ড্রিল বিটের বিভিন্ন অংশ

এসএসসি(ভোকেশনাল) - জেনারেল মেকানিক্স- ১ - জেনারেল মেকানিক্স -১ | NCTB BOOK

শ্যাঙ্ক (Shank)

ড্রিল চাক বা মেশিন স্পিডলে আটকানোর জন্য ব্যবহৃত অংশকে শ্যাঙ্ক বলা হয়। ড্রিল বিটের শ্যাঙ্ক সাধারণত দু'ই প্রকারের হয়। যেমন-

• স্ট্রেইট বা প্যারালাল শ্যাঙ্ক (Straight or Parallel Shank ):স্ট্রেইট বা প্যারালাল শ্যাঙ্ক সমান মাপের গোল আকারের থাকে। সাধারণত ছোট আকারের ড্রিল বিটের শ্যাঙ্ক ১২ মিমি হয়ে থাকে।

• টেপার শ্যাঙ্ক (Taper Shank)টেপার শ্যাঙ্ক বিশিষ্ট ড্রিল বিটের মাথার অংশ থেকে ক্রমশ সরু হয়। সাধারন ৩ মিমি থেকে বেশী ব্যাসের ড্রিল বিট টেপার শ্যাঙ্ক বিশিষ্ট হয়।

২.১০.৩ টাং (Tang )

টেপার শ্যাঙ্ক ড্রিল বিটে টেপারের শেষে খানিকটা জায়গা চ্যাপ্টা করে কাটা থাকে। এই চ্যাপ্টা অংশের নাম ট্যাং। ড্রিল বিট ঘুরে গিয়ে বা স্লিপ করে যাতে খুলে না যায় তার জন্য এই অংশ কাজ করে। ট্যাং কোন ক্ষতি ব্যতিরেকে সকেট বা স্পিন্ডল থেকে ড্রিফট এর সাহায্যে ড্রিল বিটকে বের করা হয়।

২.১০.৩ ফ্লুট (Flute )

ড্রিল বিটের বডিতে যে গ্রুভ কাটা থাকে তাকে ফুট বলে। এটা টুইন্ট ড্রিল বিটের মোচড়ানো থাকে। সাধারণত ড্রিল বিটে দু'টি ফ্রুট থাকে। ফ্লুট এর গভীরতা সকল স্থানে সমান থাকে না। ফ্রুট কাটিং এজ থেকে শ্যাঙ্কের দিকে যতই অগ্রসর হতে থাকে ততই এর গভীরতা কমতে থাকে এবং প্রশস্ততা বাড়তে থাকে। ফুটের এ প্রকার গঠনের কারণে কর্তিত ধাতু খন্ডগুলি ছিদ্রের মধ্য হতে বাহির হয়ে আসার সময় ড্রিলের গাত্র হতে অনবরত সরে আসতে সহায়তা করে। ফ্রুট থাকার ফলে যে সমস্ত সুবিধা পাওয়া যায় তা হলো-

• ফুট কাটিং এজ গঠনে সহায়তা করে;

• ইহা কর্তিত খন্ডগুলিকে কুঞ্চিত করে;

• ইহা কর্তিত খন্ডগুলিকে ছিদ্রের মধ্যে হতে বের হয়ে আসার পথ করে দেয়;

• ইহা পানি বা কাটিং ফ্লুইডকে কাটিং এজ পর্যন্ত পৌঁছাতে সাহায্য করে ইত্যাদি।

২.১০.৪ মার্জিন (Margin)

ফ্লুটের পার্শ্ব বরাবর সরু এবং উঁচু অংশকে মার্জিন বলে। ড্রিল বিটের উপরিভাগে, যে স্থানটুকু অব্যাহত রেখে অবশিষ্ট স্থানকে ক্ষয় করা হয়ে থাকে তা-ই মার্জিন। মার্জিনসহ ড্রিল বিটের যে ব্যাস পাওয়ায় যায় তাকে পূর্ণ ব্যাস বলা হয়। মার্জিনের অপর নাম ল্যান্ড। মার্জিন সাধারণত ১.৫ মিমি থেকে ৩ মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মার্জিন ড্রিল বিটের সমগ্র উপরিভাগকে ঘর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করে।

২.১০.৫ কাটিং এজ (Cutting Edge)

ছিদ্র করার সময় ড্রিল বিট যে তীক্ষ্ণ অংশ দ্বারা ধাতুকে কাটে তাকে ড্রিল বিটের কাটিং এজ বলা হয়। প্রতিটি ফ্রুট দ্বারা এক একটি কাটিং এজ গঠিত হয়। কাটিং এজের দৈর্ঘ্য সর্বদা সমান থাকা প্রয়োজন। ড্রিল বিটকে সাধারণত ডানদিকে ঘুরানো হয় বলে কাটিং এজও অনুরুপভাবে ডানদিকে কাটার উপযোগী করে তৈরি করা হয়। কাটিং এজের দু'পাশের দৈর্ঘ্য সমান না হলে ছিদ্র বড় সাইজ হয়ে থাকে ।

