কাটিং টুল গ্রাইন্ডিং করার ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জনে তোমরা সিলোল পয়েন্ট কাটিং টুল বা লেদ টার্নিং টুল এবং মাল্টিপয়েন্ট কাটিং টুল গ্রাইন্ডিং এর জন্য একটি টুইট ছিল বিট গ্রাইন্ডিং করবে।
আমরা জেনেছি সিঙ্গেল পয়েন্ট কাটিং টুলের একটি মাত্র কাটিং এজ ও বডি বা শ্যাঙ্ক থাকে। এই টুল লেদ, টারেট লেদ, প্লেনার, শেপার, বোরিং ও মিলিংসহ একই ধরনের সিঙ্গেল ও মাল্টিপয়েন্ট কাটিং টুল বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। সিঙ্গেল পরেন্ট কাটিং টুলের কাটিং পয়েন্ট কাটিং ফেস, এক ফ্ল্যাঙ্ক, সাইড ফ্ল্যা এবং বেজ নিয়ে গঠিত। চিপস ফেসের উপর দিয়ে পড়িয়ে বের হয়। কাটিং টুলে দুটি এজ থাকে, একটি সাইট কাটিং এজ, অন্যটি এন্ড কাটিং এজ। সাইড কাটিং এজটি ফেস ও ক্ল্যাঙ্ক এর মিলিতস্থান; ভল্লুপ এন্ড কাটিং একটি ফ্ল্যাঙ্ক ও বেজের এর মিলিতস্থান। এন্ড কাটিং এজ এবং সাইড কাটিং এজের মিলিত স্থানকেই নোজ পয়েন্ট বলে। সচারচর সাইড কাটিং এজ দিয়েই চিপস কাটা হয়।
কোন কিছুকে ক্ষয় করার একটি প্রক্রিয়ার নাম গ্রাইন্ডিং; ক্ষয়কারী টুল হিসাবে গ্রাইন্ডিং হুইল ব্যবহার করা হয়। হুইল সাধারণত ক্ষয়কারী ও নিজে ক্ষয়রোধী বৈশিষ্ট্য পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়। ইহা সাধারণত শক্ত পাথর কণা, কার্বন, কাৰ্বাইড, সংকর ধাতু ইত্যাদি পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়। গ্রাইন্ডিং হুইলের ধরন অনুযায়ী কোন বস্তু হতে ঘর্ষণের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় পাদার্থ দ্রুত অপসারণ করা যায়, ঠিক তেমনি কোন অমসৃণ ভলকে বিভিন্ন মানে মসৃনও করা যায়।
গ্রাইন্ডিং হুইল সাধারণত কার্যবস্তুর উপাদানের মসৃণতার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সংকর পদার্থের মিশ্রনে তৈরি হয়ে থাকে। গ্রাইন্ডিং হুইলের পরিমাপের ক্ষেত্রে বাহিরের ব্যাস, হুইলের পুরুত্ব ছিদ্রের ব্যাস দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
যেমন- ১৫০ মিমি x ২৫ মিমি x ৩০ মিমি হুইল বলতে বোঝায়- বাহিরের ব্যাস ১৫০ মিমি, পুরুত্ব ২৫ মিমি ও ছিদ্রের ব্যাস ৩০ মিমি ।
গ্রাইন্ডিং কাজে ব্যবহৃত গ্রাইন্ডিং মেশিন ও হুইলের নিরাপদ অবস্থান প্রয়োজন। যে গ্রাইন্ডিং করবে তাকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে, ঠিক তেমনি গ্রাইন্ডিং মেশিনেরও নিরাপত্তা সরগ্রাম থাকতে হবে। সচারচর গ্রাইন্ডিং মেশিনের সাথে নিম্নে বর্ণিত সেফটি সামগ্রী সংযুক্ত করা থাকে।
• বাই শিল্ড (Bye Shield) বা ফেস পার্ড (Face Guard)
• হুইল গার্ড (Wheel Guard)
• ওয়েলকার্ড (Wheel Cruard) ইত্যাদি।
আই শীল্ড অপারেটরের চক্ষুকে হুইলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অ্যাব্রোসিড (Abrasive) কণা এবং ধাতুচুর্ণ হতে রক্ষা করে। আই শীল্ড স্বচ্ছ ও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন। কার্যবস্তুকে উত্তমরূপে দেখার জন্য অনেক ক্ষেত্রে আই শীল্ডের নিচের দিকে বৈদ্যুতিক বাহু লাগানোর ব্যবস্থা থাকে। আই শীল্ডের অবস্থান সবসময় কার্যবস্তু এবং অপারেটরের চক্ষুর মধ্যবর্তী অবস্থান নিশ্চিত করতে হয়।
কোনো বস্তুকে ঘুরন্ত গ্রাইন্ডিং হুইলের সংস্পর্শে আসতে হুইল গার্ড বাধা দেয় এবং হুইলকে বাহ্যিক আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া কোন দুর্ঘটনার কারণে ঘুরন্ত হুইল ভেঙ্গে গেলে এর ভগ্নাংশ যাতে চারদিকে ছিটে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে হইল পার্ড সাহায্য করে।
টুল রেস্ট এমন এক ধরনের সাপোর্ট যা কার্যবস্তুকে টুল রেস্টের উপর রেখে নিরাপদে গ্রাইন্ডিং করা হয় এবং ইহা কাটিং টুল বা কার্যবস্তুকে নিরাপত্তার সাথে কাজ করতে সাহায্য করে। টুল রেস্ট ও হুইলের মধ্যে খুবই কম ফাঁকা থাকে; ফলে গ্রাইন্ডিং হুইল টুল রেস্টকে প্রায় স্পর্শ করে ঘুরে কিন্তু কোন বিপদের সম্ভাবনা থাকেনা।
