তাপ বুঝতে হলে আমাদের প্রথমে তাপমাত্রা বলতে কী বোঝাই সেটিও বুঝতে হবে। তাপ হচ্ছে, শক্তির পরিমাণ এবং তাপমাত্রা হচ্ছে কোনোকিছু কতটুকু উত্তপ্ত কিংবা কতটুকু শীতল তার একটি পরিমাপ ।
আমরা বলে থাকি চা গরম এবং আইসক্রিম ঠান্ডা—গরম এবং ঠান্ডা কথাটি দিয়ে আমরা আসলে বোঝাই ‘তাপমাত্রা' নামক রাশিটি চায়ের মধ্যে বেশি এবং আইসক্রিমের মধ্যে কম। কাজেই যদি আমাদের সহ্য ক্ষমতার মধ্যে থাকে তাহলে আমরা তাপমাত্রাটি আমাদের শারীরিক অনুভূতি দিয়ে বুঝতে পারি। তাপমাত্রা বেশি হলেই তার তাপের পরিমাণ বেশি হবে, সেটি কিন্তু সত্যি নয় ।
ধরা যাক একটি পাত্রে কিছু পানি নিয়ে সেটাকে একটা মোমবাতির শিখায় এক মিনিট ধরে রেখেছ। তারপর পাত্রের পানিতে স্পর্শ করলে হয়তো আগের থেকে অল্প একটু বেশি উষ্ণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু তুমি যদি একটি সুচ মোমবাতির শিখায় এক মিনিট ধরে রাখো, সেটি গনগনে গরম হয়ে যাবে এবং তুমি সেটা স্পর্শ করতেই পারবে না। যার অর্থ একই পরিমাণ তাপ প্রদান করার পরও পানির ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ছিল কম এবং সুচের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা অনেক বেশি। আমরা যদি পদার্থের অণু-পরমাণুর ছোটাছুটি দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি, তাহলে বলব তাপ প্রদান করার পর পাত্রের পানির অণুর গতি বৃদ্ধি পেয়েছে কম কিন্তু সুচের পরমাণুগুলোর কম্পন বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক বেশি।
কাজেই বলা যেতে পারে, তোমরা তাপ সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি জেনে গেছে, সেটি হচ্ছে তাপ এক ধরনের শক্তি এবং এই শক্তিটা এসেছে পদার্থের অণু-পরমাণুর সম্মিলিত গতিশক্তি কিংবা কম্পন শক্তি থেকে। অণুগুলোর গতি কিংবা কম্পন যত বেশি হবে, বস্তুটির তাপমাত্রা তত বেশি। কঠিন পদার্থের বেলায় তাপের অর্থ অণুগুলোর কম্পন। তরল পদার্থের বেলায় সেটি হচ্ছে অণুগুলোর ছোটাছুটি এবং গ্যাসের বেলায় সেটি হচ্ছে একটি অন্যটির তুলনায় মুক্তভাবে ওড়াউড়ি। যতবেশি কাপাকাপি, ছোটাছুটি কিংবা ওড়াউড়ি, তাপমাত্রা ততবেশি।
আরও দেখুন...