তোমরা নিশ্চই ঘরে-বাইরে ও বিভিন্ন ওয়ার্কশপে অনেক ধরনের টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার দেখেছ। যেকোনো যন্ত্রপাতিকে ভাল অবস্থায় ব্যবহার করা যতটা সহজ কিন্তু তাতে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা দিলে তা নির্ণয় ও মেরামত করে পুনরায় ব্যবহার করার কাজটি একটু জটিল এবং সক্ষ সাহসিকতার বিষয়। একজন জেনারেল মেকানিক্স হিসেবে সচরাচর ব্যবহৃত টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও বিভিন্ন ওয়ার্কশপে ব্যবহৃত মেশিনের ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্ণয় ও সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে অনেক কাজ-ই তোমাকে করতে হবে। জেনারেল মেকানিক্স কাজে যে সকল টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয় তা তোমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন অধ্যায় থেকে জেনেছো। এখন সেগুলির সঠিক ব্যবহার, ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্ণয়, বার বার ব্যবহারের সঠিক উপায় এবং যথাস্থানে সংরক্ষণ করার কৌশল জানা দরকার। এই অধ্যায় থেকে ভা তোমরা জানতে পারবে।
জেনারেল মেকানিক্স কাজে যে সকল টুলস ইনট্রুমেন্ট ও মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে তা সম্পর্কে আমরা ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছি। যে সকল টুলস ইনস্ট্রুমেন্টও যন্ত্রপাতি প্রকৌশল কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় সেগুলি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম বা পদ্ধতি জানতে হলে প্রত্যেকটি টুলস ইনস্ট্রুমেন্ট ও মেশিনের প্রয়োগ কৌশল, ত্রুটি-বিচ্যুতি বিবেচনা পূর্বক সঠিক উপায়ে কাজটি সম্পন্ন করা জরুরি।
জেনারেল মেকানিক্স ও প্রকৌশল কর্মকাণ্ডে স্টিল রুল বা স্টিল টেল বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এগুলি ফ্লেক্সিবল (Flexi- ble) বা দৃঢ় (Rigid) প্রকৃতির এবং বিভিন্ন গুরুত্ব ও দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে। সাধারণত স্টিল রুল বা স্টিল টেশ ১৫০মিষি (১৫ সেমি.), ৩০০মিমি (৩০ সেমি.), ৬০০মিমি (৬০ সেমি. ) এবং ১০০০ মিমি পর্যন্ত মালের হয়ে থাকে। এছাড়া এগুলির নানাবিধ ব্যবহারিক সুবিধা রয়েছে। যেমন-
• স্টিল ক্ষয় ও মরিচারোধী হওয়ার এগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয়;
• পানি বা যেকোন ভরদের মধ্যেও এগুলি ব্যবহার করা যায়;
• সহজে পরিষ্কার ও সংরক্ষণ করা যায়;
• সহজেই স্থানান্তর বা পরিবহনযোগ্য ইত্যাদি।
হ্যামার দিয়ে সাধারণত বাড়িঘরে ছোট-খাট কাজ বেশি করা হয়। যেমন-পেরেক পোভানো, কোন ধাতব শিট, পাভ, লোহা ইত্যাদিতে বিভিন্ন আকার-আকৃতি প্রদানে ব্যবহৃত হয়। তথাপি এধরনের কাজে একটু সতর্কতা ও কিছু নিয়ম অনুসরন করলে কাজটি সহজে করা যায়।
• যেখানে পেরেক চালাতে হবে সেখানে তীক্ষ্ণ টিপ লাগিয়ে
• মাথার ঠিকনা চেপে রেকটি ধরে রাখতে হবে :
• পেরেকের মাথার কেন্দ্র বরাবরে হাতুড়ি রাখতে হবে;
হাতুড়িটি প্রাথমিকভাবে কনুইয়ের গতিতে উঁচিয়ে, কজির সামান্য পিছনের বাঁকসহ আষাত করতে হবে।
• সঠিক হাতুড়ি নির্বাচন করা; চোখের সুরক্ষা সামগ্রী পরিধান করা;
• হাতুড়িটি সঠিকভাবে ধরা
• পেরেকটি সঠিকভাবে ধরা;
• সঠিকভাবে স্যুইং করা এবং পেরেকে আঘাত করা;
• আঙ্গুলের মাথা দিয়ে পেরেকের ভোঁতা পরীক্ষা করা;
• প্রয়োজনে ড্রিল করে একটু ছিন্ন করে নেয়া;
• পেরেকের উপর শেষ আঘাতটি পরিমাপ মত দেয়া৷
সাধারণত কম ব্যাসবিশিষ্ট অল্পসংখ্যক কার্যবস্তু কাটতে হ্যাকস ব্যবহৃত করা হয়। হ্যাক সব্যবহারেরউপায়-
(ক) কাজের প্রস্তুতি: যে কার্যস্তুতে সয়িং করতে হবে তা পরিমাগসহ লে-আউট/চিহ্নিত করে নিতে হবে।
(খ) ব্লেডনির্বাচন: কার্যবস্তুর গঠন, আকার, আকৃতি প্রভৃতি বিবেচনা করে রেড নির্বাচন করতে হবে।
(গ) ব্লেড ইনস্টলকরণ: ব্লেড ইনস্টল/ফিট করার জন্য যথেষ্ট ঢিলা না-
হওয়া পর্যন্ত ফ্রেমে অ্যাডজাস্টার ব্যবহার করে থ্রেডটিকে ফিট করা, যাতে কাজ সম্পাদনের জন্য হ্যাকস কেম রেডকে প্রয়োজনীয় দিকে এবং চাপে ধারণ করে রাখতে পারে।
(ঘ) সয়িং কাজ সম্পন্ন করা।
