কোষ (পাঠ-১)

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - উদ্ভিদ ও প্রাণীর কোষীয় সংগঠন | NCTB BOOK
461
Summary

জীবদেহের গঠন ও কার্যক্রমের একক হচ্ছে কোষ। বেশ কিছু জীব এককোষী, যেমন: ব্যাকটেরিয়া ও প্রোটোজোয়া, আর কিছু জীব বহুকোষী, যেমন মানুষ, গাছ, ও পাখি। কোষগুলো একত্রে কাজ করে জীবদেহ গঠন করে, যা ইট দিয়ে তৈরি ভবনের মতো। কোষ হল আণুবীক্ষণীক বস্তু এবং এগুলোকে প্রথম দেখেন ইংরেজ বিজ্ঞানী রবার্ট হুক ১৬৬৫ সালে একটি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে।

অণুবীক্ষণ যন্ত্র ক্ষুদ্র বস্তুকে বড় আকারে দেখার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটির উন্নতিতে অ্যান্টনি ফন লিউয়েনহুকের অবদান ছিল। বর্তমানের উন্নত অণুবীক্ষণ যন্ত্রগুলো এককোষী থেকে বহুকোষী জীবের কোষ পর্যবেক্ষণে সহায়তা করে। কোষের মধ্যে আকৃতির বৈচিত্র্য দেখা যায়, কিছু কোষ লম্বা, গুছালো বা পরিবর্তনশীল আকৃতির হয়।

কর্ম: শিক্ষকের সাহায্যে একটি অণুবীক্ষণ যন্ত্র পর্যবেক্ষণ করে বিভিন্ন অংশের নাম লিখুন।

জীবদেহের গঠন ও কাজের একক কোষ। পৃথিবীতে অনেক জীব আছে যারা একটি মাত্র কোষ দিয়ে গঠিত। যেমন: ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি। আবার অনেক জীব বহুসংখ্যক কোষ দিয়ে গঠিত। যেমনঃ মানুষ, গাছ, পাখি দেহ অসংখ্য কোষ দিয়ে গঠিত। কোষ একটির সাথে আরেকটি যুক্ত হয়ে জীবদেহ গঠন করে। এটি অনেকটা ইট দিয়ে তৈরি করা ভবনের মতো ।

তোমার স্কুলের ভবনটির কথা ভাবো। একতলা হোক বা পাঁচতলা, এই ভবনটি কিন্তু তৈরি হয়েছে একের পর এক ইট গেঁথে। তাই ইটগুলোকে আমরা বলতে পারি ভবন তৈরির একক। ঠিক এমনিভাবে আমাদের জানা অজানা যত ছোটো ও বড়ো জীব আছে তাদেরও গঠনের মূলে রয়েছে কিছু গাঠনিক একক। তোমার সম্পূর্ণ শরীর, প্রিয় পোষা প্রাণী কিংবা মাঠের গাছ সবকিছুর গঠনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে ওই এককসমূহ।

জীবজগতের অধিকাংশ উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহ বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য কোষ দিয়ে গঠিত। জীবের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শারীরবৃত্তীয় বিভিন্ন কাজে কোষগুলো যুক্ত থাকে। কাজের উপর ভিত্তি করে বহুকোষী জীবে কোষের আকৃতি নানা রকমের হয়ে থাকে। বহুকোষী একটি জীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য সব ধরনের কোষেরই সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন এবং সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়।
কোষ আণুবীক্ষণীক বস্তু। অর্থাৎ, অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া কোষ দেখা যায় না। ইংরেজ বিজ্ঞানী রবার্ট হুক সর্বপ্রথম অণুবীক্ষণ যন্ত্রে কোষ প্রত্যক্ষ করেন। ১৬৬৫ সালে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে বোতলের ছিপি পরীক্ষা করার সময় তিনি মৌচাকের ন্যায় অসংখ্য কুঠরি পরপর সাজানো দেখতে পান। তিনি বোতলের ছিপির গঠনকারী এই এককগুলোর নাম দেন কোষ।

অণুবীক্ষণ যন্ত্র
অণুবীক্ষণ যন্ত্র এমন এক প্রকার যন্ত্র যা দিয়ে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকে বড়ো আকারে দেখা যায়। অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কৃত হয় ষোড়শ শতাব্দীতে। পরবর্তীতে এন্টনি ফন লিউয়েন হুক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এরপর আরও অনেকের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে বর্তমান সময়ের যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে আমরা খুব সহজেই এককোষী ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে বহুকোষী উদ্ভিদ এবং প্রাণীর কোষ পর্যবেক্ষণ করতে পারি।

বৃহদাকার জীবদেহেও ছোটো আকারের অসংখ্য কোষ থাকে। একটি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে তুমি যদি বিভিন্ন কোষের দিকে তাকাও, দেখতে পাবে যে বিভিন্ন কোষের আকৃতিতে ভিন্নতা রয়েছে। কিছু কোষ লম্বাকৃতির, কিছু দেখতে গোলাকার কিংবা দণ্ডাকার, সহ বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। কিছু কোষ আছে যার কোনো নির্দিষ্ট আকৃতি নেই, অর্থাৎ এদের আকৃতি পরিবর্তনশীল।

কাজ: শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে একটি অণুবীক্ষণ যন্ত্র পর্যবেক্ষণ কর এবং বিভিন্ন অংশের নাম লিখ।
Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...