২.১০.৬ ডেড সেন্টার (Dead Center) বা ড্রিল পয়েন্ট (Drill Point)

ট্যাং এর বিপরীতে সর্বশেষ প্রান্তে ড্রিল অক্ষ বরাবর তীক্ষ্ণ এজকে ডেড সেন্টার বলা হয়। এটি ভিল বিটের পয়েন্ট বা সেন্টার হলেও প্রকৃতপক্ষে একটি বিন্দুতে থাকে না, এর নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য থাকে। সরু ছিলের বেলায় এই ডেড সেন্টার বিন্দুর মত দেখালেও বড় ড্রিল বিটের বেলায় এই দৈর্ঘ্য ৩ মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

২.১০.৭ ওয়েব (Web)

ড্রিল বিটের ফুট বাদ দিলে মাঝখানে যে সিলিটিক্যাল সারফেস থাকে তার নাম ওয়েব। অর্থাৎ ড্রিল বিটের সমস্ত দৈর্ঘ্য ব্যাপী উভয় ফুটের মধ্যবর্তী স্থানকে ওয়েব বলা হয়। এটি ছিল বিটের ধাতব দক্ষ যা ড্রিল বিটকে শক্তিশালী করে। এর পয়েন্টের দিক থেকে ওরেষ শ্যালের দিকে ক্রমশ মোটা হয়।

২.১০.৮ বডি ক্লিয়ারেন্স (Body Clearance)

ড্রিল বিটের মার্জিনের ব্যাস থেকে বডির ব্যাস কিছুটা কম রাখা হয়। উভয় প্রকার মাপের পার্থক্যকেই বঞ্চি ক্লিয়ারেন্স বলা হয়। বডি ক্লিয়ারেন্স থাকার কারণে ড্রিল বিটের সারফেসের সাথে ছিদ্রের সারফেসে ঘর্ষণ লাগে না। ফলে ড্রিল বিট ও কার্যবস্তু গরম কম হয় ।

২.১০.৯ ছিল বিটের শ্রেণিবিভাগ

ড্রিল বিটকে বস্তির গঠন অনুযায়ী সাধারণত দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। যেমন-

ফ্ল্যাট ড্রিল বিট (Flat Drill Bit)

এই প্রকার ছিল বিটের মুখের সন্নিহিত স্থান সম হয়। সাধারণত কামারশালায় পিটিয়ে এটি তৈরি করা হয়। এটি অতি সহজে, কম খরচে সময়ে তৈরি করা যায়।

টুইন্ট ড্রিল বিট (Twist Drill Bit) এই প্রকার ছিল বিটের উপরিভাগে মোচড়ানো বা প্যাঁচানো রকমের নালী বা ফুট কাটানো থাকে। এটা আধুনিক মেশিন দ্বারা তৈরি করা হয়। টুইস্ট ড্রিল বিটকে প্রধানত দু'ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-

• স্ট্রেইট শ্যাঙ্ক ড্রিল বিট (Straight Shank Drill Bit)

কার্যবস্তুর পদার্থপয়েন্ট অ্যাঙ্গেল
স্টিল, কাস্ট আয়রন, অ্যালয়েড ও নন-অ্যালয়েড কাস্টিং১১৮°
ব্রাস, ব্রোঞ্জ, নিকেল, জিঙ্ক অ্যালয় ও হোয়াইট মেটাল১১৮°
হিটট্রিটেড স্টিল, অ্যালয় স্টি১২৫-১৩৫°
স্টেইনলেস স্টিল১৪০°
হোয়াইট কাস্ট আয়রন, স্টিল রেইল১৫০°
কপার, অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক, শক্ত রাবার, নরম কাস্ট আয়রন৮০ -১০০°
কাঠ৬০°

২.১০ ১২ ক্লিয়ারেন্স অ্যাঙ্গেল নির্ধারণ:

পয়েন্ট কাটিং এজের ঠিক পিছনের অংশে যা গ্রাইন্ডিং করে কমানো হয় অর্থাৎ কাটিং এজের পশ্চাৎ দিকে যে কোপে ঢালু করা থাকে তাকে ক্লিয়ারেন্স অ্যাঙ্গেল বলে । ধাতু ভেদে এই কোলের পরিমাণ বিভিন্ন রকম হয়। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-

ধাতৰ পদাৰ্থক্লিয়ারেন্স অ্যাঙ্গেল
নরম স্টিল, সাধারণ স্টিল ও সাধারণ কাস্ট আয়রন১২-১৫°
শক্ত স্টিল ৮-১২°
ব্রাস, ব্রোঞ্জ, কপার ও অ্যালুমিনিয়াম১২-১৫°
প্লাস্টিক ও শক্ত রাবার১৫-২০°

 

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion