস্থা জানার জন্য এবং সতর্কীকরণ ঘন্টা পাওয়ার জন্য সার্কিট বা যন্ত্রপাতিতে ইন্ডিকেটর সংযোগ করা হয়। এটি ত্রুটিযুক্ত ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ ও চিহ্নিত করে। ফলে ত্রুটিযুক্ত সার্কিটকে ভাল অংশ হতে সহজেই আলাদা করা যায়। এতে যন্ত্রপাতির ক্ষয়ক্ষতি কম হয় ও অপচয় রোধ হয়।
সুইচবোর্ডের সাইজ বলতে এর ক্ষেত্রফলকে বোঝায়। সুইচবোর্ডে ব্যবহৃত আউটলেটের সংখ্যার ভিত্তিতে সুইচ বোর্ডের সাইজ নির্ধারণ করা হয়। সুইচবোর্ড সাধারণত শক্ত প্লাস্টিক বা এবোনাইট দিয়ে তৈরি হয়। সুইচ, সকেট, ফ্যান, রেগুলেটর প্রভৃতি স্থাপন করার জন্য সুইচবোর্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্থাপনযোগ্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সাইজের সুইচবোর্ড পাওয়া যায়। সুইচবোর্ডে সুইচ, সকেট, ফিউজ, ফ্যান রেগুলেটর ইত্যাদি বসানোর জন্য খাঁজ কাটা থাকে। খাঁজ কাটা ছাড়াও বিভিন্ন মাপের বোর্ড পাওয়া যায়। নিচের চিত্রে সুইচসহ ১০০ মি. মি. x ১৫০ মি. মি. (৪ ইঞ্চি ২৬ ইঞ্চি) সাইজের একটি সুইচ বোর্ড দেখানো হয়েছে।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপনের জন্য নিম্নলিখিত পরিমাপের সুইচবোর্ড বাজারে পাওয়া যায়-
৭৫ মি. মি.×৭৫ মি:মি: (৩"x৩"),
১০০ মি. মি.×১৫০ মি. মি. (4"x6"),
১২৫ মি. মি. x ২০০ মি: মি: (৫" x ৮"),
২০০ মি. মি. x ২৫০ মি. মি. (৮"x১০")
সুইচবোর্ড স্থাপনের ধাপসমূহ-
১। নিৰ্দিষ্ট সুইচবোর্ড, সুইচ ও টুলস বাছাই করতে হবে।
২। সুইচবোর্ডে সুইচ স্থাপনের জন্য মাপমত কাটতে হবে।
৩। সুইচের কস্তার বা ঢাকনা খুলতে হবে।
৪। সুইচের অবস্থা চিহ্নিত করে ভারের জন্য বোর্ডে ছিদ্র করতে হবে।
৫। প্রয়োজনীয় দৈর্ঘ্যের ইনসুলেশন খুলে ইনসুলেশন যুক্ত অংশটি পরিষ্কার করতে হবে।
৬। ছিদ্র দিয়ে তার ঢুকানোর জন্য টার্মিনাল পোস্টে সংযোগকারী স্ক্রু গুলো ঢিলা করতে হবে।
৭। টার্মিনাল পোস্টে তার সম্পূর্ণভাবে লাগিয়ে ড্র গুলো শক্তভাবে আটকাতে হবে।
হোন্ডার এমন একটি সরঞ্জাম যা একটি বাতিকে আটকিয়ে বা ধরে রাখে। হোল্ডার এর মধ্যে ইলেক্ট্রিক বাতি ঢুকিয়ে বা স্থাপন করে বাতি জ্বালানো হয়।
বৈদ্যুতিক তারের সাথে বাতি লাগানোর জন্য যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয় তাকে হোল্ডার বলে। বাল্ব আটকানোর জন্য ল্যাম্প হোল্ডার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফিটিংস। আজকাল বিভিন্ন গঠন ও আকারের ল্যাম্প হোল্ডার পাওয়া যায় ।
গঠন ও ব্যবহার এর উপর নির্ভর করে হোল্ডার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- ব্যাটেন হোল্ডার, পেনডেন্ট হোল্ডার, ব্রাকেট হোল্ডার, ফ্লোরোসেন্ট ল্যাম্প হোল্ডার, স্যুইভেল হোল্ডার, পুশ-পুল হোল্ডার, কী সুইচ হোল্ডার ইত্যাদি।