জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভালো। (ভাব-সম্প্রসারণ)

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৫) - বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (নতুন সংস্করণ) ভাব-সম্প্রসারণ | - | NCTB BOOK
416
416

জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভালো।

ভাব-সম্প্রসারণ: কর্মের দ্বারাই মানুষ পৃথিবীর বুকে সম্মান ও প্রতিষ্ঠা পায়। কোনো মানুষের জন্ম যে বংশেই হোক না কেন, কাজই তার পরিচয় নির্ধারণ করে।

প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী মানুষকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়। তখন পিছনে পড়ে থাকে তার ভালো-মন্দ সব ধরনের কাজ। কাজ ভালো হলে বহু কাল যাবৎ মানুষ তা মনে রাখে। আর কাজ খারাপ হলে যুগ যুগ ধরে সকলে তার নিন্দা করে। বংশমর্যাদার উপরে এইসব সুনাম বা দুর্নাম নির্ভর করে না। বংশে কেউ একজন সুনাম করলে সেই বংশের মর্যাদা বাড়ে। তবে তার অর্থ এই নয় যে, এই মর্যাদা চিরস্থায়ী। কেননা, একই বংশে কোনো কুলাঙ্গার জন্ম নিলে সেই মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হতে পারে। আবার, অনেকে খুব সাধারণ পরিবারে জন্ম নিয়েও নিজ নিজ কৃতিত্বের জন্য পৃথিবীতে অমর হয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন, আবার কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেছেন দরিদ্র পরিবারে। এ দুজন ব্যক্তি বংশ পরিচয়ে নয়, বরং কর্ম দ্বারা মানুষের কাছে পরিচিত হয়েছেন।

মানুষের পরিচয় কখনোই তার বংশ বা পরিবারের মর্যাদা-অমর্যাদার উপর নির্ভর করে না - নির্ভর করে তার নিজ নিজ কর্ম ও সুকৃতির উপর। বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্প, মানবসেবা পছন্দসই যে কোনো ক্ষেত্রে মানুষ নিজেকে উৎসর্গ করে অমর হতে পারে।

Content added By
Promotion