লং-নোজ প্রায়ার সবচেয়ে বেশী দরকারী ও কার্যকরী টুলস। এটি ঘাঁটিসাঁট ফাটল এবং সরু জায়গায় কাজ করতে ব্যবহার হয়। কোনো পাওনা শিট বা তারকে ধরে কাজ করার জন্য, বৈদ্যুতিক তার জোড়া দেওয়া ও বিদ্যুতায়িত অবস্থার কেবল এর সাথে তারের সংযোগ দেওয়ার জন্য এবং তার কাটার কাজে ব্যবহার করা হয়।
কার্যবস্তুর উভয় পাশের সম্ভাব্য সর্বোত্তম অবস্থানে নিয়ে ফেলের সমস্ত অংশগুলি দিয়ে কাছে খ্যাতে হবে। কার্যবস্তু কাটার জন্য নিশ্চি করতে যে অংশ কাটা হবে তা ব্রেডে ে অবস্থান করানো হয়েছে। যতটা সম্ভ পয়েণ্যের কাছাকাছি রাখলে ভাল হয়, এখানেই সর্বাধিক শক্তি পাওয়া যায়।
হাতের আঙ্গুলের চাপে প্রায়ারের চোয়ালগুলি বন্ধ করতে হবে। চোষালের মধ্যে কার্যবস্তুর অবস্থানের উপর নির্ভর করবে, এটি ফাটবে নাকি শুধু গ্রিপ করবে। কাজের ধরণ ও প্রয়োজন অনুসারে কাজটি সম্পন্ন করতে হবে।
এলেন কী ছেক্স কী নামেও পরিচিত। অ্যালেন কী এল-আকৃতির টুল যা একটি ষড়ভুজাকার অভ্যন্তরীণ মাথা বিশিষ্ট ফাস্টেনার/বোষ্ট বা স্ক্রু লাগানো বা অপসারণের জন্য ব্যবহৃত হয়। বেশিরভাগ অ্যালেন রেফের আকার ছোট ও কৌণিক সরঞ্জামের পাশে স্পষ্টভাবে স্ট্যাম্প করা থাকে। অধিক ব্যবহারের ফলে ইঞ্চি বা মিলিমিটার লেখাটি ঘবে উঠে যেতে পারে, তাই লেখাটি পড়ার জন্য অ্যালেন রেঞ্চ বা হেক্স কী চার্ট সকেট মাথার সঠিক আকার খুঁজে পেতে সাহায্য করে থাকে।
ফাইল এক প্রকার যজ্ঞাদিত কাটার যা (Hand Cutting Tool) যা কোন কার্যবস্তু বা দ্রাংশের তদের উপরিভাগের অতিরিক্ত ধাতু গুঁড়া আকারে ক্ষয় করে নির্দিষ্ট আকার এবং আকৃতিতে আনার কাজে ব্যবহৃত হয়। হাই কার্বন স্টিল বা টুল স্টিল দিয়ে ফাইল তৈরি করা হয়। ফাইলের উপরিভাগে দাঁত কাটা থাকে এবং এই দাঁতের সাহায্যে ফাইল কোন ধাতুকে ক্ষর করে যা ঘৰে ঘৰে কাটে। ফাইলের দাঁতগুলি উপযুক্ততাৰে হার্ডেনিং এবং টেম্পার করা থাকে, ফলে দাঁতগুলির পার সহজে নষ্ট হয় না। মেকানিক্স কাজে বিভিন্ন ধরনের ফাইল ব্যবহার করা হয়।
চাবির খাঁজ, স্লট, ত, গিয়ারের গীত, ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ তৈরিতে স্ট্রেইট ফাইল, বৃহদাকার তলবিশিষ্ট ওয়ার্কশিসে ফিনিশিং কাট দেওয়ার জন্য ডায়াগোনাল ফাইল, দ্রুত ক্ষয় করতে ক্রস ফাইল, কম গ্ৰন্থ বিশিষ্ট কার্যবস্তুর উপরিভাগকে যুদ্ধ মসৃণ করতে ড্র-ফাইন, গোলাকার ছিদ্রের মসৃণতা আনয়ন ও ব্যাস বৃদ্ধিকরণে রাউন্ড ফাইল ব্যবহার করা হয়।
• হালবিহীন ফাইল বা হাতল যথাযথভাবে আটকানো না থাকলে ঐ ফাইল ব্যবহার করা উচিৎ নয়, কারণ এতে হাতের ক্ষতি হতে পারে;
• ফাইলের দাঁতগুলির মধ্যে ধাতচূর্ণ নাটকে যাওয়া মাত্র ফাইল কার্ড দিয়ে বা ওয়্যার ফ্লাশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তা না হলে ফাইল পিছনে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে এবং জবের মসৃণতাও নষ্ট হয়;
• ফাইলকে কান্ট আয়রন বা শক্ত স্টিলের ধাতব খন্ড ঘষার কাজে ব্যবহার করা ঠিক না
• ফাইলিং করার সময় খাতচূর্ণকে কখনও ফুঁ দেয়া ঠিকা না, এতে উড়ন্ত ধাতবচূর্ণ চোখের ক্ষতি করতে পারে;
• ফাইন্সিং এর সময় তৈল বা গ্রিজ ব্যবহার করা যাবে না; সতর্ক থাকতে হবে যে, কার্যবস্তুর পরিবর্তে ক্লাম্পিং ডিভাইসের যেন ক্ষতি না হয়;
• কাজের ধরন অনুযায়ী সঠিক ফাইল নির্বাচন করতে হবে ইত্যাদি।
যেখানে হ্যান্ড হ্যাকস সয়িং সময় সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল, সেখানে অধিক সংখ্যক বড় গ্রন্থচ্ছেদ বিশিষ্ট মেটালবার, অন্যান্য কার্যবস্তু দ্রুত ও সঠিকভাবে কাটতে পাওয়ার হ্যাকস ব্যবহৃত হয়। বড় প্রথচ্ছেদ বিশিষ্ট শ্যাফট, ভয়্যার বার, আয়তকার বার, রেইল, অ্যাম্পেল, চ্যানেল, পাইপ ইত্যাদি পাওয়ার হ্যাকস এর মাধ্যমে কাটা হয়।
• মেশিন চালনার পূর্বে কার্যবস্তু থেকে ব্রেডের দূরত্ব এবং অন্যান্য লিভারসমূহকে নিরাপদ অবস্থানে রেখে মেশিনের সুইচ অন করা:
• অপারেশন শুরুর পূর্বে মেশিনের সকল কন্ট্রোল এবং সেটিং ঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা করা;
• প্রেসার কন্ট্রোল লিভারের নিয়ন্ত্রণ সঠিক রাখতে হবে যেন অত্যাধিক চাপে ব্ৰেড ভেঙ্গে না যায়;
• সতর্কতার সাথে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য সঠিক ব্রেড নির্বাচন করতে হবে;
