বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। কুরআন মজিদের ভাষা আরবি। সঠিক উচ্চারণে আমাদের কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা শিখতে হবে। সঠিক উচ্চারণে কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ তায়ালার কালামের অর্থ ঠিক থাকে। সালাত শুদ্ধ হয়। সঠিক ও শুদ্ধভাবে কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করতে না পারলে আল্লাহর কালামের অর্থ ঠিক থাকে না। সালাত শুদ্ধ হয় না। পাপ হয়।
শুদ্ধভাবে কুরআন মজিদ তিলাওয়াতের নিয়মকে তাজবিদ বলে। তাজবিদে থাকে মাখরাজ, ইদগাম, পুল্লাহ ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ ।
আরবি শব্দ উচ্চারণের সময় মুখের এক এক জায়গা থেকে এক একটি হরফ উচ্চারিত হয়। কখনো জিহ্বা, কখনো তালু, কখনো দাঁত, কখনো ঠোঁট, কখনো কণ্ঠনালি - নানা স্থান থেকে হরফ উচ্চারণ করা হয়।
আরবি হরফ উচ্চারণের স্থানকে বলে মাখরাজ। কোনো হরফকে সাকিন করে ডানে একটি হরতর্কবিশিষ্ট আলিফ বসিয়ে উচ্চারণ করলে সার্কিন হরফটির আওয়াজ যে স্থানে গিয়ে থেমে যায় তা হলো ঐ হরফের মাখরাজ বা উচ্চারণের স্থান। যেমন,
১. = আলিফ বা যবর আব। এখানে বা বর্ণের উচ্চারণের সময় আওয়াজ দুই ঠোঁটে এসে থেমে গেছে। কাজেই বর্ণের মাখরাজ দুই ঠোঁট।
২. = আলিফ খা যবর আখ। এখানে বর্ণের উচ্চারণে আওয়াজ থেমে গেছে কণ্ঠনালিতে। কাজেই বর্ণের মাখরাজ কণ্ঠনালি। এমনিভাবে আরবি ২৯টি বা ১৭টি স্থান থেকে উচ্চারিত হয়। এই স্থানগুলো হলো নাসাগর, মুখগহ্বর, জিহ্বা, তালু, আলজিহ্বা, কণ্ঠনালির শুরু, কণ্ঠনালির মধ্যভাগ, কণ্ঠনালির শেষ অংশ, উপরের ঠোঁট, সামনের উপরের দুটি দাঁত, সামনের নিচের দুটি দাঁত, ডান দিকের উপরের মাড়ির দাঁত, বাম দিকের উপরের মাড়ির দাঁত ইত্যাদি।
১. কণ্ঠনালির শুরু থেকে উচ্চারিত হয়
২. কণ্ঠনালির মাঝখান থেকে উচ্চারিত হয়
৩. কন্ঠনালির শেষ অংশ থেকে উচ্চারিত হয়
৪. জিহ্বার গোড়া তালুর সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
৫. জিহ্বার গোড়ার কিছুটা সামনের অংশ তালুর সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
৬. জিহ্বার মধ্যভাগ তালুর সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
৭. জিহ্বার গোড়ার কিনারা, উপরের মাড়ির দাতের গোড়ার সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
৮. জিহ্বার অগ্রভাগের কিনারা সামনের উপরের দাঁতের সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
৯. জিহ্বার অবভাগ তার সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
১০. জিহ্বার ভাগের পিঠ তার সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
১১. জিহ্বার অবভাগ উপরের দুই দাঁতের গোড়ার সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
১২. বিহ্বার অর্থভাগ সামনের উপত্রের দুই দাঁতের অর্থভাগে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
১৩. জিহ্বার তা সামনের উপরের দুই দাঁতের শেষভাগে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
১৪. নিচের ঠোঁটের ভেজা অংশ সামনের উপরের দুই দাঁতের সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়
১৫. দুই ঠোঁট থেকে উচ্চারিত হয়
১৬. মুখের খালি জায়গা থেকে মাল- এর হরফ উচ্চারিত হয়
১৭. মাক্ষের পর থেকে গুন্নাহ উচ্চারিত হয়
পরিকল্পিত কাজ : শিক্ষার্থীরা কোন কোন স্থান থেকে আরবি ২১ টি বর্ণ উচ্চারিত হয় তা দলে আলোচনা করে একটি তালিকা তৈরি করবে । এরপর মার্কার দিয়ে পোস্টার পেপারে দেখৰে ।
আরও দেখুন...