কৃষি সমবায় সম্পর্কে এ পর্যন্ত যে আলোচনাগুলো হলো সেগুলো বিবেচনায় নিলে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারি যে, কৃষি সমবায় একটি সমন্বিত কার্যক্রম । সমবায়ের ভিত্তিতে কৃষি উৎপাদনে সক্রিয় হওয়ার পূর্বে এ বিষয়ে আগ্রহী ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে এই মহৎ কর্মযজ্ঞের সূচনা হয় মাত্র । দ্বিতীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো জমি ও অর্থ সমবায়ে যুক্ত করা । তারও আগে দরকার সমবায়ের মূল শর্ত তথা বিধিগুলো আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সমবায় অধিদপ্তরের নিকটবর্তী দপ্তরের সহযোগিতাও চাওয়া যেতে পারে । পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে উপজেলা কৃষি, পশুপালন ও মৎস্য কর্মকর্তাদের । সমবায় অধিদপ্তর প্রণীত কৃষি সমবায়ের গঠন প্রণালি অনুসরণ করে সমবায় সংগঠন গড়ে তুলে তা যথানিয়মে নথিভুক্ত করা প্রয়োজন । শুধু এক সাথে কৃষিকাজ করার জন্য একমত হয়ে, কোনো সংগঠন না গড়ে নিলে এইরূপ সমবায় বেশি দূর এগোতে পারে না । বরং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে এর অকাল মৃত্যু ঘটাই স্বাভাবিক । মোদ্দা কথা হলো, সমগ্র কৃষিকাজ, কৃষি পণ্য উৎপাদন ও বিপণনের জন্য একটি দক্ষ সংগঠন গড়ে তোলা প্রয়োজন । প্রকৃতপক্ষে এটিই সমবায় সংগঠন । কৃষি পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণন সকল হিসাব পাই পাই রক্ষা করবে এই সংগঠন । মুনাফা প্রত্যেক সমবায়ীর বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী বণ্টনের দায়িত্বও এই সমবায় সংগঠন পালন করে । সরকারের বা সরকারি বে-সরকারি সেবা সংস্থাগুলোর অনুদান, ভর্তুকি, সেবা গ্রহণ করবে এবং হিসাব রাখবে । কৃষি পণ্য ক্রেতা সংস্থা, কোম্পানি বা ব্যক্তির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করবে এবং তদানুযায়ী ব্যবসা করবে। সমবায়ীদের সাধারণ সভার কাছে সমবায়ের কার্যনির্বাহী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে এবং সমূহ হিসাব উপস্থাপন করবে।
তাই আমরা দেখতে পাচ্ছি সমবায় সংগঠন কৃষি সমবায়ের হৃৎপিণ্ড । এই সংগঠন যত দক্ষ, সৎ ও শক্তিশালী হবে সমবায়ীরা ততই লাভবান হবেন ।
কাজ : শিক্ষার্থীরা কৃষি সমবায়ের উপযোগিতা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে এবং উপস্থাপন করবে। |