• কার্যবস্তুর পদার্থের উপর ভিত্তি করে ব্লেড নির্বাচন করা এবং কাটিং স্ট্রোকের দিক ও ব্রেডের দিক নির্দিষ্ট করা;
• কার্যবস্তুকে ডাইসে দৃঢ়ভাবে আটকাতে হবে যাতে কাজের সময় জব বা কাৰ্যৰভু নড়ে গিয়ে ব্লেড ভেঙ্গে না যায়;
• কাজ শেষে র্যামকে সর্বনিম্ন অবস্থানে রেখে মোটর বন্ধ করে দিতে হবে এবং মেশিন পরিষ্কার করে রাখতে হবে ইত্যাদি।
হাইড্রোলিক জ্যাক মাটি থেকে ভারী বস্তু (সাধারণত গাড়ি) তুলতে ব্যবহৃত হয়। ছোট-খাট লিফটিং এর কাজে এ ধরনের জ্যাক ব্যবহৃত হয় । অটোমোবাইলের টুকিটাকি কাজে এর গুরুত্ব অত্যাধিক। পিকজাপ, ভ্যান, প্রাইভেট, ট্রাক ও যেকোন গাড়ীতে এ ধরনের জ্যাক রাখা জরুরি।
স্ক্রু-বোস্ট এক্সটাক্টর কঠিন শাস্তব সমগ্রাম যা ভাঙা, ক্ষতিগ্রস্ত, এসৰেডেড (মেশিনের গায়ে লাগানো অবস্থায়) স্ক্রু, বোষ্ট বা স্টাডকে বের করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলি প্রায়ই স্বয়ংচালিত ইঞ্জিন মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
নাট, বোল্ট ও স্টাডের স্ক্রু অংশকে আটকানো বা খোলার জন্যই রেফ ব্যবহার করা হয়। কখনো এটিকে স্প্যানারও বলা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বোষ্ট এর সাথে নাটকে টাইট দেওয়ার জন্য রেঞ্জ ব্যবহার করা হয়।
বা বাটালি হলো শক্ত লোহা দিয়ে তৈরি ধারালো অগ্রভাগ বিশিষ্ট হ্যান্ড টুলস যা দ্বারা কাঠ, পাথর ও ধাতব খন্ডকে কেটে নির্দিষ্ট আকৃতির ব্যবহার্য্য কার্যবস্তু তৈরি করা হয়। মেটাল ওয়ার্কশপে মেনুষ্যাদি পাতলা খাতৰ শিট ও কম পুরুত্ব বিশিষ্ট এমএস ফ্লাট বার নির্দিষ্ট সাপে কাটার জন্য এ ধরনের চিজেল ব্যবহার করা হয়।
মেটাল পাইপ কাটার জন্য গ্লামার যোহারা পাইলের কাজ করে) পাইপ ফিটিং কাজে পাইন কাটার যন্ত্র ব্যবহার করে থাকে। এটি দ্বারা অতি সুক্ষ্ম, মান, পেশাদারিত্ব বজায় রেখে পরিচ্ছন্নতাৰে মেটাল পাইপ কাটা যায়। পাইল কাটার সময় লুব্রিক্যান্ট বা কুল্যান্ট ব্যবহার করতে হয়।
যে সময় টুলস-ইন্সুমেন্টস ও গাষ্ঠি বৈদ্যুতিক শক্তি দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এক স্থান হতে অন্য স্থানে নিয়ে সহজে কাজ করা যায় সেগুলিকেই পাওয়ার টুলস বলা হয়।
ইলেকট্রিক হ্যান্ড ড্রিল মেশিন দিয়ে কোনো বস্তু বা দেয়ালে ছিদ্র করতে ব্যবহৃত হয়। কাঠের ইলেকট্রিক ওয়ারিং, অ্যাসেম্বলিং ইত্যাদি কাজে হ্যান্ড ড্রিল ব্যবহার করা হয়। সাধারণত কোনো শক্ত পদার্থ বা খাত বহুতে গ্রাইন্ডিং ও পলিশিং করার কাজে ইলেকট্রিক হ্যান্ড গ্রাইন্ডি মেশিন ব্যবহৃত হয়। এছাড়া মেটালফাটিং, ধাতু পরিক্ষার ফর ধারাফেরা, টাঙ্গি কাটতে শর্ট (Mustar) জমির কাজ ইত্যাদিতে ইলেকট্রিক হ্যান্ড গ্রাইন্ডিং মেশিন ব্যবহার করা হয়। মেটাল কাটিং মিনি পোর্টেবল কাট-অফ'স বা পোর্টেবল বৈদ্যুতিক বৃত্তাকার করাত একটি মোটর শ্যান্টের সাথে যুক্ত রেডসহ বহুল ব্যবহৃত করাও। বিশেষ করে দালান-কোঠা নির্মাণে এটি খুবই পরিচিত মেশিন টুলস। নির্ধারিত ব্রেডের সাহায্যে এটি প্রায় যেকোনো উপাদান, যেমন- কাঠ, ধাতু, প্লাস্টিক, ফাইবার গ্লাস, সিমেন্ট ব্লক, স্লেট, 'ইট ইত্যাদি কাটতে পারে। পাওয়ার হ্যাকস এমন এক ধরনের সরঞ্জাম যা বিশেষভাবে প্লাস্টিক, ইস্পাত এবং অন্যান্য ধাতুর মতো সামগ্রী কাটার জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলি ঐতিহ্যবাহী হাতের করাতের একটি বিকল্প, করলে সাধারণত মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ, উসপ, পেশাদার ও শৌখিন ব্যক্তিদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মেশিন টুলস।
তোমরা জেনেছ ক্যালিপার হল একটি সাধারণ পরিমাপের সরঞ্জাম যা একটি বস্তুর দুটি বিপরীত দিকের মধ্যে দূরত্ব সঠিকভাবে পরিমাণ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। ক্যালিপারের দুটি এ্যাডজাস্টেবল টিপস থাকে যা কার্যবস্তুর বিপরীত দিক থেকে চাপ দেয়া যায়। স্টিল রুল বা অন্য মেজারিং টুলের সাহায্য নিয়ে পরিমাপ বের করতে হয়।
এটিতে সাধারণ ডায়ালের মাধ্যমে মিলিটাির বা ইঞ্চিতে পরিমাপ নেয়া যায়। এই যন্ত্রটিতে একটি ছোট প্রিসাইজ (Precise) র্যাক ও পিনিয়নের মাধ্যমে একটি পয়েন্টার বৃত্তাকার ডায়ালের উপর ঘুরে সরাসরি পরিমাপ নিতে সাহায্য করে বিধায় আলাদা ভার্নিয়ার স্কেলের প্রয়োজন হয় না।
