কুরআন মজিদ আল্লাহর কালাম। সর্বশেষ আসমানি কিতাব। মহানবির (স) এর উপর নাজিল হয় এ কিতাব।
আমাদের জন্য কুরআন মজিদে বলে দেয়া হয়েছে আমরা দুনিয়াতে কীভাবে শান্তিতে বসবাস করব, কী কাজ করলে আখিরাতে শান্তি পাব, কীভাবে আল্লাহর ইবাদত করব, কোন কাজ অন্যায়, কোন কাজে শাস্তি হবে এ সবকিছু কুরআন মজিদে আছে।
আমরা কুরআন মজিদ শুদ্ধ করে শিখব। অপরকে শিখাব। কুরআন মজিদের নির্দেশমতো চলব।
সালাতে কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা ফরজ। তাই তিলাওয়াত শুদ্ধ হওয়া দরকার। মহানবি (স) বলেছেন, “ তোমাদের মধ্যে সে উত্তম যে নিজে কুরআন শিখে এবং অপরকে শিখায়”।
পরিকল্পিত কাজ : শিক্ষার্থীরা কুরআন মজিদ শিক্ষা সম্বন্ধে মহানবি (স)- এর বাণীটি খাতায় সুন্দর করে লিখবে। |
কুরআন মজিদের ভাষা আরবি। আরবি পড়তে হয় ডান দিক থেকে। আরবিতে মোট ২৯টি হরফ বা অক্ষর আছে।
আরবি হরফগুলোর নাম বলো :
খালি ঘরগুলোতে আরবি হরফ বসাও
৩। হরফের উপর পেশ থাকলে উচ্চারণে
পরিকল্পিত কাজ: শিক্ষার্থীরা হরকতযুক্ত আরবি বর্ণগুলো খাতায় সুন্দর করে লিখবে। |
আমরা জানি জযম ^ যুক্ত হরফকে সাকিন বলে। যথা :
জযম-এর আকৃতি সাধারণত ^ এরূপ হয় । তবে , এভাবেও লেখা হয় ।
এবার আমরা জযমযুক্ত হরফের চার্টটি পড়ব :
এবার খালি হরফে জযম বসাও :
পরিকল্পিত কাজ: শিক্ষার্থীরা জযমযুক্ত আরবি কয়েকটি শব্দ খাতায় সুন্দর করে লিখবে। |
একই হরফ পাশাপাশি দুবার উচ্চারণ করাকে তাশদীদ বলে। তাশদীদের চিহ্ন এরূপ।
ان + نَ - اَنَّ = আলিফ নূন যবর আন, নূন যবর না = আন্না
رَبِّ + بَ = رَبِّ = রা বা যবর রাব, বা যবর বা = রাব্বা
এবার আমরা তাশদীদসহ চার্টটি পড়ব :
এবার এগুলো দেখ এবং খালি হরফে হরকতসহ তাশদীদ বসাও :
পরিকল্পিত কাজ: শিক্ষার্থীরা তাশদীদযুক্ত পাঁচটি শব্দ খাতায় সুন্দর করে লিখবে। |
কুরআন মজিদের কোনো কোনো হরফ টেনে পড়তে হয়। এই টেনে পড়াকে মাদ্দ বলে।
যথা : حم الم
মাদ্দ-এর আরও কিছু চিহ্ন আছে। যেমন :
১। খাড়া যবর ।
কোনো হরফের উপর । এরূপ চিহ্ন থাকলে সে হরফটিকে একটু টেনে পড়তে হয়।
যথা : طه তোয়া খাড়া যবর তোয়া, হা খাড়া যবর হা = তোয়া-হা
এবার খাড়া যবরযুক্ত কয়েকটি শব্দ পড়ব।
কুরআন মজিদের ভাষা আরবি। আমাদেরকে আরবি ভাষা শিখতে হবে। আমরা আরবি হরফের সঠিক উচ্চারণ শিখব। সঠিক উচ্চারণে কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা প্রয়োজন। এতে অর্থ ঠিক থাকে। সালাত শুদ্ধ হয়। আল্লাহ পাক খুশি হন। আর সঠিক উচ্চারণে তিলাওয়াত না করলে অর্থ ঠিক থাকে না। সালাতও শুদ্ধ হয় না।
কুরআন মজিদ শুদ্ধভাবে তিলাওয়াতের জন্য যে নিয়ম রয়েছে তাকে তাজবীদ বলে।
মহানবি (স) বলেছেন, “কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করলে প্রত্যেক হরফের জন্য ১০টি সাওয়াব পাওয়া যায়।”
মাখরাজঃ
আরবি হরফ মুখের বিভিন্ন স্থান থেকে উচ্চারিত হয়। যেমন, কণ্ঠনালি, জিহ্বা, তালু, দাঁত ও ঠোঁট।
হরফ উচ্চারণের স্থানকে মাখরাজ বলা হয়। আরবি হরফের মাখরাজ ১৭টি। এ সম্পর্কে আমরা বড় হলে জানতে পারব।
ইদগামঃ
কাছাকাছি উচ্চারণের দুটি হরফকে যুক্ত করে পড়াকে ইদগাম বলে। যথা:
فَهُمْ مُسْلِمُونَ = ফাহুম মুসলিমুন। এখানে মীম হরফটি পরবর্তী মীম-এর সাথে ইদগাম হয়েছে।
مِنْ رَّبِّ = মির রাব্বি। এখানে নূন হরফটি পরবর্তী রা -এর সাথে ইদগাম হয়েছে।
مِنْ مِثْلِه = মীম মিসলিহী। এখানে নূন হরফটি পরবর্তী মীম-এর সাথে ইদগাম হয়েছে।
