গত সেশনের আমরা নেটওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জেনেছি। আর জেনেছি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত ডিভাইসগুলোতে সহজেই তথ্য বা ফাইল আদানপ্রদান করা যায়। কিন্তু কম্পিউটারের এই নেটওয়ার্ক বা এই ডিজিটাল নেটওয়ার্ক কীভাবে কাজ করে সেটা কী আমরা জানি? আজকের সেশনে আমরা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কীভাবে ধাপে ধাপে কাজ করে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। পরবর্তীতে নেটওয়ার্ক তৈরি ক্ষেত্রে এই জ্ঞান আমাদের কাজে লাগবে।
প্রথমেই এসো নিজেরা আলোচনা করে নেটওয়ার্কের কাজের পদ্ধতি নির্ণয়ের চেষ্টা করি এবং ছক ৫.৩ এ আমাদের ধারণাগুলো লিখি অথবা চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করি-
ছক ৫.৩: নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের পদ্ধতি
|
দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেসব কাজ করি, তার প্রতিটির ক্ষেত্রেই আমরা বিভিন্ন ধাপ অবলম্বন করি। ধাপে ধাপে কাজ করেই আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছাই। নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের কাজটিও এমন বিভিন্ন ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়। নেটওয়ার্কের রয়েছে কিছু স্তর বা লেয়ার যেগুলো অতিক্রম করে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান হয়। এসো ডাকঘরের উদাহরণের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের এই স্তরভিত্তিক ডিজাইনের বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি-
আমরা যদি ডাক যোগাযোগের মাধ্যমে আমাদের কোন বন্ধুর কাছে কোন চিঠি পাঠাতে চাই তাহলে ধাপে ধাপে আমাদের কাজগুলো কী হবে?
আমাদের কাজগুলো হবে এমন- ধাপ ১। চিঠিটি একটি খামে ঢুকিয়ে ডাকঘরে নিয়ে যাওয়া। ধাপ ২। খামের উপর প্রেরক এবং প্রাপকের নাম, ঠিকানা লেখা। ধাপ ৩। বিভিন্ন ডাকঘর হয়ে খামটি প্রাপকের ঠিকানায় পৌঁছান। ধাপ ৪। প্রাপকের কাছে খামটি হস্তান্তর হওয়া। ধাপ ৫। প্রাপক কর্তৃক খামটি খুলে চিঠিটি বের করা। এখানে প্রতিটি ধাপের কাজ তার আগের ধাপের কাজের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ ধাপগুলোর ক্রম পরিবর্তন করলে ডাকবিভাগের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে না। কিন্তু লক্ষ্য করি, প্রতিটি ধাপের কাজ আলাদা ভাবে নির্ধারিত বলে কোন একটি ধাপের কাজে পরিবর্তন আসলেও অন্য ধাপের কাজে কোন সমস্যা হয় না। যেমন, চিঠি পাঠানোর জন্য খাম ব্যবহার হলো নাকি পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা হলো, সেটির সাথে ডাকঘর কর্তৃপক্ষের ব্যাগ পাঠানোর কাজের সম্পর্ক নেই। আবার, ডাকঘর কর্তৃক ব্যাগ পাঠানোর জন্য রেল গাড়ি ব্যবহার হলো নাকি বাস ব্যবহার হলো, সেটির সাথে প্রাপক কর্তৃক থামটি পাওয়ার সম্পর্ক নেই। আবার, এখানে সবগুলো ধাপের কাজের জন্যই কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এই নিয়মকানুনগুলোকে সাধারণতঃ প্রোটোকল বলা হয়ে থাকে। যেমন প্রেরকের নাম-ঠিকানা বাম পাশে এবং প্রাপকের নাম-ঠিকানা ডান পাশে লিখতে হবে। এমনকি প্যাকেটের আকারের উপর নির্ভর করে কী ধরনের সুতা বা দড়ি দিয়ে প্যাকেটটি বাঁধা হবে তারও কিছু নিয়ম রয়েছে। |
ডাক বিভাগের এই কাজগুলোর সাথে নেটওয়ার্কের কাজের মিল রয়েছে। এসো নিচের ছক দেখে নেটওয়ার্কের কাজের সাথে সম্পর্কিত দু'টি গুরুত্বপূর্ণ শব্দের অর্থ জেনে নেই এবং উপরের উদাহরণের ডাকবিভাগের কোন কাজগুলোর সাথে সেগুলো সম্পর্কিত তা ছক ৫.৪ এর ডানদিকের ঘরে লিখি-
ছক ৫.৪: নেটওয়ার্কের কাজের সাথে ডাক বিভাগের কাজের মিলকরণ:
নেটওয়ার্কের কাজের ক্ষেত্রে | ডাক বিভাগের কাজের ক্ষেত্রে |
১। লেয়ার: নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যে সকল ধাপ অতিক্রম করে তথ্য এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে যায়। প্রতিটি ধাপের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকে, কোনো ধাপে পরিবর্তন আসলেও অন্য ধাপের কাজে বিঘ্ন ঘটে না।
২। প্রোটোকল: নেটওয়ার্কে যুক্ত ডিভাইসগুলোর মাঝে তথ্য আদান-প্রদানের নিয়ম। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন লেয়ারে বিভিন্ন প্রোটোকল ব্যবহার করা যায়। | ১।
২। |
আগামী সেশনে আমরা জানব কীভাবে নেটওয়ার্কের এই লেয়ার এবং প্রোটোকলগুলোর মাধ্যমে তথ্য আদান- প্রদানের কাজটি হয়ে থাকে সেই সম্পর্কে।
আরও দেখুন...