কোনো মসৃণ তলের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ বা চওড়া, বেধ বা পুরুত্ব পরিমাপ করার জন্য ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া গোলক, সিলিন্ডার ইত্যাদির ব্যাস পরিমাপে এটি ব্যবহৃত হয়। পরীক্ষণ কাজেও জার্নিয়ার ক্যালিপার্স ব্যবহার করা হয়। কোন পাইপ বা সিলিন্ডার এর অভ্যন্তরীণ ব্যাস পরিমাপে এটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া দু'টি তলের মধ্যকার ভেতরের মাপ গ্রহণ করতেও ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ব্যবহৃত হয়। গর্ভ বা স্লটের গভীরতা, দু'টি তলের উচ্চতার পার্থক্য বা গভীরতা পরীক্ষা করতে বা পরিমাপ গ্রহণ করতে ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ব্যবহৃত হয় ।
কার্যবস্তুকে সর্বদা ক্যালিপারের চোয়ালের মধ্যে আলতোভাবে আঁকড়ে ধরতে হয়। সূঁচালো/ধারালো কোনো বস্তুকে পরিমাপের ক্ষেত্রে যাতে ক্যালিপার নষ্ট/বিকৃত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। এছাড়া কতগুলি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেমন-
• ভার্নিয়ার ক্যালিপার ব্যবহার করার সময় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা উচিৎ নয়, এতে মাপের সঠিকতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে;
• মেশিন চলন্ত অবস্থায় কার্যবস্তুর বা যন্ত্রাংশের মাপ ভার্নিয়ার ক্যালিপার দ্বারা নেওয়া যাবে না;
• ভার্নিয়ার ক্যালিপারকে কাটিং টুলের সাথে রাখা যাবে না এবং ক্যালিপার ব্যবহার করার পর পরিষ্কার করে যথাযথ স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে;
• ভার্নিয়ার ক্যালিপারকে কোন চুম্বকের সংস্পর্শে রাখা ঠিক না;
• ভার্নিয়ার ক্যালিপারের কোন অংশ যাতে মরিচা নাপড়ে এবং চলনশীল অংশ যাতে সহজেই চলাচল করতে পারে সেজন্য বিম স্কেলের উপরিভাগে ও স্ক্রু থ্রেডের বিভিন্ন স্থানে কিছু দিন পর পর মসৃণকারক তৈল বা গ্রিজ প্রয়োগ করতে হয় ইত্যাদি।
এটি একটি পরিমাপ যন্ত্র যা সাধারণত জেনারেল মেকানিক্স কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি ক্যালিপারের অনুরূপ কাজ করে তবে কার্যবস্তুর দৈর্ঘ্য, গভীরতা এবং চওড়া পরিমাপ করা যায়। ক্যালিপারের মতো কার্যবস্তুর দুই প্রান্তের মধ্যে স্থাপন করা হয়। মাইক্রোমিটারের স্পিন্ডলটি (Spindle) ঘুরানো হয় যতক্ষণ না কার্যবস্তুটি স্পিন্ডল ও অ্যানভিলের মধ্যে ফ্লাশ (Flush) বা আলতো ভাবে বসে থাকে। তার পরে পরিমাপ গ্রহণ করা হয়।
মাইক্রোমিটার বহুল পরিচিত একটি নাম, কোন যন্ত্রাংশ বা কঠিন কার্যবস্তুর ব্যাস, বেধ ও দৈর্ঘ্যের ন্যায় সুনির্দিষ্ট রৈখিক পরিমাপ গ্রহণ করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এটি অবিচ্ছেদ্য স্ক্রু দ্বারা পরিচালিত একটি চলমান চোয়ালসহ সি-আকৃতির ফ্রেম বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
এটি কখনো কখনো স্ক্রু গেজ নামেও পরিচিত। প্রকৌশল কর্মকান্ডে এটি বেশ সমাদৃত ইন্সট্রুমেন্ট। অটোমোবাইল সেক্টরে ইঞ্জিন ব্লকে সিলিন্ডার বোরিং রি-বোরিং মেজারমেন্টে সরাসরি বা ক্যালিপারের সহযোগিতায় সঠিক পরিমাপের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বলা যায় এটি ছাড়া একজন অটোমেকানিক্স কল্পনাই করা যায় না। মেকানিক্স কাজে অনেক ধরনের মাইক্রোমিটার ব্যবহৃত হয়ে থাকে যেমন- রোটেটিং ডিসক মাইক্রোমিটার (Rotating Disc Micrometer), পয়েন্ট মাইক্রোমিটার (Point Micrometer), টিউব মাইক্রোমিটার (TubeMicrometer), স্মাইন্ড মাইক্রোমিটার (Spline Micrometer), ব্লেড মাইক্রোমিটার (Blade Micrometer), ৰল মাইক্রোমিটার (Ball Micrometer), বেঞ্চ মাইক্রোমিটার (Bench Micrometer), পিচ-ডায়ামিটার মাইক্রোমিটার (Pitch diameter Micrometer) ইত্যাদি। স্মাইন মাইক্রোমিটারগুলি প্লাইন্ড শ্যাক্ট, স্লট এবং কী-ওয়ের পরিমাপ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। চিত্ৰ: ১১.১৬ অটোমোবাইলে ক্যালিপার ও মাইক্রোমিটারের ব্যবহার