গ্রাইন্ডিং হইল তৈরিতে বন্ডিং পদার্থের সাথে ক্ষয়কারী পদার্থের কথা ব্যবহার করা হয়। যেমন-
• অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Aluminium Oxide)
• সিলিকন কার্বাইড (Silicon Carbide)
• ডায়মন্ড (Diamond) ইত্যাদি।
গ্রাইন্ডিং হুইল তৈরিতে ব্যবহৃত বন্ডিং পদার্থ যেমন-
• ভিটরিফাইড (Vitrified)
• রেজিনয়েড (Resinoid)
• সিলিকেট (Silicate)
• শেলাক (Shellac)
• রাবার (Rubber) ইত্যাদি।
অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড একটি মজবুত ও সূঁচালো অ্যাব্রোসিড (Abrasive) পদার্থ। ইহা দিয়ে তৈরি গ্রাইন্ডিং হইল উচ্চ টেনসাইল স্ট্রেংথ (Tensile Strength) বিশিষ্ট ধাতুকে ক্ষয় করতে ব্যবহৃত হয়। যেমন-কার্বন স্টিল, অ্যালয় স্টিল, শক্ত ও নরম স্টিল, রট আয়রন, ব্রোঞ্জ ইত্যাদি। অ্যাব্রোসিভ এর আকার বড় হলে ধাতুকে দ্রুত কাটিং বা ক্ষয় করা যায় এবং ছোট হলে ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়। এতে কার্যবস্তুর পৃষ্ঠতল অপেক্ষাকৃত বেশি মসৃণ ও সুন্দর করা যায়।
সিলিকন কার্বাইড অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড থেকে অনেক শক্ত এবং ভঙ্গুর হয়। এর সাহায্যে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডকেও কাটা যায়। এটি কম টানা বল (লো টেনসাইল স্ট্রেংথ) বিশিষ্ট ধাতু যেমন- ঢালাই লোহা, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, রাবার, টাংস্টেন কার্বাইড, মার্বেল, সিরামিক, ম্যাগনেসিয়াম, প্লাস্টিক, ফাইবার ইত্যাদি গ্রাইন্ডিং করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
ডায়মন্ড সাধারণত দুই প্রকারের হয়
• কৃত্রিম ডায়মন্ড (Artificial Diamond )
• প্রাকৃতিক ডায়মন্ড (Natural Diamond)
খনি থেকে প্রাকৃতিক ডায়মন্ড পাওয়া যায় এবং ইহার মূল্য অনেক বেশি। এর সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার মূল্যবান এবং আকর্ষণীয় অলংকার সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়। কৃত্রিম ডায়মন্ড শিল্প কারখানায় তৈরি করা হয় ফলে এর মূল্য কম। এর গুণগত মান প্রায়ই একই রূপ বিধায় গ্রাইন্ডিং হুইল উৎপাদন শিল্পে প্রাকৃতিক ডায়মন্ডের তুলনায় কৃত্রিম ডায়মন্ডের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়মন্ড সবচেয়ে শক্ত পদার্থ। মিতব্যয়িতার জন্য ডায়মন্ড হইল সম্পূৰ্ণৰূপে কৃত্রিম ডায়মণ্ড কথা ও ৰন্ডিং মেটেরিয়ালের সাহায্যে তৈরি করা হয়।
গ্রাইন্ডিং মেশিনের কাঠামো অনুসারে সাধারণত চার ভাগে ভাগ করা যায়-
• বেঞ্চ (Bench) গ্রাইন্ডার
• প্যাডেস্টাল (Pardestal) গ্রাইন্ডার
• টুল অ্যান্ড কাটিং (Tool and Cut) গ্রাইন্ডার
● হ্যান্ড (Hand) গ্রাইন্ডার ইত্যাদি।
গ্রাইন্ডিং কাজ করতে করতে যখন গ্রাইন্ডিং পাথরের ধারালো নষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ অ্যাব্রোসিভ গ্ৰেইনগুলি ভোঁতা হয়ে যায়; তখন গ্রাইন্ডিং হুইল দিয়ে কাজ ভাল হয় না। তখন ড্রেসার হুইলের মাধ্যমে ড্রেসিং করে নষ্ট গ্রেইনগুলি অপসারণ করে পুনরায় কার্যক্রম করার পদ্ধতিকেই ড্রেসিং বলে। যে টুলের মাধ্যমে গ্রাইন্ডিং হুইল ফ্লেসিং করা হয় তাকেই গ্রাইন্ডিং হুইল ড্রেসার বলে।
ট্রয়িং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রাইন্ডিং হইলে বিকৃত আকারকে ঠিক করা হয়। প্রাইভিং করতে করতে হুইলের আকৃতি নষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ আৱাসিড গ্রেইনগুলি এগ্রোথেরো হয়ে গ্রাইন্ডিং হুইলের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যায় তখন ড্রয়িং করে ফুল আকৃতিতে ফিরে আনা হয়।
আরও দেখুন...