আমরা এখন নিম্নের শব্দগুলো ইদগামসহ পড়ব ।
غَفُورٌ رَّحِيمُ গাফুরুর রাহীম | مِنْ مَّرْقَدِنَا মিম মারকাদীনা | مَنْ يَقُولُ মাইয়াকূলু |
وَلَمْ يَكُن لَّهُ ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহ্ | إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ইন কুনতুম মু'মিনীন | مِنْ رِزْقٍ মিররিকিন |
ইযহার শব্দের অর্থ প্রকাশ করা। বর্ণে বা হরফের মাখরাজ অনুযায়ী স্পষ্ট করে উচ্চারণ করা। নূন সাকিন এবং তানবীন-এর পর যদি হরফে হালকির যেকোনো একটি হরফ থাকে তখন নূন সাকিন বা তানবীনকে গুন্নাহ ও ইখফা ছাড়া নিজ মাখরাজ অনুসারে স্পষ্ট করে পড়াকে ইযহার বলে।
হরফে হালকি ৬ টি। যথা :
পরিকল্পিত কাজ : শিক্ষার্থীরা ইযহারের উচ্চারণের একটি চার্ট তৈরি করবে। |
আরবি বর্ণের শব্দ
নিচে ৪টি চার্ট দেয়া হলো। এগুলো সঠিক উচ্চারণে পড় :
চার্ট-২
চার বর্ণের শব্দ
পাঁচ বর্ণের শব্দ
ছয় বর্ণের শব্দ
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا O
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًان
বাংলা উচ্চারণ
ইযা জাআ নাসরুল্লাহি ওয়ালফাতহু। ওয়ারাআইতান নাসা ইয়াদখুলূনা ফী দীনিল্লাহি আফওয়াজা। ফাসাব্বিহ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াসতাগফিরহু। ইন্নাহু কানা তাওওয়াবা ।
অর্থ : ১. যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে।
২. এবং তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবে।
৩. তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা কর, তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর, তিনি তো তওবা কবুলকারী।
পরিকল্পিত কাজ: শিক্ষার্থীরা সূরা আন নাসর বাংলা উচ্চারণে লিখবে। |
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
تبت يدا أبِي لَهَبٍ وَتَبَ - مَا أَغْنى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ - سَيَصْلَى نَارًا ذَاتَ
لَهَبٍ ، وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ : فِي جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ :
বাংলা উচ্চারণ
তাব্বাত ইয়াদা আবি লাহাবিও ওয়াতাব্বা। মা আগনা আনহু মালুহু ওমাকাসাব। সাইয়াসলা নারান যাতা লাহাবিও ওয়ামরাতুহু, হাম্মালাতাল হাতাব। ফী জীদিহা হাবলুম মিম মাসাদ।
অর্থ : ১. ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দুই হাত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও ।
২. এর ধন-সম্পদ ও এর উপার্জন তার কোনো কাজে আসে নি ।
৩. অচিরেই সে দগ্ধ হবে লেলিহান অগ্নিতে
৪. এবং তার স্ত্রীও— যে ইন্ধন বহন করে
, ৫. তার গলদেশে পাকানো রজ্জু।
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
قُلْ هُوَ اللهُ اَحَدُ اللهُ الصَّمَدُ لَمْ يَلِدُهُ
وَلَمْ يُولَدُ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
বাংলা উচ্চারণ
কুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুস সামাদ। লাম ইয়ালিদ; ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ ৷
অর্থ : ১. বলো, তিনি আল্লাহ, একক।
২. আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন ৷
৩. তাঁর কোনো সন্তান নাই এবং তিনি কারও সন্তান নন।
8. এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নাই ।
আরও দেখুন...