কম আর্দ্রতাসহ একটি বায়ু চলাচল স্থানে এবং আদর্শভাবে ঘরের তাপমাত্রায় মাইক্রোমিটার সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘদিন মাইক্রোমিটার ব্যবহার না করলে সুরক্ষিত রাখার জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক কেবিনেট বা স্টোরেজ কেস ব্যবহার করা হয়। সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে মাইক্রোমিটারের পরিমাপের পরস্পর সুখগুলির মধ্যে যেন ফাঁকা থাকে। মাইক্রোমিটারের কোন অংশে যাতে মরিচা না পড়ে সেজন্য এটির বাহিরে এবং ভিতরের স্কু-থ্রেডে এবং এক্সটেনশন রডে কিছু দিন পর পর মসৃণ কারক তৈল দিতে হবে। প্রতিবার কাজ শেষে নির্দিষ্ট স্থানে অর্থাৎ নির্ধারিত বাক্সে সংরক্ষণ করতে হবে। এ্যানভিল এবং স্পিন্ডলকে কার্যবস্তুর সাথে বেশি চাপ দিয়ে ব্যবহার করা উচিত নয়। র্যাচেট ব্যবহার করা ভাল, যদি র্যাচেট ব্যবস্থা না থাকে তবে কার্যবস্তুতে চাপ না দিয়ে কেবলমাত্র স্পর্শ করা অবস্থায় পরিমাণ গ্রহন করতে হবে। সচরাচর চুম্বক থেকে দুরে রাখা প্রয়োজন কেননা এতে চৌম্বক জাত পদার্থ আকৃষ্ট হয়ে সুক্ষ্ম পরিমাপে ৰাধাগ্রস্ত করে।
কার্যবস্তুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা নির্নয়ের জন্য স্টিল রুম ব্রবহার করা হয়। মেজারিং টেপ রুপারের অনুরূপ তবে নমনীয় বিধায় সহজে কাজ করা যায়। এতে মিনি সেন্টিমিটার এবং ইঞ্চিতে দাগ কাটা থাকে।
এটি সমকোণ মার্কিং ও চেকিং এর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে, এছাড়া কার্যবস্তুর সমলতা (Flatness) ও বর্গক্ষেত্র (Squareness) নির্ণয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়।
কোনো সমান্তরাল প্রাপ্ত থেকে সমান্তরাল রেখা চিহ্নিত করতে এবং কেন্দ্রটি শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এটিকে জেনি ক্যালিপারও (Jenny Caliper) বলা হয়ে থাকে।
ফিলার গেজকে থিকনেস পেজও বলা হয়। ফিলার পেজগুলি প্রায়শই কম্পোনেন্টের মধ্যে ক্লিয়ারেন্স পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এই গেজগুলি সরু স্লটের পরিমাপ, ক্লিয়ারেন্স পরিমাপ, ছোট ব্যবধান নির্ধারণ এবং ম্যাচিং পার্টস এর (Mating Parts ) মধ্যে ফিট নির্ধারণের জন্য খুবই উপকারী পরিমাপক যন্ত্র।
মরিচা প্রতিরোধ করার জন্য এটিকে সংরক্ষণের আগে এক টুকরা তৈলাক্ত কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়। ফিলার গেজের ক্ষতি রোধ করতে ব্রেডগুলিকে সব সময় বন্ধ রাখা ভাল। কেবল শুভক্ষণের জন্য কভারের বাইরে রাখা উচিত যতক্ষণ পর্যন্ত ফিলার গেজ পরিমাপ করার কাজে ব্যবহার করা হয়।
স্পিরিট লেভেল এর লেভেল (Level) পুলিকে ৰাবেল লেভেলও (Bubble Lovel) বলা হয়।লেভেলের সঠিকতা নির্নয়ের জন্য এই যন্ত্রটি ব্যবহার হয়ে থাকে। স্পিরিট লেভেল বিভিন্ন সাইজের হয়ে থাকে যেমন- ছোট হাতল বা বড় হাতল বিশিষ্ট এক বা একাধিক কাচের শিশি দ্বারা স্থির করা থাকে এবং রঙিন স্পিরিট বা তরল দিয়ে ভরা হয়। শিশিটি পূরণ করার জন্য তরলটি সামান্য কম হয় যার ফলে এটি ভিতরে একটি বায়ু বুদবুদ তৈরি হয়।
একটি বৈদ্যুতিক সার্কিটে, স্যুইচ বা লুপ বন্ধ থাকলেও কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে কিনা তা পরিমাপ করার জন্য গ্যালভানোমিটার ব্যবহার হয়ে থাকে। একটি শান্ট প্রতিরোধক ব্যবহার করে গ্যালভানোমিটারকে রক্ষা করা যায়। রেজিস্ট্যান্স সাধারণত গ্যালভানোমিটারের সমান্তরালে সংযুক্ত থাকে। এই সেট আপটি গ্যালভানোমিটারকে শক্তিশালীও অতিরিক্ত কারেন্ট থেকে রক্ষা করে। রেজিস্টেন্স ও সার্কিটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্টের মান কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।
কোন প্রবনের ক্ষারকতা (Alkalinity) বা অল্পতা (Acidity) পরীক্ষা করার জন্য মিটার ব্যবহার হয়ে থাকে। ০-১৪ ভেল্যু নির্ণয়ের মাধ্যমে এটি পরিমাপ করে থাকে।
নিয়মিত পিএইচ মিটার ব্যবহার করলে ক্যালিব্রেট নিয়মিত করতে হবে। সপ্তাহব্যাপী ব্যবহার করা হলে কয়েকবার কেলিব্রেশন করা প্রয়োজন হয়। সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য প্রতিবার ব্যবহারের ভাগে মিটারকে ভালভাবে চেক করে নেয়া উচিত।
• ভার্নিয়ার হাইট গেজ এমন পরিমাপক যন্ত্র যা দিয়ে উল্লম্ব দূরত্ব নির্ণয় করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
