গলদা চিংড়ি চাষের জন্য দুই ধরনের পুকুর আবশ্যক, যথা- নার্সারি পুকুর ও মজুদ পুকুর। হ্যাচারি বা নদী থেকে পিএল এনে সরাসরি ঘের বা পুকুরে মজুদ করা উচিত নয় এক্ষেত্রে গলদা পোনা বা পিএল অনেক মারা যায় ও কাঙ্খিত উৎপাদন পাওয়া যায় না, তাই গলদা পোনা প্রথমে নার্সারি পুকুরে ৩০-৪০ দিন লালন পালন করে মজুদ পুকুরে স্থানান্তর করলে ভালো উৎপাদন পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের অধিকাংশ থামারে নার্সারি পুকুর রাখা হয় না। বর্তমানে হ্যাচারিতে উৎপাদিত পোনা সরাসরি গলদা চাষের পুকুরে মজুদ করা হয়। এর ফলে পোনার মৃত্যু হার অনেক বেশি হয় এবং চিংড়ি চাষি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য হ্যাচারিতে উৎপাদিত পোনা নার্সারি পুকুরে প্রতিপালনের পর মজুদ পুকুরে মজুদ করলে উৎপাদন বেশি হয়। চাষ এলাকার ১০-১৫% এলাকার নার্সারি পুকুর স্থাপন করা থেকে পারে। বর্গাকার বা আয়তকার নার্সারি পুকুরের আয়তন ৫০০ বর্গমিটার থেকে ১০০০ বর্গমিটার হতে পারে এবং সাধারণত প্রতি বর্গমিটারে ৩০ থেকে ৫০টি পোনা মজুদ করা যায়। নার্সারি পুকুরে পোনার বাঁচার হার প্রায় ৭০%।
চিত্রঃ নার্সারি পুকুর তৈরী
নার্সারি পুকুরে পোনা প্রতিপালনের পর মজুদ পুকুরে ৪-৫ মাস প্রতিপালন করে বছরে কমপক্ষে ২টি ফসল উৎপাদন করা যায়। নার্সারি পুকুর ছাড়াও বর্তমানে পেন নার্সারি, ভাসমান নার্সারি বা ট্যাংক নার্সারিতে পোনা প্রতিপালন করা হচ্ছে। নার্সারিতে পানির সঞ্চালন ও গুণাগুণের প্রতি লক্ষ্য রেখে পোনার চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহ করতে হয়।
পালন পুকুর একটি খামারের প্রধান অবকাঠামো যেখান থেকে চিংড়ি চাষের লাভ ও ক্ষতি নিয়ন্ত্রিত হয়। ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে পালন পুকুর বর্গাকার বা আয়তকার হলে ভালো হয়। পালন পুকুরের আয়তন ০.৫ হেক্টর থেকে ১.৫ হেক্টর হলে ব্যবস্থাপনার সুবিধা হয়। নির্মাণ খরচ কমানারে জন্য অনেকে ২-৩ হেক্টর আয়তনের পুকুরও নির্মাণ করে থাকে।
চিত্র ২.৬: পালন বা মজুদ পুকুর