রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের সেরা কবি। তিনি কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক-সহ সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় অবদান রেখেছেন। ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান। তাঁর লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।
তোমাদের পড়ার জন্য নিচে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি গান নেওয়া হলো। গানটি তাঁর ‘রাজা’ নাটক থেকে নেওয়া হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে,
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বতে। -
আমরা সবাই রাজা।
আমরা যা খুশি তাই করি,
তাঁর খুশিতেই চরি,
আমরা নই বাঁধা নই দাসের রাজার গ্রাসের দাসত্বে,
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে-
আমরা সবাই রাজা।
রাজা সবারে দেন মান,
সে মান আপনি ফিরে পান,
মোদের খাটো করে রাখেনি কেউ কোনো অসত্যে,
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে।–
আমরা সবাই রাজা।
আমরা চলব আপন মতে,
শেষে মিলব ভারি পথে।
মোৱা মরব না কেউ বিফলতার বিষম আবর্তে,
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী সত্বে।-
আমরা সবাই রাজার
শব্দের অর্থ
চরি= ঘুরে বেড়াই।
মোদের= আমাদের।
দাসত্ব= পরাধীনতা।
সনে= সাথে।
বিফলতা= ব্যর্থতা।
স্বত্ব= অধিকার।
বিষম আৰত= ভীষণ ঘূর্ণিপাক।
গান গাই
শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটি সবাই মিলে গাও।
গান বুঝি
উপরের গানে কী বলা হয়েছে, তা দলে আলোচনা করে বোঝার চেষ্টা করো। কোন দল কেমন বুঝতে পেরেছে, তা যাচাই করার জন্য এক দল অপর দলকে প্রশ্ন করবে। এজন্য আগেই দলে আলোচনা করে কাগজে কিছু প্রশ্ন লিখে রাখো।
বুঝে লিখি
“আমরা সবাই রাজা’ গানটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো।
গানের বৈশিষ্ট্য খুঁজি
কবিতার সাথে গানের কী কী পার্থক্য আছে, দলে আলোচনা করে বের করো। গানের কিছু সাধারণ বৈশিষ্টা আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার চেষ্টা করো।
ক্রম | প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
---|---|---|---|
১ | পরপর দুই লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? | ||
২ | হাতে তালি দিয়ে নিয়ে কি পড়া যায়? | ||
৩ | লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের? | ||
৪ | লাইনগুলো কি সুর করে পড়া যায়? | ||
৫ | এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা ? | ||
৬ | কি গদ্য ভাষায় লেখা? | ||
৭ | এর মধ্যে কি কোনো কাহিনি আছে? | ||
৮ | এর মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে? | ||
৯ | এখানে কি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে? | ||
১০ | এটি কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা? | ||
১১ | এর মধ্যে কি কোনো সংলাপ আছে? | ||
১২ | এটি কি অভিনয় করা যায়? |
গান কী
কোনো একটা ভাব বা বিষয় নিয়ে গান রচিত হয়। কবিতার মতো গানও ভাল নিয়ে পড়া যায়। গানেও এক লাইনের শেষ শব্দের সঙ্গে পরের লাইনের শেষ শব্দে মিল থাকে। তবে কোনো একটা মিল গানের মধ্যে বারে বারে ফিরে আসে।
কবিতা আবৃত্তি করা হয়; গান গাওয়া হয়। গানের সুর ও তাল ঠিক রাখার জন্য নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্রের প্রয়োজন হয়ে থাকে। এর মধ্যে সুর ঠিক রাখার জন্য হারমোনিয়াম, পিয়ানো ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়; অন্যদিকে তাল ঠিক রাখার জন্য তবলা, ঢোল ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
যিনি গান লেখেন, তাঁকে বলা হয় গীতিকার। যিনি গানে সুর দেন, তাঁকে বলা হয় সুরকার। আর যিনি গান গেয়ে শোনান, তাঁকে বলা হয় গায়ক বা শিল্পী।
আরও দেখুন...