• সর্বোচ্চ উচ্চতা পরিমাপ বিবেচনায় এটি সিলেক্ট বা নির্দিষ্ট করা হয়।
• ভার্নিয়ার হাইট গেজ ১৫০ মিমি থেকে ১০০০ মিমি পর্যন্ত পরিবর্তিত মাপের হয়ে থাকে
এটি একটি সূক্ষ্ম পরিমাপক যন্ত্র। সাধারণত কম দূরত্বের হাইট পরিমাপের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র এটিকে একাকী ব্যবহার করা যায় না, অন্যান্য যন্ত্রপাতির সাহায্য নিতে হয়। যেমন- সারফেস গেজ। ভার্নিয়ার হাইট গেজ, সারফেস প্লেটের বা ঐ জাতীয় কোনো সমতল উপরিভাগ থেকে কোনো বস্তুর নির্দিষ্ট উপরিভাগ কত উচ্চতায় আছে অথবা দুটি বস্তুর বেলাঢ একটা অপরটা থেকে কত উচ্চতায় বা নিচে অবস্থান করছে তার মধ্যে পার্থক্য নিশ্চিত করা যায়।
স্ক্রাইবারের স্থলে রড বা দন্ড ব্যবহার করে এর সাহায্যে জবের ছিদ্রের বা খাঁজের গভীরতা মাপা যায় অর্থাৎ এটিকে ডেপথ গেজ হিসাবে ব্যবহার করা যায়। স্ক্রাইবারের স্থলে ডায়াল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে এটির সাহায্যে সুক্ষ্ম পরীক্ষণের কাজ করা যায়। মেশিনশপ, জেনারেল মেকানিক্স শপ, উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা, মেইনটেনেন্স শপ, মেকানিক্যাল কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট ওয়ার্কশপ প্রভৃতি জায়গায় সুক্ষ্ম ও আধুনিক মার্কিং টুল হিসাবে ভার্নিয়ার হাইট গেজ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
• এটিকে নির্ধারিত কেবিনেট বা বক্সে সংরক্ষণ করতে হয়;
• সূক্ষ্ম পরিমাপের জন্য ডাস্ট ফ্রি অবস্থায় সংরক্ষণ করা জরুরি;
• সবসময় এর মসৃণতা বজায় রাখার চেষ্টা করা উচিত;
• ঘূর্ণায়মান যন্ত্রাংশের পরিমাপ করা উচিত নয়।
• অব্যবহৃত অবস্থায় মরিচারোধক পদার্থ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়।
• শ্যাফটের বাহিরের ব্যাস ও বিকেন্দ্রিকতা পরীক্ষা/পরিমাপ করা যায়;
• পিচ ব্যাস, পুরুত্ব ও চওড়া পরিমাপ নির্ধারণ করা যায়;
• যন্ত্রাংশের স্ট্রেইটনেস, ট্যাপার, চেম্বার, রাফনেস, ফিলেট ইত্যাদি পরীক্ষা ও পরিমাপ করা যায়;
• ডায়াল ইন্ডিকেটরের সাথে ম্যাগনেটিক বেইজ স্ট্যান্ড, সারফেস প্লেট, সেন্টার, ভি-ব্লক, ম্যানডেল ইত্যাদি ব্যবহার হয়।
• কোন কার্যবস্তুর সমতলে কোথাও উঁচু-নিচু পরীক্ষা করা যায়;
• লেদের হেডস্টক ও টেইলস্টক এর সমান্তরালতা পরীক্ষা করা যায়;
• অনুভূমিক বা হরাইজন্টাল অবস্থা পরীক্ষ করা যায়।
ডায়াল ইন্ডিকেটর একটি সংবেদনশীল ও মূল্যবান ইন্সট্রুমেন্ট বিধায় এই যন্ত্রের যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ একটু বিশেষভাবে নেয়া দরকার।
• এটির ভায়াল ও ডায়ালের কান্ডারটি কাঁচের তৈরি বিধায় ভঙ্গুর হয়, তাই খেয়াল রাখতে হবে যেন যায়ালে কোনো অবস্থাতেই আঘাত না লাগে।
• ডায়াল ইন্ডিকেটরের ম্যাগনেটিক বেস, সারফেস প্লেটের উপর স্থাপনের পূর্বে ভালো করে পরিষ্কার করে নেয়া দরকার।
• তৈল বা গ্রিজমুক্ত অবস্থানে বেশি ব্যবহার করা উচিত, তৈলাক্ত অবস্থানে ব্যবহারের ফলে সুক্ষ্মতা নষ্ট হতে পারে।
• পরিমাপ গ্রহণের ক্ষেত্রে ডায়াল ইন্ডিকেটরের স্পিন্ডলকে সবসময় চাপমুক্ত রাখতে হয়;
● এটিকে ব্যবহার শেষে নির্ধারিত কেৰিনেট বা বক্সে সংরক্ষণ করতে হয়।
প্রকৌশল কর্মক্ষেত্রে কাছাকাছি টলারেন্স সম্পন্ন কৌণিক পরিমাপ পরীক্ষা করতে বিডেল প্রোট্র্যাক্টর ব্যবহৃত হয়। এটি ৫ আর্কমিনিট (৫' বা ১/১২) এবং ০° থেকে ৩৬০° পর্যন্ত কোণ পরিমাপ করতে পারে। বেভেল প্রোট্রোক্টরে একটি বিম (Beam), একটি গ্র্যাজুয়েটেড ডায়াল ও একটি ব্লেড থাকে যা একটি সুইভেল প্লেটের সাথে (ভার্নিয়ার স্কেল সহ) নাম নাট এবং ক্ল্যাম্প দ্বারা সংযুক্ত করা থাকে। ভার্নিয়ার বিভেল প্রোট্যাক্টর কার্যবস্তুর কোণ পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি ৫ মিনিট পর্যন্ত নির্ভুল কোণ পরিমাপ করতে পারে। একটি আইসোমেট্রিক প্রোস্টাক্টর একটি কোল থেকে কোনো বস্তুকে চিত্রিত করে ত্রিমাত্রিক অংকন তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।
কৌণিক পরিমাপক যন্ত্র বিভেন প্রোট্র্যাক্টরের বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন-
• নির্ধারিত কেবিনেট বা বাক্সে সংরক্ষণ করতে হয়;
• কাজের পরে ভালভাবে পরিষ্কার করে সংরক্ষণ করতে হয়;
