আমরা আগে বলেছি কাজ করার সামর্থ্য হচ্ছে শক্তি। আমরা সবাই জানি কোনো বস্তু গতিশীল হলে সেটা অন্য বস্তুকে ধাক্কা দিয়ে সেটাকেও গতিশীল করে খানিকটা দূরত্ব ঠেলে নিয়ে যেতে পারে। অন্য বস্তুকে গতিশীল করে ফেলার অর্থ নিশ্চরই সেখানে বল প্ররোগ হয়েছে এবং সেই বলের জন্য খানিকটা দূরত্ব যাওয়ার অর্থ নিশ্চয়ই সেখানে কাজ হয়েছে। কাজেই আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি
গতির জন্য বস্তুর যে শক্তি হয় সেটা নিশ্চয়ই এক ধরনের শক্তি বা গতিশক্তি। আগের অধ্যায়ে আমরা বলেছি যে আমরা রাস্তাঘাটে যে ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটতে দেখি সেখানে যে ক্ষয়ক্ষতি হয় তার প্রধান কারণ এই গতিশক্তি। একটা বাস-ট্রাক বা গাড়ি যখন প্রচণ্ড বেগে ছুটতে থাকে তখন তার অনেক বড় গতিশক্তি থাকে। দুঘর্টনার সময় এই পুরো শক্তিটার কারণে গাড়ি ভেঙেচুরে যায়, প্রচণ্ড ধাক্কায় মানুষ মারা যায়।
একটা বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে কাজ করা হলে সেখানে কতটুকু গতিশক্তি হবে সেটা আমরা খুব সহজে বের করতে পারি।
ধরা যাক F বল প্রয়োগ করে m ভরের একটা বস্তুকে s দূরত্ব সরানো হলো। তাহলে এই F বলের সম্পাদিত কাজ W হচ্ছে
নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র থেকে আমরা জানি F = ma গতির সমীকরণ থেকে আমরা জানি স্থির অবস্থা থেকে শুরু করা হলে
এবং
কাজ
কাজেই আমরা বলতে পারি F বল কোনো বস্তুকে s দূরত্বে নিয়ে গেলে তার ভেতরে যে শক্তির সঞ্চার হয় সেটি
হচ্ছে
গতিশক্তিতে v টি বর্গ হিসেবে আছে, কাজেই কোনো বস্তুর গতিশক্তিকে দ্বিগুণ বাড়াতে আমাদের চার গুণ বেশি শক্তি দিতে হয়।
গতির সমীকরণ শেখার সময় আমরা দেখেছিলাম
দুইপাশে ½m দিয়ে গুণ করলে সূত্রটি দাঁড়ায়:
ma এর পরিবর্তে যদি আমরা F লিখি এবং Fs এর পরিবর্তে W লিখি তাহলে সূত্রটি দাঁড়ায়:
অর্থাৎ কোনো বস্তু যদি u বেগে থাকে তাহলে তার গতি এবং তার উপর W কাজ করা হলে গতিশক্তি বেড়ে হয় গতির এই সমীকরণটি উল্লেখ করার সময় আমরা বলেছিলাম যে পরে আমরা এর একটি চমকপ্রদ রূপ দেখব। এটি হচ্ছে সেই রূপ অর্থাৎ গতির সমীকরণটি আসলে গতিশক্তির একটি সমীকরণ ছাড়া কিছু নয়।
আরও দেখুন...