• কাজের সময় এলোমেলো স্থানে না রেখে পরিচ্ছন্ন ও সমতল জায়গায় রাখতে হয়;
• বিশেষ সংরক্ষণের সময় সরিচারোধী পদার্থ দিয়ে মুরিয়ে রাখতে হয়;
ট্যাপ এক প্রকার মেটাল কাটিং টুল যা দ্বারা গোলাকার ছিদ্রের ভিতরে অভ্যন্তরীণ ভ্রু-গ্রেড বা প্যাঁচ (Internal Thread) উৎপন্ন করার পদ্ধতিকে ট্যাপিং বলা হয়। ট্যাপিং করার পূর্বে ওয়ার্কপিসের নির্দিষ্ট জায়গায় প্রথমে ইন্টার্নাল গ্রেডের ব্যাস অনুযায়ী ড্রিলিং করে ছিদ্র করে নিতে হয়। ট্যাপিং এর জন্য হ্যাক ট্যাপ, ট্যাপ রেঞ্চ, কার্যবস্তু, ওয়েল ক্যান ও ট্রাই-স্কয়ার প্রয়োজন হয়।
কোন কার্যবস্তুতে অভ্যন্তরীণ থ্রেড তৈরি করার জন্য ট্যাপিং ব্যবহার করা হয়। ট্যাগ হল একটি নলাকার বা শযুক্ত গ্রেড-কাটিং টুল যার পরিধি বরাবরে পছন্দসই ফর্মের প্লেড করা থাকে। অক্ষীয় গতির সাথে ঘূর্ণন গতির সংমিশ্রণে ট্যাপ দিয়ে অভ্যন্তরীণ গ্রেড কাটা হয়। গ্রেড কাটার জন্য ট্যাপিং একটি সহজ, সুপরিচিত এবং অত্যন্ত দক্ষ উৎপাদন প্রক্রিয়া। ট্যাপিং বহুল উৎপাদন এবং লাভজনক থ্রেডিং এর জন্য উপযোগী। বিশেষত ছোট গ্রেডের জন্য, মেশিনের কম ডাউন টাইম, উচ্চ কাটিং গতি এবং দীর্ঘ টুল লাইফের জন্য উল্লেখযোগ্য। এ ধরনের কাজে বিভিন্ন ধরনের ফর্সিং ট্যাপস এবং কাটিং ট্যাপ ব্যবহার করা হয়।
• ট্যাপিং করার সময় কার্যবস্তুর ছিদ্রের অক্ষ ও ট্যাপের অক্ষ একই বরাবরে রাখতে হয়। ট্যাপ ঘুরাবার সময় ট্যাপ রেফকে ভূমির সমান্তরালভাবে রেখে ছিদ্রের অক্ষের সাথে সমকোণে ঘুরাতে হয়। বাম বা ডানদিকে কাত হলে ট্যাপ ভেঙ্গে যাবার সম্ভাবনা থাকে;
• ট্যাপ ড্রিল সাইজ থেকে কম মাপের ছিদ্রতে ট্যাপ পরিচালনা করা ঠিক না। এরুপ করার ফলে ট্যাপ ভেঙ্গে যায় এবং তা কার্যবস্তু থেকে বের করা কঠিন হয়;
• ট্যাপ রেফ ট্যাপের পরিমাপের সাথে সামঞ্জস্য রাখা উচিত, নচেৎ অত্যধিক মোচড়ের ফলে ট্যাপ ভেঙ্গে যেতে পারে;
• দুই হাত ব্যবহার করে ট্যাপ রেফ স্যুৰম শক্তি দিয়ে ঘুরানো উচিৎ এবং প্রয়োজনে লুব্রিক্যান্ট ব্যবহার করতে হবে। টিপস্ বের করার জন্য কিছুক্ষণ পর পর ট্যাপকে বাসদিকে ঘুরাতে হবে
সিপিস্কিক্যাল কার্যবস্তু, পাইপ ও রডের উপরিভাগে স্ক্রু-থ্রেড বা প্যাঁচ উৎপন্ন করতে ব্যবহৃত হয়। এটা যাই কার্বন স্টিল বা হাই স্পিড স্টিল দ্বারা তৈরি হয়। এর থ্রেড অংশ শক্ত এবং টেম্পার করা থাকে। তাই ট্যাপ এর মত বিভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড সাপের ক্ষু-থ্রেড তৈরি করতে বিভিন্ন মান বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
যে কার্যবস্তুতে ব্লেড কাটতে হবে সেটির মাপ অনুযায়ী ভাই ও ভাইণ্টক নির্বাচন করতে হবে। কোন কার্যবস্তুকে কপি করতে হলে গ্রেড গেজ ব্যবহার করে টিপিজাই মেপে নিতে হবে। কার্যবস্তুকে ডাইসে শক্ত করে এবং লম্বভাবে বাঁধতে হবে। পরে কার্যবস্তুর মুখটিকে ফাইল দ্বারা ঘষে ক্রমশঃ সরু করে নিতে হবে। ভাইকে বোল্ট বা এর উপর এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে ভাইস্টকটি বোস্ট বা কার্যবস্তুর উপর ভূমির সমান্তরাল ভাবে অবস্থান করে। এরপর ভাই এর উপর চাপ প্রয়োগ করে ধীরে ধীরে ডাইটিকে ডানদিকে ঘুরিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হবে। কয়েকটি গ্রেড উৎপন্ন হয়ে ডাই থ্রেডের মাধ্যমে কার্যবস্তুর সাথে মিলিত হলে ভাই ও কার্যবস্তুর সংযোগ স্থলে মসৃণকারক তৈল দিতে হয় এবং কিছুক্ষণ পরপর ডাইন্টকটিকে বামদিকে ঘুরিয়ে ধাতুচুলগুলিকে পরিষ্কার করে নিতে হয়। গ্রেড নির্দিষ্ট পরিমাণে গভীর হয়েছে কিনা তা একটি গ্লু পিচ পেজ দিয়ে পরীক্ষা করে নিতে হবে।
• থ্রেড তৈরি করার ভৈল/লুব্রিক্যান্ট ব্যবহার না করলে মসৃণ থ্রেড উৎপন্ন হয় না। এজন্য মাঝে মাঝে
• ডাই এর মধ্যে এবং বোল্টের উপরে পরিমাণমত তৈল/লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করতে হয়;
• জ্যাডজাস্টেবল ডাই ব্যবহার করে জাস্তে আস্তে প্যাচ কাটতে হয় তা না হলে ভাই আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে;
• ডাইন্টককে আনুভূমিক ও সমান্তরাল রেখে ঘুরাতে হয় এবং কিছুক্ষণ পরগর ডাইকে বামদিকে ঘুরাতে হয় যাতে চিপ বের হয়ে আসে, তা না হলে সঠিক গ্রেড তৈরি করা যায় না।
• প্রয়োজনীয় পিপিই পরিমান করো;
• ছকে উল্লেখিত তালিকা ও প্রয়োজন অনুযায়ী মালামাল এবং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করো;
• স্পিডেন্স সেন্টার অ্যালাইনমেন্ট চেকিং এর জন্য একটি সিলিটিক্যাল ম্যানডেল স্পিগুলের সাথে সংযুক্ত চাকে বেঁধে স্পিন্ডলকে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ডায়াল ইন্ডিকেটরের প্লাজার এজকে ম্যানছেলের পরিধির উপর স্পর্শ করা অবস্থায় পরেন্টার 'o' তে সেট করে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি পাঠ গ্রহণের মাধ্যমে স্পিডলের কোনো প্রকার এলাইনমেন্ট বিচ্যুতি আছে কিনা তা বের করো;
• স্পিডল এক্সিস (Axis) অ্যালাইনমেন্ট চেকিং এর জন্য স্পিন্ডলের সাথে সংযুক্ত চাকে একটি সমান্তরাল প্লেটকে পাশের ছবি মোতাবেক আটকিয়ে চাকটিকে ঘুরিয়ে ক্রসপ্লাইডের অনুভুমিক পত্তির দিক বরাবরে সমান্তরাল করে সেট করো। এখন ক্যারেজের উপর একটি ডায়াল ইন্ডিকেটর গেজ সেট করে এর প্লাজার এজকে পাশের ছবি মোতাবেক ক্রসাইডকে সামনে-পেছনে সরিয়ে পর্যাক্রমে কয়েকটি পাঠ নিয়ে স্পিডল এক্সিস অ্যালাইনমেন্ট-এ কোন অ্যালাইনমেন্ট বিচ্যুতি আছে কিনা তা বের করো ।
• হেডস্টক ও টেইলস্টক সেন্টাদ্বয়ের প্যারালালিজম এলাইনমেন্ট চেকিং এর জন্য সিनিডিক্যাল ম্যানডেলের এক প্রান্ত হেডন্টকের সাথে অন্যপ্রান্ত টেইলস্টকের সাথে আটকিয়ে ক্যারেজের উপর একটি ডায়াল ইন্ডিকেটর গেজ সেট করে প্লাজার এজকে ন্যানডেলের উপরিতনে স্পর্শ করা অবস্থার পয়েন্টার '০' জে সেট করে ক্যারেজকে ধীরে ধীরে ডানে বা বামে চলাচল করিয়ে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি পাঠ গ্রহণ করো;
• ক্যারেজকে নিরাপদ দূরত্বে রেখে লেদ মেশিনের সুইচ অন করে মেশিন চালু করো;
• কাজ শেষে ওয়ার্কশপের এর নিয়ম অনুযায়ী কাজের স্থান পরিষ্কার করো;
• অব্যবহৃত মালামাল নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করো;
• কাজের শেষে চেক লিস্ট অনুযায়ী টুলস ও মালামাল জমা দাও ইত্যাদি।
• কাজের সময় হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করো;
• মেশিন পরিষ্কার করে যথাস্থানে তৈলাক্ত করো;
• কাজের স্থান পরিষ্কার করে পিচ্ছিল মুক্ত করো; কাজের সময় অন্য মনস্ক হওয়া থেকে বিরত থাক ইত্যাদি।
ডায়াল ইন্ডিকেটর দিয়ে লেদ এল্যাইমেন্ট পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। যেহেতু ডায়াল ইন্ডিকেটর একটি টেস্টিং ইন্সট্রুমেন্ট এবং এটি দিয়ে উল্লম্ব বা অনুভূমিক অবস্থানে পরিমাপ করা যায় তাই নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
লেদ অপারেশনে ত্রুটিমুক্ত কাজ করতে সক্ষম হবে। রৈখিকপরিমাপ নেয়ার ক্ষেত্রে যেহেতু ডায়াল ইন্ডিকেটর একটি বিশ্বস্ত ইন্সট্রুমেন্ট তাই এটির গুণমান নিশ্চিত করে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণে যত্নশীল হবে এবং বহুল উৎপাদন ও জেনারেল মেকানিক্স কাজে নির্বিঘ্নে ব্যবহার করতে সক্ষম হবে।
১.ফাইলিং করার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়গুলি কি কি?
২. সফট্ হ্যামার বা ম্যালেট কি দিয়ে তৈরি করা হয়?
৩. রেঞ্চ টুল কী?
৪.ক্যালিপারের মুল কাজ কী?
৫. ট্যাপ কি কাজে ব্যবহৃত হয়?
৬. ডাই কি কাজে ব্যবহৃত হয়?
৭.ডাই আটকানোর জন্য যে যন্ত্র ব্যবহৃত হয় তার নাম কি?
৮.ডায়াল ইন্ডিকেটরের লিস্ট বলতে কী বোঝায়?
১.মাইক্রোমিটারের ত্রুটি বলতে কী বুঝায়?
২. হ্যান্ড টুলস ও পাওয়ার টুলস এর মধ্যে পার্থক্য কী?
৩. হাতুড়ির শ্রেণিবিভাগ দেখাও ।
৪. সারফেস গেজের ব্যবহার লিখ।
৫.ডাই এবং ট্যাপের মধ্যে পার্থক্য কী?
৬. ডায়াল গেজ ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ উল্লখে কর।
৭. কোন কোন ক্ষেত্রে ডায়াল গেজ ব্যবহার করা হয়?
৮.ফাইলিং করার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়গুলি কি কি?
১.হস্ত চালিত টুলস-ইন্সট্রুমেন্টের রক্ষণাবেক্ষণ কৌশল বর্ণনা কর।
২.ডাই চালনার ক্ষেত্রে সতর্কতার বিষয়গুলি ব্যাখ্যা কর।
৩. লেদ মেশিনে ডায়াল ইন্ডিকেটরের ব্যবহার বর্ণনা কর।
৪. হাইট গেজ ও মাইক্রোমিটারের বিশেষ যত্ন বর্ণনা কর।
৫.ক্রু-বোল্ট এক্সট্রাক্টর দিয়ে কিভাবে ভাঙ্গা অংশ বের করে আনতে হয় তা বর্ণনা কর।
আরও দেখুন...